Monday, July 25, 2016

বান্ধবী - বউ

বান্ধবী - বউ

--বউ ও বউ
-- কে তোর বউ?
-- কে আবার তুই
-- মাথা খারাপ আমি তোর বউ হতে
যাবো কেন রে?
-- তো কার হবি... তাহসানের? যা
দেখ যদি সিরিয়ালে তোর চান্স
হয়! অনেকেই তো খাড়ায় আছে
-- মনে কর না লাইনের প্রথমটাই আমি
(ওরে সাবা কি হারামি রে মনে
মনে))
-- ও তো যা! আমাকে ডাকছিস
ক্যান?
-- তোকে তো গার্ড হিসাবে
আনছি! এই পার্কে তো আর একা একা
আসা যায়না
-- দেখ আখি এবার কিন্তু আমাকে
অপমান করছিস!
-- হাহাহাহা
-- একদম হাসবি না হাসলে তোকে
একদম রাক্ষসী রানি কটকটির মত
দেখায় ( যদিও মেয়েটি অনেক সুন্দর
করেই হাসে)
-- কি বললি তুই... (ডুম)
-- ইসস... এই তুই মারলি কেন?
-- আরেকটা কি দিবো
-- না থাক! যা দিয়ে ছিস এতেই
হবে! বাবারে তোর কি শক্তি রে!
আরেকটু হলেই ওপরেই চলে যেতাম
-- কি... কি বললি? আরেকটিবার বল
-- কই কিছুনাতো হিহিহি
.
* নিরবতা
.
-- কি জন্য ডেকেছিস এই অবেলাই?
বল্লিনাতো?(আমি)
-- এটা অবেলা?
--তা নয়তো কি? এই দুপুর বেলায়
পার্কে তো পিপীলিকারাও
আসেনা! আর আমি জান্ত একটা পুরুষ
মানুষ
-- ও আচ্ছা তাহলে.. এটা দুপুর তাইনা!
তো বিকাল কোনটা শুনি?
-- ওত কিছু জানিনা! কি জন্য
ডেকেছিস সেটা বল! .
-- এমনিতেই!
--ইসসস! ইচ্ছে করছে না
-- কি
-- গুলি করে যদি মাথাটা উড়িয়ে
দিতে পারতাম! স্বাধের ঘুমটা নষ্ট
করে আসলাম
-- থাক সেটা আর এখন তুই পারবিনা!
.
-- এই রাজ শোননা?
--কি?
-- যা না আমার জন্য আইসক্রীম নিয়ে
আই না
...কি হলো যা
-- টাকা দে
-- আমি কেন টাকা দিবো? তোর
টাকা নেই নাকি
-- আছে! কিন্তু আমার টাকা দিয়ে
তোকে কেন আইসক্রীম খাওয়াবো
--ওই কেন খাওয়াবিনারে
-- তুইতো আমার কেউই হসনা, যদি বউ
হতিস তো খাওয়াতাম! মুখে তুলেই
খাইয়ে ও দিতাম! তা তো আর হবিনা
--উহুহ সখ কত বাছাধোনের! যা নিয়ে
আই
.
ধুর সালা কেন যে, এই জোখনি
মেয়েটাকে ভালবাসতে
গেছিলাম! যবে থেকে ভালবাসছি
তবে থেকে মনের থেকেও বেশি
আঘাত পাইছে আমার
মানিব্যাগটটা
একবছর দশমাস দশ দিন ধরে ওর প্রেমে
হাবুডুবু খাচ্ছি আর ও আমাকে
পাত্তাই দিচ্ছে না! কি মেয়ে রে
বাবা? অন্য কোন মেয়ে হলে,,তো ,,
মেয়ে কেন মেয়ের মা-খালা, ফুফু সব
প্রেমে পরে যেত!
.
--এই শোনে যা..
--উফফ... কি হলো আবার?
-- এই ধর (১০০টাকার নোট)
--না থাক লাগবেনা
-- কেন লাগবেনা?
-- এমনিতে..
-- নিয়ে যা আর একটা আইসক্রীম
আনবি
-- একটা কেন?
-- শুধু আমার জন্য
-- আর আমি?
-- সেটা তুই জানিস
ওমোর খোদা,,,, আল্লাহ আমারে
ওপরে তুইলা নেওনা ক্যা
--দাড়িয়ে আছিস কেন যা
--যাচ্ছি
.
ওর পরিচয়টা দেওয়া দরকার! হুম ওর
নাম আখি, আমরা একই সাথে
ভার্সাটিতে পরি! ভার্সিটিতে
যেদিন প্রথম দেখছি সেইদিন
থেকেই ওর পিছনে লেগে আছি! খুব
ভালবেসে ফেলেছি ওকে!
.
ভার্সিটির সকলেই জানে, মানে!
শুধু ও ছাড়া! মেয়েটা কেন যে
আমার ভালবাসা এইভাবে এড়িয়ে
চলে বুঝিনা! না সব বুঝেও না
বোঝার ভান করে তো কে জানে!.
কিন্তু ও যে আমাকে ভালবাসে
সেটা বুঝতে পারি! তবুও কেন যে এত
কষ্ট দেয় আমাকে!
.
এই মামা কর্নেটো আইসক্রীম দেন
তো! আখির খুব প্রিয় আইসক্রীমটা!
তাই আমারও খুবই প্রিয়!
.
--এই নে তোর আইসক্রীম
-- হুম দে
এ বলেই খেতে শুরু করলো! আমি ওর
পাশে বসে ওর খাওয়া দেখছি! আহ
হা কি অপরুপ?
বামহাত দিয়ে গাল বেয়ে পড়ে
থাকা চুল গুলো সরিয়ে, কানে গুজে
দিচ্ছে! এতে ওর সৌন্দর্য টা ফুটে
ওঠছে! কেমন জানি বুকের বাম
পাশটাই ধুকবুক ধুকবুক করছে! কেন যেন মেয়েটি আমার আশেপাশে
থাকলেই বুকের ধুকবুকানিটা বেড়ে
যায়! খালি ভালবাসতে মন চায়
.
-- এইভাবে তাঁকিয়ে কি দেখা
হচ্ছে শুনি
...কি রে
-- তোকে
--কেন এর আগে কোনদিন দেখিস
নাই নাকি
--না দেখছি কিন্তু আজকের মত এত
সুন্দর না
কিছু বলছে না শুধু আমার দিকে
তাঁকিয়ে আছে! মুখখানা রাগি
রাগি ভাব !তারপর বলল
-- তোর আইসক্রীম কই
-- আমি খাবোনা
-- কেন?
--এমনিতেই
--তাহলে আমার দিকে এইভাবে
তাঁকিয়ে থাকবিনা,,, বলা যায় না
পেট খারাপ করতে পারে
.
--আখি একটা কথা বলবো
খাওয়া থামিয়ে দিয়ে বলল
-- ভালবাসা, বাসি বাদে কিছু
বলার থাকলে বল
কথা শেষ করেই আবার মুখে আইসক্রীম
-- বিলিভ মি আখি আমি তোকে
অনেক ভালো বাসি! তুই আমাকে আর এইভাবে ফিরাই দিস না প্লীজ!
দেখিস আমি তোকে খুব সুখে
রাখবো! খুব ভালবাসবো তোকে!
..কিহলো কিছুতো বল
-- হুম কি যেন বললি?
--মানে তুই কিছু শুনিস নি
--নাতো
-- আবার আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছিস
.
