Saturday, November 26, 2016

গল্প: হারানো ভালবাসা

গল্প: হারানো ভালবাসা

মোবাইলের রিংটোনেই ঘুম
ভাঙ্গলো নিহার।
- হ্যালো..
- নিহা আমি মিম.. (কাঁপা কন্ঠে)
- তুই মিম, সেটা তো আমি জানি.. তোর
কন্ঠ এমন শুনা যাচ্ছে কেন? কোন সমস্যা..?
- নিহা আমি মনে হয় শাকিল কে দেখলাম..
- শা.. কি..ল কে দেখলি মানে, কোথায়
দেখলি?
আর মনে হয় মানেটা কি? তুই
কি শাকিলকে চিনিশ না...
- না মানে, শাকিলকে চিনার মত অবস্থা
নাই..
মুখ ভর্তি দাড়ি, এলোমেলো চুল..
ময়লা জামা কাপড় পড়া, ছোট ছোট
ছেলেরা,
ওকে পাগল পাগল বলে # তাঁড়া করছিল..
- তুই ঠিক চিনেছিস..?
- না, তবে ফিফটি ফিফটি... তবে আমি ওর
সামনে যেয়ে শাকিল বলে ডাকলাম ও
আমার
দিকে তাকিয়ে আবার হাটা শুরু করলো...
আমি ওর একটা পিক তুলেছি,
তোকে আমি পিকটা সেন্ড করছি, দেখতো,

