Monday, January 23, 2017

বউ ভালবাসি

বউ ভালবাসি

- সকালে ঘুমাচ্ছিলাম হঠাৎ অনুভব করলাম
কেউ একজন আমার হাতে আজ্ঞুলে কামড়
দিল,,,ব্যাথায় চিৎকার দিলাম আর সাথে
সাথে আমার কানের কাছে এফএম ৮৮.৮
বাজা শুরু হল একে তো ঘুম এর ঘোর তারপর
কামড় তারপর সকাল সকাল এই রেডিও,,,
উফফফ আল্লাহ শান্তিতে একটু ঘুমাতে ও
দেবে না,,,,,
আপনারা হয়ত ভাবতেছেন রেডিও কে
বাজাচ্ছে,,সে হল আমার গুণবতি মেয়ে
চাঁদনী ২ বছর বয়সে এত ফাজিল হইছে যা
বলার বাহিরে,,
সাথে সাথে ও আম্মু মানে আমার আদরের
ফাজিল বউ টারে ডাক দিলাম,,
জান্নাত,,, জান্নাত,, অহহ জান্নাত,,
---সকাল সকাল চিল্লাইতেছ কেন??
---চিল্লাব না তো কি করব তোমার মেয়ে
আমারে কামড় দিছে সকাল সকাল,
---এ দে নাই আমি বলছি তোমাকে উঠানোর
জন্য আমি ডাকলে তো উঠবে না তাই ওকে
দিয়ে কাজটা করিয়ে নিলাম,,,,আর দেখ তো
সামান্য একটা কামড় এই তো এত জোরে
চিৎকার দেয়া লাগে দেখ তো তোমার
চিতকারে এ ভয় পেয়ে কান্না করতেছে,,,
---ও তার মানে সব তোমার বুদ্ধি ওকে সময়
আমার ও আসবে তখন দেখাব মজা,,
--- হইছে থাক যাই ফ্রেশ হয়ে নাস্তা টা
করে আমায় উদ্ধার কর,,
যাচ্ছি যাচ্ছি,,,,
বাথরুমে ডুকলাম এখন ফ্রেশ হতে হতে
আপনাদের আমার পরিচয় টা বলি,,,
,,,
,,
আমি ফারুক নিজের ব্যবসা করি,,,আমার বউ
জান্নাত,,, একসময় আমার বেস্ট ফ্রেন্ড
ছিল,,আর এখন বউ,,,ওর সাথে আমার বিয়ে টা
হবে সেটা আমি কল্পনাও করি
নাই,,,আমাদের ফ্রেন্ডশিফ টা ছিল ক্লাস
নাইন থেকে,,,,স্কুল এ আমাদের সবাই
আমাদের খবু ভাল করেই চিনত,,আমাদের
ফ্রেন্ডশিপ এ একটা নিয়ম ছিল আর সেটা
হল আমাদের দুজন এরই অন্য কোন বন্ধু
থাকতে পারবে না,,,
খুব ভালোই চলতেছিল আমদের
ঝগড়া,হাসি,অভিমান,সব মিলে খুব
ভাল,,,আসলে আমি অকে খুব  ভালবাসি,, ওকে
বলে ছিলাম ও বলছিল যদি আমারা একে
অন্যের হয়ে থাকি তো আমি ওকে পাব,, এই
বিষয় যেন অকে কিছু না বলি,,,তারপর আমি
ও কিছু বলি নাই,,,আর মনে মনে ওর প্রতি
আমার ভালবাসা দিন দিন বাড়তেছিল,,,
,,,
,,
,
আমার HSC পরিক্ষার পর আমাদের
পরিবারে একটু সমস্যা দেখা দিল যার
কারনে আমি দেশ এর বাহিরে যেতে হয়
আমাই আসার দিন সব থেকে বেশি
কেদেছিল জান্নাত,,, আমাকে বলেছিল
আমি তোর আছি,,,,ছিলাম,,, থাকব,,,,
আর শুন প্রতিদিন আমার কাছে ফোন দিবি
না হলে কি হবে তুই ভাল করেই জানস,,,
এরপর আমদের নিয়মিতই যোগাযোগ হত
প্রতিদিন ওর সাথে কথা বলতাম একদিন
ফোন দিতে দেরি হলে অ নিজের ফোন
দেয়া শুরু করত,,,আমি বুঝে গেছিলাম যে ও
আমায় ভালবাসে কিন্তু কোন এক অজানা
কারনে আমায় বলতেছে না,,,,,,
তখন ও অনার্স ২ বর্ষে আমি সবে কিছুটা
টাকা নিজের জন্য জমা করতেছি,,,
একদিন বিকালে জান্নাত আমায় বলল ওর ১৯
তারিখ বিয়ে,,,কথা টা শুনে কেঁদে
ফেলেছিলাম কিন্তু আমার তখন কিছু করার
ছিল না,,,ওর ইচ্ছা থাকা সত্তেও আমি ওকে
ফিরিয়ে দিছিলাম,,,,অই দিন এর পর আর ওর
সাথে কথা হয় নাই,,
১৯ তারিখ সকালে আমার ফোন এ ২৪ টা
মিস কল আর সব গুলাই জান্নাত
দিছে,,,তারাতারি ফোন দিলাম ওর আম্মু
ধরছে আর কান্না করতেছে আমি
জিজ্ঞাসা করলাম,,,
--কি হইছে আন্টি কান্না করতেছেন কেন
আজ না জান্নাত এর বিয়ে,,
--সব শেষ হই গেছে জান্নাত এর হবু বর অন্য
একটা মেয়ে নিয়ে পালিয়েছে এখন
জান্নাত এর কি হবে,,,,
---বলেন কি,,,
---হা বাবা এখন তুই বল কি করি??
কথা টা শুনে আমার খুশি হওয়া উচিত নাকি
কি করা উচিৎ জানি না তবে এটা জানি
আমার হাতে একটা বড় সুযোগ এসেছে,আমি
তখন বললাম
---আন্টি জান্নাত কে আমি বিয়ে করলে
আপনাদের কোন আপত্তি আছে?
---আন্টি অনেক টা খুশি হয়ে বল্ল তুই করবি
বাবা??
-- হুম,,
তার পর ফোন এ আমাদের অই দিন বিয়ে হয়
আমার পরিবারের সম্মতিতে,,,,
দরজায় কারো কিলের আওয়াজ শুনে আমার
ধ্যান ভাঙল দরজা খুলে দেখি জান্নাত
আমার দিকে তার হাসের ডিমের মত চোখ
গুলা দিয়া তাকাই আছে,,, আমি বললাম,,
---কি হইছে???শান্তিতে ব্রাশ টা তো
করতে দাও,,,,
---অই কুত্তা ব্রাশ করতে ৩০ মিন
লাগে,,,,কখন থেকে ডাকতেছি কথা কানে
যায় না??
---আর এ আমি তো ভাবতেছিলাম,,,
-মানে কি ভাবতেছিলা
--কিছু না তুমি এটা কি গায়ে দিছ??
--কেন শার্ট,,
--কার??
--কেন তোমার,,কোন সমস্যা??
--তোমারে আমি কত বার না করছি আমার
শার্ট না গায়ে দিতে??
*-তুমি মানা করলেই যে শুনতে হবে এমন তো
কোন নিয়ম নাই,,, আমার যা ইচ্ছা গায়ে
দিব ইচ্চা হলে লুঙ্গী পড়ব কি করতে পারলে
কর,,,হুহহ তাড়াতাড়ি নাস্তা করতে আস,,,
---ওকে যাও আসতেছি
--- তাড়াতাড়ি আস,,,
---আর এ যাও আসতেছি,,,রেগে বললাম
এরপর নাস্তা করে সবে যে মাএ সকালের
মিষ্টি টা খেতে যাব তখন এই সামনে
বাধা,,,
এটা কি হল??
---কোনটা??
---বাধা দিলা কেন??
--আজ পাবা না
-*কেন?
---একটু আগে আমকে ধমক দিছ তাই!!!