-- চল এখন (আখি)
-- যাবোনা
--তো এখানে বসে থাকবি
--হুম! কোন মেয়েকে দেখলেই
প্রোপজ করবো
-- কি? তোর তো সাহস কমনা!চল
এইখান থেকে
আমার হাত ধরে টানতে টানতে
নিয়ে যাচ্ছে! এই মেয়েটাকে
আজও বুঝলামনা! বুঝলামনা ওর মন,
কি চাই ও! না দেয় অন্যর সাথে
আমাকে পিরিত করতে না ও করে! ধুর
বাবা আর ভাললাগে না! এভাবে
আর কত দিন! সব কিছুরই একটা লিমিট
থাকা দরকার!
.
শুভ ফোন করেছে! আমার খুব কাছের
বন্ধু
--হুম দোস্ত বল
-- তুই কই রে?
-- এইতো বাসায়! কেন কি হয়ছে?
-- কি আবার হবে? তোর রানী
তোকে খোজে বেরাচ্ছে পুরো
ভার্সিটি আর বারবার করে তোর খবর
নিতে বলছে! তুই কেমন আছিস? কি
হয়ছে তোর?কেন ভার্সিটিতে
আসছিস না? ইত্যাদি ইত্যাদি!
--তাই নাকি
--হুম! তুই বলে ওর ফোন ধরছিস না!
-- ওকে দ্বারা দেখাচ্ছি! আর শোন
এবার জিঙ্গাসা করলে বলবি -ও ওর
নতুন জিএফ কে নিয়ে বিজি আছে!
তাই ভার্সিটি আসতে পারছেনা
--ওকে বাই
--বাই
আজ 2দিন হল ভার্সিটি যায়না! এর
মধ্যে আমার পরীটার অনেক কল,
মেসেজ আসছে! একটারও কোন
রেসপন্স করিনি! কেন করবো ও আমার কে? এতদিন ধরে মেয়েটা আগলে রাখছি! আঠার মত লেগে থাকছি! ভালবাসছি তাও আমার প্রতি একটু ভালবাসা জন্মেনা! হুহ
.
সকালে ঘুমিয়ে আছি! বাসায়
থাকলে এই একটা কাজই আমি ভাল
পারি!.
--এই উঠ
--উউউ
--এই রাজ উঠ
--আর একটু মা প্লীজ
-- ওঠ সালা, আমি তোর মা না
-- তাহলে
লাফ দিয়ে উঠে বসে পরলাম
-- কি রে তুই? তুই এখানে হঠাৎ(চোখ
ডলতে ডলতে)
--হুম তুই তো যাবিনা তাই আমি
আসছি
-- ওই তোর হাতে আমার লুঙ্গি ক্যা?
দে
-- তাড়াতাড়ি উঠ নয়লে দিবোনা
--দিবোনা মানে কি
--উঠবি না চাঁদরটাও নিয়ে নিবো
-- ওমা এটা কোন ধরনের কথা.. লঙ্গি
না দিলে উঠবো কেমনে?ওকে আমি
এইভাবেই উঠে যাচ্ছি
-- না না দাড়া দাড়া! এই নে তোর
লুঙ্গি! ওয়াক কি গন্ধ, ধোতো করিস
না নাকি
--না দে তুই!
আমার দিকে ছুরে মারলো লুঙ্গিটা!
..--এই তুই চোখ বন্ধ করবি না এইভাবেই
পরবো ? তবে না করলেই আমার কোন
আপত্তি নেই! তুইতো আর বাইরের
কেউ না
--এই না না
হাহাহাহা
মেয়েটা ঘুরে চোখ বন্ধ করে
দাড়ালো
আমিতো হাসতেও পারছিনা
লজ্জাও পারছিনা
--হয়েছে
--হুম এবার তুই ঘুরতে পারিস
-- এই যা এখন ফ্রেশ হয়ে তাড়াতাড়ি
রেডি হো,নয়লে তোর খবর আছে
--ওকে বাবা যাচ্ছি, তুই বস আমি এই
যাবো আর আসবো
--হুম
.
মেয়েটা হঠাৎ এইভাবে আমার
বাড়িতে আসবে , ভাবতে
পারছিনা ! আহ হা মেঘ না চাইতেই
যেন জ্বল!মনে হয় ঔষধটা কাজ করছে!
হিহি আমারতো খুব মজা লাগছে
.
রুমে এসে দেখি,,,, আমার
পেয়ারেলাল টা বসে বসে বই
পরছে! গোলাপি থ্রি পিচ পরে
আছে যা এর আগে খেয়ালই করিনি!
কি সুন্দরী না লাগছে আমার
পরীটাকে ?
.
ওয়াও ঘরটাও কি সুন্দর করে
সাজানো! একদম পয়-পরিষ্কার করা!
মনে হচ্ছে এটা আমার রুমই না!
-- কিরে লিস্তি! ঘর এমন
অগোছালো করে রাখিস কেন? এমন
করলে তো উঠতে-বসতে বউয়ের
হাতে ঝাটা পিটা খাবি!
--খেতেই তো চাই! আর সেটা তুই
হলে তো কথায় নেই (বিড়বিড় করে)
--এই কি বললি রে
--কই কিছুনাতো(মাথা চুলকিয়ে)! তুই
এত সুন্দর করে গোছালি
--হুম খাইলি
--হুম!কিন্তু তুই হঠাৎ আমার বাড়ি
--কেন আসতে পারিনা?
-- না পারিস না কারন এটা আমার
বাড়ি
-- তোর বাড়ি হলে এটা আমার শশুর
বাড়ি তোর কোন সমস্যা
(এইবলেই জিব্বাহতে কামড় দিলো)
--তুই কি কিছু বললি ( না বোঝার
ভান,গভীর ব্যাপরটা )
-- নাতো! চল এখন
--হুম চল!
.
--এই মামা
ও রিক্সা ডাকলো! কিছুটা অবাক
হলাম! অবাক না হওয়ার কিছু নেই!
ও কখনো রিক্সা ডাকেনা... আমি
সাথে গেলে আমিই ডাকি কিন্তু
আজ হঠাৎ
--কি হলো উঠবি না দাঁড়িয়ে
থাকবি
ওঠে
ওর পাশে বসলাম,,, তবে আজ কেমন
জানি অন্যরকম ফিলিংস হচ্ছে মনের
মাঝে! কিছুটা ভয় ভয়ও কাজ করছে
তবে এর মাঝেও খুব ইচ্ছে করছে ওর
হাতটা ধরতে,, হাতের ওপর হাত
রাখতে! কিন্তু কোথায় জানি
গিয়ে আটকে যাচ্ছি
বাতাসে উড়ে এসে ওর গন্ধসিদ্ধ,
খোলা চুল গুলো মুখে ছিটকে পরছে!
বেশ ভালোলাগা কাজ করছে! ওকে
দেখছি, চুলগুলো বার বার সরাচ্ছে!
ফর্সা গালের সাদা সাদা
লোমগুলো কেমন অপরুপ দেখাচ্ছে!
নাকের ওপর জমে আচ্ছে বিন্দু বিন্দু
ঘাম! ইচ্ছা করছে হাতের উলটো পিঠ
দিয়ে গালটা ছুয়ে দেয়!.কিন্তু
সাহসে কুলাচ্ছে না
.
ও তাঁকিয়ে আছে সামনের দিকে! এ
পযর্ন্ত একটা কথাও বলেনি হঠাৎ
-- কোন সমস্যা
-- নাতো (ভয়ে ভয়ে)
.
