Thursday, February 23, 2017

গল্প : গল্পের নাম নেই

গল্প : গল্পের নাম নেই

লেখা :উপমা পরি (পরির আম্মু)
.
---হ্যালো, এই শুনছো? বাজার থেকে কি কি
নিয়ে আসবো????
---তুমি এই সময়ে বাজারে কেন????তোমার কি
অফিস শেষ???
---হ্যাঁ শেষ করে বের হয়েছি ভাবলাম শুক্রবার টা
পুরোপুরি তোমাদের সাথে কাটাবো তাই বাজার
করতে আসলাম। এইবার বলো কি কি কিনতে
হবে?????
----আচ্ছা পাঁচ মিনিট পর কল দাও, আমি দেখি কি কি
কিনতে হবে?
---আচ্ছা তারাতারি দেখো আমি ওয়েট করছি।
----পাঁচ মিনিট পরে কল করে, তারাতারি বলো।
----আচ্ছা বলছি তুমি একটু লিখে নাও। তারপর সব কিছু
বলে দিলাম।
---শিশির ছোট্ট করে একটা লিস্ট লিখে নেয়।
.
.
---একটু পরে আবার শিশির কল দিয়ে বলে, এই
শুনছো????
---হ্যাঁ বলো।
---অনেক সুন্দর বাইম মাছ উঠছে। কিনে নিয়ে
আসি???
---এই না, না কিনো না আমি কাটতে পারবেনা। তুমি
তো জানো আমি ভয় পাই।
---না আমি কিনে আনবো তোমাকে শিখিয়ে
দিবো কিভাবে কাটতে হয়, তারপর তুমি কাটবা ।
.
--তোমার যা খুশি নিয়ে আসো, আমি রাখছি।
.
-- আর একটা কথা পরী মামুনীর জন্য কি নিয়ে
আসবো????
----পরীর জন্য কিছু আনতে হবে না।কমলা আর
আঙ্গুর নিয়ে আসো অন্য সব কিছু তো
আছেই।
---আচ্ছা ঠিক আছে আমি এখন রাখছি।
.
----আমি ফোনটা রাখার পরে হাসি। আমি জানি শিশির
বাইম মাছ নিয়ে আসবে না। শিশির বাইম মাছ খুব
পছন্দ করে কিন্তু আমি কাটতে পারিনা তাই নিয়ে
আসেনা। শিশির আমায় খুব ভালবাসে আমার কোন
কিছুতে কষ্ট হোক সেটা চায়না।কিন্তু আমি
এতোটাই ভয় পাই যে বাইম মাছের দিকে
তাকাতেও ভয় পাই।
.
যখন পরীর দাদুর বাসায় আর নানুর বাসায় যায়, তখন ও
বাইম মাছ কিনে। শিশিরের পছন্দের খাবার খাওয়াতে
পারিনা এজন্য ভাল লাগেনা।এবার আম্মুর কাছ থেকে
আমার শিখতেই হবে মাছ কাটা।
.
---রাত আটটার দিকে শিশির অনেক বাজার নিয়ে বাসায়
আসে। আমি পরীকে মাত্র খাইয়ে দিছি, পরীর
বয়স সাত মাস। আমাদের বিয়ের দুবছর পরে পরী
আমাদের ঘরে আলোকিত করে আসে।
.
---শিশির এসেই পরীকে কোলে নিতে
যাবে!!! আমি পরীকে কোলে না দিয়ে বললাম
আগে যাও ফ্রেশ হয়ে আসো, তারপর
পরীকে কোলে নাও। শিশির হাসে আচ্ছা ঠিক
আছে।
.
---শিশির প্রতিদিন এই একই কাজ করে, আর আমার
কাছে বকা খায়। বাইরে থেকে এসে কোলে
নিতে যায়। বাইরে থেকে আসলে অনেক রকম
জীবানু সাথে নিয়ে আসে, হাত মুখ না ধোয়া
পর্যন্ত কোলে নিতে দেয়না। শিশির বাসায়
এসেই অলস হয়ে যায়।আমার বলে বলে করাতে
হয়। যখন পরীকে কোলে দেয়না তখুনি
ফ্রেশ হতে যায়।
.
.
----শিশির পরীকে নিয়ে আদর করছে, আমি বাজার
গুলো ঠিক করছি।কিছু সময় পরে পরীকে
কোলে নিয়ে শিশির এসে বলছে কি ব্যপার
তোমার কাজ কতদূর?? আমাদের বাপ বেটির পেট
তো ক্ষুধায় চো চো করছে। এইতো হয়ে
গেছে আর একটু ওয়েট করো।
.
.
----পরীর বাবা খেতে আসো খেতে দিছি
খেয়ে নাও।
---আচ্ছা আসছি। পরী টা ঘুমিয়ে গেছে একটু
এদিকে আসো তো বিছানা ঠিক করে দাও।
.
----ও ঘুমিয়ে গেছে ঠিক আছে আসছি।
---পরীকে শুয়ে দিয়ে দুজন খেতে বসি। একটু
পরে হটাৎ পরী কান্না করে উঠে, আমি হাতে
ভাত নিয়ে রুমে যেয়ে পরীকে নিয়ে আসি।
শিশির খাওয়া শেষ করে এসে বলে, দাও আমার
কাছে পরীকে দাও। তুমি খেয়ে নাও।
.
---পরীর বাবা পরীকে কোলে নিয়ে শুতে
যায়। আমি খেয়ে দেয়ে সব কাজ শেষ করে
রুমে আসি। পরী পরীর বাবার গলা ধরে শুয়ে
আছে।
.