--আচ্ছা সরি প্লিজ দাও না আজ না পাইলে
আমার সারা দিন কাজে মন বসবে না
---আহারেরর ডং কত,,, ওকে কিন্তু ২০
সেকেন্ড এর বেশি না,,,
--ওকে জানু,,,,লাভ ইউ বলে যেই কিস করতে
যাব তখন আমার আদরের মেয়ে চাঁদিনী
আসে হাত তালি দিতে থাকে আর ওই
দিকে ম্যাডাম লজ্জায় আমার সামনে
থেকে হাওয়া,,,
ইচ্ছা করতেছে নিজের গালে নিজে থাপ্পর
দিতে,,,
যাই হোক মন খারাপ নিয়ে কাজে আসলাম
দোকানে আসি বসে আছি,,,এমন সময়
জান্নাত এর ফোন,,,
---হা ময়না পাখি বল,,
--কি কর?
--- নাচিতেছি
---নাচ আর যাই কর ৬টার আগে বাসায়
আসবা আজ আমার বন্ধু পনির বাড়িতে
যেতে হবে আগের ৬ বার তো যাও নাই এই
বার ও যদি না যাও তো সেটা কিন্তু খুবই
খারাপ হবে,,,
--ওকে ম্যাডাম আপনার কথা কি ফেলতে
পারি,,
---হইছে থাক আমার জানা আছে,,বাই আমার
রান্না করতে হবে,
--আচ্ছা তোমার ফ্রেন্ড কি জানে যে
আমরা যাব??
---না জানে না বলি নাই,,, কারন ওরে
সারপ্রাইজ দিব,,
---ওহহ আচ্ছা
--তাড়াতাড়ি চলে আসবা কিন্তু
--ওকে
পনি হল ওর বেস্ট ফ্রেন্ড খুনি ভাল বন্ধু ওরা
তবে ওনাকে আমি কখনওই দেখি নাই অথবা
দেখার সুযোগ হয় নাই,,যত বার এই ওনার
বাসায় যাওয়ার কথা হইছে তত বারই আমার
কোন না কোন সমস্যা হইছে যার কারনে
যাওয়া হয় নাই,,তাই ম্যাডাম আজ শেষবার
এর মত মনে করাই দিল,,,
বিকাল ৫ টায় কাজ শেষ করে বাসায়
যাইতেছি কিছু টা পথ আসার পর হঠাৎ
কোথা থেকে একটা মেয়ে আমার বাইকের
সামনে চলে আসল কিছু বুঝে উঠার আগেই
আমি বাইক থেকে পড়ে ওওনেক টা দূরে চলে
গেলাম উঠে মেয়েটা কে দেখলাম মাথা টা
অনেক খানি ফেটে গেছে আমার তেমন
কিছুই হয় নাই,
মেয়ে টা কে নিয়ে তাড়াতাড়ি করে
হাসপাতালে ভর্তি করলাম ওর থেকে
নাম্বার নিয়ে ওর বাবা মা কে ফোন
দিলাম,,,, ওনাদের সাথে কথা বলে
হাসপাতালের বিল দিয়ে বাড়ির দিকে
রওনা হব এমন সময় মনে পড়ল যে আমার তো
আজ বাসায় তাড়াতাড়ি যাওয়ার কথা
ঘড়িতে দেখি ৭.৪৫ বাজে মনে মনে
ভাবলাম আজ বাসায় গেলে আমার ১২ টা
বাজাবে,,
বাসায় গিয়ে আস্তে করে দরজা খুলে ঘরে
ঢুকলাম সামনে সব চুপচাপ আম্মা আব্বু
আপুদের বাসায়,,,
রুম এ উকি মেরে দেখি চাঁদনী ঘুমাচ্ছে
কিন্তু জান্নাত কে দেখতে পেলাম
না,,,পুরা ঘর ছাদ সব জায়গায় দেখলাম
কিন্তু নেই আবার রুম এ আসলাম দেখি
খাটের উপর বসা আমি বললাম
--কই ছিলা??
--ঘরে,,,
--দেখলাম না যে
---সব সময় দেখতে হবে এমন তো কোন কথা
নেই??
---ওহহ,,চাঁদনী খাইছে?
--হা
--তুমি?
--সেটা আপনার না জানলেও চলবে"!
-- মানে কি?কথা ঠিক কর বল
--যে মানুষ ঘরে বউ রেখে অন্য মেয়ে নিয়ে
রিকশায় ঘুরে বেড়ায় তা কাছে জবাব
দিতে বাধ্য না,আর সে যেন এর থেকে ভাল
ভাবে কথা আশা না করে..
--মানে কি কোন মেয়ে কিসের মেয়ে কারে
নিয়ে রিক্সায় ঘুরছি,,
ও আমাদের নতুন কাজের ছেলেটা কে ডাকল
আর বল্ল
রফিক বল ওনাকে কোন মেয়ে
--রফিক বল্ল,,,
ভাইয়া আজ তো আপনারে দেখলাম একটা
আপার লগে রিক্সায় বসে আছেন উনি
আপনার কাধে মাথা দিয়া রাখছে আর
আপনি ওনার মাথায় হাত দিয়ে রাখছেন,,,
ওহহ এইবার বুঝলাম আমি অই মেয়েটার
মাথা একটা ছোট কাপড় দিয়ে ধরে আমার
কাধে ধরে রাখছিলাম যাতে রক্ত বন্ধ
হয়,,আর বোকা রফিক উলটা কি ভাবছে ;;;;;;;
আমি রফিক কে ভিতরে যেতে বলে,,
জান্নাত কে সব বলি কিন্তু ও বিশ্বাস
করতে চাইল না,,ও বলল
---আমার ফ্রেন্ড এর বাসায় যাওয়ার সময় হয়
না কিন্তু প্রেমিকা নিয়ে ঘুরার ঠিক সময়
আছে তাই না,,,আর এখন যখন ধরা পড়ে গেছ
তখন কাহিনী করতেছ??
--দেখ যা সত্যি তা আমি বলছি এরপর
বিশ্বাস না হলে আমার কিছু করার নাই,
---আমি কোন বিশ্বাসঘাতক,বেইমান এর
কথা বিশ্বাস করতে চাই না,,,,,
কথা শুনার পর মাথাই গরম হই গেল আমি
ওকে একটা থাপ্পড় মেরে টেনে রোড এ
আসি একটা সিএনজি নিয়ে সোজা
হাসপাতাল এ নেমে ওই মেয়ে টা কে
যেখানে ভর্তি করাইছি ওইখানে জান্নাত
কে দাড় করাই ও শুধু অবাক চোখে আমার
দিকে তাকাই আছে,
আমি বললাম।
--দেখ এই সে মেয়ে যার সাথে এক্সিডেন্ট
হয়েছে,,
ও তাকায় আর একটা মেয়ে জান্নাত কে
আসে জড়াই ধরে বলে দোস্ত তুই এখানে??
--হা পনি,,,, তুই এখানে কেন??
--আমার বোন এর বিকালে এক্সিডেন্ট হইছে
তাই আসলাম,,এটা কে তোর বর
--হা,,,
তখন ওই মেয়েটার মা বলল আর ইনি ই তো
সে যার সাথে তোর বোন এর এক্সিডেন্ট
হইছে ,,,,
,,,,ব্যাপার টা কেমন যেন লাগল আমি ভদ্র
মহিলা কে জিজ্ঞাসা করলাম উনি কে?
