Sunday, October 16, 2016

একটি রোমান্টিক মজার গল্প,পড়তে মিস করবেন নাঃ

একটি রোমান্টিক মজার গল্প,পড়তে মিস করবেন
নাঃ
.
-হ্যালো....!
-কি করিস জান্টুস, ঘুমাস?
.
কার না মেজাজ খারাপ হয়।রাত তিনটার সময় ফোন
করে জিজ্ঞেস করতেছে ঘুমাই কিনা...!
.
-নাগো সোনাপাখি ঘুমাইনা।
মনের সুখে নাচা-নাচি করি।তুমিও আসো এক সাথে
নাচবো,হারামজাদা!
-বাহ তুইতো ভীষণ মিষ্টি করে বকা দিতে
পারছরে।
হিহিহি ঘুমিয়ে যা অনেক রাত হয়ছে।
.
আল্লাহ্ কারে বলবো এই দুঃখের কথা।রাত তিনটার
সময় ঘুম থেকে ডেকে
তুলে বলছে ঘুমিয়ে যা।
এমন জ্বল-জ্যান্ত একটা শয়তান কারো ফ্রেন্ড
হলে তার দুর্দশার অভাব দেখা
দেয়ার কোন সম্ভবনা নাই!
.
এই উন্নত মানের বাঁদরটার নাম পিয়াস।আম্মুর পারিবারিক
বান্ধবীর ছেলে।ছোট বেলা থেকেই মাইর-
পিট করে বড় হইছি দুইজন।একবার চর মেরে
অজ্ঞান করে দেয়ারও রেকর্ড আছে!
টম জেরির বাস্তব চরিত্র।
অথচ একটা দিনও ভাল থাকিনা ওরে ছাড়া।
জীবনে যেদিন থেকে বুঝতে শিখেছি
সেদিন
থেকেই ওরে অন্ধের মত ভালবাসি।মনে হয়
যেন ওকে দিয়েই আমার জীবনে পথ শুরু।
যত স্বপ্ন,ভাবনা,আবেগ আর প্রতিটা নিশ্বাসের
একেকটা বিন্দু মুহূর্ত
সবটাতেই পিয়াস মিশে থাকে।
প্রতি ভ্যালেন্টাইন ডে'তে ঘুরতে যাই দুইটা
মিলে।
এবারও যাব,তবে অন্য রকম সাজে।
এত দিন মনে পুষে রাখা কথাগুলা বলে দিব পিয়াসকে।
বলে দিব কতটা ভালবাসি।সারাদিন কত হাজারও কথা বলি
কিন্তু
এই ছোট্ট একটা কথা বলতে এত জড়তা কেন?
গত একমাস ধরে প্রাকটিস করছি কীভাবে এই একটা
কথা বলবো।
আমি জানি যে ভাবেই বলিনা কেন পিয়াস আমকে
ফিরিয়ে দিবে না।
আবার দিতেও পারে হয়তো।ভালোবাসা বিশ্বাস
কোড়ায়।আবার বাস্তবতা তা এক মুহূর্তেই
ভেঙ্গেও দেয়।সেই মুহূর্তটা মনে হয় আর খুব
দূরে নয়।
ভ্যালেন্টাইন ডে'তে পিয়াসের সাথে ঘুরতে
যাব বলে টক-টকে লাল কালারের একটা শাড়ি কিনছি।
পিয়াস শাড়ি পছন্দ করে আর সেটা লাল হলে তো
কোন কথাই নেই।
অনেক আগ্রহ নিয়ে রাতে ফোন দিলাম।
নাম্বারটা ওয়েটিং!
বুকের ভেতর কেমন যেন করে উঠল।
পাত্তা দিলাম না ভয়টার, কোন ফ্রেন্ডের সাথে
হয়ত কথা বলতেছে।
দেড় ঘণ্টা হয়ে গেছে পিয়াস এর কোন
রেস্পন্স নেই।আর কিছুটা সময় অপেক্ষা করে
আবার ফোন দিলাম।
তখনও ওয়েটিং,ভয়টাকে এবার আর লুকোতে
পারলাম না।
রাগ করে আর ফোন দেইনি।
সারা রাত নির্ঘুম কাটালাম ওর ফোনের অপেক্ষায়!
কাল ভ্যালেন্টাইন ডে,
সারা দিন পার হয়ে গেল ওর কোন খবর নেই।
জীবনে প্রথম কষ্টে গা ভিজালাম।
সারা দিন পার হয়ে রাত এগারটা বাজে।
নির্বোধ অবাধ্য হার্ট'এর কাছে নিরুপাই ব্রেইন হার
মানতে বাধ্য হল।
ফোন দিলাম ওকে।
আমি কিছু বলার আগেই ওর উচ্ছ্বাস কথার ঢল।
.
ফেসবুকে পরিচয় হয়ছে।
কথা হয় কিছু দিন হল।
কাল প্রথম দেখাতেই অফার করবে।রাজকন্যার মত
নাকি দেখতে।
আমকেও নাকি যেতে হবে।
কারণটা,স্বাভাবিক ওর বেস্ট ফ্রেন্ড আমি।
.
পিয়াসের ওই উচ্ছ্বাস
হাসি মুখ দেখে নিজের চোখের জ্বল টুকুকে
মুহূর্তেই নিঃশব্দে কবর
দিলাম।
উইশ করলাম ওকে।
আর সারা রাত কেদে কেদে পার করলাম।দিন টাও।
.
