Thursday, October 13, 2016

অতঃপর বিয়ে

অতঃপর বিয়ে

১)
জীবনে এতোটা পথ যখন একা
কাটিয়েছি তখন বাকীটাও কাটিয়ে
যেতে পারতাম। জীবনের এক্টা সময়
স্বিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমিও
সালমান ভাইজানের অনুসারী হবো!!
কিন্তু এখন আমার গুনধর আম্মা আমার
পুরুষত্ব উপর যখন প্রশ্ন তুললো তখন রাজি
নাহ হয়ে পারলাম নাহ।
আম্মা তো সেই খুশি। তার একমাত্র
ছেলের বিয়ে বলে কথা।
কিন্তু আমি যে নিষ্ঠুর। তার খুশিকে
নিমিষেই
দমে দিলাম নির্দয়ের মতো কিছু শর্ত
আরোপ করে।
কিছুদিন আগেই তো লেখাপড়ার
অধ্যায় শেষ করে এক্টা চাকুরিতে
জয়েন করলাম। চাকুরি আমি কখনোই
আমার পেটের জ্বালা
মিটানোর পথ মনে করতাম নাহ। এটা
হলো আমার প্যাশন। যা আমি কিছুদিন
উপভোগ করতে চেয়েছিলাম।
কিন্তু আম্মাজান তা হতে দিবে নাহ
এই ভেবে উঠে পড়ে লেগেছে।
মাস খানিক হয়ে গেলো কিন্তু
আম্মাজান আমার শর্তানুরুপ মতো সম্বন্ধ
পায়নি। এ নিয়ে আম্মাজানের যেনো
দুঃখের শেষ নেই। মায়ের এরকম অবষ্থা
দেখে নিজেরই
খারাপ লাগা শুরু করলো। তাই আজ
অফিস আসার আগে মাকে নিজের
মতো মেয়ে দেখতে বললাম। কিন্তু মা
তো রাজি হয় নাহ। আম্মা বলে কি নাহ
আমার শর্তের মতো মেয়েই খুজে বের
করবে।
আমি হেসে বের হয়ে চলে আসলাম।
সে আমার মা আমার থেকে তার জেদ
যে বেশি হবে সেটাই স্বাভাবিক!!
আর আমি যে শর্তারোপ করেছি তা
কি আদৌ পাওয়া যাবে। কেনো নাহ
সবাই তো আমার মতো তার ছেড়া হয়
নাহ। আচ্ছা আমার মতো বিয়েতে
এলার্জি আছে এমন মেয়ে কি আছে।
আর থাকলেও সে আমাকে বিয়ে
করবে কেন???তার তো এলার্জি আছে।
আর এমন মেয়ে আমার আম্মাজান খুজেই
পাবো কই???জীবনটা তো আর গল্পের
মতো নয় যে তা লিখবো তাই পাঠকরা
পড়বে!! উফ আর পারছি নাহ যা হওয়ার
হবে দেখা যাবে!
