Friday, December 9, 2016

ভয়ঙ্কর বাসর রাত

ভয়ঙ্কর বাসর রাত

# শখের_কবি
......
আজ আমার বিয়ে। বিয়েটা
পরিবারিক ভাবেই হচ্ছে। আমি আবির
আর মহারানির নাম মেঘা। মেঘা
আমার বাবার বন্ধুর মেয়ে। দেখতে
অসাধারন সুন্দর। আমার প্রেম প্রায় ৩বছর।
বিয়েটা ভালোই জমজমাট ভাবে হলো
আমিও বেশ খুশি। কিন্তু এই খুশিতে
বন্ধুরা আমায় ভালোয় বাশ দিয়ে
যাচ্ছে। আজ রাত আমার মহান বাসর
রাত। আল্লায় জানে কপালে কি
আছে। কিন্তে ঢুকতে তো হবে। এই
পাজি বন্ধুরা বড় আব্দার করেছে। শেষ
মেষ সব আব্দার মিটিয়ে ঘরে ঢুকলাম
মানে বাসর ঘরে। ঘরে ঢুকতেই ব্উ আমার
লক্ষি বউ এর মত সালাম করলো। আর
সেখানেই ঘটলো যত বিপত্তি। কারন
আমি বললাম। বেচে থাকো বউ বেচে
থাকো তুমি যেনো হাজার সন্তানের
জননী হও। দেখলাম মেঘা তো ক্ষেপে
গেছে।বলতে লাগলো
- তোমার সাহস তো কম না দাড়াও
তোমার দেখাচ্ছি মজা। এই রে কি
বলতে গিয়ে কি বললাম মনে হয়
কপালে শনির দশা আছে।
-তুমি থাকো তোমার হাজার সন্তান
নিয়ে আমার কাছে আসবে না
-না বউ সরি আর হবে না।
-সত্তি তো?
-হুম
আচ্ছা ঠিক আছে এবার মাফ করে
দিলাম মনে থাকে যেনো

আমি মেঘার পাশে বসতে যাবো এমন
সময় দেখলাম ফোন আসলো। ফোনটা বের
করে দেখলাম পাজি ফারিহা ফোন
দিয়েছেফোনটা হাতে নিয়ে ভয়ে
ভয়ে রিসিভ করলাম
-হ্যালো
-কিরে তোর গলা কাপছে কেনো কাজ
হয়ছে
(আমি আমার জালায় মরছি আর হালা
কি কয়)
-আরে ভাই কিছু হয়নাই বউকে জড়িয়ে
ধরে আদর করতেছি তো তাই
-ও তবে ঠিক আছে দেখিস ভয় করিস না
-ওকে বাই
মেঘা আমার দিকে এগিয়ে আসলো
আর ফোনটা চেক করলো। তারপর
ফারিহার নাম্বার দেখে তো আরও
ক্ষেপে গেলো আর বলতে লাগলো
-এই ডাইনির সাথে তোমার কি হ্য
------------
-অন্যের সাথে প্রেম করবা আর আমার
সাথে বিয়ে তোমার দেখাচ্ছি মজা
আজকে তোমার ঘরে জাইগা নাই
বাইরে যাও।
(ধমক দিয়ে)
-তাহলো শোবো কোথায়?
-তুমি জাহান্নামে যাও
বন্ধুরা একের পর এক ফোন দিচ্ছে যে
বাসর রাতের অবস্থা কেমন জানার
জন্যে। আরে সালারা আমার ফাটছে
আর তোদের আনন্দ। যদি হাতের কাছে
পেতাম না তাহলে দেখাতাম মজা।
কি আর করা বাইরে বসে চাদ দেখছি।
বাসর রাতে আমার ভালোই বাশ
গেলো। আগে তো ঘরে জাইগা
দিয়েছিলো কিন্তু এখন তো সোজা
বাইরে বের করে দিলো। চাদের
সাথে না হয় বাসর রাত হোক। তাই বলে
মনকে সান্তনা দিচ্ছি। আর পাগলিটার
কথা ভাবছি। মেঘাকে যেদিন প্রথম
দেখি সেদিনই ক্রাশ খাই। কিন্তু যে
রাগি বলার সাহসই হতো না। মেঘাকে
আমাদের বাসাতেই দেখেছিলাম
প্রথম। সেদিন রাতে আমি গিটার
বাজাচ্ছিলাম। হঠাৎ কখন যে একটি
মেয়ে আমার পাশে এসে বসেছে আমি
খেয়াল করি নি।তখন আমি
ভেবেছিলাম মনে হয় আমি স্বপ্নে
আছি তাই জড়িয়ে ধরেছিলাম। তখন
মেয়েটি চিললিয়ে গা মাথায়
করেছিলো। বাড়ির সবাই ছুটে এসে
জিজ্ঞেস করে আর আমি বাস্তবে
ফিরে এসে তো ভয়ে শেষ কারন
আব্বুকে ভয় পাই। তখন মেঘা কিছুই বলে
না শুধু তেলাপোকার নাম
দিয়েছিলো। তখন মা আমার সাথে
মেঘার পরিচয় করিয়ে দেয়। মেঘা নাম
শুনেই তো আমার ক্রাশ। কারন মেঘা
নামটা আমার প্রিয়।তারপর থেকে
মেঘার সাথে সময় কাটানো মেঘার
শেয়ারিং আর কেয়ারিং আমাকে
মুগ্ধ করেছিলো অবশেষে মেঘাকে
ভালোবেসে ফেলি। কিন্তু মেঘা খুব
রাগি। আর খুব জেদি যেটা বলে
সেটাই করে। আমাকে কোনো মেয়ের
সাথে কোনো কথা বলতে দেখলে তো
মহারানী রেগে আগুন। তাই আমার
নিষেধ ছিলো। কিন্তু আমায় খুব
ভালোবাসে আমিও অবশ্যয়
ভালোবাসি। আর একটু আগে যে
ফারিয়া ফোন দিয়েছিলো না
সেটা আমার ফ্রেন্ড বলতে জিগারের
দস্ত। ফারিহা শুধুই আমার বন্ধু তাও
মেঘা ওকে দেখতে পরে না কারন ও
ভাবতো আমাদের মধ্যে হয়তো ইটিস
পিটিশ মানে প্রেম আছে কিন্তু
বিশ্বাস করুন মেঘা শুধুই আমার ফ্রেন্ড।
আজ এই বজ্জাত মেয়েটার কারনে বাসর
রাতে বউ এর ভয়ংকর রাগ। তাই মন
খারাপ করে বাইরে তাকিয়ে আছি।
এমন সময় কারো স্পর্শ অনুভব করলাম।
খেয়াল করলাম মেঘা। আমিকিছু না
বলে অভিমান করে দাড়িয়ে আছি
মেঘা বলছে
-বাবুটার রাগ হয়েছে
-___________^
-বাবুটার মন খারাপ
.....................