--এটা আমার বড় মেয়ে পনি
আর তখন পনি বল্ল আর আমি জান্নাত মানে
আপনার বউ এর বেস্ট ফ্রেন্ড কথা টা শুনে
আমি যত টা না অবাক হইছি তার থেকে
বেশি জান্নাত হইছে,,,
তার মানে আমি জান্নাত এর বেস্ট ফ্রেন্ড
এর বোনের সাথে এক্সিডেন্ট করছি,,
কথা টা শুনে অনেক টা স্বত্বিবোধ
করতেছি জান্নাত এর ভুল টা ভাঙাতে
পারছি,,,,
বাসায় ফিরার সময় কারও মুখে কোন কথা
নাই দুজনেই চুপ বাসায় আসলাম,,, এসে না
খেয়েই শুয়ে পড়লাম জান্নাত ও খায় নাই,,,
রাস্তায় ও আমার হাত ধরছিল আমার ঝটকা
মেরে ফেলে দিছিলাম মাথাটাই গরম করে
দিছে আমার যাকে নিজের থেকেও বেশি
ভালবাসি সে যখন ভুল বুঝে তখন মাথা তো
খারাপ হবেই তার উপর বলে আমার বেইমান
বিশ্বাসঘাতক,,,
,,,
,,
,
সকালে ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠে কাজে
চলে তখন মা মেয়ে দুজনে ঘুমাচ্ছে কিছু না
খেয়েই কাজে চলে আসছি ও সারা দিনে
অনেক বার ফোন দিছে আমি ধরি নাই,,,,
রাতে ৮.০০ বাসায় যাই বাসায় ঢুকতেই
চাঁদনী এসে বলল,,
-- পাপ্পা পাপ্পা পাপ্পি,,
--আমি নিচে বসলাম ও আমাকে পাপ্পি
দিয়ে কোলে উঠল জান্নাত সোফাতে বসে
আছে আমি কথা না বলে চাঁদনী কে রেখে
কাপড় চেঞ্জ করতে রুম ডুকলাম পিছন দিয়ে
কেঊ একজন দরজা বন্ধ কেন করলেন?
,,
,
ও সাথে সাথে মাটিতে বসে বলল জামাই
জামাই পাপ্পি পাপ্পি,,,
আমি কি বলব বুঝতেছি না হাসব নাকি
কাদব বুঝলাম চাঁদনী কে কপি করছে আমি
নিজেকে কন্ট্রোল করে বললাম আমি
বেইমান বিশ্বাসঘাতক আর বেইমানরা
কারব জামাই হয় না কাউকে পাপ্পিও দে
না,,,,
ও কান্না করতে করতে বলল আমি সত্যি
বলতেছি আর জিবনে এমন ভুল করব না প্লিজ
মাপ করে দাও আসলে তোমাকে অন্য কারে
সাথে আমি ভাগ করতে পারব না তাই যখন
শুনলাম তুমি অন্য মেয়ে রিকশায় ঘুরতেছ
তখন মাথা ঠিক ছিল না প্লিজ আমাকে
ক্ষমা করে দাও প্লিজ লক্ষি জামাই আমার
প্লিজ,,
আমি ওকে দাড় করিয়ে বললাম
-- আর যেন ভুল না হয়,,
আর হা কাঁদলে তো পেত্নির মত
লাগে,,,বলেই হেসে উঠলাম,,
--তবে রে আমাকে নিয়ে মজা,,, আজ তোমার
একদিন কি আমার একদিন ,,,চোখ মুছতে
মুছতে বলল
---প্পাপ্পি কি লাগবে??
--লাগবে না মানে??২০ টা দিতে হবে,,
--অকে ফ্রেশ হয়ে নি,,
-- না এখনি লাগবে,,,লাভ ইউ শশুরের বেটা
--লাভ ইউ টু শশুরের বেটি,,
তারপর ২০ টা পাপ্পি দিতে দিতে আমার
ঠোট এই ব্যাথা হই গেল,,,,বেশি চাইছি তো
তাই আর কি!!
,
,
,অনেক দিন পর গল্প লিখলাম জানি না
কেমন হইছে,,,আশা করি ভাল লাগবে
সবার,,ভাল থাকবেন,,গল্প পড়ার জন্য ধন্যবাদ
,,
,,
লিখা"; Queenless king (চাঁদনীর আব্বু)

Tuesday, January 17, 2017

গল্প

ঘরে বসে টিভি দেখছিলাম ।
কলিংবেল বেজে উঠল । মা রান্না
ঘরে ব্যস্ত । আমাকেই উঠতে হল । কিন্তু
দরজা খুলে চমকাতে হল ।
নিশি !
নিশিকে ইদানিং দেখলেই বুকের
ভিতর কেমন একটা অনুভূতি হয় । আর
নিশি সেদিনের পর থেকে আমার
দিকে কেমন করে যেন তাকায় । আর
আজ তো বাসায় এসে হাজির ।
আম্মুকে আবার বলে দিবে না তো ?
নিশি আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-আন্টি কোথায় ?
আম্মুকে খুজছে । নিশ্চিত আজ আমার খবর
আছে ।
আমি রান্না ঘরের দিকে হাত ইশারা
করে দেখালাম । মুখ দিয়ে কোন কথা
বের হল না । নিশি রান্না ঘরের
দিকে চলে গেল ।
আমি টিভির দিকে তাকিয়েও কেন
জানি মনের ভিতর শান্তি পাচ্ছিলাম
না । মেয়েটা আম্মুকে কি বলছে ?
আমার নামে কিছু বলছে নাতো ?
কোন অভিযোগ ? অবশ্য সেদিনকার
ঘটনার পর নিশি অভিযোক করতেই
পারে ।
কিন্তু যদি করে ?
একটু পর নিশি রান্না ঘর থেকে
বেড়িয়ে এল । দরজা দিয়ে বের হবার
সময় আমার দিকে আবার সেই অদ্ভুদ
চোখে তাকাল ।
আমার মনটা অস্বস্তিতে ভরে গেল ।
বারবার মনে হতে লাগল কেন এমনটা
করতে গেলাম ?
কেন ?
সেদিনকার ঘটনা টা না ঘটলে আজকে
তো এমন অস্বস্তিতে পড়তে হত না ।
নিশিরা আমাদের পাশের ফ্লাটেই
থাকে । সেই সুবাধে ওদের
ফ্যামিলির সাথে আমাদের ভাল
সম্পর্ক । নিশির সাথেও আমার ভাল আর
সহজ সম্পর্ক । দেখা হলেই কথা হত ,
মাঝে মাঝে আড্ডা হত, হাসাহাসি
হত ।
কিন্তু সপ্তাখানেক আগের কথা ।
বাইরে সেদিন খুব বৃষ্টি হচ্ছিল ।
বাসায় বসে বসে টিভি দেখছিলাম ।
এমন সময় নিশি এসে হাজির ।
-আরে এখনও বসে বসে টিভি দেখছো ?
চল ?
-কোথায় যাবো ? বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে ।
-তাইতো বৃষ্টি হচ্ছে । কি চমৎকার বৃষ্টি
হচ্ছে ! চল বৃষ্টিতে ভিজি ।
নিশির আগ্রহ দেখে চললাম বৃষ্টিতে
ভিজতে । আসলেই কি চমৎকার বৃষ্টি
হচ্ছে ! আর নিশির আনন্দ দেখে আমার
ভাল লাগছিল । বাচ্চা মেয়েদের মত
আনন্দ করছিল ।
কিন্তু নিশিকে দেখতে দেখতে হঠাৎ
আমার নিজের মধ্যে কেমন একটা কাঁপন
অনুভব করলাম । ওর ভেজা ঠোট দুটো
কেমন কাঁপছিল । সাথে সাথে আমার
বুকের ভিতরেও কাঁপছিল ।
আমি যন্ত্রের মত এগিয়ে গেলাম ওর
দিকে । তারপর কি হল আমার কাছে
খানিকটা ঘোলাতে । সত্যি বলতে
কি আমি নিজের ভিতর ছিলাম না ।
কিভাবে ওর নরম ঠোঁটে চুমু খেলাম
আমি বলতে পারি না ।
যখন ওর ঠোঁট থেকে নিজের ঠোঁট কে
আলাদা করলাম তখন নিশি কেবল
আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে
ছিল । আর ওর চোখের দিকে তাকাতে
পারি নি । কেমন একটা অপরাধবোধ
আমার ভিতর কাজ করছিল ।
তারপর থেকেই নিশির চোখের থেকে
নিজেকে লুকিয়ে লুকিয়ে
রাখছিলাম । কিন্তু বেশি সময় লুকিয়ে
রাখা সম্ভব হল না ।
সন্ধ্যা বেলায় নিশিদের বাসায় কি
এক অনুষ্ঠান ছিল । তারই নাকি দাওয়াত
দিতে এসেছিল। সন্ধ্যায় মা যখন
যেতে বলল আমি সাফ মানা করে
দিলাম । আমাকে রেখেই মা বাবা
দুজনেই নিশিদের বাসায় হাজির হল ।
আমি বসে বসে টিভি দেখছিলাম ।
কলিংবেল বেজে উঠল । আমি
ভাবলাম আম্মু হয়তো কোন কাজে
আবার ফিরে এসেছে । কিন্তু দরজা
খুলে দেখি নিশি ।
সরাসরি আমার চোখের দিকে
তাকিয়ে । আমি চোখ সরাতে
চাইলাম নিশি খানিকটা কঠিন সুরে
বলল
-তোমার সমস্যা কি ? এভাবে আমার
কাছ থেকে লুকিয়ে বেড়াচ্ছ কেন ?