২)
কিছুদিন পর আমার খালাত ভাইয়ের
বিয়ে।
নিজের বিয়ে তো হবার নয় তাই
ভাইয়ের বিয়েতে নাচতে নাচতে
চলে গেলাম।
বিয়ে অনুষ্ঠান জিনিসটা বরাবরই
আমার কাছে বোরিং ছিল। সবাই হবু
ভাবির সাথে সেলফি তুলছে অবশ্য
আমি বাদে। আমি তাদের থেকে এক্টু
দুরে বসে ফেবুতে রোমান্টিক গল্প
পড়ে বিয়ে করার ইচ্ছা দৃঢ় করছিলাম।
হঠাৎ করেই এক রমনীর ঝাজালো কথা
শুনতে পেলাম। হবু ভাবিকে এমন এমন পুরুষ
বিরোধী উপদেশ দিচ্ছিলো যেনো
সে দু চার টা বিয়ে করে বসে আছে। হুম
কি মনে হল জানি নাহ এক্টু পর যখন
ভাবির আশেপাশে কেউ ছিল নাহ তখন
হবু ভাবিকে জিজ্ঞেস করেই
ফেললাম রমনী সম্পর্কে। রমনী নাকি
খুবই রাগী পুরুষ বিরোধী এবং তার
বান্ধুবী। নাম তার কুহু। আহ কি নাম
একেবারেই এ্যান্টিক পিস। কিন্তু
রমনীর মুখদর্শন এখনো হয়নি। কেমন হয়
হোক এই রমনীকেই বিয়ে করবো। কিন্তু
রমনী যদি বিবাহিত হয়। ভাবির কাছে
তো তা জানাই হলো নাহ।
এক্টা রিস্ক নিতেই হবে। ছোটো
বোনটাকে দ্বারা আম্মাকে
জানাতে বললাম।
কিছুক্ষন পর আম্মা দেখছি কাদের
সাথে যেনো হেসে কথা বলছে ।
কিন্তু যাদের সাথে কথা বলছে তারা
যেনো নির্বাক মূর্তিরূপ হয়ে শুনছে।
কিছুক্ষন পর এক্টা রমনী এসে সবার
সাথে খারাপ ব্যবহার করা শুরু করল।
দেখতে শুনতে তো ভালোই কিন্তু
মাওয়া ফল যে শুধু দেখতেই সুন্দর তা
যেনো ভুলেই গেছিলাম।
যখন রমনী বেশি করে ফেলছিল তখন আর
দাড়িয়ে নাহ থেকে গেলাম
সেখানে। কিছু বলতে যাবো তখনি
আম্মাজান থামাই দিল। কিছু নাহ বলে
আম্মাকে বিয়ে থেকে আমার সাথে
চলে আসতে বললাম। নাহ রে এটা তোর
ভাইয়ের বিয়ে আমি খালা হয়ে নাহ
থাকলে কেমন হয়! আম্মা আমাকে এমন
সহজে বলল যেনো কিছুই হয়নি। আমি
চলে আসতে চাইলে যে ভাইটার
বিয়ে সে আটকায় দিলো আমাকে।
হবু ভাবির মা বাবা এ সম্পর্কে শুনে
আম্মার হাত ধরে ক্ষমা চাওয়া শুরু করে
দিল। এক পর্যায়ে হবু ভাবির মা তো
কেদেই দিল। আমার আম্মা যে নরম
মনের মানুষ তিনিই আরো উল্টো ক্ষমা
চাইলো এমব পরিস্তিথির জন্য।
অতঃপর বিয়ে সম্পন হলো। অন্তুিম সময়ে
ভাবির বিদায়কালে কুহু সেই রমনী
সে কি কান্না করল। আমার কেনো
জানি খারাপ লাগলো। কিন্তু তার
প্রতি আজকার ঘটনার জন্য রাগ কমলো
নাহ!!
৩)
বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হয়ে গেছে।
মাঝে মধ্যেই সেই রমনীর কথা মনে
পড়তো কিন্তু সেই বিয়ের দিনের কথা
মনে পড়লেই মন থেকে ঝুড়ে ফেলে
দিতাম তার ধারনা।
কিন্তু এক্টা বিষয় লক্ষ্য করছি আম্মা খুবই
বিষন্ন থাকে। থাকবেই নাহ কেনো
বাসায় যে অনেক্টা সময় একাই
থাকতে হয়। আব্বা ব্যবসার কাজে
বাইরেই বেশি থাকে। আর ছোট
বোনটা কলেজ প্রাইভেট এসব নিয়ে
ব্যস্ত। এদিক থেকে আম্মা একা পড়ে
যায়। আম্মার সাথে কথা বলতে হবে।
হুম এটাই কথা বলার মুক্ষম সময়!
আমি: আম্মা!
আম্মা: হুম বল। আমার কথা তোর আবার
মনে আছে
আমি: কি যে বল নাহ
আম্মা: ঠিকই বলেছি। কেথায় মায়ের
সাথে বসে এক্টু কথা বলবি,খোজ খবর
নিবি তা নাহ। আর বাকি ২জনের কথা
আর কি বলব তোকে!