শাকিল কিনা..?
- দে..
- দিয়ে দিয়েছি দেখ..
- পিকটার
দিকে তাকিয়ে নিহা কাদঁতে লাগল..
- ওপাশ থেকে নিহার কান্নার শব্দ শুনেই
বুঝতে পারলো.. ওর অনুমান
ফিফটি ফিফটি না, ওটা শাকিল ই ছিল...
- তুই কখন দেখেছিস শাকিল কে?...
- দেখেই তো তোকে সাথে সাথে ফোন
দিলাম...
- তুই কোথায় আছিস এখন...
- ফার্মগেট, সেজান পয়েন্টের সামনে..
- শা..কি..ল কোথায়..?
- তোকে ফোন দেওয়ার পর চোখের আড়াল
হয়ে গেল..
- সীট..
- তবে সংসদ ভবনের ঐ দিক গিয়েছে..
- তুই থাক আমি আসছি..
প্রায় ৪ টা বছর ধরে শাকিল কে খুজছি।
কোথায়ও পাইনি, কোথায়ও না। কেউ ওর
সন্ধান দিতে পারেনি। এমন কোন
যায়গা নেই শাকিল কে খুজিনি।
আজো মনে পড়ে সেই দিনটার কথা। শাকিল
আমি, মিম আমরা খুব ভালো ফ্রেন্ড
ছিলাম।
ভার্সিটি লাইফে আমরা তিনজন
ছাড়া আমাদের আর কোন ফ্রেন্ড ছিল না।
ভার্সিটি লাইফের একদুম শেষের দিকে।
হঠাৎ একদিন শাকিল আমাকে propose
করে বসে। সেইদিন আমি বাসা থেকে রাগ
করে বেড়িয়ে ছিলাম। মন মানষিকতা ও
ভালো ছিলনা। তাই আমিও over reacts
করে campus ভর্তি মানুষের
সামনে শাকিল কে থাপ্পর মেরে,
আরো আজেবাজে কথা বলে, অপমান করা
শুরু
করলাম। মাথা নিচু করে শাকিল
কথা গুলো শুনে চলে গিয়েছিল। সেই
চলে যাওয়াটাই ছিল শাকিলের শেষ
যাওয়া আর আমার সাথেও শাকিলের শেষ
দেখা।
মিমও সেদিন কেঁদে দিয়েছিল, বলেছিল
এতটা reacts না করলেও পারতি। মিম ও
অভিমান করে সেদিন চলে গিয়েছিল।
মিমের অভিমান ভাঙ্গাতে পারলেও
শাকিল
কে আর খুজে পাইনি....।
তার কয়েক দিন পরই বুঝতে পারলাম খুব
ভালবাসি আমি ওকে। সারা দিন-রাত শুধুই
ভাবতাম কিভাবে শাকিলের
কাছে ক্ষমা চাইবো। কিভাকে ওকে বলবো,
আমিও যে ওকে অনেক ভালবাসি।
প্রতিটা দিন ওর অপেক্ষায় থাকতাম
হয়তো আজই শাকিল আসবে। কিন্তু ও আর
আসেনি। মনে মনে চিৎকার করে কাঁদতাম,
আর
বলতাম একটা ভুলের এত বড়
শাস্তি হতে পারে না.... বিশ্বাস ছিল
শাকিল কে একদিন না একদিন খুজে পাব..।
আমি আমার ভুল স্বীকার করে জানতে
চাইবো,
কেন আমাকে এত বড় শ্বাস্তি দেওয়া হল...?
- হেলো নিহা! কোথায় তুই
- এইতো আমি চলে আসছি।
আজ চারটা বছর পর শাকিল কে দেখছি।
এতো
চেনা
মুখ তবুও অচেনা মনে হচ্ছে। চুল দাড়ি ছেড়া
জামাকাপড়ে একদম অন্যরকম দেখাচ্ছে। এই
শাকিল
কে কেউ সহজে চিনতেই পারবেনা। আমি
হয়তো
ভালোবাসা থেকে চিনেছি। আগে বুঝতাম
না
কেনো শাকিল সবসময় আমার দিকে
তাকিয়ে
থাকতো। আমি ক্লাসে থাকলে কখন
শাকিলের মন
ক্লাসেরর দিক থাকতো না। যেনো মনে
হতো
ওর
মনটা আমার কাছে রেখে গেছে। আর সে
ওইটা না
নিয়ে আমার মনটা নিতে চায়। আমি
ভাবতাম
বন্ধু
মনে করে প্রতিদিন আমায় বাসা অবদি
এগে
দিত।
নানা বাহানায় আমাকে ফোন দিত।
আমি শাকিল মিম তিনজনেই এখন
হসপিটালে
আছি। শাকিল কে আমরা হসপিটালে ভর্তি
করিয়েছি।
আমার যে শাকিল কেই চায়।চার টা বছরে
খুব
ভালোবেসে ফেলেছি শাকিল কে। একবার
হারিয়ে
বুঝেছি হারানোর কষ্ট টা কত। তাই পেয়ে
শাকিল
কে আর হারাতে চাইনা। ডাক্তার বললেন
শকিলকে
সুস্থ করতে একটু দেরি হবে।শারীরিক
কষ্টের
চেয়ে
মানসিক কষ্টা টা বেশি পেয়েছে। তাই
তাকে
ভালো করতে আদর স্নেহ, ভালোবাসা
দিতে
হবে।
তাই শকিল কে বাসায় নিয়ে আসলাম। তার
জন্য
বাসায় একটুও সমস্যা হয়নি। বাবা মা
জানতো
শাকিলের কথা। তারা এটাও জানে যে
সকল
বিয়ের
প্রস্তাব আমি শাকিলের জন্যই না করে
দিয়েছি।
তাই বাবা মা শাকিলের ব্যাপারে কিছু
বলেনি।
৩ মাস পর......
-এই যে নিহা শুনছো আমি চোসমা টা খুজে
পাচ্ছি
না!
- আমি রান্না ঘর থেকে জবাব দিলাম.
দেখো
টেবিলর ওপর রাখা আছে।
একটু পর আবার.....
- এই যে নিহা শুনছো আমি ট্রাই টা
লাগাতে
পারছিনা। একটু হেল্প করো না প্লিজ..
- ট্রাই না পাওয়ার বাহানা । জানি
গেলেই
জড়িয়ে ধরে দুষ্টামু শুরু করবে।
যা ভেবেছি তাই।
- নাও ট্রাই টা বেধে দাও!
- ওর হাত থেকে নিয়ে পরিয়ে দেওয়ার জন্য
কাছে
যেতেই জড়িয়ে ধরে দুষ্টামু শুরু...
এই একদম দুষ্টামু চলবেনা যাও অফিস যাও।
- একদিন অফিস না গিয়ে বউ র সাথে প্রেম
করলে
কি খুব বেশি ক্ষতি হবে শুনি?
- হুম বাবু অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। যাও তো
তুমি
এখন অফিস যাও।
- আচ্ছা বাবা যাচ্ছি.. বাই টাটা.
- এই শুনো যাচ্ছি নয় গো আসছি বলতে হয়।
- এই কেনো তাহলে তো সবাই কনফিউজড
হয়ে
যাবে যে আমি যাচ্ছি না আবার বাসায়
ফিরে
আসছি।
- হয়েছে হয়েছে তোমার সাথে আমি
কোথায়
পারবোনা। যাও সময় হয়ে গেছে।
- আচ্ছা সাবধানে থেকো।
- হুৃম তুৃমিও সাবধানে যেও আর গিয়ে আমায়
ফোন
দিও কেমন?.
- আচ্ছা বাবা দিব বাই
-বাই
হসপিটাল থেকে বাসায় আনার পর
ভালোবাসা
দিয়ে আমি ওকে সুস্থ করে তুলেছি।তার পর
সারা
জীবনের জন্য ওকে আমি আমার করে
নিয়েছি।
শিক্ষিত হওয়ায় সে একটা জব নিয়েছে।
তাই
আমরা
বাসা ভাড়া নিয়ে থাকি। খুব শুখেই আছি
আমরা।
সন্ধার একটু আগে.....
আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। ঘুম টা ভাঙ্গলো
শাকিলের
ফোনে.
- হেলো বাবু কি করো?
- কিছুনা ঘুমিয়ে ছিলাম।
- এমা তাহলে কি আমি আমার বাবুর ঘুম টা
নষ্ট
করলাম?
- না না একদম না। কোথায় তুৃমি বাসায়
আসবে
কখখন?.আমার একা একা একদম ভালো
লাগছেনা গো।
- এইতো বাবু আসছি তো। আর হুম রেডি
থেকো
সকালের হিসাব টা তুলা আছে। সেটা সুদ
আসল সহ
নিব।
- রাখ দুষ্টামু তাড়াতাড়ি এসো।
- ওকে বাই বাবু। আমি আসছছি..........
............( ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে
দেখবেন)............
.
writer: Shakil(Prince)

No comments:

Post a Comment