রিক্সা চলছে তার নিজ গতিতে,! আর
আমি তাঁকিয়ে, পাশের চলে
যাওয়া গাড়ি দেখছি!
--ওই কি দেখোস ওই দিকে
-- কই কিছুনাতো
-- কিছুনা! ওই মেয়ের দিকে
তাঁকিয়ে ছিলি কেন
-- কোন মেয়ে ( যাহ বাবা একটা
মেয়ের দিকে তাকাতেও
পারবোনা?)
-- আমি মনে হয় কিছু দেখিনা
তাইনা ( রাগে ফসফস করছে)
-- আসলে
-- থাক, আর কিছু বলা লাগবেনা !
মেয়ে দেখলেই তো খালি
ছকচুকানি
..মামা এই দিকে চলেন
-- এই দিকে কেন? ভার্সিটি তো
এইদিকে
-- চুপ একদম চুম
মনে হচ্ছে মেয়েটা পুরাই রেগে
গেছে! হঠাৎ কি হলো ওর?
.
রিক্সা সেই পার্কটাই এসে থামলো!
ভাড়াটা দিতে গেলাম! আখি
থামিয়ে দিল! ও ভাড়াটা দিয়ে
রিক্সা ওয়ালাকে বিদায় করলো!
কি হচ্ছে এসব কিছুই মাথায় আসছে
না!
.
ওর মুখোমুখি দাড়িয়ে! তবে মাথা
নিচু করে! চোখে চোখ রাখার মত
আপাতত কোন সাহস নেই!
রেগে আছে কখন কি করবে বলা
যায়না! আসলে এমন রাগতে ওকে
কখনো দেখিনি! তাই ভয় হচ্ছে
.
এবার ওর দিকে সাহস নিয়ে
তাকালাম! কোমরে দুহাত দিয়ে
দাড়িয়ে, রাগী লুক নিয়ে আমার
দিকে তাঁকিয়ে !
এটা দেখে মাথা নামিয়ে নিলাম
--ভার্সিটি না গিয়ে এখানে
আসলি কেন?(আমি)
--.........
--তুই এই দুদিন ভার্সিটি আসিস নি
কেন? তুই জানিস কতটা টেনসন
হচ্ছিলো আমার! দুরাত ঠিকমত
ঘুমাতে পারিনি! তোকে ফোন
দিয়েছি কতবার ফোন পযর্ন্ত ধরিস
নাই! কেন? কেন করলি আমার সাথে
এমন? খুব মজা পাইছিস তাই না এমন করে আমাকে কষ্ট দিয়ে! জানিস না তোর সাথে কথা না বলে আমি
থাকতে পারিনা! বুঝিস না আমি
তোকে কতটা ভালবাসি! তোকে
ছাড়া কোন কিছু ভাবতে পারিনা,
তোকে ছাড়া থাকতে পারিনা!
বুঝিস না তুই বুঝিস না ( এক নাগারে
এত গুলো কথা বলে গেল, কাদো
কাদো গলায়)
কথা গুলো শুনে আমার মাথাটা
ঘুরপাক খাচ্ছে ! দুকান যেন বিশ্বাসই
করতে চাইছে না, ও কাদছে
-- আসলে আমি বুঝতে পারিনি....
আমার জন্য তুই এতটা কষ্ট পাবি!
খারাপ লাগবে
মেয়েটা দৌড়ে এসে আমাকে
জাপটে ধরলো! এটার জন্য আমি
মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না
--এই কি হচ্ছে এসব? আমারতো কুতুকুতু
লাগে
--ধুর ফাজিল
আমিও এবার খুব শক্ত করে জরিয়ে
ধরলাম! আর নিজে নিজেকে কথা
দিলাম যত যায় হোক আর কাদতে
দিবোনা তোকে!
--এই তুমি আমাকে এইভাবে
সারাজীবন আগলে রাখবে তো!
-- হঠাৎ তুমি করে বলা হচ্ছে
-- হুম তুমিও আমাকে বলবা
-- ওকে পাগলী ওকে
-- পাগলী না পরী! আর তুমি অন্য
কাউকে ভালবাসো নাতো
-- না আর ভালবাসলেও তাতে কি
-- কি মানে (আমাকে ধাক্কা
দিয়ে) যেই আমার সতিন হবে
তাকে সহ তোমাকে কেটে নদীর
জ্বলে ভাসিয়ে দিবো
-- হাহাহা ওকে তাই করও
আবার ওকে বুকের কাছে টেনে
নিলাম
--পরী
--হুম
-- একটা পাপ্পি দাওনা
-- যাহ দুষ্টু......... ওটা বিয়ের পর
.
.
লিখা -নির্লজ্জ্ব রাজ

~~~না বলা ভালবাসা! ♥ ♥ ♥

~~~না বলা ভালবাসা! ♥ ♥ ♥
.
-- কিরে অয়ন, সারা রাস্তাই কি না ঘুমিয়ে
কাটাবি? একটু তো ঘুমা। (আম্মু)
-- এইতো ঘুমাচ্ছি, আচ্ছা আম্মু, এবার তাও
অনেক দিন পর নানুবাড়ি যাচ্ছি, তাই না?
(অয়ন)
-- হুম, তাও প্রায় দুই বছর। এবার আর বকবক না
করে ঘুমা।
-- ওকে, ঘুমাচ্ছি।
প্রায় দুই বছর পর আবার নানুবাড়িতে ঈদ
কাটাবে অয়ন। এইসব ভেবে ঘুমানোর জন্য
যেই চোখদুটো বন্ধ করেছে সে, আর সাথে
সাথেই তার চোখের সামনে একটি চেহারা
ভেসে উঠে। অয়নের মন চাচ্ছিল যেন সে
সারারাত অপরূপ সেই চেহারাটা দেখতে
থাকে। কিন্তু কি মনে হতেই চোখ খুলে
ফেলল সে। ঠিক করল যে, সে আর চোখ বন্ধ
করবে না। তাই সময় কাটানোর জন্য
ফেসবুকে লগইন করল। আজ আসার সময় অয়ন
নানুবাড়ি যাচ্ছে এই লিখে একটা পোস্ট
করেছিল। সেটাই চেক করছিল অয়ন। হঠাৎ,
চোখ আটকে গেল একটা কমেন্টে। সেখানে
লেখা, 'ধন্যবাদ'। ধন্যবাদ কেন??? কমেন্টটা
এসেছে একটা অপরিচিত আইডি থেকে যে
কিনা ওকে অনেকদিন ধরেই ফলো করে
আসছে। কিন্তু কে সে??? এসব ভাবতে
ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পরে অয়ন,নিজেও
টের পায় না!
ঘুম ভাঙে আম্মুর ডাকে,
-- অয়ন ওঠ, ভোর হয়ে গেছে, আর একটু পরেই
আমরা পৌঁছে যাব। বললাম যে, আগেই
ঘুমিয়ে নিতে, আর ঘুমালি কখন। এই ছেলে
যদি আমার একটা কথাও শুনে। (আম্মু)
-- হুম, উঠছি তো। (আমি)
.
