Thursday, October 13, 2016

☆☆☆ এমি আপু (senior)☆☆☆

☆☆☆ এমি আপু (senior)☆☆☆

.
.
.
.
-আপু একটা কথা ছিলো।
-কি ব্যপার শাকিল এখানে হঠাৎ? দু'বছর
পর ভার্সিটিকে
ফাইনালে জয়সূচক গোলের পর থেকেই
আমি
এখন পরিচিত মুখ।
-না মানে এমি আপুকে কিছু বলতাম।
-এমি কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে
থেকে তারপর
ওর বান্ধবীদের দিকে তাকানোর পর
বললো
হুম বলো।
-আপনি চুল গুলো অল্প একটু বেঁধে
রাখেন
কেন ? পুরোটাই খোলা রাখবেন।
তাহলে
ভালো লাগবে। বলেই উসাইন
বোল্টের
সেকেন্ড ভার্সন গতিতে পাক্কা এক
মিনিট তিন
সেকেন্ড দৌড়ালাম।
আহ বেঁচে গেছি। ওহ আপনাদের পুরো
ব্যপারটা
তাহলে খুলেই বলি।
মেয়েটা হলো এমি। আমার এক ব্যাচ
সিনিয়র।
সেই হিসেবে আমার বড় আপু।
ভার্সিটি উঠবার
পরেই মেয়েটার প্রতি আমার এক অদৃশ্য
আকর্ষণ
রয়েছে। আগে থেকেই খুব ইচ্ছা ছিলো
বড়
আপুর সাথে প্রেম করব সেই ইচ্ছাটা
আরো
বাড়িয়ে দিয়েছে এমি।
.
ভার্সিটিতে ওর রাগ সম্পর্কে সবাই
ভালো ভাবে
জানে।
এখন পর্যন্ত দুজন ছেলেকে চাইনিজ
অ্যাকশন
লেডি স্টাইলে পেঁদানি দিয়েছে।
ওকে
প্রপোজ করা প্রত্যেকটা ছেলেই একি
রেজাল্ট
মানে এফ গ্রেড পেয়েছে।
আর আমি তো .... যাই হোক।
হঠাৎ রিয়া সামনে এসে দাঁড়ালো।
ভার্সিটিতে আমার
প্রথম এবং একমাত্র বেস্ট ফ্রেন্ড।
.
-কি ব্যপার শালিক পাখু তুই এতো
হাপাচ্ছিস কেন?
- ওরে আমার ময়দা পরী তুই বুঝবি না।
-হ্রামি তুই নাকি এমি আপুকে কি যেন
বলেছিস
শুনলাম।
-তুই ক্যামনে জানলি ?
-এমি আর ওর বান্ধবীরা তোকে খুঁজছে।
-খাইসে.... দোস্ত আমারে বাঁচা।
-বাঁচতে চাইলে সোজা মেসে দৌড়
দে।
কি আর করা তাই করলাম।
.
রিয়ার বুদ্ধি অনুযায়ী এমিকে
প্রতিদিন ওর পছন্দের
চকলেট, আইসক্রিম আর ফুল গুলো দিতে
লাগলাম।
তবে নিজে যাওয়ার সাহস নাই তাই
অন্যকে দিয়ে
এসব পাঠাচ্ছিলাম।
. ওকে মাঝে মাঝে ফোন করে কথাও
বলতাম।
অবশ্য আমি কে সেটা ও জানত না।
আমি ওকে নানা কথা বলে
জ্বালাতাম।
ও প্রথম প্রথম অনেক বকাঝকা করতো।
কিন্তু ধীরে ধীরে আমার প্রতি একটা
আকর্ষণ
ঘিরে ধরেছে ওকে।
.
গেট দিয়ে বের হবার সময় আমার
শার্টের কলারে
টান পড়ল।
-সেদিন কি বলেছিলে ? (এমি)
-না মানে আপু আমার মনে হইছিলো
তাই বলেছি।
স্যরি।
-হুম গুড। আর যেনো এমন না হয়। বলে যেই
পেছনে ঘুরেছে তখনি চেঁচিয়ে
বললাম আজ
লিপস্টিকে আপনাকে মানাচ্ছে না।
বলেই
আবারো দৌড়। পিছন ঘুরে দেখলাম
কোমরে হাত
দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আমার হবু ইয়ে....
.
-এই শাকিল তুই নাকি এমি কে কি যেন
বলেছিস ?
তোর সাহস আছে বলতে হবে।
-থ্যাংক্স ভাইয়া। এ হলো সামি। এমি
কে প্রপোজ
করতে গিয়ে বেচারা থাপ্পড়
খেয়েছে।
.
আজ ওর জন্মদিন। আজ ওকে আমার