*বাবুটাকে কে বকেছে?
-বউ!
-এই তুমি কি কিচ্ছু বোঝ না হ্যা?
(ধমক দিয়ে)
আমি নিচের দিকে তাকিয়ে আছি।
দেখলাম মেঘা আমায় শক্ত করে
জড়িয়ে ধরেছে।আমি তাও কিছু বলছি
না কারন দেখিনা পাগলিটা কি করে
মেঘা আমার মুখের দিকে তাকালো
তারপর ামার হাত ধরে টানতে টানতে
নিয়ে গেলো ঘরের ভিতরে। আমায়
খাটের উপর ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল।
তারপর আর কি আপনাগো বলবো
কেনো? বড়দের কথা শুনতে নেয়
.
অতপর শুরু হলো এক ভয়ংকর বাসর রাত
_________সমাপ্ত_______
বি:দ্র:-বন্ধুরা গল্পটির হয়তো শেষটি
ভালো হয়নি কিছু প্রতিবন্ধকতার
কারনে তার জন্য দু:খিত

Monday, November 28, 2016

গল্প: ভীষণ ভালবাসি মায়াবতী

গল্প: ভীষণ ভালবাসি মায়াবতী

-চলো খেতে চল।(আমি)
-হু।(মুখটা ঘুরিয়ে নিল)
-এই যে বোকা মেয়ে রাগটা তো আমার উপর
তাহলে খাবার কি দোষ করল।
-হু।
-আচ্ছা মুশকিল তো কথা তো বল।
-হু...।(এবার একটু জোরেই হু করল)
এবার আমার মহারানীর রাগের একটু
বিশ্লেষন করি।ঠোঁট ফুলিয়ে গাল ফুলিয়ে
কেঁদে কেঁদে একেবারে বিশ্রি অবস্থা।
কারন টা হচ্ছে আমি এতটাই কেয়ারলেস যে
বউকে দেয়া কথাটাই রাখতে পারিনা।
মেয়েটি এমনিতেই শান্ত শিষ্ট।নিজে
থেকে কিছুই চায় না।গতকাল রাতে আমিই
ওর হাতের আঙুল ধরে নাড়তে নাড়তে বলে
উঠেছিলাম কাল তোমাকে নিয়ে হাঁটতে
বেরোব।শুধু ওই বলা পর্যন্ত অফিসের কাজের
চাপে সময় মত আসা হয়নি।আর সেজন্যই
আমার মিষ্টি বউটা গাল ফুলিয়ে বসে
আছে।
-কথা দিচ্ছি কাল বিকেলে নিশ্চয়ই যাব।
-আচ্ছা শুভ্র একটা কথা বলব।(শান্তভাবে
মায়া বলল)
-হ্যা একটা কেন হাজারটা বল আমি আমার
মিষ্টি বউটার মুখে হাজারটা কথা শুনতে
চাই।
-আমি তোমাকে বড্ড জ্বালাই তাই না।
নিজে থেকে তো তোমার কোন কাজই
করতে পারি না উল্টা তোমাদের ঘাড়ে
বসেই শুধু খাই।আমি আসলেই একটা ইউজলেস
এই পৃথিবীতে।
-ছি মায়া এসব কি।কতবার বলব এসব কথা
বলবে না একদম।
-বললে কি আর না বললেও কি এটাই তো
সত্যি আমি করুনার পাত্রী।
-ভালবাসাটা তোমার কাছে করুনার মত
লাগে মায়া?
-নাহ সেটা না দেখ শুভ্র আমি বাইরের চোখ
দিয়ে দেখতে না পেলেও মনের চোখ দিয়ে
ঠিকই বুঝতে পারি।
-কি বুঝতে পার তুমি পাকা বুড়ি?
-তুমি একটা সুদর্শন পুরুষ।তোমার পাশে
থাকার কথা একটা পরীর মত মেয়ের।যে
তোমাকে নিজে হাতে রান্না করে
খাওয়াবে,অফিসের ব্যাগ গুছিয়ে দিবে,এত্ত
এত্ত আদর করবে।(গলাটা ধরে এসেছে
মায়ার)
-এই পাগলী এই এত্ত অভিমান কেন তোমার।
-কই শুভ্র আমার তো কোন অভিমান নেই
রাগ নেই।আর কেনইবা থাকবে বল তোমার
মত এত্ত ভাল একটা স্বামী আছে যার তার
কিসের অভিমান শুনি।
-মায়া তুমি যদি বাহ্যিক সৌন্দর্যের কথা
বল তুমি পরীর থেকে একটুও কম যাওনা।তুমি
জান না তুমি কতটা সুন্দর।তোমার পাশে
দাড়ানোর মত কোন যোগ্যতাই নেই আমার।
আর মনের সৌন্দর্য সেটাও তোমার অনেক
বেশি।
-আচ্ছা শুভ্র তুমি জেনে শুনে আমার মত
একটা জন্মান্ধ মেয়েকে বিয়ে করে নিজের
জীবনটা নষ্ট করলে বলতো?