আর দুইদিন পর কুরবানির ঈদ, তাই আজ একটু
বিশ্রাম নিয়েই মামাতো খালাতো ভাই-
বোনদের সাথে আড্ডায় মেতে উঠল অয়ন।
অনেকদিন পর ওরা একসাথে হয়েছে। তাই
অনেক কথা মনে জমা ছিল। ঠিক এমনই সময়ে
ওদের আড্ডার মধ্যে একজন প্রবেশ করল।
সবার সাথেই তার কথা হচ্ছে, কেবলমাত্র
অয়ন ছাড়া। এটা তেমন কিছুই না, কারন
সবাই জানে ওরা পরস্পর কথা বলে না।
কিন্তু কেন ওরা কথা বলে না, এটা কেউ
জানে না। এমনকি অয়ন নিজেও জানে না।
যতক্ষণ সে ছিল একবারের জন্যেও অয়ন চোখ
তুলে তাকায় নি। চোখটাকে সে নিচে
নামিয়ে রেখেছিল। কিন্তু ঐ চেহারা
থেকে ভেসে আসা কণ্ঠটা যেন বারবার
অয়নকে মুখ তুলে দেখার আগ্রহ জন্মে
দিচ্ছিল। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলায়
সে। একটু পরে অয়নের মেজমামি আসে
অয়নের সাথে দেখা করতে।
-- কেমন আছ, বাবা অয়ন? (মামি)
-- ভাল আছি মামি, আপনারা সবাই ভাল
আছেন? (অয়ন)
-- আমরাও ভাল আছি।
-- আপনারা কখন এসেছেন, মামি?
-- তোমরা আসছ দেখে, আমি আর মিম সেই
কাল রাত থেকেই তোমাদের জন্য এখানে
অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু, এখন যাব। তুমি
কিন্তু আমাদের বাসায় অবশ্যই যাবা।
-- ইনশাআল্লাহ, যাব মামী।
এবার অয়নের মামী ওদের আড্ডায় পরে
আসা মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বলল,
-- মিম, চল মা। পরে আবার আসিস।
সারারাত জেগেছিস। এখন বাসায় গিয়ে
একটু বিশ্রাম করে নিবি চল। (মামী)
.
এবার অয়ন মুখ তুলে তাকাল। এখন আর সে
নেই। তাই কোন সমস্যাও নেই। তারপর ওরা
আবার ওদের আড্ডা শুরু করল।
মামাতো ভাই-বোনদের মধ্যে অয়নের বড়
মামার ছোট ছেলে রিফাতের সাথে
অয়নের সম্পর্কটা সবচেয়ে ভাল, একেবারে
বন্ধুর মতো। আড্ডার শেষে সবাই চলে
যাওয়ার পর অয়ন আর রিফাত গল্প করতে শুরু
করল।
-- কিরে, তোর আয়েশার কি খবর? (অয়ন)
-- আরে ভাই, আর বলিস না, গত পরশু আমার
আর আয়েশার কথা সব্বাই জেনে গেছে।
-- মানে? মামা, মামি, সবাই?
-- শুধু কি আব্বু, আম্মু রে? ওর বাড়ির সবাইও
জেনে গেছে।
-- যাহ্। তারপর।
-- তারপর আর কি, সব বন্ধ। দেখা-সাক্ষাৎ,
কথা-বার্তা সব বন্ধ।
-- ভাল।
-- ভাল মানে? আচ্ছা তোর ব্যাপারটা কি
বলতো?
-- মানে? কোন ব্যাপার? (অবাক কণ্ঠে অয়ন)
-- মিমের সাথে কি তুই আর কোনো দিনই
কথা বলবি না?
-- হঠাৎ এই কথা কেন?
-- এমনি, তুই বলতো, কেন তুই মিমের সাথে
কথা বলিস না?
-- ইচ্ছা হয়না তাই। তাতে কি তোর কোনো
সমস্যা আছে? আর ও কি আমার সাথে কথা
বলে যে আমি বলব।
-- ওহ, বুঝছি।
-- হুম, বুঝলেই ভাল।
.
নানুবাড়িতে আসার পর থেকে কেউই যেন
অয়নকে একা থাকতে দিচ্ছে না। সবসময়ই
কেউ না কেউ ওর সাথে থাকছেই। অনেক
কষ্টে লুকিয়ে রাতে চেয়ার নিয়ে ছাদে
একা বসে বসে তার মনের সবচেয়ে গোপন
কথাটা ভাবছে। কথাটা এতটাই গোপন যে,
সেটা শুধুমাত্র সে ছাড়া আর কেউ জানে
না। এমনি তার প্রিয় ডায়েরীটাও না। সেই
কথাগুলো আবার কারো সামনে ভাবাও যায়
না। আজ সকালে এখানে আসার পর থেকেই
অয়নের সেই কথাগুলো ভাবতে ইচ্ছা করছে।
তাই সে বারবার একা থাকার চেষ্টা
করছিল।
.
আজ আকাশটা সম্পূর্ণ পরিষ্কার। সুন্দর সেই
বাঁকা চাঁদের দিকে তাকিয়ে অয়ন যেন
তার সেই ছোটবেলার স্মৃতিতে হারিয়ে
গেল, যেখানে তার সেই প্রিয় বন্ধুটি তার
সাথে সারাক্ষণ ছিল। খেলাধুলা, আনন্দ,
দুষ্টুমি সবকিছুতেই তারা একসাথে ছিল।
কিন্তু এখন....। এখানে আসার পর থেকে
অয়নের বারবার সেই সুন্দর চেহারাটা
দেখতে ইচ্ছা করছে। না পেরে সে এবার
তার চোখদুটো বন্ধ করল, আর সাথে সাথেই
চোখের সামনে আজ সকালে লুকিয়ে লুকিয়ে
দেখা মিমের অপরূপ মায়া ভরা চেহারাটা
ভেসে উঠল। আজ মিমের চেহারাটা যেন
কেমন লাগছিল। ক্লান্তির চিহ্নটা স্পষ্ট
হলেও, একটা চাপা আনন্দ যেন ওকে অপরূপ
করে তুলেছিল। কতক্ষণ চোখ বন্ধ করে এসব
ভাবছিল অয়ন, তা সে নিজেও জানে না।
ভাবনায় ছেদ পড়ল রিফাতের ডাকে।
-- কিরে তুই এখানে? আর আমরা কোথায় না
কোথায় খুঁজেছি তোকে। কিরে, ব্যাপার কি
তোর? এমন রোম্যান্টিক পরিবেশে একা
একা বসে আছিস! কার কথা ভাবছিস রে?
(রিফাত)
-- আরে ধুর, এমনি বসে ছিলাম। চল নিচে
যাই। (অয়ন)
.
নিচে আসতেই ছোট ভাই-বোনেরা বায়না
শুরু করল, তাদের সাথে নাকি অয়নকেও
লুকোচুরি খেলতে হবে। অগত্যা রাজি হয়ে
গেল অয়ন। খেলা শুরু হলে, লুকানোর জন্য
জায়গা খুঁজছিল সে। ঠিক এমন সময় রিফাত
সেই কোণার ঘরটির কথা মনে করিয়ে দিল
তাকে। অয়ন সাথে সাথেই সেই ঘরের দিকে
পা বাড়াল। ঐদিকে তেমন একটা কেউ যায়
না। তাই সেই ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে
দিয়ে পিছনে ঘুরতেই সোফায় বসা একজনকে
দেখেই শিউরে উঠল। পরক্ষণেই সে নিজেকে
সামলে নিয়ে মেয়েটিকে চিনতে পারল। খুব
সুন্দর লাগছে আজ মিমকে। ছোটবেলার সেই
সাজগোজ করার শখটা এখনও আছে তাহলে।
ভাবতে ভাবতে মিমের চোখে চোখ পড়ে
অয়নের। সাথে সাথেই মুখ ঘুরিয়ে দরজার
দিকে হাঁটা ধরে অয়ন। ও জানে যে, এখন ঘর
থেকে বের হলেই ও ধরা পরবে।
তারপরেও.......