পছন্দের
একটা হলুদ রংয়ের শাড়ি দিয়েছি। ওর
পছন্দের
সবাইকে ইনভাইট করলেও আমাকে কেন
করল
বুঝলাম না।
আমার গিফট পেয়ে একটু কঠোর চোখে
আমার
দিকে তাকালো।
ওর বান্ধবীরা অবশ্য বলেছিলো ও
নাকি শাড়ি পড়ে
না। তবুও দিলাম
ভাবছি আজকে মানে ওর জন্মদিনেই
প্রপোজ
করে ফেলবো। আহ মেয়েটা আজকে
অন্তত জিন্স পড়েনাই এইটা দেখে তবু
ভালো
লাগলো।
কেক কেটে সবাইকে খাওয়াচ্ছিল।
কিন্তু আমাকে
দেখে আমার হাতে টুকরো দিয়ে চলে
গেলো।
.
-এমি আমি তোমাকে ভালোবাসি।
-পেছনে ঘুরেই কিছুক্ষণ তাকিয়ে
থাকলো
তারপর গালদুইখান লাল করে দিলো ....
তোমার সাহস হয় কিভাবে আমাকে
প্রপোজ
করার ?
-ভালবাসি তাই সাহসের প্রয়োজন
পড়েনাই।
-দেখ এখানে তোমার ভাগ্য ভালো
যে অন্য
কেউ দেখে নাই।
যাও এখান থেকে।
-আমি তোমাকে কখনো কষ্ট দিবোনা।
বিশ্বাস
করো। আমার হ্রদয়ের সম্পূর্ণ
ভালবাসাটুকু
দিবো।
-আবার এক থাপ্পর দিয়েই আরো নানা
কথা শুনালো
আমায়....
ওর রুম থেকে বের হয়েই বুঝলাম সবাই
ব্যাপারটা
টের পেয়েছে।
সবাইকে একরকম পাশ কাটিয়ে সোজা
বাসায়
আসলাম। নাহ এখানে থাকা যাবেনা।
সোজা রিয়াদের বাসায় গেলাম।
আন্টিকে বললাম কয়েকদিন থাকবো।
আন্টি
সানন্দে রাজি হলেন।
সারাদিন টিভি, বাসার পিচ্চিগুলা
আর রিয়া, আন্টির সাথে গল্প
করে সময় কাটতে লাগলো।
ওই ঘটনার পর ওকে ফোন বা আইসক্রিম
কোনো কিছুই পাঠাইনি।
ঘটনাটা পুরো ভুলে যাবার চেষ্টা
করলাম। এমন ঘটনা
লাইফে একটু হয়েই থাকে। এমনটা
ভেবে
নিজেকে নতুন করে সাজালাম।
.
ঠিক একমাস পর ভার্সিটি গেলাম।
ফ্রেন্ড
সার্কেলের সবাই এসে বলছে কি করে
এতোদিন কই ছিলি ? তোকে ছাড়া
আড্ডাই জমে
না।
ওদের নিয়ে মাঠে বসতেই সামি এসে
বলছে
শেষমেষ তুই ও খাইলি।
আমি হাসি দিয়ে চলে আসলাম।
কিন্তু আমার চোখ এমি কে খুঁজছে।
কিছুক্ষণ পর
দেখলাম বান্ধবীদের সাথে গল্প
করতে
করতে আসছে। খুব হেসে কথা বলছে।
মনে
হয়না ওর কোনো আফসুস আছে।
আমাকে দেখতে পেয়েই কাছে এসে
কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে....
-কেমন আছো শাকিল ?
-জি ভালো আপু । আপনি ?
-আপু শুনে একটু তাকিয়ে থেকে বললো
হুম
ভালো।
নিয়মিত ক্লাস করো।
বলেই চলে গেলো।
ভার্সিটি যেতে আর মন চায় না।
ওর সেই হাসিমাখা মুখটা দেখলে
নিজের ভেতরে
কেমন জানি এক কম্পন সৃষ্টি হয়।
তাই ভাবলাম সামনে কয়েকদিন
যাবো না।
সেদিন বৃষ্টিতে খুব ভিজেছিলাম।
ফলাফল চরম
অসুখে পড়লাম।
কয়েকদিন বিছানা থেকে উঠতেই
পারিনী। আজ
একটু ভালো ।
গতরাতের রিয়াল মাদ্রিদের খেলা
মিস করলাম। তাই
হাইলাইটস দেখছিলাম।
দরজা খোলাই ছিলো।
কারো সিড়ি বেয়ে আসার শব্দ
পেলাম।
হুম রিয়া। সাথে ওইটা কে....
একি এতো দেখছি এমি।
আমার দেয়া হলুদ শাড়িটা পরে
এসেছে।
-রিয়া বললো কি ব্যপার ক্লাসে