----সকালে উঠে নাস্তা তৈরি করে, শিশিরকে ডাকি।
আজ এতো বেলা হয়েছে তবু পরী ওর বাবার
সাথে ঘুমাচ্ছে। পরী প্রতিদিন ফজর আজানের
সময় উঠে। সেই কখন খেয়েছে তবু উঠছে
না তাই পরীর বাবাকে বললাম ঘুম থেকে উঠাও
খাওয়াতে হবে।
.
---পরীকে খাইয়ে দেই পরীর বাবা ফ্রেশ
হয়ে নাস্তা করতে বসে। পরীকে কোলে
নিয়ে খেতে বসে আমিও পাশে বসি।
.
----পরী ওর বাবার সার্ট ভরে বমি করে দেয়।
পরী মাত্র খেয়েছে হয়তো পেটে চাপ
লাগছে তাই বমি করে দিছে। আমি বলি পরীকে
আমার কাছে দাও তুমি সার্ট চেন্জ করে এসে
খেতে বসো। পরীর বাবা বলে না আমার
কাছেই থাক আমি এমনি খেতে পারবো। আমি
অবাক হয় সাথে খুশিও বাবা মা তো এমনি হয়।
.
পরী পরীর বাবার জীবন, পরীর কোন কিছু
হইলে আমাকে ছেড়ে কথা বলেনা। শিশিরের
একটাই কথা পরীকে কাঁদিয়ে তোমার কোন কাজ
করতে হবে না। তুমি যদি রান্না নাও করতে পারো?
করোনা কিন্তু পরীকে কাঁদাবা না।
.
.
----শুক্রবারে ওর এক বন্ধুর বাসায় আমরা দাওয়াতে
যায়। সেখান থেকে আসতে লেট হয়ে যায়।
রাস্তায় পরীটা ঘুমিয়ে যায়, রাতে কিছু খাওয়া হয়না
দুজন শুয়ে পরি।
.
----ফজরের আজান হইলে পরী ঘুম থেকে
উঠে পরে। আমি পরীকে নিয়ে অনেক সময়
হাটাহাটি করি, বিছানায় থাকতে চায়না।
.
সাতটা বাজলে শিশিরকে ঘুম থেকে ডেকে
তুলে পরীকে কোলে দিয়ে আমি নাস্তা তৈরি
করি। শিশির ঘুম থেকে সকালে উঠতে চায়না, একটু
ঘুমায় অফিসে নাস্তা করে নিবো।
.
কিন্তু আমি না করি, বাইরের খাবার খেতে দেয়না।
সকালে ঘুম থেকে তুলে পরীকে কোলে
দেয়। আমি নাস্তা তৈরি করি।
.
.
---- এভাবেই যাচ্ছে দিন, অফিসে সময় পাইলেই
শিশির কল করে খোঁজ খবর নিবে।
.
----হ্যালো শিশির শুনছো??
----হ্যাঁ বলো।
---জানো আজ প্রথম আমার পরী বাবা বলে
ডাকছে।
--- তাই ???? আচ্ছা পরীর কাছে ফোন দাও আমি
শুনবো, খুব উচ্ছ্বাস শুরে ....
---পরী বাবা বলোতো, এই যে পরী বলো
বলো বাবা বলো .....।পরী বলছে বা -বা-বা
----শিশির শুনেই খুশি, প্রথম যখন পরীর মুখ
দেখে খুশি হয়েছিলো তেমনি আজো খুশি।
শিশিরের এতো দিনে এটাই মনে হয় চাওয়ার
ছিলো।নিজের সন্তান যখন বাবা বলে ডাকে তখন
সব ছেলের অনুভূতিগুলো সীমাহীন বুঝানো
যায়না।
.
---সেদিন তারাতারি অফিস থেকে আসে, পরীর
সাথে সময় কাটায় আর বার বার বাবা বলতে বলে।
পরী একবার করে ভাংগা ভাংগা গলায় ডেকেই মুখ
লুকায় বাবার কোলে। ওর ডাকা শুনে আমরা দুজনই
হাসি, আমাদের হাসা দেখে পরীও হাসে।
পরীকে নিয়ে ভালোই আছি।
.
.
----হটাৎ একদিন আমি দুপুরে রান্না করছি পরীকে
গোসল দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিছি। পরী ঘুম
থেকে উঠলে সাধারণ বসেই কান্না করে।
পরীর কান্নার আওয়াজ শুনে রান্না ঘর থেকে
এসে দেখি পরী মেঝেতে শুয়ে কাঁদছে।
আমি তো অবাক হয়ে গেছি কাছে এসে দেখি
পরীর অনেক টা মাথায় কেটে গেছে রক্ত
বের হচ্ছে। আমি কোলে নিয়ে মাথা ধরে
আছি। পরী ঘুম থেকে উঠে নামতে লাগছে
আর পরে গেছে, নিচে ওর খেলনা ছিলো।
খেলনার উপর পরে মাথায় কেটে গেছে।
.
--পরীর কেটে যাওয়া দেখে তো আমি কান্না
করে উঠি। সমস্ত কষ্ট যেনো আমার কাছে
এসে ভর করছে। কি করবো কিছু ভাবতে পারছি না।
আমার পা টা যেনো থেমে আছে। কি করবো
কিছুই ভেবে পাচ্ছি না।আমার নিজের নিশ্বাস টা
যেনো আটকে যাচ্ছে।
.
কিভাবে যেনো পরীর মাথায় হাত চেপে ধরে
পাশের ফ্লাটে ভাবির কাছে যেয়ে বলি পরীর
বাবা কে কল দিয়ে এখুনি আসতে বলেন।
.
.