-- আমার প্রতি আপনাত কিসের এত রাগ?
কিসের এত ঘৃণা? যে আমার দিকে আপনি
তাকান পর্যন্ত না! (মিম)
-- (অয়ন নিশ্চুপ হয়ে কথাগুলো শুনছে। আর
সাথে স্বস্তি ও অস্বস্তি দুটোই অনুভব
করছে। হ্যা, মিম ওরই সাথে কথা বলছে এই
ভেবে স্বস্তি, আর কি বলবে ওকে তাই
ভেবে অস্বস্তি পাচ্ছে)
-- কি? কিছু তো বলুন। কেন আমাকে আপনি
এত ঘৃণা করেন? কি করেছি আমি? কেন এত
বছর ধরে আমার সাথে একবারের জন্যেও
কথা বলেন না?
-- (নিশ্চুপ)
-- উফ্ফ। কি? এখনো কথা বলবেন না? অন্তত
এটা তো বলেন যে কোন কারনে আপনি
আমার সাথে কথা বলেন না? (কিছুটা
কান্নার স্বরে)
-- হ্যা, আমি তোমাকে ঘৃণা করি। ঘৃণা করি
বলেই আজ সকালে তোমাকে ছোট মামার
ঘরে গিয়ে লুকিয়ে দেখেছি। আড্ডার সময়
মাথা নিচু করে কোলের উপর রাখা
মোবাইলে তোমার মুখটা দেখেছি। ঘৃণা
করি বলেই আজও চোখ বন্ধ করলে শুধু
তোমাকেই দেখি। (কান্নার স্বরটা যেন
অয়নের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দিল। তাই সে
এগুলো বলেই বাইরে বেরিয়ে গেল)
.
"কেবল তখন এইটে নতুন ক্লাস করছি। এমনই
একদিন নানুবাড়ি এসে জানতে পারি যে,
মিম নাকি ওদের এক স্কুলের ছেলের সাথে
প্রেম করে। ক্লাস সেভেনে পড়া মেয়ে
প্রেম করে শুনে যতটা না অবাক
হয়েছিলাম, তার চেয়ে বেশি হয়েছিলাম,
মিম প্রেম করে শুনে। তারপর থেকেই
মিমের সাথে তেমন একটা কথা বলা বন্ধ
করি। আর মিমও আমার সাথে আর তেমন
একটা কথা বলে না। এভাবেই আমাদের
বন্ধুত্বটা নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু আজ আবার
প্রায় ছয় বছর পর ওর সাথে কথা বললাম।
কিন্তু এগুলো কি বললাম। এগুলো বলা কি
ঠিক হলো?" চাঁদের দিকে একটানা তাকিয়ে
ভাবছিল অয়ন।
-- অয়ন? তুই এখানে কি করিস? এই খোলা
মাঠে একা একা কি ভাবছিস? (রিফাত)
-- আআরে ক-কই কিছু না তো, কিছু না তো।
(ভাবনার জগত থেকে বিদায় নিতে যেয়ে
কথাগুলো যেন বেধে যাচ্ছিল অয়নের)
-- কিরে, তোর চোখের পাপড়িগুলো ভেজা
ভেজা কেন? কাঁদছিলি নাকি তুই?
-- আরে না না, এমনি। ও কিছু না।
-- চল, বাসায় চল। সবাই খেতে ডাকছে।
.
রাতে খেয়ে শুয়ে পরে অয়ন যদিও সে জানে
যে আজ তার আর ঘুম হবার নয়। তবুও অনেক
কষ্টে রাতটা পার করে। পরদিন সকালে
রিফাত অয়নকে জোর করে এক জায়গায়
বেড়াতে নিয়ে যায়। ঈদের আগের দিন একটু
মজা করে নেয় ওরা। কিন্তু রাতে বাসায়
গিয়ে তারা তাদের সেই বাসাকে যেন আর
চিনতে পারে না। লাইটিং আর
ডেকোরেশনের জন্য তা যেন এক রাজবাড়ি
মনে হচ্ছে। প্রচুর মেহমানদের মধ্যে বাসায়
যেতেই সবাই অয়নকে আর রিফাতকে নতুন
জামা-কাপড় পড়িয়ে দিল। ভাবখানা এমন,
যেন আজ ওদেরই বিয়ে হচ্ছে। কিন্তু আসলে
যে কি হচ্ছে তা একমাত্র অয়নই জানে না।
পরে জানতে পারে আজ নাকি রিফাত আর
আয়েশার বিয়ের engagement হবে। ওদের
engagement-এর পর পরই বলা হল, শুধু রিফাত
আর আয়েশার না, আরো একটা জুটিরও নাকি
আজ engagement হবে। এই বলে সাথে সাথেই
অয়ন আর মিমকে ডাকা হলো। এই শুনেই অয়ন
যেন জ্ঞান হারায়, কি বলছে এসব? অবুঝ
বালকের মতো অয়ন ঠায় দাঁড়িয়ে রইল। দুই
তিনবার ডাকার পর অয়নের হুশ ফিরল। হুশ
ফিরতেই দেখে মিম already স্টেজে উঠে
গেছে আর সবাই ওর জন্য অপেক্ষা করছে।
তাই অয়নও আর দেরি না করে স্টেজে উঠে
পরে। মিমকে আংটি পড়ানোর সময় ওর
চোখের দিকে তাকিয়ে অয়ন যেন ওর জন্য
মিমের চোখে অশেষ ভালবাসার খোঁজ
পায়। আর অয়নও ওর চোখ দিয়ে মিমের জন্য
ওর ভালবাসা প্রকাশ করে। অয়ন যখন
মিমকে আংটি পরাচ্ছিল ঠিক তখন মিম
ওকে আস্তে করে 'ধন্যবাদ' বলে। সেটা
শুনেই অয়ন ওকে সবার সামনে জড়িয়ে ধরে
আর কানের কাছে গিয়ে দুইবার welcome
বলে। মিম সেটা বুঝতেই হেসে ফেলে। আর
অয়ন অপলক নয়নে তার মিমের দিকে চেয়ে
থাকে।
.
অনুষ্ঠানের পর ছাদে......
-- আচ্ছা, বাসায় সবাই এসব জানল কি করে?
(অয়ন)
-- আসলে তোর আগেই বাড়ির সবাই জানে!
(রিফাত)
-- মানে?
-- মানে হচ্ছে গিয়ে, তোর আম্মু আর মেজ
কাকু তোদের বিয়ের কথা পাকাপাকি করে
রেখেছিল যখন তোরা খুবই ছোট ছিলি। আর
কালকে তোর আম্মু তোকে দেখে আমাকে
জিজ্ঞেস করে যে তোর কিছু হয়েছে কি
না, আর আমিও তোর আর মিমের সাথে কথা
বলে সব বুঝেছিলাম। তাই ফুফুকে সব বলে
দেই। তারপর তো..... দেখতেই পারছিস কি
হলো।
আর এভাবেই যেন অয়নের না বলা
ভালবাসাটা সত্যি হয়ে গেল......।
.