আসিস না ক্যান ?
ফোন অফ কেন ?
-না মানে একটু অসুস্থ ছিলাম।
আর ফোনে চার্জ নেই।
-তা কি মনে করে আসলি ?
-আর এমি আপু আপনি এখানে হঠাৎ ?
আজ এমিকে অপরুপ লাগছিলো। আপনিই
কল্পনা
করুন তো অপরুপ এক মেয়ে গালে তিল
সাথে
হলুদ শাড়ি আর হাতে কাঁচের বিভিন্ন
রংয়ের চুড়ি কতটা
পরিমাণ ক্রাশ খাবেন....
-না মানে আপু তোর খোঁজ করছিলো
আর আমি
তোর সব কথা এমি আপুকে বলে
দিয়েছি।
-মানে ?
-মানে.... মানে হলো তুমি যে
আমাকে
আইসক্রিম, চকলেট, ফুল, ফোন করে
জ্বালাতে
সব আমাকে রিয়া বলেছে।
-আমি ভয় পেয়ে গেলাম।
আজ আবার অপমান নির্ঘাত।
-স্য স্যরি আপু। আমি তখন ওইসব
করেছিলাম আর
তো করিনাই। আর কথা দিচ্ছি ভুলেও
ওসব
করবোনা।
-চুপ একটা কথাও বলবি না। কঠিন রেগে
গেছে।
তোমার দেয়া প্রত্যেকটা মুহূর্ত আমি
মিস
করেছি। এখন থেকে সেসব আবার
ফিরিয়ে
দেবার দায়িত্ব তোমার আর হ্যা
সবসময়ের জন্য।
সারাজীবনের জন্য।
-আমি তো অবাক পানে আমার হলুদ
পরীকে
দেখছি। আমার পরী কি সত্যি আমার
হলো
অবশেষে ....-
আপনি মজা করছেন তাই না আপু ?
-এবার চরম তিরিক্ষি মেজাজে
বললো নিচে
নামো।
-আল্লাহ রক্ষা করো। আবার কি গালে
দিবে নাকি ....
নিচে নামতেই আমার বুকে ঝাপিয়ে
পড়ল। অসুস্থ
শরিরে টাল সামলাতে না পেরে
সোফাতে পরে
গেলাম।
-কি ব্যাপার এখনি টাল সামলাতে
পারছো না। বিয়ের
পর আমায় কোলে নিবে কেমন করে ?
হাসি
দিয়ে বললো।
-ইস এই হাসিটাই আমাকে পাগল করে
ফেলেছে।
আমার হলুদ পরীটাকে বিয়ের পর আর
কোলে
নিতে সমস্যা হবে না।
-লজ্জা পেয়ে আমার বুকে মুখ লুকালো।
দুষ্টু
কোথাকার।
-আপনারা কি ভুলে গেছেন এখানে
তৃতীয়
একজনব্যক্তি আপনাদের এই প্রেমময়
দৃশ্যে
উপস্থিত আছে।
এমি উঠে মাথা নিচু করে আছে
লজ্জায়। .
-দোস্ত তরে কি বলে যে ধন্যবাদ
দিবো। তুই
না থাকলে কিছুই হতো না।
-হইছে । এখন তো তুই খুশি। তোর বড় আপুর
সাথে প্রেম করার শখ মিটলো।
-আমার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে এমি
বলছে
কিসের প্রেম ....
ও যদি শুধু প্রেম ভাবে তাইলে ওর
কপালে দুঃখ
আছে। আমাকে বিয়ে না করলে ওর
ঠ্যাঙ খোঁড়া
করে দিবো।
আমি মুচকি হেসে বললাম বিয়ে তো
আমি এই
হলুদ পরীটাকেই করব।
আমার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি একটা
হাসি দিয়ে বললো
এই তোমার দাঁড়ি বড় হয়ে গেছে।
আজ আমি তোমাকে শেভ করে দিব।
আমাকে সামনে দাঁড় করিয়ে আমার
পরীটা
আমাকে শেভ করে দিচ্ছে। ওহ আমার
বড় আপুর
সাথে প্রেম করার শখটাও মিটলো।
এখন শুধু
বিয়েটা বাকি।
আমি ওর কিউট চেহারার দিকে
তাকিয়ে আছি। ইস
গালে তিল আর ঠোঁটে হালকা
লিপস্টিক ।
চুমু দিতে খুব মন চাচ্ছে।
নাহ চুমুর চেয়ে এই মোহময় দৃশ্যটাই বেশি
ভালো।

No comments:

Post a Comment