----আমি ভাবির সাথে করে নিচে এক ডাক্তারের
কাছে যেয়ে প্রাথমিক ট্রিটমেন্ট করি। পরীকে
কোলে নিয়ে কেঁদেই যাচ্ছি, ওই ভাবি আমাকে
বুঝায়। দেখো কিছু হবে না ঠিক আছে তো
একটু কেটে গেছে। এতো টেনশনের কিছু
নাই।
.
আমরা যখন ডাক্তারের কাছে তখুনি পরীর বাবা
আসে, ট্রিটমেন্টে হয়ে গেছে পরীকে
কোলে নিয়ে বাসায় আসে। আমার সাথে কোন
কথা বলেনা।
.
---বাসায় আসার পরে শিশির বলে। পরীর কাটলো
কিভাবে?? খুবই রাগের সুরে।
---আমি যেই না বলছি রান্না রুমে ছিলাম, পরী কান্না
করছে বুঝতে পারিনি এসে দেখি পরী
মেঝেতে।
.
--ঠাস করে একটা থাপ্পড় দিয়ে বলে তোমাকে না
বলছি পরীর কাছে সব সময় থাকবে?? পরীকে
কাঁদিয়ে কিছু করবানা।তোমার একটাই কাজ পরীকে
ভাল ভাবে লালনপালন করা। যেদিন রান্না করতে
পারবে না আমাকে বলবে?? আমি হোটেল
থেকে খাবার এনে দিবো।
.
----আহহ বলে আমি বাম হাত মুখে দিয়ে, বলছি
দেখো পরী আগে উঠে কান্না করে এভাবে
বিছানা ছেড়ে নামে না। আজ কান্না না করেই
নামতে লাগছে মনে হয় আর ......
---চুপ বেশি কথা বলবানা এখান থেকে যাও। পরী
এখন বড় হচ্ছে জানোনা?? ও নিজে নিজে সব
কাজ করতে চাইবে, তাই দেখে দেখে রাখতে
হবে।
.
---দেখো আমি পরীর খাবার গরম করতে গেছি
ওকে খাওয়ানোর জন্য। সরি শিশির কাঁদো কাঁদো
ভাবে।আমি পরীকে কোলে নিতে যাই শিশির
বলে এখন আমার কাছে থাকুক আপনার কাজ থাকলে
করে নেন।
.
----পরী তো ঘুমিয়ে গেছে আমার কাছে দাও,
আর তুমি খেয়ে নাও।
----আমার খিদে নেই, আমি এখন খাব না।
---জানি এখন শিশির আর খাবেনা , পরীর কিছু হইলে
শিশিরের মেজাজ ঠিক থাকে না। উল্টা পাল্টা সব
বলে।
.
---শিশিরের কি একা কষ্ট হচ্ছে??? আমরাও তো
কম কষ্ট হচ্ছে না। এটুকু মেয়ের কত রক্ত
পরছে ব্যথা হবে। ইশস আমার কাটলে তবু হতো
আমার পরীর কেন ব্যথা পেলো? পরীর
কাটাতে আমার মনে বিষন্নতা সৃষ্টি হয়। শিশির আমার
সাথে খারাপ ব্যবহার করলো, কথা বলছে না।আমার
যেনো সময় কাটেনা, কবে পরী ভাল হবে!!!
.
---সন্ধ্যার পরে পরীকে কোলে নিয়ে
আছে শিশির। আমি ওর কোলে থেকে নিয়ে
খাইয়ে দেয়। শিশির ডাক্তারের কাছে কল দিয়ে
সব ঔষুধ খাওয়ানোর কথা জেনে নেয়। আমার
খাওয়ানো শেষ হইলে পরীকে শিশির ওষুধ
খাইয়ে দেয়। আমার সাথে শিশির কথা বলছে না।
.
----পরীকে কোলে নিয়ে টিভি দেখছে,
পরী বাবার কোলের মধ্যে চুপটি করে বুকের
সাথে লেপে রয়েছে। আমি খাবার টেবিলে
দিয়ে শিশিরকে বলি, তোমার খাবার টেবিলে দিছি
খেয়ে নাও।
.
---শিশির আমার কথা শুনেও না শুনার ভান করে
থাকে। এখনো শিশিরের রাগটা কমেনি, কোন মা
কি ইচ্ছে করে সন্তানের ক্ষতি করে??? এটা শিশির
বুঝতে পারছে না কেন???? শিশিরের রাগ কম
কিন্তু পরীর ব্যাপারে কোন কিছু সেক্রিফাইস
করেনা।
.
---পরীর কাটা জায়গায় হটাৎ শিশিরের হাত লেগে
ব্যথা পায়। পরী কান্না করে উঠে আর থামেনা,
পরীর বাবা এতো থামাতে চেষ্টা করে কিছুতেই
থামে না। আমি পরীকে কোলে নিয়ে আদর
করি, একটু চুপ করে। পরীকে খাইয়ে দিয়ে ঘুম
পাড়িয়ে দিতে যেয়ে আমিও ঘুমিয়ে পরি।
.
---রাত এগারোটার দিকে আমার মাথায় কারো হাতের
স্পর্শ পায়। চোখ খুলে তাকিয়ে দেখি পরীর
বাবা, নিমী উঠো চলো খাবে।
.
---আমি কিছু না বলে পরীর দিকে মুখ ঘুরাই।
.
---নিমী সরি, আমার ভুল হয়ে গেছে তোমার
সাথে অনেক দূর ব্যবহার করে ফেলছি। আমাকে
ক্ষমা করে দাও।এখন উঠো খেয়ে নিবে।
.
----আমার খিদে নেই এখন খাবোনা তুমি যাও একটু
অভিমান সুরে ...