কল্পবিলাসী বালক (অমিত হাসান)।

স্মার্টনেস ভালবাসা

স্মার্টনেস ভালবাসা

-এই জিহান তুমি এমন ক্ষ্যাত কেন
বলোতো?নিম্মি আর তুরিনের
বয়ফ্রেন্ডকে দেখছো না?
-হুম দেখছি...
- দেখছো ওরা কত স্মার্ট আর তুমি?এমন
ক্ষ্যাত মার্কা টাইপের কেন???মাথায়
কি দিছো এইটা?
-সরিষার তেল।
-ছিঃ ... তুমি কি এভাবেই থাকবে ?
নিজেকে কি বদলাবেনা?
-......
-দেখো এভাবে যদি চলতে থাকে
আমি কিন্তু তোমার সাথে সম্পর্ক
রাখতে পারবোনা।ওরা কিভাবে বড়
মুখ করে ওদের বয়ফ্রন্ডদের সাথে পরিচয়
করিয়ে দেয় আর আমাকে কি করতে হয়
জানো তুমি?? সবার থেকে লুকিয়ে
তোমার সাথে দেখা করতে হয়।
বন্ধুদের
সামনে মাথা উঁচু করে বলতে পারিনা
যে তুমি আমার বয়ফ্রেন্ড।
কথা গুলা বলা শেষে ব্যাগ নিয়ে
উঠে
চলে গেলো সুস্মিতা..
জিহান বসে বসে ভাবছে আসলে তো
সে ক্ষ্যাত মার্কা। নিজেকে এবার
বদলানো উচিৎ।অনেকদিন তো হলো...
ওয়ালেটটা চেক করে একটা রিক্সা
ডাকলো।যথেষ্ট পরিমাণ টাকা না
থাকলেও নিজের মামার মার্কেট যা
ইচ্ছা তাই নেওয়া যাবে।বিল মামাই
দিয়ে দিবেন।রিক্সায় ওয়ালাকে
বললো নিউ মার্কেটে নিয়ে যেতে।
এখন তাকে স্মার্ট হতে হবে।তার জন্য
যা যা দরকার সেগুলা কিনতে হবে।
.
গোলগাল চেহারার উজ্জ্বল শ্যাম
বর্ণের মেয়েটার চশমার আড়ালে
লুকিয়ে থাকা রাগী চোখ জোড়ার
মায়ায় জিহান অনেক বছর আগেই
পরেছিলো।এত সুন্দর চোখ দুইটা চশমা
দিয়ে কেন যে ঢেকে রাখতো এটা
ভেবে তখন জিহানের খুব আফসোস
হতো।
জিহান আর সুস্মিতার পরিচয়
হয়েছিলো ওদের স্কুলে।ক্লাস নাইনে
উঠার পরে ছেলে-মেয়ের একসাথে
ক্লাস শুরু হয়।দুজনেই বিজ্ঞান
বিভাগের স্টুডেন্ট ছিল।জিহান সে
বছরের নতুন ছাত্র ছিলো।তাই সবার
থেকে একটু দূরে দূরে থাকত।জিহানের
পরিবার স্কুলের কুয়ার্টারে থাকতো।
জিহানের বাবা ছিলো ওই স্কুলের
একজন শিক্ষক।আর সুস্মিতা ছিল ওদের
ক্লাস ক্যাপ্টেন।ক্লাস ক্যাপ্টেন গুলা
কেন জানিনা সবসময়েই খুব রাগি হয়।
মেয়েটাকে দেখলেই জিহান
নার্ভাস ফিল করতো সবসময়।জিহানের
পাশ দিয়ে সুস্মিতা চলে গেলেই
কেমন একটা অদ্ভুত অনভুতি হতো
জিহানের।সাথে বুকের মধ্যে
কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে যেত।মাঝে
মাঝে ক্লাসের ফাকে লুকিয়ে
লুকিয়ে দেখতো।চোখেচোখ পড়লেই
অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিতো।কারোর
সাথে প্রয়োজন ছাড়া জিহান তেমন
একটা কথা বলতো না।স্যার ব্ল্যাক
বোর্ডের সামনে ডাকলে জিহান
জানা প্রশ্নের উত্তরও দিতে
পারতোনা।কারনটা ছিলো সুস্মিতা।
উত্তর কি দিবে এটা শোনার জন্য যখনই
সুস্মিতা মনযোগ সহকারে ওর দিকে
তাকাতো তখনই জিহানের দুনিয়া
ওলটপালট হয়ে যেতো।তখন নিজেকে
খুব
অসহায় মনে হতো।
.
সুস্মিতা লক্ষ্য করেছিলো ক্লাসের
সবাই কোন না কোন বাহানাই ওর
সাথে কথা বলতে চাইতো কিন্তু
জিহান কখনোই ওর সাথে কথা বলতে
আসেনি।শুধু মাঝে মাঝে কেমন একটা
করে তাকাতো।জিহানের চোখের
দৃষ্টি যে কিছু একটা বোঝাতে চায়
এইটা সুস্মিতাও খানিকটা বুঝতে
পারে।ওর তাকানোর মাঝে অনেক
কিছু খুঁজতে ইচ্ছা করে সুস্মিতার।
ছেলেটা এত বোকা ভেবে নিজেরই
মনে মনে হাসি পায়।হয়তো বা পছন্দ
করে অনেকটা কিন্তু বলতে পারেনা
মুখ
ফুটে...
.
দুজনের তাকানোর মাঝেই এস.এস.সি
লেভেল শেষ হয়।এর মাঝে কেউ
কারোর সাথে কখনোই কথা বলেনি।
জিহানের রেজাল্ট মোটামোটি
ভালো ছিলো।সুস্মিতার রেজাল্টও
অনেক ভালো ছিলো।স্কুলের প্রত্যেক
টিচারদের বাসাতে সুস্মিতা আর
সুস্মিতার বাবা মিষ্টি দিতে যায়।সব
টিচাররা স্কুল কুয়ার্টারেই থাকতো।
জিহানদের বাসায় কলিংবেল
চাপতেই জিহান দরজা খুলে দেয়।দরজা
খুলে দেওয়ার পরে আবার বুকের মধ্যে
সেই কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে যায়।বাসায়
জিহানের আম্মু ছিলো শুধু।জিহানের
বাবা সেদিন বাসায় ছিলোনা।
জিহানের আম্মু সুস্মিতাকে দেখে
ভিতরে আসতে বলে।সুস্মিতা গিয়ে
ভিতরে বসে।সুস্মিতা জিহানের
আম্মুর
হাতে মিষ্টির প্যাকেটটা ধরিয়ে
দেয়।সুস্মিতার বাবা তখন অন্য এক
টিচারের সাথে নিচে দাঁড়িয়ে
কথা
বলছিলেন।
.
জিহান সুস্মিতার সামনে চুপ করে
বসে...
সুস্মিতাই জিজ্ঞেস করে
- রেজাল্ট কি??
-এ+
জিহানের আম্মু মিষ্টি আর কিছু
নাস্তা দিয়ে চলে যায়...সুস্মিতা
একটা মিষ্টি হাতে তুলে নিয়ে
জিহানকে বলে
-হাঁ করো??
-কেন??
জিহানের গালটা ধরে জিহানের
মুখে মিষ্টিটা ঢুকিয়ে দেয়।মিষ্টির
সাইজটা মাঝারি আকারের হওয়াতে
পুরোটায় মুখের মধ্যে ঢুকে যায়।
সেদিনই
প্রথম ওরা এতটা কাছাকাছি
এসেছিলো এবং প্রথম কথা
বলেছিলো।
-আমাকে খাওয়াবে না??