আমি: ঠিক তো। কিন্তু তুমি চাইলেই
তো তোমার কাছে থাকবে এমব
ব্যবস্থা করতে পারো। কয়দিন তো খুব
বিয়ে বিয়ে পাগল করে দিছিলা এখন
কি হলো। আমার বুঝি আর বিয়ে হবে
নাহ!
আম্মা : ভুলিনি রে। তবে দ্বিধায়
ভুগছিলাম। আমি: কেমন দ্বিধা??
আম্মা: বিয়ের দিনের মেয়েটার কথা
মনে আছে তোর??
আমি: হুম কেনো??
আম্মা: জানিস তো মেয়েটা জীবনে
অনেক খারাপ সময় দেখেছে
আমি: কি বলছো আম্মা বুঝাই বল
আম্মা: জানিস তো মেয়েটা নাকি
একজনকে ভালবাসতো। কিন্তু ওর মা
বাবাকে ছেলেটাকে মোটেই পছন্দ
করতো নাহ। তবুউ মেয়ের সুখের কথা
ভেবে পারিবারিক ভাবেই তাদের
বিয়ের আয়োজন করে। কিন্তু বিয়ের
কয়েকদিন আগেই ছেলেটা বিয়ে
করতে মানা করে।
আমি; কিইইই কিন্তু কেনো??
আম্মা: মেয়েটার বাবা মার সাথে
কথা বলার দিন তারাই আমাকে
একথাগুলো বলে। ছেলেটি নাকি
মেয়েটার পরিবারকে যতোটা
বিত্তশালী মনে করতো ততোটা নাহ
হওয়ায় জানতে পেরে বিয়েটা
ভেঙ্গে দেয়। মেয়েটার জন্য খুব
খারাপ লাগছে
আমি: আমারও। তাই মেয়েটা
ছেলেদের দেখতে পারে নাহ
আম্মা??
আম্মা ; তাই হয়তো। শোন নাহ তোকে
কিন্তু আমার এক্টা কথা মানতে হবে।
আমি: জ্বি নির্দ্বিধায় বলো
আম্মা: আমি কিন্তু ওই মেয়েটাকে
তোর বউ হিসেবে দেখতে চাই।
আমি: কিন্ত আম্মমা!
আম্মা: জানি তুই কি বলতে চাস। তবে
জেনে রাখ মেয়েটা কিন্তু মনের দিক
দিয়ে খারাপ নয়। বিয়ের দিন হয়তো
বুকে চেপে রাখা আক্ষেপ থেকে
কথাগুলো বলছে। আমি মেয়েটার
বাবা মার সাথে কথা বলেছি
তাদের আপত্তি নেই। তুই শুধু
মেয়েটাকে যেভাবেই হোক রাজি
করা।
আমি আর কিছু নাহ বলে আম্মার রুম
থেকে চলে যাবো দরজায় পৌছাতেই
আম্মা আমাকে ডাক দিল, অভ্র
মেয়েটার নাম কি রে??? কুহু আম্মা এক্টু
হেসে বললাম। বলে চলে আসলাম।
৪)
যে করেই হোক কুহুকে বিয়ের জন্য
রাজী করাতেই। আম্মার কথা তো আর
ফেলতে পারি নাহ। আসলে সত্য বলতে
কি কুহুকে আমার প্রথম দেখাতেই ভাল
লেগে গেছে। তাই মনের মানুষটাকে
আপন করে নেয়া ইচ্ছা থাকবেই এটাই
স্বাভাবিক।
কিন্তু এর জন্য তো তাকে রাজি
করাতে হবে। আমার তো আবার
মেয়েলি বিষয়ে জ্ঞান নেই বললেই
চলে। ক্যামনে এক্টা মেয়ের মন জয়
করবো সেই প্রশ্ন তো পরীক্ষায় কমন
পড়েনি।
তবে এক্টা কাজ করা যায় বর্তমান টিন
এজ পোলাপানের কাছে সাজেশন
নেয়া। কেনো নাহ এরাই এখন পাক্কা
খেলোয়াড়। কিন্তু বয়সে ছোটো এমন
বিষয় নিয়ে আলোচনা করলে কেমন
লাগে নাহ।
ওহহহ হারামী ছোট বোনটার শরনাপর্ন্ন
হলে কেমন হয়?? ভালোই হয় তা নয় তো
কি তাকেও এক্টু ভালো কাজ করে পূন্য
করার সুযোগ দেওয়াই যায়।
আজ অফিস ছুটি। তাই বোনকে বললাম
রেডি হতে বেড়াতে যাব। বোন তো
সেই খুশি। আসলে বোনটাকে এক্টু তো
তেল লাগাতেই হবে। নাহ হলে আমার
কাজ করবে কিভাবে!