---আচ্ছা এতো কথা বলোনা চলো খাবে, বেশি
কথা বললে পরী উঠে যাবে।
---আমি তবু উঠছিনা দেখে আমাকে কোলে
নিয়ে ডায়নিং এ বসায়।
.
শিশির নিজের হাতে খাবার নিয়ে এসে খাইয়ে
দিতে যায়, আমি মুখে খাবার নিচ্ছি না।
---নিমী সরি আমার ভুল হয়ে গেছে, পরে
বুঝতে পারছি এরকম করাটা ঠিক হয়নি। আচ্ছা ঠিক
আছে আর কখনো বকবো না। এবারের মত
ক্ষমা করে দাও।
.
----আমি কাঁদছি, শিশির আমার পরী টা খুব ব্যথা
পেয়েছে। শিশির বাম হাত দিয়ে পানি মুছে দিয়ে
ইশারা করে কাঁদতে নিষেধ করে, কপালে
আলতো করে একটা চুমু দেয়।এবার খাবার মুখে
তুলে দিচ্ছে আমি খাচ্ছি .............
.
(কিছু কিছু বাবারা আছে সন্তানের কিছু হইলে
স্ত্রীর উপর রাগ করে। মা কখনো ইচ্ছে
করে সন্তানকে ব্যথা দেয় নাকি????? সন্তানের
কিছু হইলে বাবার থেকে মা বেশি কষ্ট পায়, এটা
বুঝতে হবে। এই সময় স্ত্রী কে বকাঝকা না
করে।,মেন্টালি সাপোর্ট দেওয়া প্রর্ত্যেক
হাজব্যান্ডের দায়িত্ব)

অনূভুতি

অনূভুতি

লেখকঃ অতপরঃ হিমু

ইদানিং কেউ সকাল বেলা good morning বললে মাথার
মেজাজ চরম আকার ধারণ করে, প্রত্যেক দিনের
মত বোরিং একটা দিন।
what so good about this morning ! মনে মনে
এমন অনেক কিছু ভাবতে ভাবতে অভি ফেসবুক
থেকে লগ আউট করে।
ফ্রেশ হওয়ার জন্য বাথরুম এ গিয়ে সারাদিনের
পরিকল্পনা করতে থাকে। মিথিলার সাথে গতকাল
রাতে মোটামুটি A লেভেলের ঝগড়া হয়েছে।
যদিও অভি এখনো বুঝতে পারছেনা ঝগড়ার বিষয় কি
ছিল! চেষ্টা করবো আজকে সারাদিন ওকে কল না
করতে , মনে মনে ঠিক করল অভি।
কিন্তু সমস্যা হল ঝগড়ার ফলাফল প্রত্যেকবার অভির
বিপরীতে যায়,,,এবং অভিকে তা প্রত্যেক বার
মেনে নিতে হয়। না মেনে অবশ্য উপায়ও
নেই
মিথিলার মত মিষ্টি মেয়ে খুব কম ই আছে।
অবশ্য প্রথম দর্শনে প্রেম জাতীয় কিছু হয়নি
ওদের,,
উল্টো উদ্ভট কিছু কারণে শুরু থেকেই একজন
অন্যজন কে অপছন্দ করত।
কারণটা ঠিক কি ছিল তারা নিজেরাও সঠিক জানেনা। যাই
হোক বাথরুম থেকে বের হয়ে দেখে
মোবাইলে ৩ টা মিস কল,,,,বুক ধরফর করে উঠে,,
মিথিলা হলে তো নিশ্চিত A লেভেলের ঝগড়া ।
ভাগ্য ভাল মিথিলা নয়,,, রুপুর মিস কল। কল ব্যাক
করবেনা ঠিক করে বাসা থেকে বের হবে ওমনি
আবার কল , রিসিভ করতেই রুপুর ঝাঁজালো কণ্ঠ
- কোথাই ছিলি তুই? কল রিসিভ করতে এতক্ষণ
লাগে?
- কি হয়েছে এত চেঁচাচ্ছিস কেন?
- কাল রাতে কি তোর মিথিলার সাথে ঝগড়া
হয়েছিল?
হঠাৎ করে এই প্রশ্ন কেন! হালকা একটু ভয়
পেয়ে
অভি জিজ্ঞেস করে,,,,,
- কেন বলছিস?
- তোকে কেউ কিছু বলেনি?
- কে কি বলবে?
- আচ্ছা তুই এক কাজ কর গলির মুখে আয়
- কি হয়েছে খুলে বল........
উত্তর পাওয়ার আগেই লাইনটা কেটে দিল রুপু,,,
ভয়টা বেড়ে গেল। তাড়াহুড়া করে রিকশা নিয়ে
গলির মুখে রওনা দিল অভি। মাথার মধ্যে হাজার
রকমের চিন্তা। অভি আসার আগেই রুপু উপস্থিত।
বলল ঃ
- মিথিলা হাসপাতালে।সবাই বলছে কাল রাতে ও
নাকি কি করেছে,!!!
- সকাল বেলা ওকে ডাকতে গিয়ে দেখে ওর
কোন
সাড়া না পেয়ে ওর ভাইয়া ওর রুমের দরজা খুলে
দেখে ও বিছানার নিচে পরে আছে...