-ইয়ে মানে...
-এত মানে মানে করো কেন?
জিহান কাঁপাকাঁপা হাতে একটা
মিষ্টি তুলে নেয় হাতে তারপর
সুস্মিতার দিকে এগিয়ে দেয়।
জিহানের এমন অবস্থা দেখে
সুস্মিতার
মনে মনে খুব হাসি পায়।সুস্মিতার ওর
হাত থেকে মিষ্টিটা খেয়ে এক গ্লাস
পানি তুলে নিলো হাতে।তারপর
বললো কোন কলেজে ভর্তি হবে
সিদ্ধান্ত নিলে?
-নাহ...
-ফোন ইউজ করো??
-নাহ...বাবা এখনো কিনে দেয়নি।
- বুঝলাম... আমাকে তোমার বাসার
নাম্বারটা দাও ...
জিহানের বাসার নাম্বারটা নিয়েই
সেদিন সুস্মিতা চলে যায়... সেদিনই
শুরু হয়েছিলো ওদের জীবনের নতুন
অধ্যায়।সুস্মিতার কথা মত দুজনে সেইম
কলেজে এডমিশন নেয়।তারপর থেকে
এই
পর্যন্ত সম্পর্কটা টিকে আছে।দুজনেই
এখন
সেইম ভার্সিটিতে অনার্স সেকেন্ড
ইয়ারে লেখা-পড়া করছে।কিন্তু
সমস্যা
একটায় জিহান এখনো ওল্ড মডেলের
রয়ে গেছে।মাথায় সরিষার তেল, ফুল
হাতা শার্ট,সাধারণ প্যান্ট,পায়ে
একটা ওল্ড মডেলের স্যান্ডেল,চুল গুলা
একসাইডে বাচ্চাদের মতোন করে
আঁচড়ানো স্বভাবটা এখনো বদলাতে
পারেনাই।সুস্মিতা অনেক বার
বলেছে...কিন্তু জিহানের মাঝে
কোন
পরিবর্তন হয়নি... আজ সে নিজেকে
পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে...
.
নিউ মার্কেট এসে গেছে ... রিক্সা
ওয়ালার ডাকে জিহানের ঘোর
কাটলো,রিক্সা থেকে নেমে
রিক্সা
ওয়ালাকে ভাড়া দিয়ে জিহান
মার্কেটের ভিতরে প্রবেশ করলো...
শপিং শেষে নিজের চশমার ফ্রেমটা
চেঞ্জ করলো। স্যেলুন থেকে লেটেস্ট
হেয়ার কাট দিয়ে জিহান মেসে
ফিরে গেলো...
.
গোসল করে নিজের একটা ছবি তুলে
প্রোফাইলে পিকচার সেট করলো।
আগে
ছবি দেওয়া ছিলো না।তারপর এফবি
পাসওয়ার্ডটা চেঞ্জ করে এফবি
থেকে
বের হয়ে আসলো।আগের পাসওয়ার্ডটা
সুস্মিতা জানতো।তাই এই স্টেপ।সে
স্মার্ট হচ্ছে।ওদের মতো স্মার্ট হচ্ছে।
.
পরেরদিন জিহানের নিউ লুক দেখে
সবাই টাস্কিত ... জিহানের
ডিপার্টমেন্টের মেয়ে গুলা একটু পর পর
জিহানের দিকে তাকাচ্ছে।আর মুচকি
মুচকি হাসছে।প্রতিউত্তরে জিহানও
হাসছে।জিহান আর সুস্মিতার
ডিপার্টমেন্ট আলাদা।ফোন করে
সুস্মিতাকে দেখা করতে
বলে...সুস্মিতা কাল ফেসবুকে যায়নি।
তাই আজ জিহানের নতুন রূপ দেখে
অনেক অবাক হয়ে গেলো।জিন্সের
প্যান্ট, ব্র্যান্ডের টি-শার্ট, স্টাইলিশ
জুতা,আর নিউ হেয়ার কাট দেখেই
একটা বড় রকমের ক্রাশ খেলো
সুস্মিতা।
মনে মনে অনেক খুশীও হলো।এখন আর
জিহানের সাথে লুকিয়ে দেখা
করতে হবেনা।মাথা উঁচু করে সবার
সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে পারবে।
.
মাস খানেক দুজনের সম্পর্ক খুব ভালো
চললো।একসাথে ঘুরতে যাওয়া।ফ্রেন্ড
দের সাথে আড্ডা দেওয়া।এর মধ্যে
জিহানের সাথে নতুন কয়েকটা
মেয়ের
পরিচয় হলো।মেয়ে গুলাই আগ বাড়িয়ে
জিহানের সাথে কথা বলতে আসলো।
এতদিন তো জিহানেরএর দিকে ঠিক
মত তাকাতোই না।আর এখন গায়ে পরে
কথা বলে.....
.
এখন আর জিহান আগের মতো সুস্মিতার
খবর নেয়না আগের মতো কেয়ার
করেনা। সুস্মিতাকে আগের মতো সময়
দেয়না।সুস্মিতা ফোন করলে
জিহানের ফোন ওয়েটিং পায়।আগে
জিহান কল করতো কিন্তু এখন আর
একবারের জন্য কল করেনা।আগে
সুস্মিতা না খেলে জিহান অনেক
রিকুয়েস্ট করতো আর এখন সুস্মিতা যদি
বলে "জানো আজকে না আমি খায়নি "
জিহানের উত্তর "ও আচ্ছা" এর মধ্যেই
সীমাবদ্ধ থাকে। সুস্মিতা মনে মনে খুব
কষ্ট পায়।কিন্তু কিছু বলার সাহস
পায়না।কথা বলতে বলতে জিহানের
চুল
গুলা সুস্মিতার খুব ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছা
করে।জিহানের চুল টাচ করার সাথে
সাথে জিহান বলে ওঠে- আহঃ এইটা
কি করছো চুল গুলা এলোমেলো হয়ে
যাবে... কথাটা খুব হৃদয়ে লাগে
সুস্মিতার...বেশ ভালো মতোই বুঝতে
পারে আগের জিহান আর নেই...
কিন্তু জিহানের তো কোন দোষ নেই।
সে স্মার্ট হয়েছে তাদের মতো স্মার্ট
যেটা সুস্মিতা চেয়েছিলো।
.
এগুলা ভেবে রাতে খুব কান্না পায়
সুস্মিতার।আগের জিহানকে এখন খুব খুব
মিস করে সুস্মিতা। অনেকক্ষণ কাঁদার
জন্য সুস্মিতার চোখ ফুলে যায়।সকালে
জিহানের সাথে দেখা হলো কিন্তু
জিহান সেটা দেখেও না দেখার
ভান করে রইলো...আর আগে একটু
কাদলেই জিহান সেটা বুঝতে
পারতো।সুস্মিতা জিহানকে কিছু
বলার আগেই জিহানের ফোনে কল
আসলে জিহান সুস্মিতাকে কিছু না
বলে চলে যায়।সুস্মিতার তখন প্রচণ্ড
কান্না পায়। কোন রকমে নিজেকে
সামলে বন্ধুদের কাছে যায়।
গিয়ে দেখে নিম্মির কান্না করছে।
-কিরে কাঁদছিস কেন?