-মায়া আমি ক্ষমাপ্রার্থী।বাবু আর কখনও
কথা দিলে কথা ভাঙব না।প্লিজ মায়া
এভাবে নিজে কষ্ট পেও না আমাকেও কষ্ট
দিওনা।
-ধুর পাগল আমি তোমার স্ত্রী।স্ত্রীর
কাছে কেউ ক্ষমা চায়।বল না কেন এমন
করলে।
-ভালবাসি তোমাকে।
-শুধুই ভালবাস বলে বিয়ে করলে।নাকি
একটা অন্ধ মেয়েকে সাহায্য করলে।
-মায়া প্লিজ চল খেতে চল।
-আমার প্রশ্নের উত্তর কিন্তু পেলাম না।
-কিছু প্রশ্নের উত্তর থাকেনা।
-কিন্তু আমি জানি উত্তরটা।
-চল খেতে চল আম্মু ডাকছে।
-শুভ্র আমি একটা ঝামেলা তাই না।
-মায়া প্লিজ।
-আচ্ছা তুমি যাও খেয়ে এস।
-তুমিও চল।
-আমার ক্ষুধা নাই।
-আমি কান ধরছি বাবু কাল সারাদিন
তোমাকে নিয়ে ঘুরব।
-হা হা হা হা...
-হাসছ যে...
-যার চোখ নেই তাকে সারাদিন ঘুরিয়ে কি
দেখাবে শুনি?
-মায়া এই টপিকটা কি বাদ দেওয়া যায় না।
-এটাই তো সত্যি।
-আমার চোখে দেখবে।আমার অনুভুতিতে
তুমি শিহরন পাবে।
-জীবনটা কি এতটাই সহজ।
-আমার মায়াবতী কি আজ এটা ভেবেই রাগ
করেছে যে কিছুতেই তার অভিমান
ভাঙানো যাবে না।
-আমাকে মায়াবতী ডাকবে না।
-কেন?
-আমি তোমার যোগ্য নই।
-তাই...
-হুম।
-এই কি করছ ছাড় আমাকে...(মায়াক
ে পাজাকোলা করে তুলে নিয়ে খাবার
টেবিলে বসালাম)
-চুপটি করে বসে থাক।
-শুভ্র আমি কিন্তু খাব না।
-কেন মা খাবে না কেন?(মা জিজ্ঞাসা
করল মায়াকে)
-ইয়ে মানে ক্ষুধা লাগে নি আম্মু।
-সে কি মা খেয়ে নাও ওই পাগলের উপর রাগ
করে না খেয়ে থাকবে কেন তুমি।
-আমি কারও উপর রাগ করিনি আম্মু।
-হা কর....(আমি)
-না খাব না।
-জোর করেই মুখের ভিতর দিলাম।যা হবার
তাই হল আঙুলটা কামড়ে দিয়েছে।খাবার
টেবিলে বসে তো আর চিৎকার দেওয়া যায়
না চেপে গেলাম।
জোর করেই খাইয়ে নিজে খেলাম।খাওয়া
শেষে রুমে এনে বেডের ওপর বসিয়ে দিলাম।
উল্টো দিকে মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে পড়ল।
-কফি খাবে?(আমি)
-না।
-একটু খাও।
-বললাম তো না।
-এই এতটুকু খেও।
-খাব না।(চিৎকার করে বলল)
-বাইরে ভীষন বৃষ্টি হচ্ছে।
-নিশ্চুপ।
-ভিজে ভিজে কফি খেতে কিন্তু দারুন
মজা।
-যাও না যাও একটা ভাল মেয়ে দেখে বিয়ে
করে যখন ইচ্ছা ভিজ আর কফি খেও।
-কেন তুমি কি পঁচা?
-হ্যা আমি পঁচা।
-তাহলে নিয়ে যাই এই পঁচাকে ছাদে।
-উহু শুভ্র একদম না।
-হে হে হে চল...
-শুভ্র ভাল হচ্ছে না কিন্তু এই রাত দুপুরে
ভিজলে মা কি বলবে।
-কিছু বলবেনা।
-আমার ঠান্ডা লাগবে।
-লাগুক সমস্যা নাই।
-হ্যা সমস্যা থাকবে কেন আমি অসুস্থ হয়ে
মরে গেলেই তো তুমি হাফ ছেড়ে বাঁচ।
-মায়া.....(কোল থেকে নামিয়ে দিলাম
বিছানার উপর)
মেয়েটা কি ভেবেছে ভালবাসি বলে
এতকিছু সহ্য করতে হবে।সামান্য একটু
অভিমান করেছে বলে সেই তখন থেকেই যা
ইচ্ছে তাই বলে যাচ্ছে।কিভাবে বোঝাব
তোকে ভালবাসতে বাসতে তোকে এমন
একটা জায়গায় এসে থেমেছি তোর আর
আমার মানেইতো আমাদের সব।তোর জন্যই
তো বেঁচে থাকা।তোকে ঘিরেই বেঁচে
থাকা।তুই ছাড়া কে আছে বল।কখনও মনে
হয়নি তুই অসুস্থ।তুই দেখতে পাস না আমার
চোখে দেখবি বলেই তো কথা দিয়েছিলি।
তাহলে মাঝপথে কেন এতটা আঘাত দিস।
কিছুক্ষন পর....
-এই শুনছ শুভ্র...(মায়া)
-চুপ করে আছি।
-এই তুমি কি রাগ করেছ?