রুপুর আর কোন কথা অভির কানে ডুকলোনা ।
কত্তেকে অনেকগুলো জল চোখে এসে
ঠেকল ।
মুখ দিয়ে কিছু বের হওয়ার আগেই চোখ দিয়ে
জল
গড়িয়ে পড়লো। মাথায় স্লাইড শো শুরু হয়ে
গেল।
প্রত্যেক মুহূর্ত ছবির মত অভির চোখের
সামনে
ভাসতে লাগলো,, এমনটা তো হওয়ার কথা ছিলনা।
অভি হঠাৎ ভয় পেয়ে গেল ও অনুভব করল
মিথিলাকে ছাড়া আমি বাঁচবো কি করে? সারা পৃথিবী
অভির কাছে বিষাদময় মনে হল।
এমন সময় রুপুর মোবাইলে কল এলো
- হ্যাঁ বল। হ্যাঁ আমি আসছি। হ্যাঁ হ্যাঁ অভি আমার
সাথেই আছে ।
- তোরা পৌঁছে গিয়েছিস? এই আর মাত্র পাঁচ মিনিট
সারা পথে অভি কিছু বলতে পারলোনা । হঠাৎ
রিকশাটা রেস্টুরেন্টের সামনে এসে থামল।
রুপু বলল
- এই, নাম।
- এখানে কেন?
- কেউ একজন অপেক্ষা করছে!
- মানে?
- আরে নাম তো আগে রিকশা থেকে,,নেমে
রুপু আর অভি সোজা রেস্টুরেন্টের দিকে
হেঁটে গেল।
রেস্টুরেন্টের দরজা খুলতেই অভি দেখতে
পেল
মিথিলার সব বন্ধু-বান্ধবদের। তারা সবাই হাঁসছে।
এতগুলো মানুষের মাঝে অভির চোখ খুঁজতে
থাকে
মিথিলাকে। অবশেষে সবার শেষে অভি
দেখতে
পেল মিথিলাকে। জানালার পাশের টেবিলটায় বসে
আছে,, হালকা রোদ পড়েছে ওর মুখের উপর,
সম্ভব রকমের সুন্দর লাগছে ওকে,ঠিক যেন
অপ্সরা
অভির চোখ ছলছল করে উঠল চোখের
পানিতে, তবে খুশিতে মিথিলার কাছে গিয়ে কাঁপা কাঁপা
গলায় বলল
- আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি তুমি জানো?
- তোমাকে ছাড়া আমি একটা মুহূর্ত আমি থাকতে
পারব না। তোমার কিছু......
কথা শেষ করার আগেই মিথিলা অভিমানী সুরে
বলল
- এত ভালোবাসো যে আমার জন্মদিনটা পর্যন্ত
ভুলে গেলে? গতকাল রাতে এত হিন্টস দিলাম কিন্তু
কিচ্ছু
বুঝলেনা। তাই তোমাকে এই শাস্তিটা দিলাম
অভি এখন বুঝতে পারল গতকাল রাতের ঝগড়ার
বিষয়টা কি ছিল। লজ্জিত সুরে বলল
- I am sorry, and I love you.
(মনে মনে বলল জীবনটা আসলেই অনেক
সুন্দর)
এবারের ঝগড়ার ফলাফলটাও অভির বিপরীতে গেল
, তবু অভি খুব খুশি কারণ অভি জানে মিথিলাকে ছাড়া অভি
অসম্পূর্ণ। মিথিলার এই জন্মদিনের শাস্তি তথা সুসাইড
নাটক অভিকে শুরুতে অনেক কষ্ট দিলেও
শেষে দিল জীবনের অন্যতম বড় পাওয়া.

Wednesday, February 22, 2017

★★প্রপোজ ★★

★★প্রপোজ ★★
.
✎✍═লেখা: অভিমানী হিমু (পড়া চোর)
.
.
------এই শুন না??(অভি)
-----হুম বল(মেঘলা)
-----মন খারাপ??
----না (অভিমানী সুরে)
----তাহলে কথা বলস না কেনো??
----এমনি যা তো এখান থেকে
-----ঐ রাগ করিস কেন?? একটা কথা বলার ছিলো
-----হু
-----বলবো?
-----হুম বল
------আমি
-------কি?
-----তোকে
-----আমাকে কি(চোখে মুখে হাসির ছাপ)
-----
------ঐ বল না তুই আমাকে কি??বলনা প্লিজ
----- না মানে তকে একটা কথা বলার ছিলো।
---হ্যা বল(খুশি হয়ে)
------তুই রাগ করবি না তো???
------আরে না রাগ
করবো না তুই বল (অনেক দিন ধরে শুনার জন্য
অপেক্ষা করছি কি রাগ করার জন্য ফিসফিস করে
বলে)
-----আমি না এক জন কে ভালোবাসি..
-----হুম জানি তো
------বলতো কাকে??
-----না তুই ই বল
-----ওই যে আমাদের ক্লাসের রিয়া নামে একটা
মেয়ে আছে না ওকে। মেয়েটা অনেক কিউট
তাই না রে????জানিস মেয়েটার উপর প্রতিদিন ই
ক্রাশ খাই।দুস্ত তুই একটু বলে দে না
------কিইইইইই???রিয়া একটা কিউট মাইয়া।তর কি বাজে
চয়েজ।ওর থেকে আমি কত কিউট দেখছোস
------ঐ আমার রিয়াকে নিয়ে খারাপ কথা বলবি না
-----কি আমার থেকে এখন অই রিয়া নামের
মেয়েটা বড় হয়ে গেছে তাই না।থাক তুই। আমার
সাথে আর কোন দিন ও কথা বলবি না।
.
কথাগুলা বলেই হনহন করে চলে গেলো।
এতখন কথা হচ্ছিল অভি ও মেঘলার সাথে। দুজনেই
এক সাথে ভার্সিটিতে লেখাপড়া করে।খুব ভালো
বন্ধুত্ব ওদের।একটা ছেলে আর মেয়ে
কখনো সারাজীবন বন্ধু হয়ে থাকতে পারে না
তাদের মাঝে ও তাই হলো। মেঘলা অভিকে খুব
ভালোবাসে।অভি যে বাসে না
তা কিন্তু নয় অভি ও খুব বেশি ভালোবাসে।অনেক
দিন প্রপোজ করতে গিয়েও প্রপোজ করে নি
আর এই নিয়ে সে কি রাগ। সব মেয়েই চায়
ছেলেরা আগে তাদের ভালোবাসার কথা বলুক
মেঘলাও তাই চায় অভি যেন তাকে আগে
প্রপোজ করে। কিন্তু অভি উল্টো সে চায়
মেঘলা তাকে আগে প্রপোজ করোক।
.