চোখ লুকাচ্ছ কেন?
আরে আশ্চার্য ! মেয়েটা কি জানে
না কারন টা ! নিশি কেমন চোখে
আমার দিকে তাকিয়ে রইল ।
-আচ্ছা ! এই কারন !
নিশি এরপর যা করলো তার জন্য আমি
মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না ।
দরজা থেকে একটু ভিতরে এসে আমার
ঠোঁটে চুমু খেলো । আমি ভাবতেই
পারি নি এমন কিছু হতে পারে ! নিশি
বলল
-এবার ঠিক আছে ? হিসাব সমান সমান ।
ওকে ? এখন আমার কাছ থেকে লুকানো
বন্ধ কর । আর বাসায় এসো । সবাই
অপেক্ষা করছে ।
আমার অবাক ভাবটা তখনও কাটে নি ।
কেবল অনুভব করলাম নিশি আমাকে হাত
ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে ওদের
বাসার দিকে ।
.
লিখাঃ অপু তানভীর

********সৎ মায়ের ভালোবাসা********

********সৎ মায়ের ভালোবাসা********
.
.
.
.
আজ মায়ের মৃত্যুর চারদিন পূর্ণ
হলো,চারদিন আগে আমার মা আমায়
একা রেখে পাড়ি জমিয়েছে না
ফেরার দেশে।কোনদিন মা কে
ছাড়া থাকি নি,মা মুখে তুলে খাইয়ে
না দিলে খাই নি,সেই আমি
কিভাবে এই চারদিন কাটালাম?মা
নেই তাই চারদিন পানি ছাড়া কিছুই
খাই নি,যদিও খালা,ফুপু ও অনান্যেরা
খাওয়ানোর অনেক চেষ্টা করছে তবুও
পারে নি,মা যে পরম মমতা নিয়ে মুখে
খাবার তুলে দিতো সেটা অন্য কেউ
পারবে না তাই খাই নি।
মায়ের অসুখটা আগেই ধরা পড়েছিলো
কিন্তু মা সেটা বুঝেও চেপে
গিয়েছিলেন,বাবা অনেকবার বলেও
মাকে ডাক্তারের কাছে নিতে
পারে নি,মা হেসে বলতো কিছু হয়
নি,এমনি ই কমে যাবে।কিন্তু সেটা
যে কমবে না বরং মা কে আমার
থেকে চিরদিনের জন্য আলাদা করে
দেবে সেটা মা বা বাবা জানতেও
পারে নি।তাই তো মা আমার আমায়
একা রেখে চলে গেলো, ঘুমিয়ে
গেছেন চিরনিদ্রায়।
.
মায়ের মৃত্যুর আজ একমাস পূর্ণ হলো,এই
একমাস আমার কাছে একযুগ মনে
হয়েছে,দিনগুলি যে কতটা কষ্টে
কেটেছে সেটা যাদের মা নেই
তারাই ভালো বুঝবে ,একটা মা হারা
ছেলে যে কতটা অসহায় সেটা অন্যরা
কি বুঝবে?বুকের মাঝে কষ্টগুলি দলা
পাকিয়ে থাকে,দীর্ঘশ্বাস বুক চিরে
বেড়িয়ে আসতে চায়,কান্নাগুলি
বৃষ্টির মতো অঝোর ধারায় ঝরতো
প্রতিদিন রাতে,প্রতিদিন মায়ের
কবরের কাছে গিয়ে মায়ের কবরটা
জড়িয়ে ধরে কাঁদতাম আর বলতাম ও মা
তুমি কেন আমায় ছেড়ে চলে গেলে?
কিভাবে তোমার বুকের
মানিকটাকে ছেড়ে একা ঘুমাচ্ছো?
তোমার কি একবারো আমার কথা মনে
পড়ছে না মা?জানো মা আজ কেউ
তোমার মত আদর করে না,না খেয়ে
থাকলে মুখে তুলে খাইয়ে দেয়
না,,গল্প শোনায় না,ও মা আমায়ও
তোমার কাছে নিয়ে যাও,তোমায়
ছাড়া আমার আর ভালো লাগে না,ও
মা তোমার মানিকটাকেও তোমার
কাছে নিয়ে যাও মা,আমি তোমায়
ছাড়া একা থাকতে পারবো না
মা,,,,,বলে প্রতিদিন রাতে মায়ের কবর
জড়িয়ে ধরে কাঁদতাম আর ওইভাবে কখন
যে ঘুমিয়ে পড়তাম সেটা টের ও
পেতাম না।
.
আজ কিছুদিন ধরে বাসায় সব ফুপুরা
মিলে মিটিং করছে(বাবারা
ছিলেন তিন বোন আর এক ভাই),,তাদের
আলাপ আলোচনা শুনে বুঝতে পারলাম
তারা বাবাকে আবার বিয়ে করাবে
ও সেই জন্য সবাই মিলে আলোচনা
করছে আর বাবাকে বুঝাচ্ছে,কিন্তু
বাবা বিয়ে করতে চাইছেন না।তার
এক কথা সৎমা যদি আমার যত্ন না নেয়?
আমায় পর করে দেয়,,,তাই বাবা রাজি
হচ্ছেন না।আমার ফুপুরা বাবাকে বুঝায়
যে আমায় দেখাশোনা করার জন্য আর
বৃদ্ধ দাদীর সেবাযত্ন করার জন্যও তো
কাউকে দরকার,এভাবে কতদিন
চলবে,তাদের ও তো সংসার আছে
বলে বাবাকে বুঝায়।
বহুবার বুঝানোর পর অবশেষে বাবা
রাজি হলেন কিন্তু শর্ত দিলেন যে
যাকে বিয়ে করবেন সে আমায় কখনো
কষ্ট দিতে পারবে না,আমায় নিজের
সন্তানেরর মত আদর করবে,,তবেই বাবা
বিয়ে করবেন নাইলে না।ফুপুরা
বাবাকে বললেন আচ্ছা ঠিক আছে
সেটাই হবে বলে তারা বাবার জন্য
মেয়ে দেখতে লাগলেন।
কিছুদিন খোজাঁর পর একজনকে তাদের
পছন্দ হলো,তারা বাবাকে ছবি
দেখায় কিন্তু বাবা বলে তোমরা যখন
পছন্দ করেছ তাহলে আমর আর আপত্তি
নেই,যা ভালো মনে করো সেটাই
করো।
.
কিছুদিন পর ফুপুদের পছন্দ করা মেয়ের
সাথে বাবার বিয়ে হয়ে যায়,বিয়ের
দিন আমায় আমার খালার বাসায়
রেখে আসা হয়,বিয়ের পরেরদিন এক
ফুপু এসে আমায় নিয়ে যায়
বাসায়,বাসায় যাওয়ার পর বাবা
আমায় নতুন মায়ের কাছে নিয়ে যায় ও
পরিচয় দিয়ে বলে আজ থেকে ও
তোমারও ছেলে,ওকে নিজের
ছেলের মত মানুষ করো,আদর করো,,
কেমন।নতুন মা কেমন করে যেন আমার
দিকে তাকালো,মনে হলো উনি
আমায় পছন্দ করে নি,আসলে উনি
কেনো,কোন মেয়ে ই চায় রেডিমেড
বাচ্চার মা হতে??তবুও উনি আমার
দিকে চেয়ে হাসলেন,আমার কাছে
মনে হলো উনি জোড় করে হাসলেন।
.