-চুপচাপ।
-দেখেছ আমি কত হিংসুটে নিজের রাগের
গুরুত্ব দিতে গিয়ে তেমাকে কতটা কষ্ট
দিয়ে ফেললাম।
-চুপচাপ।
-এই তুমি কি আছ?চল নিয়ে যাবে না
আমাকে ছাদে।আমি ভিজব তোমার সাথে।
-চুপচাপ।
-এই বাবু আমি জানি তুমি আমার
আশেপাশেই আছ তোমার নিশ্বাসের শব্দ
পাচ্ছি।
-চুপচাপ।
-এবারের মত মাফ করে দাও না তোমার
পাগলীকে।তুমি ছাড়া আমার কে আছে
বলতো।একটু রাগ তোমার উপর আমি ছাড়া
কে করবে।
আলতো করে কোলে তুলে নিলাম।পাগলীটা
ফুঁপে ফুঁপে কান্নার শব্দ করছে।এই হল আমার
মহারানীর রাগের দূরত্ব আমাকে কষ্ট দেয়
যতটা তার থেকে বেশি পায় নিজে।
-ভালবাসি অনেক বেশি ভালবাসি
তোমাকে।
-জানি।
-কি জান?
-তুমি পঁচা মেয়ে হে হে হে।
-আর তুমি পঁচা ছেলে হি হি হি।
এই যা বৃষ্টিটাই থেমে গেছে।অগ্যতা আবার
নামতে হল ছাদ থেকে।ওকে রুমে বসিয়ে
কফি বানাতে গেলাম কিচেনে।পাগলীটা
বড্ড সরল।সেদিন ওভাবে আমার সামনে না
এলে হয়ত এভাবে আপন করে পাওয়াই
হতনা....
.
১বছর আগে.....
অফিস শেষে ক্লান্তি নিয়ে বাসায়
ফিরছি।রাস্তার পাশের টং দোকান থেকে
একটা সিগারেট জ্বালিয়ে আনমনে হাঁটছি।
আব্বুর অবশ্য গাড়ি আছে কিন্তু আমি সেটা
ইউজ করি না।যাই হোক সিগারেট ফুঁকতে
ফুঁকতে রাস্তা দিয়ে হাঁটতেছি।হঠাৎ করেই
আগাম বার্তা না দিয়ে আকাশ থেকে ঝুম
বৃষ্টি নেমেছে।বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচার
জন্য সবাই বিভিন্ন ছাউনির নিচে আশ্রয়
নিচ্ছে।আমার অবশ্য সেদিকে কোন খেয়াল
নেই।বৃষ্টি নিজেই আমাকে হিংসে করে
কারন বৃষ্টি যদি দুই এক ফোঁটাও পড়ে আমি
তাতে ভিজবই।একসময় রাস্তায় শুধু গাড়ি
ছাড়া তেমন মানুষ নেই।দুই একজন অবশ্য
ছাতা নিয়ে চলাচল করছে।
আনমনেই আমার চোখ আটকে গেল একটা
অন্তহীন সৌন্দর্যে।প্রথমে ভেবেছিলাম
সে হয়ত বৃষ্টি পছন্দ করে। কিন্তু তাই বলে
রাস্তায় এভাবে চুপচাপ কেন ভিজবে।
তাছাড়া এই ঐশ্বরিক সৃষ্টি অপরুপ পরী
এভাবে ভিজছে কেন।আজকাল ঢাকা শহরে
তো স্বর্গের পরীরাও বৃষ্টির ফোঁটা গায়ে
লাগলে ময়দা ধুয়ে বেরিয়ে আসে
শাঁকচুন্নির রুপ।কিন্তু সে একটু বেশিই
চুপচাপ।দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভাব বেশি।
হয়ত বড়লোক বাপের আদুরে মেয়ে তাইতো
রাস্তার মাঝে সং সেঁজে চোখে সানগ্লাস
পরে ভিজছে।কিন্তু বৃষ্টির পানি যতই তার
শরীরে পড়ছে ততই যেন আরও বেশি সুন্দর
হয়ে উঠছে মেয়েটা।ধুর কিসব ভাবছি আমি।
পঁচিশ বছর বয়স হল জীবনে কখনও প্রেম
আসলনা।অবশ্য দু একটা প্রপোজ
পেয়েছিলাম কিন্তু ভাল না লাগার দরুন তা
বাতিল করেছি।তবে কি জানেন তো মন যে
কখন চুরি হবে মনের মালিক বেচারা তাহা
জানেনা।জানলেও কিছু করার থাকেনা।
নাহলে এই ব্যস্ত আমি কখন যে এক জায়গায়
দাড়িয়ে হা করে চেয়ে আছি মেয়েটির
দিকে বুঝতেই পারিনি।
আমার সব কল্পনার সব চিন্তার বাধ ভেঙে
গেল মূহুর্তেই।একটা যুবক ছেলে মেয়েটের
হাত ধরে নিয়ে হাঁটতে লাগল।ধুর এভাবেই
যদি যাবি চলে তবে আশা দিলি কেন
মিছে।ভাবতে ভাবতে কিছু একটা চোখে
পড়ল।মেয়েটির এক হাত ছেলেটি ধরেছে
অন্য হাতটা মাঝে মাঝে গাড়ির হর্ন শুনে
সামনে হাতড়ানোর ভঙ্গিতে নাড়াচ্ছে।
আমার অলস মস্তিষ্ক খুব সহজেই বিষয়টা
বুঝে ফেলল।এত সুন্দর পরীটা অন্ধ।কিছুক্ষন
নীরব দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম। ওরা
মাধবী কলোনিতে ঢুকেছে।
তখনকার মত প্রস্থান নিলাম।মেয়েটিকে
নিয়ে ভাবার কোন আগ্রহই ছিলনা।কিন্তু
ওই যে বললাম মনের মালিক নিজেই
জানেনা কখন তার মন চুরি হয়ে যায়।ভোরে
স্বপ্ন দেখলাম মেয়েটির হাতটা ধরে ঘুরছি।
একটা অস্বস্তির মাঝে পড়ে গেলাম।
স্বপ্নটার ব্যাখা দিতে গিয়ে ভাবলাম কাল
মেয়েটাকে নিয়ে বেশি ভেবেছি তো তাই
হয় ঘুমের মধ্যেও তাকে দেখেছি।যাই হোক
তখনকার মত ওসব চিন্তা মাথা থেকে
ঝেড়ে ফেললাম।কোথাকার কে চিনিনা
জানিনা তাকে নিয়ে এত ভাবাভাবির
কারন নাই।
.