ধুর একা একা আর ভালো লাগে না। কেনো যে
মেয়েটাকে রাগাতে গেলাম।না আর না আজ
প্রপোজ করেই দিবো।ফোনটা হাতে নিয়ে
ফোন দেয় কিন্তু ফোন অফ।অনেক বার
চেষ্টা করে কিন্তু বার বার একই কথা বলছে।
মেয়েটাকে নিয়ে আর পারা যায় না।মেঘলার
আম্মুকে ফোন দেয় অভি
----হ্যলো আন্টি আসসালামু ওলাইকুম (আমি)
----ওলাইকুম আসসালাম(আন্টি)
---কেমন আছেন আন্টি?
------জি বাবা ভালো। তুমি কেমন আছো?
---জি আন্টি ভালো।আন্টি মেঘলা কই?? অর ফোন
অফ কেনো??
------আর বলোনা বাবা ভার্সিটি থেকে এসেই
রোমের দরজা লাগিয়ে দিছে আর খুলছেই না।
কত করে বললাম কি হয়ছে আমায় বল অই কিছুই
বলছে না।সারা দিন কিছু খাইও নাই
------অক্কে আন্টি আমি আসছি
----আচ্ছা তুমি এসে অকে একটু বুঝিয়ে যাও বাবা
---অক্কে আন্টি
..
বন্ধুকে ফোন দেয়
----ঐ শালা মেঘলা তো রাগ করছে (অভি)
----কেন(রাজু)
-----সকালে তর বুদ্ধিমত রিয়ার কথা বলছি তার পর
থেকেই ফোন অফ করে রাখছে(সকালে
মেঘলার কথাটা রাজুই আমাকে বলতে বলছিল যাতে
রিয়ার কথা শুনে রাগ করে আমায় বলে দেয়
ভালোবাসি কিন্তু উল্টো হল রাগ করে চলেই
গেলো। বললো না ভালোবাসি)
-----দুস্ত তাহলে তকেই এখন প্রপোজ করতে
হইবো
------ঐ হারামী তুই এই গুলা কিতা কছ। আমি পারতাম না
------না পারলে বইসা বইসা আঙুল চুসো।শালা প্রেম
করতে আইছে। প্রেম করতে গেলে সাহস
লাগে (রাগ করে বলে রাজু)
-------ঐ শালা আমার কি সাহস কমরে??এই এক্ষুনি
যাইতাছি মেঘলারে প্রপোজ করার লিগা। শালা মনে
রাখিস তুই আমার বিয়ার দাওয়াত পাবি না
-----যা দাওয়াত দিতে হইবো না। বিনা দাওয়াতে বিয়ে
বাড়ি গিয়ে খাওয়া তুই তো শিখাইছিস। (আসলে আমরা
দুজনে বিনা দাওয়াতে অনেক বাড়ি গিয়ে খেয়ে
আসছি তো)
------চোপ শালা
----ঐ শুন
টুট..টুট...টুট.....ফোনের লাইনটা কেটে দেয়
অভি।এখন যা করার আমাকেই করতে হবে। বুকের
মধ্যে ১কেজি সাহস নিয়ে মেঘলাদের বাসার
দিকে যায়।
.
.
মেঘলাদের বাসার নিচে অপেক্ষা করছে অভি।
হাতে ছোট্ট একটা গিফট। এই গিফটের ব্যবস্থা
করতে গিয়েই অনেক রাত হয়ে গেছে।
কলিংবেল বাজাতেই মেঘলার ছোট ভাই দরজা
খুলে দেয়
----কেমন আছো ভাইয়া?তোমার আপু কই?
----ভাইয়া আপু তো রোমে
----অক্কে তুমি এই গিফটা নাও।এটা তোমার আপু কে দিবে আর এই চিঠিটা
(হাতে গিফট আর চিঠি দিয়ে বলে)
-----অকে ভাইয়া
------এখনি দিবে কিন্তু আর বলবা আমি ছাদে আছি
------আচ্ছা।
.
মেঘলার ভাইয়ের কাছে জিনিসগুলো দিয়ে অভি
ছাদে চলে যায় আর মেঘলার ভাইয়াও মেঘলাকে
গিফটগুলি দিয়ে আসে। .