আমার চোখ যেনো বিশ্বাসই করতে
পারছে
নাহ কুহু আমার সামনে বসে আছে।
রেস্তরায় অবশ্য কুহু একা নয় তার সাথে
আরো মেয়ে আছে। হয়তো তার
বান্ধুবী। আহ কি সুন্দর হাসি! আমি সেই
কখন থেকেই দেখে যাচ্ছি।
আর আমার বোন মন দিয়ে খাচ্ছে।
মনটা খারাপ হয়ে গেলো। কুহু চলে
যাবে এখন কিন্তু আমাদের এখন দেরী
আছে!
কুহু বিল দিতে গিয়ে যেনো থমকে
গেলো। যেনো অস্বাভাবিক কিছু
ঘটে গেছে। বোনটাকে ওয়াশরুমের
কথা বলে কুহুর
কাছে গেলাম। যা ভেবেছিলাম তাই
হলো। কুহু আমাকে দেখে যেনো
আরেকবার থমকে গেলো।
আমি স্বাভাবিক রয়ে বিল দেওয়ার
জন্য হাত বাড়ালাম। মনে মনে ভাবছি
বালিকা বিপদের সময় ইগো
জিনিসটা সাইডে রেখে দিতে হয়।
ইশশশ কুহু যদি টাকাটা দিতে মানা
করে কি বিশ্রী কথাই নাহ হবে। নাহ
কিছু হলো নাহ। আমি বিল দিয়ে চলে
আসতে ধরলাম তখনি কুহু বলল
শুনছেন??? আমি দাড়ালাম। নাম্বারটা
দিয়ে যান টাকাটা ফেরত দিতে
হবে নাহ কুহু বলল। আমি মোবাইল বের
করে কল দিলাম। কুহু অবাক দৃষ্টিতে
তাকিয়ে রয়েছে। আমি এক রহস্যময়
হাসি দিয়ে সেখান থেকে চলে
আসলাম।
যার জন্য একবুক আশা নিয়ে বসে
ছিলাম সেই বোন বলে কি নাহ যা
করার করবি কিন্তু টিপিকাল ছেলের
মতো আগে ভাগে প্রোপোজ করে
বসিস নাহ।
ধুর হারামী বোন এতো টুকুই বলল। এক্টু
ধারনা দিয়ে কি আর মেয়ের মন জয়
করা যায়!