এভাবেই কেটে গেল একমাস।সকালে নাহিদ
(আমার বন্ধু)ফোন করে বলল দোস্ত বিকেলে
আমাদের এদিকে চলে আয় কিছুক্ষন আড্ডা
দেওয়া যাবে।তোর তো আজকে অফিসের
অফ ডে।আমিও রাজি হয়ে গেলাম।
এমনিতেও নাহিদদের এলাকাটা আমার
ভীষন ভাল লাগে।দুই পাশে উচু উচু দালান
মাঝখানে সরু রাস্তা।পরিচ্ছন্নও আছে।
বিকেলে রওনা দিলাম নাহিদদের
এলাকায়।মেইন রোড থেকে ভিতরে ঢুকতে
যাব ডানপাশে তাকাতেই দেখি স্তম্ভের
ওপর বড় করে লেখা মাধবী কলোনি।হঠাৎ
বুকটা আচমকা কেঁপে উঠল।আনমনে হাঁটছি
যদিও রাস্তার দিকে তাকিয়ে হাঁটছি তবুও
ব্যাচেলরদের একটা মহাদোষ আছে।সেটা
হচ্ছে আশেপাশের বাসার ব্যালকুনির
দিকে তাকানো।আমিও তাকাচ্ছি অবশ্য
আশানুরুপ কিছু দেখিনি এখনও।হঠাৎ করেই
চোখ আটকে গেল।সে ই তো হ্যা সে।
গ্রীলটা ধরে দাড়িয়ে আছে।দুপাশে ফুলের
টব ঝোলানো।যতটা পেরেছি রুপ সুধা পান
করেছি।আরও কিছুক্ষন থাকতে ইচ্ছে হচ্ছিল
কিন্তু ফোনের জ্বালায় থাকা হলনা।
নাহিদ ব্যাটা ইতোমধ্যে ১২ বার কল
দিয়েছে।না যাই না যাই করেও যেতে হল।
কিন্তু আড্ডাতে মন বসছেনা।নাহিদ
বিষয়টা হত খেয়াল করেছিল তাই অন্যদের
থেকে দূরে এনে আমাকে জিজ্ঞেস করল কি
রে কি হইছে তোর?
-মেয়েটা ওই মেয়েটা....(কেমন একটা ঘোরে
পড়ে মুখ থেকে বেরিয়ে আসল)
-কোন মেয়ে কিসের মেয়ে।
-কিছু না বাদ দে তো।
-দোস্ত তুই কিন্তু কিছু লুকিয়ে যাচ্ছিস।
-কিছু না বললাম তো।
-সত্যি তো।
-হ্যা।
-কিন্তু তোর চোখ বলছে তুই মিথ্যে বলছিস।
-ধুর তুই কি জ্যোতিষী নাকি।
-সত্যি করে বল না দোস্ত কি হয়েছে তোর।
-অগ্যতা প্রথম থেকে শেষ সবই বলে দিলাম।
নাহিদ বলল সে নাকি চিনে।মেয়েটা
জন্মান্ধ।তবে এত সুন্দর যে যে ছেলেই দেখে
পাগল হয়ে যায়। কিন্তু সমস্যাটা জেনে
কেউই আসেনা।মেয়েটা বাইরে বের হয় তার
ভাইয়ের সাথে মাঝেমধ্যে।নাহিদের
কথাগুলো কোনমতে কানে গেল।কেমন একটা
ঘোরের মধ্যে ডুবে আছি।আমার সমস্তটা
জুড়ে মেয়েটি।যেন হৃদয়ে তার ছবিটি কেউ
টাঙিয়ে দিয়েছে।
এই মূহুর্তে আমি যা ভাবছি তা নিতান্তই
বোকামী।ওরকম অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে
সংসার করাটা শুধু সিনেমাতেই মানায়।
ধরে নেই আমি পারব কিন্তু কতদিন পারব
তাকে আগলে রাখতে।আবার যখন বাস্তবতা
এসে ভর করছে তখন মনে হচ্ছে সব মিথ্যে।
অথচ আমার মনটা হারিয়ে গেছে মেয়েটার
মায়া মুখের মাঝে।মানুষ যতই বাস্তবমুখী
হোক না কেন সত্যিকারের প্রেমে পড়লে
আবাগেটাকেই বেশি প্রাধান্য দেয়।প্রথমত
আমাকে স্থির করতে হবে আমি কি চাই?