মেঘলা এখনো খুব রাগ করে আছে। পাগলটা গিফট
দিয়ে গেলো কিন্তু একবার ও আমার সাথে কথা
বলতে চাইলো না একবার দেখা ও করলো না।
লাগবে না ওর গিফট।গাল ফুলিয়ে বসে আছে
মেয়েটা।অনেক সময় চলে যায় না পারে না
মেয়েটা ভালোবাসার মানুষের সাথে কি এত রাগ
করে থাকা যায় নাকি কথাগুলি ভেবে একাই মুচকি
হেসে উঠে।প্রথমে চিঠিটা হাতে নে।
সেখানে অনেক সুন্দর করে লেখা """কিরে রাগ
করছিস.?রাগ করিস না প্লিজ।তোর জন্য অনেক
কষ্ট করে একটা গিফট আনছি আর হ্যা গিফটা কিন্তু
অন্ধকার রুমে খুলবি"""" চিঠিটা পরে চিন্তায় পরে যায়
মেঘলা।অন্ধকার রুমে খুললে দেখবো কি
করে।অভির কথা ফেলতে ও পারবে না তাই
অন্ধকার রুমে গিফটা খুলে মেঘলা।খুলে তো
মেঘলা অবাক চোখ কপালে উঠে গেছে।পাগল
ছেলেটা এসব কি করছে।অনেক গুলো
জুনাকিপোকার মাঝে রঙিন ছোট্ট একটা চিরকুট।
ছোট্ট করে লেখা ভালোবাসি। জুনাকিপোকার
মিষ্টি আলোতে রঙিন লেখাটা যেন একবার
জ্বলছে আবার নিভছে।মেঘলাকে এখন ছাদে
যেতে হবে কারন অভি যে তার জন্য অপেক্ষা
করছে।দৌড়ে ছাদে চলে যায় মেঘলা।ছাদের এক
কোনে দাঁড়িয়ে আছে অভি। মেঘলা পিছন
থেকে ঝাঁপিয়ে পিরে অভির উপর।
-----ঐ এভাবে কেউ আসে?(রাগ করে)
---- আসবো হাজারবার আসবো।
----আমি যদি এখন পরে যেতাম
-----ইশ বললেই হলো নাকি আমি কি
তকে পরে যেতে দিবো নাকি
----কেন তুই কি করবি
-----বুকে জুড়িয়ে নিবো
----তাই?তোর ছোট্ট বুকে আমার জায়গা তো হবে না
-----কেনো? জায়গাটা ছোট হলেও তোর জন্য
অনেক ভালোবাসা আছে তো
-----হুম।
-----কিসের হুম প্রপোজ কর
----না করলে হবে না
-----না হবে না(রাগ করে)
----তুই তো জানিস আমি প্রপোজ করতে জানি না
(মন খারাপ করে)
------আমি এত কিছু জানি না।
প্রপোজ তকে করতে হবে আর তুই না এখন
থেকে তুমি করে বলবা অতঃপর অভি হাটুগেরে
মেঘলার দিকে হাতদুটি বাড়িয়ে দেয়"ভালোবাসবি
আমায়??সারা জীবনের জন্য তোর হাত ধরার
অধিকার দিবি? তর সাথে সারাজীবন মিষ্টি ঝগড়া করার
সুজুগ দিবি আমায়।সকালের কুয়াশা ভেজে ঘাসের
উপর দিয়ে হাত ধরে হাটার অধিকারটুকু দিবি আমায়??
-------হুম
------ভালোবাসি
------আমিও অনেক বেশি
ভালোবাসি আমার জুনাইপোকা।

"দুষ্টু মিষ্টি ভালবাসা"

"দুষ্টু মিষ্টি ভালবাসা"

সকাল ৫ টা, শান্ত ঘুম থেকে উঠে প্রকৃতির ডাকে
সাড়া দিতে গেছে(টয়লেট)।সাথে তার ফোনটা
আছেই।এটা তার নিত্যদিনকার অভ্যাস।যখন তার
জরুরি মুহুর্ত চলে তখন ফেবুতে ঘুরাঘুরি করে।
টয়লেটে বেকার বসে থাকার চাইতে মুখবইটা
একটু
ঘাটাঘাটি করাটাই শ্রেয়।প্রতিদিনের মত
ফেবুতে লগিন করে কমেন্টস এর রিপ্লায়
করছে।
হঠাত বাধা দিলো অথৈ।মানে অথৈয়ের ফোন।
মেজাজটা ৪৪০ ভোল্ট।কিন্তু না চড়ুই পাখিটা
ফোন দিছে।মেজাজ গরম করলে চলবে না।
শান্ত
ফোন ধরল।
-হ্যালো বাবুই পাখিটা। (অথৈ)
-হুমম চড়ুই পাখিটা।(শান্ত)
-কি করো তুমি?
-আউটপুট ডিভাইসটা প্রোসেসিং এ আছে তাই
আমি বসে বসে অপেক্ষা করতেছি আর মাঝে
মাঝে হাল্কা পাদিতেছি আর পারলে একটু
কুতিতেছি।
-আরেহ কি করতেছো সোজাসুজি বললে কী
হয়?
-হেহে... । আমি এখন টয়লেট এ।
-বাদর কোথাকার।তুমি না কোনদিনো
পাল্টাবানা।কই একটু রোমান্টিক হবা তা না
সবসময় শুধু মজা করো।
-এহহহ... । আমি রোমান্টিক না বুঝি???
-না মোটে ও না।তাড়াতাড়ি টয়লেট থেকে বের
হয়ে অযু করে নামায পড়ে আমারে ফোন দিবা।
আমি তোমার ফোনের অপেক্ষাই থাকবো।
-ওকে বান্দরনি।
-ওই কি বল্লা??
-আরেহ আমি যদি বান্দর হই তুমি তো আর
বাঘিনী হতে পারো না???
-দুষ্টু কোথাকার।বাই।
-ওকে বাই।
শান্তর দুষ্টুমি ভরা ভালবাসা অথৈয়ের ভালই
লাগে।আর ভাল লাগবেইনা বা কেনো?
ছেলেটাতো আর খারাপ না?
অত:পর শান্ত টয়লেট থেকে অবমুক্ত হয়ে
ফযরের
নামায পড়ে এক দৌড়ে ছাদে চলে যাই।প্রতিদিন
সকালে ছাদে এসে ফোনে কথা বলে ওরা।ভালই
লাগে।সকালের স্নিগ্ধ বাতাস।ভোরের পাখির
কলোরব আর পুর্ব দিগন্তের রক্তিম সুর্যটা।সবকিছু
মিলে বেশ ভালো একটা অনুভুতি।
ওপাশ থেকে অথৈ ফোন দিচ্ছে আর মিটি মিটি
হাসতেছে শান্তর ফোনের কলার টিউন
শুনে,"আপনি যার নাম্বার এ ফোন দিছেন তিনি
তো একজন বিরাট ইম্পোর্টান্ট লোক,জানেন
তো
উনি উনার কাজ নিয়ে সবসময় ব্যাস্ত............."