৫)
দুদিন অফিসের কাজে এতোটাই ব্যস্ত
ছিলাম যে কুহুকে নিয়ে ভাবার
সুযোগই পাইনি। বিকেলে অফিস
ক্যান্টিনে বসে চা খাচ্ছি এমন সময়
ফোন বেজে উঠলো।
কুহু কল করছে। আমি অবশ্য অবাক হইনি।
কল ধরে চুপ করে রইলাম। কুহুও কিছু বলছে
নাহ।
দুতিন মিনিট নিরীবতাই পালন করলাম।
কুহু মুখ খুললো বলছিলাম অভ্র সাহেব
টাকাটা ফেরত দেয়ার কি সুযোগ
পাবো??? আমি: সেটাতো আপ্নার উপর
নির্ভর করে। কুহু: তো কাল বিকেল
৫টায় দেখা হচ্ছে সেই রেস্তোরায়।
আমি শুধু হুম বলে ফোনটা রাখতে
যাবো তখনি কুহু আবার বলল আমার
কিন্তু লেট করে আশা একদম পছন্দ করি
নাহ। আমি শুধু হাসলাম।
খুবই এক্সাইটেড ছিলাম। রাতে কুহুর
কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে
গেছি বলতেই পারি। সকালে দেরি
করেই উঠেছি। অফিস আজ ফাকি
দিছি। সময় যে কখন ফুরিয়ে গেলো
বুঝতে পারলাম নাহ।
এখন সেই রেস্তোরায় বসে আছি।
১৫মিনিট হয়ে গেছে আর তার আসার
নাম নেই। ঠিক ১মিনিট পর কুহুকে
আসতে দেখলাম। কুহুর সুন্দরতার বর্ননা
দেয়ার দুর্সাহস আমার নেই। কিন্তু
আম্মার পর কুহুকে আমাকে যেনো
পবিত্র রুপসী মনে হলো। হ্যা আম্মাও কম
সুন্দর নাহ তাইতো একসময় আব্বা তার
পিছনে লাটিম এর মতো ঘুরঘুর করতো।
থাক সেই গল্প আরেক দিন বল্ব।
হঠাৎ আমার ঘোর কাটলো। জনাব বসতে
পারি কুহু বলল। নাহ বললে কি বসবেন
নাহ আমি বললাম। কুহু এক্টু হেসে বসে
পড়লো। কি বলব কিছুই বুঝতে
পারছিলাম নাহ। কুহুরও মনে হয় একই
অবস্থা। কুহুকে কিছু অডার করতে
বললাম। আমি কিন্তু সেদিন রাগের
মাথায়
ওরকম ব্যবহার করেছিলাম কিছুক্ষন পর কুহু
হঠ্যাৎ বলল। আমাকে কি ক্ষমা করা যায়
নাহ??
কোথাও জানি পড়েছিলাম তুমি যদি
ক্ষমা করতে নাহ পারো তাহলে তুমি
কাউকে ভালবাসতে পারো নাহ।
হঠাৎ কথাটি মনে পড়ে গেলো। আমি
কিছু নাহ বলে এমন ভঙ্গিমা করলাম
যেনো ক্ষমা তো আপ্নাকে অনেক
আগেই করেছি। কুহুর মুখে চিলতে
হাসির আভা দেখতে পেলাম।
খাওয়া শেষে কুহু কে রিক্সায় করে
বাসায় রেখে আসলাম এক্টু আগে।
সেদিনের টাকাকা ফেরত দিতে
চাইলে আমি নেইনি।
এরপর বেশ কিছুদিন কেটে গেলো।
প্রায় দিন কুহুর সাথে দেখা করতাম।
মেয়েটা যে
এতো কথা বলতে পারে আমি কল্পনাও
করতে পারিনি। দুনিয়ার কথা বলতো
আমাকে।
একদিন দুপুর বেলা কুহুকে
মধ্যান্হভোজের জন্য আমন্ত্রণ করলাম।
কিন্তু কুহু সরাসরি আমাকে নিষেধ করল।
মন খারাপ করে কল কেটে দিলাম।
আধঘন্টা পর কুহুর কল এল। আমি আপ্মার
অফিসের নিচে ওয়েট করছি কল
রিসিভ করার সাথে সাথে কুহু বলল।
বলতে গেলে দৌড়ে কুহুর কাছে
গেলাম। কুহুকে নিয়ে অফিস
ক্যান্টিনে গিয়ে বসলাম। জানেন
তো আমার পেট খারাপ করছে কুহু বলল।
আমি বুঝে গেলাম কুহু কেনো তখন
নিষেধ করছিলো। আমার মনটা খারাপ