আমি কি সত্যিই পারব তাকে নিয়ে সংসার
করতে।আমি কি পারব আমার সবটুকু সুখ
দিয়ে তার অসহায়ত্বকে দূর করতে।
এরকম মানসিক যন্ত্রনার মধ্য দিয়েই কেটে
গেল আরও একটি মাস।আমি যতটা না
বাস্তবমুখী হতে চাইছি তার বেশি যেন
মেয়েটার উপর দুর্বল হয়ে পড়ছি।আমার কেন
জানি মনে হচ্ছে আমি পারব হ্যা সত্যিই
পারব মেয়েটার পাশে দাড়াতে।মনের
সাথে যুদ্ধ করে অবশেষে সিদ্ধান্তে
পৌছালাম।প্রেম যখন আসে তখন না
জানিয়েই আসে ভরা জোয়ারের মত আর
আমি সে জোয়ারেই ভাসছি।
আব্বু আম্মু কে জানালাম।যদিও আমার আব্বু
ভীষন কড়া আর কম কথার মানুষ।তবুও ভয়ে
ভয়ে সেদিন আব্বুর সামনে দাড়িয়েছিলাম।
কিন্তু আব্বু কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে
থেকে বললেন দেখ শুভ্র তুমি এখন বড় হয়েছ।
ভাল মন্দ বোঝার ক্ষমতা তোমার আছে।
সংসার কি জিনিস এতদিনে নিশ্চয়ই
বুঝেছ।তো লাইফটা তোমার ডিশিসনটাও
তুমি নিবে।আশা করি নিজের ভাল বুঝেই
নিবে।
সেদিন আমার ভিতর নেশা চেপে বসেছিল।
মনে হচ্ছিল ওকে আমার পেতেই হবে।
আব্বুকে নিয়ে আম্মু গেলেন ওদের বাসায়।
কিন্তু উনারা প্রথমে প্রস্তাবে রাজি হতে
চাইলেন না।কারন তাদের মেয়েটি যতই
অসুস্থ হোক তাদেরই সন্তান।এতবড় করতে
পেরেছে যখন বাকি দিনটাও তারা খেয়াল
রাখতে পারবে।এরকম অসুস্থ মেয়ে অন্যের
ঘরে গেলে তার ঠিকমত খেয়াল রাখবে
কিনা এই নিয়ে ভীতি কাজ করছিল।আম্মু
অনেক বুঝিয়ে অবশেষে বিয়েতে রাজি
করালেন।আমি বিয়ের দিন আব্বু আম্মুকে
সব থেকে লম্বা সালাম দিয়েছিলাম।কেন
জানিনা হয়ত জীবনের শ্রেষ্ঠ সুখের দিন
ছিল সেটি।আমিও অপুর মত করে বলেছিলাম
অবশেষে আমি পাইলাম তাহারেই
পাইলাম।
কিন্তু যাকে পেয়েছি সে কি আমাকে
বুঝবে।তাকে কি বোঝাতে পারব আমার
হৃদয়ের টান।কিন্তু না মেয়েটির সবগুনই
আছে।আমি জানি ও চায় আমার সেবা
করতে।আমার অফিসের ব্যাগ গুছিয়ে
দিতে,আমার নাস্তা তৈরি করে
দিতে,আমাকে এক কাপ চা দিকে,অফিস
থেকে আসলে দৌড়ে এসে আমার বুকে
ঝাপিয়ে পড়তে কিন্তু পাগলীটা অতটা
পারেনা।অবশ্য বাসাতে ও একাই চলতে
অভ্যস্ত হয়ে গেছে তবে সব জায়গায় যেতে
পারেনা।আমি যতই নিশ্বব্দে লুকিয়ে আসি
না কেন ও ঠিকই ধরে ফেলবে আমাকে।কখনও
বুঝতে দেইনা ওর অসহায়ত্বকে।আসল
ে ভালবেসে সবই করা যায়।আমি ওকে
ওইভাবেই পেয়েই খুশি।যখন ওকে কোলে
তুলে নেই ও মুচকি হাসে।পাগলীটার রাগ
একটু বেশি এতটা জেদি যদি ও দেখতে পেত
হাজারবার বাপের বাড়ি যেত নিজে
থেকে।কিন্তু পাগলীটা তা পারেনা।
তাইতো লুকিয়ে কাঁদে।একটা জিনিসই
অদ্ভুত ওর ওর সবরকম অনুভুতি আছে।আমি
ওকেই চাই বার বার....।
পাগলীটা ঘুমিয়ে পড়েছে।কফি খেয়েছে
অবশ্য আমি খাইয়ে দিয়েছি।আজকে একটু
বেশিই রেগে গিয়েছিল।এমনিতেই বাসায়
বন্দী থাকে মুক্ত বাতাসের স্বাদ নিতে
সবারই ইচ্ছা করে।নিজের ইচ্ছা থাকলেও
যেতে পারেনা যদিও।তবু আমি তাকে আশা
দেখিয়ে আশা পূরন করিনি পাগলীটার রাগ
হওয়াই স্বাভাবিক।এই তো নিষ্পাপ মুখে
ঘুমিয়ে পড়েছে।কে বলবে এই অপরুপার এত
সৌন্দর্য থাকা সত্বেও নিজের চোখে সে
একটিবারের জন্যেও তা উপলব্ধি করতে
পারেনা।
.
পরেরদিন বিকালে.....
একটা হলুদ শাড়ি পরিয়েছি,হাতে চুরি
পরেছে ও নিজে নিজে।পাগলীটা এত খুশি
যে আনমনে আমার কপালে একটা চুমু এঁকে
দিয়েছে....
.
বিকাল ৫:৪৫...
একটা লেকের পাশে বসে আছি।বিকেলের
হলদে আলোয় হলদে রাজকন্যা আরও অপরুপা
হয়ে উঠেছে.....
-আচ্ছা শুভ্র।(মায়া)
-বল।
-তুমি আমাকে এত ভালবাস কেন?
-তোমার থেকেও বেশি কি?
-সব কথা এত প্যাঁচাও কেন?
-কই প্যাঁচালাম শুনি।
-তুমি জান তুমি আমার কতটা জুড়ে?