অথৈ মনে মনে বলছে,"হালারপু হালা তুই
জীবনেও শুধরাইবিনা।"
ওপাশ থেকে শান্ত ফোনটা ধরল।
-হ্যালো।(শান্ত)
-হুম। (অথৈ)
-কি হুম??
-কি করো??
-চেষ্টা করতেছি।
-কি চেষ্টা করো?
-রোমান্টিক হইতে।
-এহহ না।তুমি যেমন আছো তেমন ই থাকবা।এটাই
আমার পছন্দ।
-তাই বুঝি??
-হুম।তাই ই তো।ওই তোমারে একটা প্রশ্ন
করব?
-কেনো নয় গো?এক্ষুনি করো।
-তুমি আমারে কতটা ভালবাসো?
-হেহে...
-হাসো ক্যান?
-এইটা কোনো প্রশ্ন হইলো?
-এহহ আগে উত্তর দাও।
-গোপাল ভাড়ের ভুড়ি যতটা বরো আমি
তোমাকে
ততটা ভালবাসি।মটু পাতলুর বন্ধুত্ব যতোটা আমি
তোমাকে ততোটা ভালবাসি।চিংগাম দিনে
যতোবার আইনের কসম দেই আমি তোমারে
ততবার বলবো ভালবাসি।টম আর জেরির মধ্যে
যতোটা শত্রুতা আমি তার চৌদ্দ গুন বেশি
ভালবাসি।আরো শুনবা??
-তুমি আবার আমার সাথে মজা করতাছো?আমি
কিন্তু এবার কেদে ফেলবো বলে দিলাম।
- না চড়ুই পাখিটা তুমি কাদে না।তুমি কাদলে
তো আমার ভাল লাগবে না।বুঝনা তুমি?
-হুম তাইলে তুমি মজা করলা ক্যান একটু
রোমান্টিক ভাবেউ উত্তরটা দেয়া যাই নাকি?
-হুম।
"ভালবাসি তোমায় আমি বোঝাবো কী করে,
বর্ষায় বৃষ্টি যেমন অঝোর ধারায় ঝরে।
ভালবাসি তোমায় আমি বলতে পারি হেসে,
মৎসকূল যেমনটা না পানিকে ভালবাসে।
ভালবাসি তোমাই আমি আমার নিজের মত করে।
ভালবাসি তোমায় আমি আমার নিজের স্বপ্ন
মাঝে।
ভালবাসি তোমায় আমি ঠিক ততোটা যতোটা
ভালবাসে রৌদ্রদগ্ধ চৌচির মাঠটা ওই বৃষ্টিকে।
মৌমাছি যতোটা না মধুকে ভালবাসে আমি তার
চাইতেউ তোমাকে বেশি ভালবাসি গো।"
দেখো আমার চড়ুই পাখিটা আমি আর উদাহরন
খুজে পাইলাম না।আর একদিনেই যদি এতো
ভালবেসে ফেলি তাইলে বাকি জীবনটাতে কি
হবে বলো।
-হুম।অনেক ভালবেসে ফেলছো আর ভালবাসা
লাগবে না।
-কিন্তু তোমার মত পেত্নীকে আমি এতো
ভালবাসি ক্যান?
-কী বল্লা আমি পেত্নি?
-না তো তুমি তো পেত্নী না।
-তাইলে বল্লা যে?
-কই ওটা তো ভুল করে বলছি তুমি তো
পেত্নী না
শাখচুন্নী।
-আজ কলেজে ৮ টাই চলে আসবা।
-ক্যান ১ ঘন্টা আগে ক্যান?
-আমি না পেত্নি আর শাখচুন্ন? আজ তোমার ঘাড়
মটকাবো তাই।
-আচ্ছা আমার মিষ্টি কিউট পরীটা যা বলবে
তাই হবে।
-হুম হইছে।যাও ব্রেকফাস্ট করে ফ্রেশ হয়ে
নাও।
রাখতাছি এখন।
-হুম যাবো কিন্তু আমার ব্রেকফাস্টের খাবারটা
তো তুমি দিলানা?
-আমি দিবো মানে?
-আরেহ তোমার অইটা না পাইলে যে আমার
ব্রেকফাস্ট হবে না।প্লিইইইজ.....
-আচ্ছা চোখ বন্ধ করো নাহলে তো আমি লজ্জা পাবো???
-হুম বন্ধ করছি এবার দাও।
-(সেই মধুর চুম্বনের শব্দ আপনাদের শুনানো
যাবে
না) পাইছো?
-হুম পাইছি বাট একটাতে কি পেট ভরে বলো?
-হেহে.... বাকিটা কলেজে আসো তারপর
দিব।এখন রাখি।
অত:পর ফোন দুইটা দম ছেড়ে বাচলো।শান্ত
চলে
গেল ব্রেকফাস্ট করতে ওদিকে অথৈও।
শান্ত আজ একটু কম করেই খেলো।কারন
কলেজে
নাকি আজ বাকি নাস্তা টুকু রয়ে গেছে।সেটা
কলেজে না গেলে খেতে পারবে না।
এভাবে দুষ্টুমি ভরা ভালবাসার গল্পটা চলতেই
থাকবে।








->শান্ত (পিচ্চি শয়তান)