Friday, September 9, 2016

এটাকি ভালবাসা?

>>হ্যালো?
>কি?
>>কি মানে? তুই কল দিছিস ক্যান?
>ও হ্যা। কাল এট্টু দেখা করতে পারবি?
>>এহ্। অাসছে বান্দর! ওনার কথামতো সব
করতে হবে। কথায় কথায় দেখা।
প্রতিদিনইতো দেখা হয়। আবার কি?
>না.....অাসলে জরুরি একটা কথা ছিল....
তাই
>>কি এমন জরুরি কথারে জনাবের যে
দেখা করতে হবে?? ফোনে বলরে
সালা।
>>অাচ্ছা.... তুই এত প্যাঁচরি কেন বলতো?
জরুরি না হলে ফোন করে দেখা করার
কথা বলতাম না। হুহ্।
রাখ...ফোন রাখ। অার শোন
বিকেলবেলা শিকসনের ওখানে
শাড়ি পড়ে অাসবি....ওকে??
>>জ্বি না। ওকে না একটুও না। অামি
শাড়ি ক্যান পড়ে অামবো অার
অাসলেও তুই কি পড়ে অাসবি?
পাঞ্জাবী না হলে খবর বারটা
বাজাই দিমু।
>তুই অাসলেই প্যাঁচরি। একজন শাড়ি
পড়ে অাসবে অার অারেকজন তো
লুঙ্গী পড়ে অাসবে? ফোন রাখ অার
টাইম মত অাসিস।
.......টু টু টু.......
.
কথা হচ্ছিলো অামি অার অামার
তিনার সাথে। তিনার নাম "বৃষ্টি"।
নাম সুইট হলে কি হবে কথাবার্তা
চালচলনে পুরা প্যাঁচরি ঝগড়াটে। সেই
হাফপ্যান্ট কাল থেকে ভালবেসে
অাসছি ওকে। কিন্তু বলাবলি হয়নি।
যে রকম টাইপ মেয়ে তাতে প্রেম তো
দুরের কথা একসাথে থাকাও মুস্কিল
হয়ে পড়ে। একসাথে পড়াশুনা করে
অাসছি। তিনটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
পার করছি ওকে পাশে নিয়ে। অার
শেষ কালে অার ওকে এভাবে নিতে
পারছি না। তাই এর নিস্তার পেতে
বিকেলে দেখা করতে বলা।
.
বিকাল পাঁচটা.....
.
>>হুমম। বল কি এত তলব??
>(নিশ্চুপ)
>>ওই বান্দর?
>উউ হুমম?? কি হইছে বল??(চমকে উঠে)
.
অাসলে ওকে দেখে অারেকবার
ফিদা হয়ে গেলাম। প্রথম যেদিন
শাড়ি পড়া দেখেছিলাম তখন কেমন
যেন বুকে ফিল হচ্ছেলো। অাজও.... বোধ
হয় হার্টবিট মিস করেছি। কাচা
হাতের শাড়ি সামলানো দেখা যে
কি রকম অসম্ভব ফিল হয় তা কাউকে বলে
বুঝানো যাবে না। একবার অাঁচল
অারেকবার কুচি সামলিয়ে হাটা।
.
>উফফ। (নাকের উপর কাচা হাতের
মিষ্টি অাদর)
>>কি? কই হারিয়ে গেছিলেন দিনের
অালো তে?? রাত হলে তো খুঁজেই
পাওয়া যেত না।
>তুই অার দিলি কই জল্লাদনি?
>>কিইইইইইইইই?(নাকের উপর অারেকটা
এঁকে)
>না কিছু না
>>কিছু না কি? কিছুই তো। অামিতো
তোকে খুব জ্বালাই... ঝগড়া করি।
অামায় তোর সহ্য হয় না। তাই না?
(অভিমান করে)
>হুমম। তাই তো ঠিক করলাম। ব্রেকআপ
দিবো। তোর সাথে অার এভাবে
পারছিনা। যখন তখন যন্ত্রণা দিস। অার
নিতে পারছিনা তোকে এভাবে......
(নিচের দিকে তাকিয়ে মাথা
হালকা নাড়িয়ে কারন এই কথাটা
বৃষ্টির চোখের দিকে তাকিয়ে বলার
সাহস অামার নেই)
>>হোয়াট?? ব্রেকআপ! কিসের ব্রেকআপ
অার কি সম্পর্ক ছিল তোর অামার
মাঝে যে ব্রেকআপ দিচ্ছিস?
>কেন? বন্ধুত্বের! ওটাই অাজ থেকে
এখানে শেষ করতে চাই।
>>ওওও
কিছুক্ষণ নিরবতা। অাবার বৃষ্টি
নিজেকে সামলে নিয়ে বললো....
>>ওকে ইভান। তুই যদি ছেলে হয়ে
এতদিনের বন্ধুত্বের থেকেও বেশি
সম্পর্ক টা ভেঙে দিতে চাচ্ছিস। তো
অামার অার কি? তোর যা ইচ্ছা।
.
বৃষ্টি কথা গুলো স্বাভাবিক কণ্ঠে
বললেও ভিতরটা পাথর জ্বলা অাগুনে
অঙ্গার হয়ে যাচ্ছে । খুব অাশা করে
খুশি মনে ইভানের পছন্দের রংয়ের