১৪ই ফ্রেব্রুয়ারি,সন্ধ্যা ৭টা।
আধো আলো-ছায়া একটা
রেস্টুরেন্টে পিয়াস এর সাথে ওর সেই
রাজকন্যার জন্য প্রায় এক ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি!
আমার পছন্দের একটা রিং পিয়াস কিনে নিয়ে
আসছে ওই মেয়ের জন্য।
বুকের ভেতর কোথায় যেন
একটা কষ্ট হচ্ছে অনেক।
যাকে বছর এর পর বছর ধরে পাবার স্বপ্ন বুনে
আসছি আজ ঠিক তাকেই হারানোর জন্য অধীর
আগ্রহে অপেক্ষাই
বসে আছি!
কি আশ্চর্য মানুষ আমরা।
ভালবাসার মানুষকে এক বিন্দু হাসি উপহার দেয়ার জন্য
চোখে সমুদ্র সমান কান্না নিয়ে অনায়াসে
হাসির অভিনয় করে যাই।
কান্নাটা চেপে রাখতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।
আজকের দিনটা নিয়ে কতই না স্বপ্ন দেখছিলাম।
বদ্ধ রুমটা যেন নিশ্বাস ফেলার জন্য খুবই অল্প
জাইগা।
.
-পিয়াস আমাকে উঠতে হবে।তোর পেত্নী
আর আসবে না!
-আসবে।পেত্নী বলবি না!
She is My Love,My Dream,My Princess.
ইসস ইচ্ছে করে উম্মমাহ দেই বলেই পিয়াস হাসল
একটু!
ইমোশনটা আবার আড়াল করলাম।
-নেকামু ওর সামনে করিস।আমি যাচ্ছি!
-যাবি গা।রিং টা তো তাহলে আর পড়ান হবে না।
আচ্ছা কি আর করা যাওয়ার সময় দোকানে ফেরত
দিয়ে যাস!
-মানে কি? মাথা ঠিক আছে তোর?
-না ঠিক নাই।থাকলে কি আর গার্ল-ফ্রেন্ড নিয়ে এক
ঘণ্টা বসে আছি কীভাবে রিং পরাবো!
পিয়াস এর একটা কথাও ঢুকছে না আমার মাথাই।
সব কিছু কেমন যেন এলোমেলো লাগছে।
ও আমার হাত ধরে চেয়ার
থেকে টেনে তুলে পেছন থেকে দুকাধে
হাত রেখে সাইড গ্লাসে তাকাতে বলল।
-দেখ এটাই আমার সেই Princess,তোকে
বলছিলাম না তোর পছন্দ
ছাড়া বিয়ে করবো না!
এখন তাড়াতাড়ি বল পছন্দ হয়ছে কিনা?
রিং টা আবার ফেরত
দিয়ে আসতে হবে।
রহস্য করে মুচকি হাসল পিয়াস।
কিছুই বিশ্বাস করতে পারছিনা।
স্বপ্নের মত লাগছে পিয়াসের কথাগুলা।
.
পেছন ফিরে ওর চোখের
দিকে তাকাতেই চোখ
দিয়ে অঝরে পানি ঝড়তে লাগলো।
-কিরে গাধী কাঁদছিস কেন তুই?
পছন্দ হয় নাই আমার পেত্নীটাকে?
-না হয় নাই।অনেক খারাপ তুই।আমাকে শুধু কাঁদাস!এত
নাটক করার কি দরকার ছিল?
আর কথা বলবো না তোর সাথে।
-এটাতো পুরনো কথা। নতুন কিছু বল।
-ভালোবাসি তোরে অনেক
ভালবাসি।
এবার হয়ছে.........!
.
হাসি কান্নার এক মায়াবী চলে শরীরের সব টুকু
শক্তি দিয়ে জড়িয়ে ধরলাম পিয়াসকে।
রেস্টুরেন্টের সবাই তাকিয়ে আছে বলে
পিয়াস আমাকে ছাড়তে বলল।
আমি আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম।
দেখুক সবাই।
সারা জীবন তোকে এভাবেই শক্ত করে
জড়িয়ে থাকবো তোর সারা শরীল জুড়ে।
আর কোন দিন হাঁরাতে দিবনা।
নিজের করে আগলে রাখব সবসময়।
-সেই সুযোগটা মনে হয় আর পাচ্ছিস নারে।আর
দুই মিনিট তুই আমকে এভাবে ধরে রাখলে নিশ্চিত
দম বন্ধ হয়ে মারা যাব।
মুচকি হাসলাম আমি!
পিয়াস পাগলী বলে আমার
চোখের জ্বল টুকু মুছে দিয়ে রিং টা পড়িয়ে দিল।
ভালবাসার এই স্বপ্নিল সুখ গুলো একি সাথে হাসায়
কাঁদায়।
আবার নতুন করে এক আকাশ স্বপ্ন বুনতে
শেখায়।
বলতে শেখায় ভালবাসি ভালবাসি আর ভালবাসি।

No comments:

Post a Comment