-জানি মনে হয়।
-কঁচু জান।
-তুমিই বল।
-প্রতিটি রক্ত কনায় জড়িয়ে।
-তাহলে নিজের সম্পর্কে এত বাজে কথা বল
কেন?আমাকে পরীর মত মেয়ে বিয়ে করতে
বল কেন?সত্যিই কি তুমি সইতে পারবে।
-আমি মরে যাব শুভ্র।আমার বেঁচে থাকার
কারন তুমি।
-তোমাকে তো ছাড়ব বলে কাছে ডাকি নাই
পাগলী।
-হুম শক্ত করে ধর।
-আচ্ছা শুভ্র এখন সূর্য্যের আলো কি রঙ
ছড়াচ্ছে?
-লালচে আভা।আর সেই আভায় তোমার
মুখটা মিষ্টি লাগছে খুব।
-যাহ দুষ্টু।
-পাগলী মেয়ে।
-সন্ধ্যা নামলে আমার হাত ধরে হাঁটবে?
-কেন?
-আমার খুব ইচ্ছে করে হাঁটতে।
-পারবে তো।
-আমাকে পারতেই হবে।
-পাগলী।
-পাগল আমার।
মাথাটা বুকে চেপে ধরলাম কয়েকফোঁটা
অশ্র ঝরে পড়ল।ভালবাসি এই মায়াবতীকে
ভীষন ভালবাসি।।।

Saturday, November 26, 2016

গল্প: হারানো ভালবাসা

গল্প: হারানো ভালবাসা

মোবাইলের রিংটোনেই ঘুম
ভাঙ্গলো নিহার।
- হ্যালো..
- নিহা আমি মিম.. (কাঁপা কন্ঠে)
- তুই মিম, সেটা তো আমি জানি.. তোর
কন্ঠ এমন শুনা যাচ্ছে কেন? কোন সমস্যা..?
- নিহা আমি মনে হয় শাকিল কে দেখলাম..
- শা.. কি..ল কে দেখলি মানে, কোথায়
দেখলি?
আর মনে হয় মানেটা কি? তুই
কি শাকিলকে চিনিশ না...
- না মানে, শাকিলকে চিনার মত অবস্থা
নাই..
মুখ ভর্তি দাড়ি, এলোমেলো চুল..
ময়লা জামা কাপড় পড়া, ছোট ছোট
ছেলেরা,
ওকে পাগল পাগল বলে # তাঁড়া করছিল..
- তুই ঠিক চিনেছিস..?
- না, তবে ফিফটি ফিফটি... তবে আমি ওর
সামনে যেয়ে শাকিল বলে ডাকলাম ও
আমার
দিকে তাকিয়ে আবার হাটা শুরু করলো...
আমি ওর একটা পিক তুলেছি,
তোকে আমি পিকটা সেন্ড করছি, দেখতো,

শাকিল কিনা..?
- দে..
- দিয়ে দিয়েছি দেখ..
- পিকটার
দিকে তাকিয়ে নিহা কাদঁতে লাগল..
- ওপাশ থেকে নিহার কান্নার শব্দ শুনেই
বুঝতে পারলো.. ওর অনুমান
ফিফটি ফিফটি না, ওটা শাকিল ই ছিল...
- তুই কখন দেখেছিস শাকিল কে?...
- দেখেই তো তোকে সাথে সাথে ফোন
দিলাম...
- তুই কোথায় আছিস এখন...
- ফার্মগেট, সেজান পয়েন্টের সামনে..
- শা..কি..ল কোথায়..?
- তোকে ফোন দেওয়ার পর চোখের আড়াল
হয়ে গেল..
- সীট..
- তবে সংসদ ভবনের ঐ দিক গিয়েছে..
- তুই থাক আমি আসছি..
প্রায় ৪ টা বছর ধরে শাকিল কে খুজছি।
কোথায়ও পাইনি, কোথায়ও না। কেউ ওর
সন্ধান দিতে পারেনি। এমন কোন
যায়গা নেই শাকিল কে খুজিনি।
আজো মনে পড়ে সেই দিনটার কথা। শাকিল
আমি, মিম আমরা খুব ভালো ফ্রেন্ড
ছিলাম।
ভার্সিটি লাইফে আমরা তিনজন
ছাড়া আমাদের আর কোন ফ্রেন্ড ছিল না।
ভার্সিটি লাইফের একদুম শেষের দিকে।
হঠাৎ একদিন শাকিল আমাকে propose
করে বসে। সেইদিন আমি বাসা থেকে রাগ
করে বেড়িয়ে ছিলাম। মন মানষিকতা ও
ভালো ছিলনা। তাই আমিও over reacts
করে campus ভর্তি মানুষের
সামনে শাকিল কে থাপ্পর মেরে,
আরো আজেবাজে কথা বলে, অপমান করা
শুরু
করলাম। মাথা নিচু করে শাকিল
কথা গুলো শুনে চলে গিয়েছিল। সেই
চলে যাওয়াটাই ছিল শাকিলের শেষ
যাওয়া আর আমার সাথেও শাকিলের শেষ
দেখা।
মিমও সেদিন কেঁদে দিয়েছিল, বলেছিল
এতটা reacts না করলেও পারতি। মিম ও
অভিমান করে সেদিন চলে গিয়েছিল।
মিমের অভিমান ভাঙ্গাতে পারলেও
শাকিল
কে আর খুজে পাইনি....।
তার কয়েক দিন পরই বুঝতে পারলাম খুব
ভালবাসি আমি ওকে। সারা দিন-রাত শুধুই
ভাবতাম কিভাবে শাকিলের
কাছে ক্ষমা চাইবো। কিভাকে ওকে বলবো,
আমিও যে ওকে অনেক ভালবাসি।
প্রতিটা দিন ওর অপেক্ষায় থাকতাম
হয়তো আজই শাকিল আসবে। কিন্তু ও আর
আসেনি। মনে মনে চিৎকার করে কাঁদতাম,
আর
বলতাম একটা ভুলের এত বড়
শাস্তি হতে পারে না.... বিশ্বাস ছিল
শাকিল কে একদিন না একদিন খুজে পাব..।
আমি আমার ভুল স্বীকার করে জানতে
চাইবো,
কেন আমাকে এত বড় শ্বাস্তি দেওয়া হল...?