শাড়ি পড়ে এসেছিল। সেজে
এসেছিল দ্বিতীয় বসন্তের ষোড়শী
কন্যার সাজে। ভেবে ছিল ইভান অাজ
বুঝি মনের কথা বলে দিবে। কিন্তু
এটাকি হলো? শাষনের অাড়ালে
কাছে পাওয়ার জন্য কত কিছুই না করল
বৃষ্টি। অার হৃদয়হীন ইভানটা এই
প্রতিদান দিল? হুহ্ ঘৃণা এই
হৃদয়হীনতাকে।
বৃষ্টির কথা অার অবাক করা রিএক্ট
দেখে ইভান টাস্কিত। বৃষ্টির দৃষ্টির
অাড়াল করে মুচকি হাসছে। হাসিটা
সম্ভবত স্বার্থপরতার। অার ওদিকে
শাড়ির অাঁচল দিয়ে চোখ নাকের
পানি মুছতে মুছতে গুটি পায়ে হেঁটে
যাচ্ছে। তবে ওই শাড়ি সামলানোটা
ইভান মিস করতে চায়না একটুও। ভাবছে
পাগলীটা উল্টাপাল্টা কিছু না করে
বসে। বৃষ্টির পিছু নিচ্ছে সে।
পথিমধ্যে বৃষ্টির শাড়িতে নিজেরই
পারা পরে। পড়ে যাচ্ছিল এমন সময়
ইভান রুপকথার রাজকুমার রুপে ধরে
ফেলল বৃষ্টিকে। চোখ বুঝেছিল ইভান।
বৃষ্টির চেঁচামেচিতে চোখ খুললো।
লোক জড় করে ইভানকে ইচ্ছেমত অপমান
করল। এরপর বৃষ্টির ঝড়ের গতিতে হেঁটে
যাওয়ার দিকে চেয়ে থাকল হৃদয়হীন
ইভান। ইভানটা হৃদয়হীন হলে কি হবে
অাজ খুব কষ্ট পেয়েছে সে। তারই স্বপ্ন
বালিকা "সুকন্যা" অাজ অপমান করলো।
দোষটা তো ইভানেরই। দুর থেকে
বৃষ্টিকে ফলো করতে করতে এগিয়ে
গেল ইভান।
.
বৃষ্টি বাসায় পৌছে অবাক হয়ে গেল।
কারন সেখানে ইভানের বাবা, মা,
বোন ছাড়াও বৃষ্টির অাত্মীয় ও
অপরিচিতদের দেখতে পেল। কিছু
বোঝার অাগেই বৃষ্টির অাম্মু জোড়
করে ওদের মধ্যে বসিয়ে দিল।
অপরিচিতদের একজন ফোনে বলল........
-কি রে ইভান? তোর না বউমাকে
সাথে নিয়ে অাসার কথা ছিল? বউমা
তো এলো তুই কই?
>এইতো মামা.......(ইভানের মামাকে
বলল)
>>ইভানকে দেখে ভূত দেখার মত চমকে
উঠলো বৃষ্টি।
.
কিছু কথাবার্তার পড় ওদের দুজনকে
অালাদা রুমে পাঠিয়ে দেয়া হল।
নিরবতা কিছুক্ষণ....
এরপর নিরবতা ভেঙে ইভান বললো
>অাপনি না চাইলে বলতে পারেন
অামি না করে দেই.....(ইভান)
>>ওই কুত্তা মাইর খাইছিস?? না করবি
কিরে??? ভাব নেস?? জানি তুই কষ্ট
পাইছিস। অামি কি কম কষ্ট
পেয়েছিলাম তখন যখন বললি অামায়
নিতে পারছিস না?? হুম। মাইড় দিয়ে
বোঁচা নাক অারো বোঁচা করে দিব।
(ইভানের বুকের মাঝে লুকিয়ে বুকে
কিল ঘুসি দিয়ে)
>ওকে অামি তোরে নিতে পারি
যদি অামার বোঁচা নাকটা অাবার
সোজা করে নেওয়ার দায়িত্ব নিস।
(সেই টাইপের হাবলুমার্কা হাসি
দিয়ে)
>>ওরে অামাল বাবুলেএএএএ
>আঁউচ.......কি করলি এটা?? এখন তাদের
সামনে এই নাক নিয়ে কিভাবে যাব?
(নাকে কামড় ছিল আঁউচের কারন)
>>অাচ্ছা দাড়া একটু অাদর দেই ঠিক
হয়ে যাবে। এই বলেই জোড় করে সাড়া
নাকে মুখে এতোগুলা উম্মাহ্ দিয়ে
দিল।
>ছিঃ ছিঃ কি মেয়েরে.... বিয়ের
অাগে কিসব দেয়(ইভান অনেকটা
লজ্জা পেয়ে বলল) অামি গেলাম
এতক্ষণ থাকলে লোকে কি ভাববে?
>>ওই ইভান গাধা অায়না দেখে
তারপর যা।
অায়নায় দেখে পুরো চেহারা
লিপ্সটিকে রাঙানো
.
এরপর কি অার করা? একটু লেট হলোই।।
সবার সামনে যেতেই ইভানের লাল
চেহারা দেখেসবাই একগাল হাসি
মিষ্টি মুখ করলো অার এদিকে দুজনকে
এক রশিতে বেঁধে মুক্ত অাকাশের
ইচ্ছে গল্পের অপরিচছদের অংশ করতে
পর্ব চলতে লাগল।

No comments:

Post a Comment