রাতে বাবার কাছে ঘুমাতে যেতে
চাইলে দাদী বললো এখন থেকে তার
সাথে ঘুমাতে,বাবা নতুন মায়ের
সাথে ঘুমাবেন।আমি বাবার সাথে
ঘুমাবো বলে কান্না করলাম কিন্তু তবুও
দাদী যেতে দিলো না,মা মারা
যাওয়ার পর সবার এই দাদী ছাড়া
বাকি সবার আদরও কমে গেছে,কেউ
আগের মত খেয়ালও রাখে না,ঠিক
গাছে জট পাকিয়ে থাকা আগাছার
মতো,কেউ নজরও দেয় না।কান্না করতে
করতে ঘর থেকে বেড়িয়ে মায়ের
কবরের কাছে চলে গেলাম আর মায়ের
কবর জড়িয়ে ধরে কেদেঁ কেদেঁ সবার
বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে করতে
ঘুমিয়ে গেলাম।
.
বিয়ের কিছুদিন পর বাবা ব্যবসার জন্য
শহরে চলে গেলেন,বাবা যতদিন
ছিলেন ততদিন নতুন মা একটু হলেও আদর
করতেন,খেয়াল রাখতেন কিন্তু বাবা
চলে যাওয়ার পর নতুন মা সেটাও করা
বন্ধ করে দিলেন, ঠিকমতো খাবারও
দেন না,কোনদিন এমনও গেছে
সারাদিন না খেয়েও থাকতে
হয়েছে তবুও কেউ একবার জিজ্ঞেসও
করে নি খেয়েছি কি না(দাদী
ছাড়া),,,সবাই নিজ নিজ কাজ নিয়ে
ব্যস্ত, তাদের এখন আমার জন্য আদর মায়া
মমতা নেই বললেই চলে।নতুন মা আমায় দু
চোখে দেখতে পারতেন না,নানা
ভাবে আমায় কষ্ট দিতেন,অপমান
করতেন,দুর দুর করতেন কিন্তু তবুও আমি
তার কাছে যেতাম একটু ভালোবাসা,
আদর ও মমতার জন্য,আমি যে
ভালোবাসার কাঙাল, কিন্তু নতুন মা
আমায় তাড়িয়ে দিতেন,অনেক কটু
কথা শোনাতেন।এসব শুনে মনে অনেক
কষ্ট পেতাম তবুও যেতাম না,কারন উনি
আমায় ছেলে না ভাবতে পারেন
কিন্তু আমি তো উনাকে মা
ভাবি,তাই বারবার উনার কাছে ছুটে
যাই একটু ভালোবাসা পাবার
জন্য,কিন্তু প্রতিবার ই একবুক হতাশা
নিয়ে ফিরে আসতে হতো।
.
বাবা শহর থেকে কিছুদিন পর পর
বাসায় আসতেন,বাবা এলেই নতুন মা
আমার নামে রাজ্যের অভিযোগ তুলে
ধরতেন,আমি এটা করেছি সেটা
করেছি,ঠিকমতো পড়াশোনা করি না
(তখন আমি সবেমাত্র ক্লাশ ফাইভ
থেকে সিক্সে ওঠেছিলাম),বাজে
ছেলেদের সাথে চলাফেরা
করি,আরো নানা অভিযোগ করে করে
বাবার মন বিষিয়ে তুলতো,বাবাও এসব
শুনে আর বিয়ের পর কেমন পরিবর্তন হয়ে
গিয়েছিলেন,সৎমার কথা শুনে আমায়
অনেক বকা দিতেন,আমার একটা কথাও
শুনতেন ও বিশ্বাস করতেন না।
একবার নতুন মা তার গলার হার খুজেঁ না
পেয়ে বাবার কাছে মিথ্যা
অভিযোগ করলেন সেটা নাকি
সরিয়েছি,আমার চুরির অভ্যস আছে,এর
আগেও চুরি করেছি এটা সেটা বলে
বাবার কাছে আমার নামে নালিশ
করলো,বাবা মার কথা শুনে সেদিন
আমায় প্রচন্ড মার দিলেন,মারের
চোটে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই,রক্ত
বের হয় শরীর থেকে,তবুও বাবা
থামে নি,দাদী আমার চিৎকারের শব্দ
শুনে এসে আমায় অজ্ঞান ও রক্তাত্ত
দেখে টেনে নিজের ঘরে নিয়ে
যান,নিয়ে গিয়ে আমার রক্ত মুছে দেন
ও আমার মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে
ঘুম পাড়িয়ে দেন।আমিও সেদিন
দাদীর কোলে মাথা রেখে ঘুমাই।
এরই মাঝে আমার খালা অনেকবার
আমায় তাদের কাছে নিতে
চেয়েছেন কিন্তু আমি যাই নি,কারন
উনি আমায় ছেলে না ভাবলেও
আমিতো উনাকে মা ভাবি,আর মা
কে ছেড়ে তার ছেলে কোথায়
যাবে?কিভাবে যাবে?তাই এত
মারধোর,অপমান আর কষ্ট সত্ত্বেও
খালার সাথে যাই নি।
.
এতকিছু হওয়ার পরও আমি লেখাপড়া
ছাড়ি নি,আবার স্কুলে যাওয়া শুরু
করলাম কিন্তু কেউ সহজে আমার সাথে
মিশতে চাইতো না,কথা বলতে
চাইতো না,পাশে বসতে চাইতো
না,,সবাই বলতো তোর তো মা নেই,তুই
ভালো ছেলে না,তুই আমাদের সাথে
মিশবো না।এসব শুনে অনেক
কাঁদতাম,নিজেকে অনেক একা
ভাবতাম।
কিন্তু আল্লাহ সবার জীবনেই এমন একজন
কে পাঠান যে শতকিছুর পরও পাশে
থাকে,কখনো দুরে যায় না,ছায়া হয়ে
পাশে থাকে,,,তেমন আমার জীবনেও
একজন ছিলো,আমার বন্ধু জীবন,সবাই
আমার দুর দুর করলেও ও কখনো আমায় দুর দুর
করে নি,তাড়িয়ে দেয় নি, পাশে
রেখেছে, কথা বলেছে,আমার মা নেই
সেই জন্য আফসোস করতো,,আমায় ভরসা
দিতো।যদিও সবাই জীবনকে খারাপ
ছেলে বলেই জানতো কারন ও
ইচড়েঁপাকা ছিলো,এই বয়সেই
সিগারেট খেতো,বড় মানুষের মত কথা
বলতো,ঠিকমতো পড়াশোনা করতো না
তাই কেউ ওর সাথে মিশতো না।ও
যতক্ষণ স্কুলে থাকতো সবসময় আমার
পাশেই থাকতো,কথা বলতো,এমনও
হয়েছে সকালে না খেয়ে স্কুলে
গিয়েছি,, ও জানতে পেরে আমায় ওর
বাসা থেকে খাবার এনে খাইয়েছে,
ওর টিফিন সবসময় আমার সাথে ভাগ
করে খেয়েছে।
ও সবসময় আমায় সাহস দিতো।ওর সাথে
চলতে চলতে আমিও সিগারেট খাওয়া
শুরু করি কারন ও বলতো সিগারেট
খেলে নাকি কষ্ট কমে,মনটা হালকা
হয়।তাই আমিও কষ্ট ভুলতে সিগারেট
খাওয়া শুরু করি।এতটুকু বয়সে কেউ
সিগারেট খায় এটা কেউ বিশ্বাস
করতে চাইবে না।করার কথাও
না,কিন্তু আমি খেতাম,কষ্ট ভুলে
থাকতে।
.
আজ দাদীর মুখে শুনলাম আমার নাকি
বোন হবে,এটা শুনে আমি অনেক
খুশি,,বাড়ির সবাই সৎমাকে নিয়ে
ব্যস্ত, এখন কেউ আমায় দেখে না শুধু
দাদী ছাড়া,বাবাও আমায় দেখতে
পারেন না,যে বাবা আমার কথা
ভেবে বিয়ে করতে চান নি সেই
বাবা আজ আমায় দু চোখে দেখতে
পারেন না ভাবতেই চোখ দিয়ে
অঝোর ধারায় পানি পড়ে,এখনো
মাঝে মাঝে মায়ের কবরে গিয়ে
মায়ের কবরটা জড়িয়ে ধরে কাদিঁ আর
অনেক অভিযোগ করি,কেন আমায় একা
রেখে গেলে মা,,আজ তুমি নেই তাই
কেউ আমার খেয়াল রাখে না,,জানো
না বাবাও অনেক বদলে গেছে,আমায়
দেখতে পারেন না,আমার আর ভালো
লাগে না মা,তুমি আমায় তোমার
কাছে নিয়ে যাও মা,আমি তোমার
কাছে যাবো,, বলে মায়ের কবর
জড়িয়ে ধরে কাঁদতাম।
.
একমাস হলো আমার বোন
হয়েছে,শুনেছি অনেক সুন্দর হয়েছে
দেখতে,কারন আমি এখনো ওকে
দেখতে পাই নি,পাই নি বলতে সৎমা
দেখতে দেয় নি।উনার কথা হচ্ছে আমি
অপয়া,আমার ছায়া ওর উপর পরলে ওরও
আমার মত অবস্থা হবে,এটা সেটা
বলতেন।আমার খুব ইচ্ছে হত ওকে কোলে
নিতে কিন্তু যেখানে ওকে দেখতেই
পেতাম না সেখানে ওকে কোলে
নেয়ার চিন্তা করাটাও বাতুলতা।ওর
একটা নামও দিয়েছিলাম,,কুট্টি।
অনেক আজব একটা নাম,,এই নামেই ওকে
ডাকবো বলে স্থির করি।
একদিন সৎমা ঘরে ছিলেন না,আমি
লুকিয়ে ঘরে গিয়ে দেখি কুট্টি
( আমার সৎ বোন হলেও আমি ওকে আপন
বোন ই ভাবতাম)ঘুমিয়ে আছে, কত সুন্দর
মায়াবী চেহারা,কি ফর্সা
শরীর,তুলতুলে গাল,খাড়া নাক,চোখ!!
একদম আমার মতো দেখতে।আমি
কুট্টিকে কোলে নেয়ার লোভ
সামলাতে না পেরে কোলে
নেই,তখনি হঠাৎ ও কেদেঁ ওঠে,ওর
কান্নার আওয়াজ পেয়ে সৎমা দৌড়ে
আসে ও কুট্টিকে আমার কোলে দেখে
আমার কোল থেকে নিয়ে নেন ও
আমায় অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে
থাকেন ও বাবা এলে মিথ্যা নালিশ
করে মারও খাওয়ান,আমার দোষ আমি
কেন ওনার মেয়েকে কোলে নিলাম!!
তাই আমায় এত নির্যাতন সহ্য করতে
হলো।কিন্তু আমি এসব নীরবে সয়েছি
কারন আমি তো আমার কুট্টিকে
কোলে নিয়েছি,আদর করতে
পেরেছি, এটা ভেবে সব নির্যাতন
ভুলে গেলাম
.
এরই মাঝে আমি সিগারেট খাই এটা
জানাজানি হয়ে যায়,বাবাও এখন আর
আমায় কিছু বলে না,আমার অবস্থা
ছাড়া গরুর মত হয়ে গেছে।কেউ খোজ
খবর নেয় না(দাদী,খালা ও জীবন কে
বাদে),আদরও করে না।এই তিনজন ই
ছিলো আমার সব,আর একজন ছিলো,সে
হলো আমার বোন,আমার কুট্টি।ওকে
অনেক ভালোবাসতাম,আদর করতাম।
যদিও ওর কাছে যেতে পারতাম না।
ইদানীং বাসায়ও সিগারেট
খাই,এটা নিয়ে বাবা ও সৎ মা মাথা
ঘামান না,তারা হয়তো ভাবেন আমি
মারা গেলে তাদের কিছু যায় আসবে
না,আপদ যত দ্রুত বিদায় হবে ততই মঙ্গল।
যদিও দাদী ও খালা মানা করতেন ও
বকতেন তবুও আমি খেতাম,কারন
কষ্টগুলি আমি ভুলে থাকতে চাইতাম।
আর মনের সব অব্যক্ত কথাগুলি একটা
ডায়েরীতে লিখে রাখতাম।
যেখানে মা মারা যাওয়ার পর
থেকে এখন পর্যন্ত যা যা হয়েছে সব
লিখে রেখেছি,,ডায়েরী টা সবসময়
আমার কাছেই রাখতাম,কাউকে
দেখতে দিতাম না,লুকিয়ে রাখতাম।
কেউ জানতো না ডায়েরীর কথা।
ডায়েরীতে আমার মনের কথাগুলো
লিখে রাখতাম,,.....
***আজ মা মারা গেছেন,আমি
হাওমাউ করে কাঁদছি, সবাই আমায়
ধরে রেখেছে,মার কাছে যেতে
দিচ্ছে না।কিছুক্ষন পর কিছু লোক মা
কে গোসল করিয়ে সাদা কাপড়ে
মুড়িয়ে কোথায় যেন নিয়ে যাচ্ছে,
আমাকে যেতে দেয় নি।
***মা মারা গেছেন আজ
চারদিন,অনেকে খাবার জন্য জোর
করছেন কিন্তু আমি খাই নি,কারন সবসময়
মা ই আমায় খাইয়ে দিতেন পরম
মমতায়,উনার হাতে ছাড়া আমি
খেতাম না তাই খাই নি।
***মা মারা যাওয়ার পর এখনও প্রায় ই
রাতে মায়ের কবরে গিয়ে মায়ের
কবরটা জড়িয়ে ধরে কাদিঁ,কেন উনি
আমায় ছেড়ে একা রেখে চলে
গেলেন?আমায় ছেড়ে থাকতে কি
তোমার কষ্ট হয় না মা,,জানো কেউ
আমায় এখন আদর করে না,মুখে তুলে
খাইয়ে দেয় না,তুমি আমায় তোমার
কাছে নিয়ে যাও মা,নিয়ে যাও।
***আজ বাসায় শুনলাম বাবাকে নাকি
আবার বিয়ে করাবে,কিন্তু বাবা
রাজি না,সবাই অনেক বলে কয়ে
বাবাকে রাজি করালো বিয়ের
জন্য,আমিও খুশি হলান কারন আমি নতুন
মা পাবো,উনি আমায় আদর করে
খাইয়ে দেবেন পরম মমতায়,অনেক
ভালোবাসবে।
***আজ বাবা নতুন মা কে নিয়ে
এসেছেন, আমি উনার সামনে গেলাম
কিন্তু নতুন মা আমায় কাছে টেনে নেন
নি,কেমন যেন বিরক্ত ভাবে আমার
দিকে তাকালেন,মনে হলো আমায়
উনি পছন্দ করেন নি,তবুও আমি কিছু মনে
করি নি কারন যা ই হোক উনি আমার
মা।
***নতুন মা আমায় দুচোখে দেখতে
পারেন না,সবসময় দুর দুর করেন,একটুও আদর
করেন না,ভালেবাসেন না,তারপরও
আমি বারবার উনার কাছে ছুটে যাই
একটু ভালোবাসার জন্য কারন আমি যে
ভালোবাসার কাঙাল,কিন্তু
বিনিময়ে মার,খারাপ কথা ও অপমান
ছাড়া কিছুই জুটতো না।তবুও আমি কিছুই
মনে করতাম না কারন শত হলেও উনি
আমার মা।
***আজ নতুন মা বিনা দোষে বাবার
হাতে আমায় অনেক মার
খাওয়ালেন,বিয়ের পর বাবাও অনেক
বদলে গেছেন, নতুন মায়ের কথা শুনে
আমায় প্রচন্ডভাবে মেরে রক্তাত্ত
করেছেন,মার খেয়ে আমি অজ্ঞান
হয়ে গিয়েছিলাম, আমার আর্তনাদ
শুনে দাদী দৌড়ে এসে আমায় টেনে
তার ঘরে নিয়ে যান।
***আজ প্রথমবার সিগারেট খাচ্ছি,
জীবন বলেছে সিগারেট খেলে
নাকি কষ্ট কমে,দুঃখ হালকা হয় তাই
খাচ্ছি,সিগারেট জ্বালিয়ে টান
দিতেই খকখক করে কাশতে
লাগলাম,,জীবন বললো অভ্যাস নেই
তাই এমন হচ্ছে,আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে
যাবে।ও ঠিক ই বলেছিলো,কষ্ট দুর
হয়,পরে সিগারেট খাওয়াটা অভ্যাস
হয়ে যায়।
***আজ আমি অনেক খুশি কারন আমার
বোন হয়েছে,ওর একটা নামও রেখেছি,,
কুট্টি,নতুন মা এখনও আমায় ওকে দেখতে
দেয় নি,তবে শুনেছি ও দেখতে অনেক
সুন্দর হয়েছে,ইশ!কবে যে কুট্টিকে
দেখবো আর আদর করবো।
***আজ কুট্টিকে দেখেছি ও কোলেও
নিয়েছি, ও দেখতে অনেক সুন্দর
হয়েছে,একদম আমার মত,আমি কোলে
নিতেই ও কেদেঁ দেয়,ওর কান্না শুনে
নতুন মা দৌড়ে এসে কুট্টিকে আমার
কোল থেকে কেড়ে নেন ও বাবার
হাতে অনেক মার খাওয়ান,তবুও আমি
খুশি কারন আজ আমি আমার বোনকে
কোলে নিতে পেরেছি।
***আজ হঠাৎ কুট্টির কি যেন হয়েছে,ওর
নাকি খিচুনি ওঠেছে,নতুন মা
পাগলের মত হয়ে গেছে, বাবা বাসায়
ই ছিলেন,, বাবা দ্রুত কুট্টিকে
হাসপাতালে নিয়ে গেলেন,নতুন মাও
কাঁদতে কাঁদতে পেছন পেছন
গেলেন,ওর কিছু হলে আমি কার সাথে
কথা বলবো?কাকে কুট্টি বলে
ডাকবো?না ওর কিছু হবে না ,,
সারারাত দু হাত তুলে কেদেঁ কেদেঁ
আল্লাহর কাছে বলেছি হে আল্লাহ
তুমি আমার প্রান নিয়ে নাও তবুও
আমার বোনের কোন কিছু করো
না,,সারারাত কেঁদেছি, মোনাজাত
করেছি আল্লাহর কাছে।আল্লাহ হয়তো
আমার ডাক শুনেছিলেন, আমার কুট্টির
কিছু হয় নি,ও সুস্থ হয়ে গিয়েছিলো।
পরদিন বাবা ওকে নিয়ে বাসায়
আসেন,ও আগের মতই হাসি খুশি ছিলো।
***আজ কুট্টির ছ মাস পূর্ণ হলো,আধো
আধো কথাও বলতে পারে,আমি ওর মুখে
ভাই ডাকটা শুনতে ব্যকুল হয়ে আছি
কিন্তু নতুন মা তো আমায় ওর ধারে
কাছেও যেতে দেয় না,কিভাবে ওর
আধো মুখে ভাই ডাক শুনবো?ওর
জন্মদিনেও আমায় ওর কাছে যেতে
দেয় নি,দুরে দুরে রেখেছে,খুব
কেঁদেছি আমি।
***না আর থাকবো না,যেদিকে দুচোখ
যায় চলে যাবো,আমার জন্য সবার
অসুবিধা হচ্ছে,নতুন মা ও আমায় সহ্য
করতে পারে না,বাবাও আদর করে
না,কাল সকালেই বাসা ছেড়ে চলে
যাবো অনেক দুরে,কুট্টি কে ছেড়ে
যেতে মন চাইছে না,আমি কিভাবে
থাকবো ওকে ছাড়া??ও যে আমার
কলিজার টুকরা,আমার জীবন,অনেক
কান্না পাচ্ছে,নতুন মাকেও ছেড়ে
যেতে মন চায় না,খুব ইচ্ছে করে
উনাকে মা বলে ডাকতে,উনার আদর ও
ভালোবাসা পেতে,কিন্তু উনি আমায়
দেখতেই পারেন না,আমি না
থাকলেই উনি যদি ভালো
থাকেন,সবাই ভালো থাকে তবে
সেটাই হবে,কাল ই চলে যাবো।অনেক
দুরে..........
.
ডায়েরীটা পড়া শেষ করলাম,আর
কোনদিন হয়তো এখানে লেখা হবে
না,কাল ই তো চলে যাবো,তবে খালি
হাতে যাচ্ছি না,সাথে নিয়ে
যাচ্ছি কুট্টির হাসি,খালা,দাদী ও
জীবনের ভালোবাসা সাথে নিয়ে
যাচ্ছি।
খুব মিস করব সবাইকে,ভাবতেই অনেক
কান্না পাচ্ছে
যাওয়ার আগে শেষবারের মত মায়ের
কবরে গেলাম,মায়ের কবরটা জড়িয়ে
ধরে হাউমাউ করে কাঁদলাম, আজকের
পর হয়তো আর আসা হবে না,আগে কষ্ট
পেলে মায়ের কবরে এসে কাঁদতাম
কিন্তু দুরে চলে গেলে কষ্ট পেলে
কিভাবে থাকবো?
.
বাসায় এসে বাইরে দাড়িয়ে
সিগারেট খাচ্ছি, খুব খারাপ
লাগছে,কাল সবাই কে ছেড়ে,আমার
বোন, মা বাবা, দাদী,খালা ও
জীবনকে ছেড়ে অনেক দুরে চলে
যাবো,কিভাবে থাকবো,কোথায়
যাবো কিছুই জানি না,শুধু এটাই
জানি যে আমায় চলে যেতে
হবে,তাতেই মা খুশি হবেন,ছেলে হয়ে
মায়ের জন্য তো এতটুকু করতেই পারি।
এসব ভাবছি আর সিগারেট খাচ্ছি,কখন
যে নতুন মা পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে
টের ও পাই নি,উনি আমার পেছন
থেকে যখন সামনে এসে
দাঁড়ালেন,হঠাৎ খেয়াল করলাম উনার
হাতে আমার ডায়েরী, আরে!!এটা নতুন
মার হাতে গেলো কিভাবে??মনে
পড়লো মায়ের কবরে যাওয়ার আগে
ডায়েরীটা টেবিলে রেখেই
কাঁদতে কাঁদতে দ্রুত চলে
গিয়েছিলাম,তাই লুকাতে মনে
ছিলো না।আচ্ছা নতুব মা কি ডায়েরী
টা পড়েছেন? মনে হয় না পড়েছেন,আর
পড়লেই বা কি,আমি তো কাল চলে
যাবো,,,অনেক দুরে।নতুন মা আমায়
ডাকলেন,,,,
----আকাশ(নতুন মায়ের মুখে আমার নাম
শুনে অবাক হলাম কারন নতুন মা কখনোই
আমার নাম ধরে ডাকে নি)।
----জ্বী বলুন(হাতে তখনো সিগারেট)।
----কুট্টি কে ছেড়ে দুরে থাকতে
পারবি? (উনি আমায় এই প্রথম তুই করে
ডাকলেন)।
----না পারলেও থাকতে হবে,কারন
আমি না থাকলেই সবাই ভালো
থাকবে,আমি কারো বোঝা হয়ে
থাকতে চাই না,তাই চলে যাবো।
-----তোর মা কে ছেড়েও চলে যাবি?
-----(অবাক হয়ে)আমার মা নেই,মরে
গেছেন।
-----আমি কি তোর মা নই?আমায় তুই মা
ভাবিস না?
-----না ভাবি না,কারন আপনি আমার
মা নন।
-----যদি মা না ই ভাবিস তাহলে
কেনো আমি বারবার অপমান করার
পরেও আমার কাছে যেতিস?শত কষ্ট
পেয়েও কেন আমায় ছেড়ে যাস নি?
কেনো আমায় মা বলে ডাকতি বল...
----কে বললো,এই যে কাল ই চলে
যাচ্ছি আমি।
----আমার ভুলগুলো কি সংশোধন করার
সুযোগটাও দিবি না বাবা(ছলছল
চোখে বললেন নতুন মা)।
----আপনি কোন ভুল করেন নি,আপনার
কোন দোষও নেই,আমি নিজের ইচ্ছা ই
চলে যাবো।
----সন্তান ভুল করলে মা ক্ষমা করে,আর
আজ মা তার সন্তানের কাছে নিজের
কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাইছে,আমায়
ক্ষমা করে দে বাবা(কেদেঁ দিয়ে
বললেন নতুন মা)।
-----আপনি কোন দোষ করেন নি।
-----তাহলে কোনো চলে যেতে
চাইছিস আমায় ছেড়ে,তোর কি কষ্ট
হবে না?তুই কি আমায় মা ভাবিস না?
----না।
----তাহলে এখানে কেন লিখেছিস
যে মায়ের ভালোবাসা পেতে,তার
কোলে মাথা রেখে ঘুমাতে ,মা
বলে ডাকতে ইচ্ছে হয়,,এগুলো কি
মিথ্যা? বল
-----না,, সব সত্যি,, এগুলো ভাবতাম
কিন্ত এখন আর ভাবি না,কারন লাভ
নেই।
-----আমায় তোর মা হওয়ার সুযোগ
দিবি?
-----না,,,আমার মা মারা গেছেন।
-----বুঝেছি, তুই আমায় ক্ষমা করিস
নি,আমার ভুলের কোন ক্ষমা নেই,কিন্তু
তুই একবার আমার মাথায় হাত রেখে বল
তুই আমায় মা ভাবিস না আর আমায়
ছেড়ে দুরে যেতে চাস,, বল(বলেই
আমার হাতটা টেনে নিয়ে উনার
মাথায় রাখলেন)।
-----(হাতটা দ্রুত সরিয়ে)নাআআআ...
-----এতই যখন ভালোবাসিস তখন কেন
দুরে যেতে চাস আমায় ছেড়ে,তোর
কুট্টি কে ছেড়ে,,আমার ভুলগুলো
শুধরাতে দে বাবা,আমায় ক্ষমা করে
দে, আমায় ছেড়ে যাস নে(বলেই
অঝোরে কাঁদছেন নতুন মা)।
মায়ের চোখের পানি সহ্য করতে
পারে এমন সন্তান দুনিয়াতে কোথাও
নেই,আমিও সিগারেট টা ফেলে
মায়ের চোখের পানি মুছে দিয়ে
বললাম...
----কাদবেনঁ না,আমি কোথাও যাবো
না,আপনার কথায় আমি কখনো কিছু মনে
করি নি তাই ক্ষমা করার প্রশ্ন ই আসে
না।
----আমায় ক্ষমা করলে কেন আপনি
আপনি করছিস?আমায় কি মা বলে
ডাকতে পারিস না বাবা,,একবার মা
বলে ডাক বাবা,,কলিজাটা ঠান্ডা
কর মা বলে ডেকে(কেদেঁই বলেছেন
নতুন মা)
এটা শুনে আর সহ্য হলো না,নিজেকে
ধরে রাখতে পারলাম না,,, "মা"বলে
ডেকেই মা কে জড়িয়ে ধরে অঝোরে
কাঁদতে লাগলাম,এ কান্না সুখের
কান্না,এ কান্না ফিরে পাওয়ার
কান্না,আজ আমি আমার হারিয়ে
যাওয়া মা কে আবারো খুজেঁ
পেয়েছি,মা ও আমায় বুকে শক্ত করে
জড়িয়ে ধরে অঝোরে কেদেঁই
চলেছে আর চুমুতে চুমুতে আমায় ভরিয়ে
দিচ্ছে,আজ যে আমার পরম আনন্দের
দিন।আমি এখন আর এতিম নই,আমারো
এখন সবার মত মা আছে....
কিছুক্ষণ পর মা আমার হাত ধরে তার
ঘরে নিয়ে যান ও কুট্টি কে আমার
কোলে দিয়ে বলেন নে,এবার নিজের
বোনকে প্রান ভরে দেখ আর আদর
কর,আজ থেকে ও তোর আপন ছোট
বোন,ওর সাথে খেলবি,আদর করবি সব
করবি,বুঝেছিস মা পাগল ছেলে......
আমি মার দিকে চেয়ে হাসলাম,সত্যি
মায়েরা এমন মমতাময়ী ই হয়,যার দিকে
তাকালে সব কষ্ট নিমিষেই দুর হয়ে
যায়,যার কথা শুনলে মনটা ভরে
যায়,যার একটু হাসিতে পৃথিবীর সব সুখ
তুচ্ছ মনে হয়,,সে হলো একজন
মা,মমতাময়ী মা.......
আজ মা আমায় নিজের হাতে ভাত
খাইয়ে দিচ্ছেন,আমি মায়ের দিকে
তাকিয়ে খাচ্ছি আর দেখি মা
কাঁদছেন,মা কে জিজ্ঞেস করলে মা
উত্তর দেন আরে পাগল ছেলে এটাতো
সুখের কান্না,তুই বুঝবি না...
আমি হাসি,আমার হাসি দেখে মা ও
হাসছে.........আমার মা,,,মমতাময়ী
মা.........
.
মোবাইলের রিংটোনের আওয়াজে
বাস্তবে ফিরে আসি,এতক্ষণ ধরে
নিজের ছোটবেলার কথাগুলো
ভাবছিলাম ,কত দ্রুত সব বদলে
গিয়েছিলো,সময় কত দ্রুত চলে যায়,আজ
আমি দেশের বড় শিল্পপতিদের
একজন,,অনেক নামডাক আমার,,তবে এসব
নিয়ে আমি বিন্দুমাত্র ভাবি
না,কারন আমার কাছে আমার মা আর
বোন ই সব,,কারন যার মা আছে সে
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধনী....
মোবাইল টা হাতে নিয়ে দেখে মা
ফোন করেছে,রিসিভ করতেই মা ধমক
দিয়ে বললেন......
----তোর এতক্ষণ লাগলো ফোন ধরতে?
তোর বোনের জন্মদিন এটাও কি ভুলে
গেলি?
-----( হেসে বলি) না মা ভুলি
নি,ভুলবো কেনো।
----(মা বললেন) জলদি আয় বাবা,তোর
বোন জেদ ধরে বসে আছে সে তার
ভাইয়াকে ছাড়া কেক কাটবে না,তুই
জলদি চলে আয়।বোনটাও একদম ভাইয়ের
মতই হয়েছে..
-----আচ্ছা মা আসছি,,,বলে ফোনটা
রেখে দিই।
এখন আমায়বদ্রুত বাসায় যেতে হবে
নাইলে পাগলীটা কেক কাটবে না
আর গাল ফুলিয়ে বসে থাকবে,মা ও
বকা দিবে,,বলেই কুট্টির জন্য কেনা
সারপ্রাইজ গিফটটা নিয়ে গাড়িতে
করে বাসার দিকে রওনা
দিই,যেখানে অপেক্ষা করছে আমার
মমতাময়ী মা আর প্রানের চেয়ে
প্রিয়,আমার আদরের ছোট বোন
কুট্টি..........
(কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে
দেখবেন)
প্রচেষ্টায়:-Md.Samrat Hossain Sajib(বিবর্ণ
ধূসর আকাশ)