- হেলো নিহা! কোথায় তুই
- এইতো আমি চলে আসছি।
আজ চারটা বছর পর শাকিল কে দেখছি।
এতো
চেনা
মুখ তবুও অচেনা মনে হচ্ছে। চুল দাড়ি ছেড়া
জামাকাপড়ে একদম অন্যরকম দেখাচ্ছে। এই
শাকিল
কে কেউ সহজে চিনতেই পারবেনা। আমি
হয়তো
ভালোবাসা থেকে চিনেছি। আগে বুঝতাম
না
কেনো শাকিল সবসময় আমার দিকে
তাকিয়ে
থাকতো। আমি ক্লাসে থাকলে কখন
শাকিলের মন
ক্লাসেরর দিক থাকতো না। যেনো মনে
হতো
ওর
মনটা আমার কাছে রেখে গেছে। আর সে
ওইটা না
নিয়ে আমার মনটা নিতে চায়। আমি
ভাবতাম
বন্ধু
মনে করে প্রতিদিন আমায় বাসা অবদি
এগে
দিত।
নানা বাহানায় আমাকে ফোন দিত।
আমি শাকিল মিম তিনজনেই এখন
হসপিটালে
আছি। শাকিল কে আমরা হসপিটালে ভর্তি
করিয়েছি।
আমার যে শাকিল কেই চায়।চার টা বছরে
খুব
ভালোবেসে ফেলেছি শাকিল কে। একবার
হারিয়ে
বুঝেছি হারানোর কষ্ট টা কত। তাই পেয়ে
শাকিল
কে আর হারাতে চাইনা। ডাক্তার বললেন
শকিলকে
সুস্থ করতে একটু দেরি হবে।শারীরিক
কষ্টের
চেয়ে
মানসিক কষ্টা টা বেশি পেয়েছে। তাই
তাকে
ভালো করতে আদর স্নেহ, ভালোবাসা
দিতে
হবে।
তাই শকিল কে বাসায় নিয়ে আসলাম। তার
জন্য
বাসায় একটুও সমস্যা হয়নি। বাবা মা
জানতো
শাকিলের কথা। তারা এটাও জানে যে
সকল
বিয়ের
প্রস্তাব আমি শাকিলের জন্যই না করে
দিয়েছি।
তাই বাবা মা শাকিলের ব্যাপারে কিছু
বলেনি।
৩ মাস পর......
-এই যে নিহা শুনছো আমি চোসমা টা খুজে
পাচ্ছি
না!
- আমি রান্না ঘর থেকে জবাব দিলাম.
দেখো
টেবিলর ওপর রাখা আছে।
একটু পর আবার.....
- এই যে নিহা শুনছো আমি ট্রাই টা
লাগাতে
পারছিনা। একটু হেল্প করো না প্লিজ..
- ট্রাই না পাওয়ার বাহানা । জানি
গেলেই
জড়িয়ে ধরে দুষ্টামু শুরু করবে।
যা ভেবেছি তাই।
- নাও ট্রাই টা বেধে দাও!
- ওর হাত থেকে নিয়ে পরিয়ে দেওয়ার জন্য
কাছে
যেতেই জড়িয়ে ধরে দুষ্টামু শুরু...
এই একদম দুষ্টামু চলবেনা যাও অফিস যাও।
- একদিন অফিস না গিয়ে বউ র সাথে প্রেম
করলে
কি খুব বেশি ক্ষতি হবে শুনি?
- হুম বাবু অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। যাও তো
তুমি
এখন অফিস যাও।
- আচ্ছা বাবা যাচ্ছি.. বাই টাটা.
- এই শুনো যাচ্ছি নয় গো আসছি বলতে হয়।
- এই কেনো তাহলে তো সবাই কনফিউজড
হয়ে
যাবে যে আমি যাচ্ছি না আবার বাসায়
ফিরে
আসছি।
- হয়েছে হয়েছে তোমার সাথে আমি
কোথায়
পারবোনা। যাও সময় হয়ে গেছে।
- আচ্ছা সাবধানে থেকো।
- হুৃম তুৃমিও সাবধানে যেও আর গিয়ে আমায়
ফোন
দিও কেমন?.
- আচ্ছা বাবা দিব বাই
-বাই
হসপিটাল থেকে বাসায় আনার পর
ভালোবাসা
দিয়ে আমি ওকে সুস্থ করে তুলেছি।তার পর
সারা
জীবনের জন্য ওকে আমি আমার করে
নিয়েছি।
শিক্ষিত হওয়ায় সে একটা জব নিয়েছে।
তাই
আমরা
বাসা ভাড়া নিয়ে থাকি। খুব শুখেই আছি
আমরা।
সন্ধার একটু আগে.....
আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। ঘুম টা ভাঙ্গলো
শাকিলের
ফোনে.
- হেলো বাবু কি করো?
- কিছুনা ঘুমিয়ে ছিলাম।
- এমা তাহলে কি আমি আমার বাবুর ঘুম টা
নষ্ট
করলাম?
- না না একদম না। কোথায় তুৃমি বাসায়
আসবে
কখখন?.আমার একা একা একদম ভালো
লাগছেনা গো।
- এইতো বাবু আসছি তো। আর হুম রেডি
থেকো
সকালের হিসাব টা তুলা আছে। সেটা সুদ
আসল সহ
নিব।
- রাখ দুষ্টামু তাড়াতাড়ি এসো।
- ওকে বাই বাবু। আমি আসছছি..........
............( ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে
দেখবেন)............
.
writer: Shakil(Prince)