-হৃদয় ফোন করে আমাকে দেখা করতে
বলেছিলো। প্রায় এক সপ্তাহ আমাকে
ফোন কল কিচ্ছু করেনি।আমি কন্ট্যাক
করতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারিনি।
হৃদয় নিম্মির স্মার্টেস্ট বয়ফ্রেন্ড...
-সে তো ভালো কথা এতে এত
কান্নার
কি আছে??
-দেখা করার পর ও আমাকে বলেছে
আমি যেন ওকে আর ডিস্টার্ব না করি।
আমার সাথে ও আর রিলেশন রাখতে
চাইনা...ও আমার থেকে মুক্তি চাই। এই
কারণেই আমার সাথে দেখা করতে
চেয়েছিলো। কথা গুলা বলেই নিম্মি
আবার কান্না শুরু করলো।
সুস্মিতার আর সেইখানে থাকা হলো
না। বাসায় এসে নিজেও খুব ভেঙ্গে
পরলো নিজের অজান্তেই আবার খুব
কান্না পেলো।মনের মধ্যে
জিহানকে
হারিয়ে ফেলার ভয় চেপে ধরছে
সুস্মিতাকে।নিম্মির বয়ফ্রেন্ডের মত
জিহান ও কি ওকে ছেড়ে চলে
যাবে??
ইচ্ছা করেই জিহান কে তিনদিন ফোন
করেনা সুস্মিতা।এই তিনদিন জিহান
নিজেও কোন টেক্সট বা কল করেনি।
হঠাৎ চার দিনের দিন সন্ধ্যায় জিহান
ফোন করে।
জিহানের ফোন পেয়ে সুস্মিতা
অনেক খুশী হয়।জিহান ফোন করে
সুস্মিতাকে সকাল সাতটায়
ক্যাম্পাসে দেখা করতে বলে।
.
জিহানের দেখা করতে বলাতে
সুস্মিতার খুশীর বদলে খুব করে কান্না
পাচ্ছে।সম্পর্কটা হয়তো বা শেষ করে
দেওয়ার জন্যই জিহান ডেকেছে।
সারারাত না ঘুমিয়ে বসে বসে
কান্না করে সুস্মিতা।
.
সকাল বেলা জিহানের ফোন পেয়ে
অনিচ্ছা স্বত্বেও সুস্মিতা বের হয়।মনে
মনে খুব ভয় করছে।এতদিনের সম্পর্ক যে
জিহান শেষ করে দিবে ভাবতেই
কান্না পাচ্ছে।জিহানের পছন্দের
সাদা সেলোয়ার কামিজটা পরে
ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রউনা দেয়
সুস্মিতা।এই জামাটা পড়লে নাকি
সুস্মিতাকে অনেক সুন্দর লাগে ... এটা
একসময় জিহান বলেছিলো। কথাটা
মনে পড়াতে মুচকি হেসে ওঠে
সুস্মিতা।কিন্তু হাসিটা খানিক
বাদেই মলিন হয়ে যায়।
খুব সকাল সকাল এসে পড়েছে।এখনো
তেমন কেউ আসেনি।কিন্তু জিহানের
দেওয়া সময় থেকে আধা ঘন্টা লেইট
করে ফেলেছে।ওইতো জিহানকে
দেখা যাচ্ছে বটগাছটার কাছে ফোন
হাতে দাঁড়িয়ে আছে।
সুস্মিতা জিহানের সামনে এসে
দাঁড়ায়...
-আসতে লেইট হলো যে?
-স্যরি... রিক্সা পাচ্ছিলাম না...
জিহান একবারের জন্য সুস্মিতাকে
ভালো মত দেখলো না ফোন নিয়ে
ব্যস্ত।সুস্মিতা অশ্রুসিক্ত চোখে
জিহানের দিকে তাকিয়ে আছে।
জিহান ফোনটা পকেটে ঢুকিয়ে বলে
- ও আচ্ছা... আসলে তোমাকে যে
কথাটা বলার জন্য ডেকেছি তা হলো
আমি আর...... কথাটা শেষ করার আগেই
জিহানকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে
উঠলো
সুস্মিতা... কাঁদতে কাঁদতে জিহানকে
বললো-
" আই এম স্যরি জিহান।আমি আর কখনো
তোমাকে চেঞ্জ হতে বলবো না।
কখনো
না। তুমি আগে যেভাবে ছিলে আমি
তোমাকে সেভাবেই
ভালোবাসবো।
প্লীজ তুমি আমাকে ছেড়ে যেওনা।
আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে
পারবো না।আমার আগের জিহানকে
ফিরিয়ে দাও।আমি আমার সেই আগের
জিহানকে ফেরত চাই।আমি আর
পারছিনা তোমার অবহেলা সহ্য
করতে।
প্লীজ আমার কাছে সেই আগের
জিহান হয়ে ফিরে আসো।নাহলে
আমি মরেই যাবো।আমাকে ছেড়ে
যেওনা।
.
নাহ অনেক হয়েছে এই স্মার্ট হওয়ার
নাটক।।জিহান নিজেও আর পারছেনা
পাগলীটাকে কষ্ট দিয়ে থাকতে।
কারণ
এই কয়েকদিন জিহান নিজেই অনেক
কষ্টে ছিলো।দম বন্ধ হয়ে আসছিলো
এভাবে চলতে।পাগলীটা ওর ভুল বুঝতে
পেরেছে এটাই অনেক ...
-এই উপরে তাকাও...
-......
সুস্মিতা তাকাচ্ছে না।আরো শক্ত
করে
জড়িয়ে ধরে আছে।মনে হচ্ছে ছেড়ে
দিলেই জিহান ওর কাছ থেকে
হারিয়ে যাবে।জিহান সুস্মিতার
মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো
-আরে পাগলী আমাকে তো কথাটা
শেষ করতে দিবে নাকি?তার আগেই
কি সব আবোল তাবোল বলে কান্না
জুড়ে দিলে।এইইই উপরে তাকাও না
আমার মুখের দিকে?সুস্মিতা এবারে
মুখটা তুলে উপরের দিকে তাকালো...
জিহান চোখের পানি মুছে দিয়ে
বললো... বিশ্বাস করো এভাবে আমিও
ভালো ছিলাম না সব সময় তোমাকে
মনে পড়তো।কারন আমিও যে খুব
ভালোবাসি তোমাকে।এই কয়দিন খুব
কষ্ট পেয়েছো তাইনা?
-হুম...
এই দেখো কান ধরছি এবারের মত মাফ
করে দাও।আমি তোমার আগের
জিহান
হিসেবে ফিরে আসতে চায়।এটাই
বলার জন্য ডেকেছিলাম।আর তুমি কি
সব উল্টা বলে কাঁদা শুরু করে দিলে।
জিহানের কান্ড দেখে সুস্মিতা
হেসে দেয়।
আহঃ এতক্ষণে জিহান যেন একটু
শান্তি
পেলো।সুস্মিতা জিহানের চুলটা
আগের মতো করে দিলো।
.
আর ওদের সম্পর্কটা সেটাও আগের মত
হয়ে গেলো..জিহান তো এটাই
চেয়েছিলো।এখন আর সুস্মিতা
জিহানকে চেঞ্জ হতে বলেনা।
জিহানের যেমন ওকে তেমন ভাবেই
ভালোবাসে।বরং আগের থেকে
আরো
বেশি ভালোবাসে...
এমন ভাবেই অটুট থাকুক ওদের
ভালোবাসার বন্ধন....
.
ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন...