Wednesday, June 21, 2017

গল্প: ভ্যালেন্টাইন্স_ডে_স্পেশাল_গল্প """"""" ৮

# ভ্যালেন্টাইন্স_ডে_স্পেশাল_গল্প """"""" ৮
.
-- ওই পেত্নি এরকম চিল্লায়া পুরা ক্লাস মাথায়
তুলতেছিস কেনো?
-- আমার ইচ্ছা আমি চিল্লাবো তোর কি?
-- জীবনে ভালো হবিনা ডাইনি পেত্নি
-- এহহ তুই মনেহয় কত ভালো সয়তান,
স্টুপিড,গবেট, বুইড়া
-- ওই আমারে বুইড়া বলবিনা
-- আহা তো কি বলবো বুইরা ফেল মাইরা আমাদের
সাথে পড়ে আছিস এখনো
-- দেখ নিপা ফালতু কথা বলবিনা একদম, আমার
টাইফয়েড ছিলো তাই এক্সাম দিতে পারিনাই, নয়তো
স্টুডেন্ট হিসেবে তোর থেকে ভালো আছি,
গাধি, শাকচুন্নি
-- মাসুদ মুখ সামলিয়ে কথা বল, সয়তান তোরে আমি
খুন করবো
-- এহহ সুটকি মাছ আমারে খুন করবে
.
প্রথমে ঝগড়া শেষ পর্যায়ে এসে মারামারিতে রুপ
নেয়,এই ঝগড়া যেনো শেষ হবার নয় , কোন না
কোন বিষয় নিয়ে প্রতিদিন তাদের ঝগড়া লাগা চাই ই
চাই, তুমুল ঝগড়া ।ক্লাসের অন্যরা তাদের এই ডেইলি
ঝগড়ার সাথে পরিচিত।প্রথম প্রথম পেইন লাগলেও
সবাই এখন ওদের ঝগড়া টা ইনজয় ই করে
.
দুজনেই ডিপ্লোমা থার্ড ইয়ারে পড়ে, মাসুদ অবশ্য
এক বছর সিনিয়র ছিলো গত বছর ইয়ার ফাইনালের
সময় টাইফয়েডের কারনে এক্সাম দিতে পারেনি
তাই এক বছর ডিফোল্ডার রয়ে গেছে। এটা নিয়ে
সারাক্ষণ নিপার জ্বালাতন সহ্য করতে হয় ওর
.
সাপ বেজিতে সম্পর্ক তাদের দুজনের,নিপার সব
কিছুতেই মাসুদের সমস্যা সাজ গোজ পোশাক
আশাক পড়াশোনা কথাবলা এভ্রিথিং।
সেম ভাবে নিপাও মাসুদের সব ব্যাপার নিয়ে প্যাঁচ
করে,
.
-- ঐ বুইড়া কালকের ইলেকট্রনিক্স এর এসাইনমেন্ট
টা দে তো স্যার বলেছে তোর থেকে নিতে
-- এহহ আমার বয়েই গেছে তোরে
এসাইনমেন্ট দিতে,দেখছিস না কাজে আছি, যা এখান
থেকে
-- মিম এর সাথে বইসা লুচুমি করতেছিস এটা তোর
কাজ? লুইচ্চা একটা
-- আস্তে বল হারামজাদি, আমি ওর সাথে
এসাইনমেন্টটা নিয়ে কথা বলতেছি,বাই দা ওয়ে আমি
তোরে কেনো এক্সপ্লেইন করতেছি, ধুর যা
তো এখন
-- হারামি লাগবেনা তোর এসাইনমেন্ট
-- হ যা যা তোরে দেখলেই আমার গা জ্বলে
-- হুহহ
.
এসাইনমেন্ট টা জরুরি ছিলো কিন্তু নিপা সেটা
কালেক্ট করতে পারেনি গত ক্লাসে ও ছিলোনা,
তাই কোন কপিও পায়নি।মাসুদের কাছেই একটা
একস্ট্রা কপি ছিলো
যা সালা এখন কি করা স্যার তো বলল মাসুদের
থেকেই নিতে সে তো তার প্রেম নিয়ে বিজি
হুহ।হারামিটা আজকাল মিমের সাথে বেশিই দেখা
যাচ্ছে, হিরো আলম মার্কা চেহারা নিয়ে আবার
প্রেম ও করে, এতক্ষণ নিজের সাথে নিজে কথা
বলে নিপা।।
.
মাসুদ যে মিমক কে পছন্দ করে এটা ওদের
ফ্রেন্ড সার্কেলের সবাই ই জানে অবশ্য।
.
-- কিরে তানিয়া নিপার ইদানিং কি হইছে রে?
-- কেনো?
-- কেমন জানি চুপচাপ থাকে, মন খারাপ করে রাখে
ব্যাপারটা কি?
-- তো তোর জন্য তো ভালোই হলো তাইনা?
তুই তো ওরে সহ্যই করতে পারিস না
-- তা অবশ্য ঠিক বলেছিস, আমার তো শান্তি শান্তি
লাগতেছে
-- হুম তো তোর প্রেম কেমন চলছে?
-- মিমের কথা বলছিস? হাহাহা
-- হাসছিস কেনো প্রোপোজ করেছিস নাকি তাই
বল
-- ধুর না
-- কেনো
-- ও আমাকে পছন্দ করে কিনা এ নিয়ে তো
কনফিউশন এ আছি
-- হুম ক্যারি অন
.
কয়েকদিন থেকে নিপার উচ্ছলতা কমে যাওয়াটা
অনেকটা চোখে পড়ার মতো। ব্যাপারটা মাসুদের
চোখে পড়ছে বারবার, যেখানে আগে নিপা
মাসুদের সাথে ছোটখাটো সব বিষয় নিয়ে ঝগড়া
করতে এক পায়ে খাড়া থাকতো ,সেখানে এখন
ওকে খেপিয়ে দিলেও কিছু বলেনা মুচকি হাসি দিয়ে
কেটে পড়ে,
বাহ পেত্নি টার তো দেখি ভালোই উন্নতি
হয়েছে ,নিজেই হেসে উঠে মাসুদ ।
.
--এই তানিয়া নিপাকে আজকে দুদিন ক্লাসে দেখিনা
কেনো ?
-- তা আমাকে জিজ্ঞেস করিস কেনো?
-- তুই ওর বেস্ট ফ্রেন্ড তোরে না জিগাইয়া
কাকে জিজ্ঞেস করবো?
-- ও একটু সিক
-- কি হয়েছে ওর?
-- জ্বর হইছে
-- মেডিসিন নিচ্ছে তো ঠিকমতো ?
-- নিচ্ছে হয়তো , আজকে আর কথা হয়নি
-- এটা কেমন কথা, তুই ওর কেমন ফ্রেন্ড তাইলে
, খবর ই রাখিস না।তোরা মেয়েরা খুব সেলফিস
-- দেখ ফালতু কথা বলিস না আমিও একটু বিজি ছিলাম, তাই
আজকে আর খোঁজ নিতে পারিনাই
-- ঠিক আছে
.
মাসুদের ও ক্লাসে মন বসছেনা খালি নিপার কথা মাথায়
আসতেছে , আজকে মিম কেও কেনো জানি
অসস্হি লাগতেছে যেখানে অন্যদিন নিজেই
মিমের পিছে পিছে ঘুরতো।আজকে মিম নিজে
থেকেই কথা বলতে চাচ্ছে কিন্তু মাসুদের মুড
কিছুতেই ভালো হচ্ছেনা
.
.
-- নিপা তোর শরীর এখন কেমন?
-- হ্যা এখন ভালো আছি
-- যাক ভালোই হলো
-- কেনোরে আমি মরলেইতো তুই খুশি হোস
তাইনা?
-- তা অবশ্য ঠিক বলেছিস হাহাহা
.
আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি সবাই তাদের ভালোবাসা দেয়া
নেয়া নিয়ে ব্যাস্ত।মাসুদের ও আজকে মিম কে
প্রপোজ করার কথা, এটা অবশ্য ওদের ফ্রেন্ডরা
সবাই জানে, তাই সবাই এটা নিয়ে অনেক ঠাট্টা মস্করা
করছে ।
শুধু নিপা টা যেনো কোথায় গেলো
মাসুদ তানিয়ার থেকে জানতে পারে নিপা ক্যাম্পাসের
লেক পাড়ে আছে
.
-- পেত্নি ( হি হি হি)
-- ...................
-- কিরে তুই চুপচাপ কেনো
-- তোর এখানে কি তুই তো মিমের কাছে থাকার
কথা
-- হ্যা যাব তো, তোকে মিস করছিলাম
-- হাহা আমাকে কেনো মিস করবি আমি তো তোর
শত্রু
-- হ্যা সেটা অবশ্য ঠিক কিন্তু এরকম একটা হ্যাপি
সিচুয়েশন এ শত্রুরাও থাকতে হয়
-- যা তুই তোর ভালোবাসা নিয়ে সুখে থাক আমাকে
ডাকিস না তো,,, যা এখান থেকে
-- না তোকে নিয়ে তারপর যাব
-- আমি যাবনা
-- তাহলে তোকে কোলে করে নিয়ে যাব,চল
বলছি
--আমি যাবনা বলছি যাবনা,
-- কেনো যাবিনা?
-- ...............
-- কিরে বল
-- তুই ঐ ডাইনি টারে প্রপোজ করবি আমি সেটা সহ্য
করতে পারবোনা (চোখ বন্ধ করে এক নিঃশ্বাসে
কথা গুলো বলে ফেলল)
-- মানে?
--জানিনা এত বোঝাতে পারবোনা আমি
-- তার মানে নিপা তুই ও আমাকে ভালোবাসিস?( খুব
বিশ্বয় নিয়ে )
-- আমিও মানে?
-- মানে আমিও যে তোকে ভালোবাসি, অনেক
অনেক ভালোবাসি বিশ্বাস কর
-- তাহলে তুই যে সবাইকে বললি তুই মিমকে
ভালোবাসিস?
-- হ্যা ওটা বলতাম,,কারন আমি তোকে ভোলার জন্য
মিমকে ভালোবাসার অনেক চেষ্টা করেছি, আমি
ভেবেছিলাম তুই হয়তো আমাকে শুধুই ঘৃনা করিস,
কিন্তু বিশ্বাস কর আমার সবটা জুড়ে শুধু তুই আর তুই ই
আছিস
-- সত্তি বলছিস?তাহলে সারাদিন এত ঝগড়া করতি
কেনো, আমাকে পেত্নি বলিস কেনো?;
-- মনে কর এটাই আমার তোর প্রতি এক বুক
ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ,, তোকে রাগিয়ে তোর
সাথে কথা বলার বাহানা ছিলো সবটাই,,সারাক্ষণ তোর
আশেপাশে থাকার জন্যই তোর সব ব্যাপার নিয়ে
খোঁচাতাম
.
নিপার কাছে সবকিছু সপ্নের মতো মনেহচ্ছে,
অতি আনন্দ কেঁদে ফেলেছে সে।
হঠাৎ এক গুচ্ছ সাদা গোলাপ, হাতে মাসুদকে আবিষ্কার
করে নিপা,, ওয়াওওও!! (আবেগ মাখা নির্বাক চাহনি )
.
-- হ্যালো ম্যাডাম আর কতক্ষণ ধরে রাখবো
বলেন,, দেখুন আপনার প্রিয় সাদা গোলাপ ই এনেছি
-- হুহ এভাবে বললে হবেনা
-- আজিব তো তাহলে কিভাবে বলবো
-- জানিনা, আমি গেলাম
বলেই উল্টা ঘুরে চলে যাচ্ছিলো নিপা
ওমনি নিপার পথ আগলে মাসুদ বলা শুরু করলো
.
আমি সেই সুতো হবো
যে তোমায় আলোকিতো করে
নিজে জ্বলে যাব
আমি সেই নৌকো হবো
যে তোমায় পার করে
নিজেই ডুবে যাবো
হবো সেই চোখ যে তোমায় দেখেই বুজে
যাব
হবো সেই সুর যে তোমায় মাতিয়ে করুন হবো
হবো সেই চাঁদ যে হয়ে গেলে রাত তোমায়
আলো দেবো
দিন ফিরে এলে আবার ফুরিয়ে যাব
শুধু ভালোবেসো আমায়.
জড়িয়ে আমার চোখের বৃষ্টি আনবো রংধনু
শুধু আপন থেকো ভালোবেসো
ভালোবেসো আমায়......
আমি তোকে অনেক অনেক ভালোবাসি পাগলি
.
লিখা > সপ্ন বিলাসি মেয়ে

No comments:

Post a Comment