হয়ে গেলো। হঠ্যাৎই কুহুর হাত ধরে
অফিসের নিচে এক ফার্মেসিতে
নিয়ে গেলাম। সেখানে ঔষধ নিয়ে
যখন বের হলাম কুহু বলল আমি তো ঔষধ
খেতে পারি নাহ। খেতে পারেন নাহ
এখন থেকে খাবেন কথাটি এক্টু ধমকের
সুরে বললাম। অফিস নাহ গিয়ে কুহুকে
বাসায় রেখে আসলাম।
কুহুর সাথে এতোদিনে কিছু নাহ হলেও
বন্ধুত্ব পূর্ণ এক্টা সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
একদিন হঠাৎ গভীর রাতে কুহুর কল। কল
ধরেই কুহু বলল আমাকে নাহ খুব ভয়
লাগছে। জানেন বাসায় আমি ছাড়া
আর কেউ নেই। আমার বুকটা যেনো
কেপে উঠলো। বাইক চালিয়ে যতো
দ্রুত সম্ভব কুহুর বাসায় পৌছে
কলিংবেল চাপ দিলাম। হুম ১৫মিনিট
হবে কুহুর সাথে কথা বলার। এতক্ষনে
কি মেয়েটা ঘুমিয়ে পড়লো নাকি।
দরজা খোলার শব্দে বাস্তবে
ফিরলাম। দরজার খোলার সাথেই কুহু
আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করা শুরু
করলো। মেয়েটা যে প্রচন্ড ভয়
পেয়েছে তা বুঝতে পারলাম। কুহুকে চুপ
করে বিছানায় শুয়ে দিলাম। কুহু আমার
হাত ধরে ঘুমিয়ে পড়েছে। আমি কুহুর
মাথায় আরেক হাত বোলাতে
বোলাতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি
খেয়াল নেই। সকালে কুহুর ডাকে ঘুম
ভাঙ্গল। কুহু চা হাতে দাড়িয়ে আছে
সাথে মিষ্টি এক্টা হাসি তো
আছেই। কোনো মতো চায়ে চুমুক দিয়ে
চলে আসলাম। এখানে বেশিক্ষন থাকা
যাবে নাহ। তারপর আবার অফিসে আজ
মিটিং আছে।
বিকেল বেলা ফেবুতে অফিস
কলিগের সাথে তোলা এক্টা পিক
উপলোড দিলাম।আমি ফেবুতে ফটো
আপলোড দেই নাহ বললেই চলে।
কলিগের জোরাজুরিতে দিলাম
কিন্তু কিছুক্ষন পর পিকটাতে কুহুর
কমেন্ট দেখে অবাক হলাম। পুরুষ জাতি
এরকমি হয় বুঝি" এরকম কমেন্ট করার কারন
বুঝতে পারলাম নাহ। আচ্ছা কুহু পিক
দেখে আমাকে ভুল বুঝলো নাহ। সাথে
সাথে কুহু কে কল দিলাম মোবাইল বন্ধ।
আজ দুদিন ধরে কুহুর সাথে কোন
যোগাযোগ নেই আমার। অনেক চেষ্টা
করেও বিফল আমি।
আজ রাতে যখন গান শুনছি তখনই কুহুর কল।
কাপা কাপা হাতে কল রিসিভ
করলাম। কি বলবো কিছুই বুঝতে পারছি
নাহ। কুহু ও চুপ করে আছে।
হঠাৎ কুহুর কান্নার শব্দ শুনতে পেলাম।
আমি: কাদবেন নাহ আমার সহ্য হচ্ছে
নাহ।
কুহু: কি আপ্নি আপ্নি লাগাইছো হু তুমি
করে বলতে পারো নাহ
আমি: তুমিও তো কখন বলোনি!
কুহু: বাদ দাও। বিয়ে করবা আমাকে
আজ??
এই মেয়ে বলে কি?? যে কথা আমার
বলার কথা তা কুহু বলছে।
আমি; রেডি থেকো আমি আসছি
সন্ধ্যে বেলা।
বলেই কল কেটে দিলাম।
এখন নাহয় রেজিস্টারি করে রাখবো।
কিছুদিন পরে নাহ হয় বড় করে অনুষ্ঠান
করা যাবে।
যাই এখন আম্মাকে জানাতে হবে তার
হবু বউমা বিয়ে করতে রাজি হয়ে
গেছে।
অতঃপর তাহলে আমার বিয়ে হতে
যাচ্ছে!!

No comments:

Post a Comment