Wednesday, August 31, 2016

.....চকলেটি ভালবাসা.....

.....চকলেটি ভালবাসা.....

-লেখা: Ochena Rana( সারিকার চাচ্চু)
'
'
আমাকেও একটা চকলেট দিন।
-আপনাকে কেন দিব?(চোখ বড় করে)
-তাহলে এদের কেন দিচ্ছেন?
-এরা তো বাবু তাই।আর আপনি তো কত্ত
বড়...
-আমার মা এখনও আমাকে বাবু বলে ডাকে।
চকলেট পাওয়ার জন্য এই লাইসেন্স টুকু কি
যথেষ্ট নয়?
-আচ্ছা এই নিন চকলেট।
-আপনি এত কিপ্টা কেন?
-কিপ্টামির কি করলাম হুম?
-একটা চাইছি বলে একটাই দিলেন।
-আপনিতো বাবু আর বাবুদের বেশি চকলেট
খেলে দাঁতে পোকা ধরে।হি হি হি....
'
'
দিন দিন অলসের গোডাউন হয়ে যাচ্ছি।
কোনো বিশেষ কাজ ছাড়া বাইরে বের
হতে একদমই ইচ্ছা করে না।সারাদিন ঘরে
থাকি বলে মা আজ এত্তগুলা বকা দিছে
আমাকে।তাই আজ বিকালে একটু হাটতে
বের হলাম।স্কুল মাঠের দিকে এসেই
দেখলাম কালো ড্রেস পরিহিত একটা মেয়ে
কিছু বাচ্চাদের চকলেট দিচ্ছে। আমার
প্রিয় রং কালো।আমার মা বলে ফর্সা
মানুষের কালো রং এ খুব মানায়।সত্যিই
মেয়েটা কে খুব সুন্দর লাগছে।কখনও পরী
দেখেনি যদি দেখতাম তাহলে পরিদের
সাথে একটু তুলনা করতাম।বাচ্চারা চকলেট
পেয়ে যেমন খুশি তার থেকেও বেশি খুশি
দেখাচ্ছে মেয়েটা কে।আমি আবার
ফাজিলের ডিব্বা।তাই ফাইজলামি করার
জন্য মেয়েটার কাছে গিয়ে চকলেট
চাইলাম।আর তখনি উপরের কথোপকথন গুলি
বিনিময় হল।
মেয়েটা চলে যাবার পর বাচ্চাদের কাছে
শুনলাম সে প্রতি শুক্রবার এখানে আসে
ওদের চকলেট দেওয়ার জন্য।নাম জানতে
চাওয়ায় বলল আপুনি,আমারা ওনাকে আপুনি
বলেই ডাকি।বুঝলাম এরা ওর নাম জানে
না।
'
আজ শুক্রবার। আবারও যাচ্ছি চকলেট
নেওয়ার জন্য সরি মেয়েটা কে দেখার জন্য।
'
-আমার চকলেট টা দিন।
-আপনি আজ আবার আসছেন?
-কেন আমার আসা নিষেধ নাকি।কই চকলেট
টা দিন।
-বললাম না,বেশি চকলেট খেলে দাঁতে
পোকা হয়।
-তাহলে এদের দিচ্ছেন কেন,এদের বুঝি
দাঁতে পোকা হয় না।
-এদের তো দাঁত নেই পোকা হবে কি করে।
হি হি হি।
-মেয়েটা তো আমার থেকেও ফাজিল।আই
মিন ফাজিলের ফ্যাক্টরি।চুপচাপ দাড়িয়ে
রইলাম।
-থাক আর মন খারাপ করা লাগবে না।এই
নেন চকলেট।
-থ্যাংকইউ আপুনি।
-এই যে মিস্টার, আমি আপনার ছোট।আর
আমি আপনার আপুনি না।
-ও তা নাম কি আপনার।
-আপনাকে কেন বলব?
-থাক বলা লাগবে না,আপনার নাম তো
জরিনা বেগম।আর দেখতে তো জরিনার মতই
দেখায়।
-আমার নাম ঈশানা।
-কি নাম রে বাবা নিশানা।
-ওই হ্যালো, নিশানা নয়,ঈশানা।ঈশানা
হক।
-যাক বুদ্ধি করে নামটা জানতে পারলাম।
-মানে?
-কিছু না।টা টা.......
'
'
'
বন্ধুদের কাছে খোজ নিয়ে জানতে পারলাম
মেয়েটা বরিশাল বি.এম.কলেজে
ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পরছে।এরপর থেকেই
নিশানাকে থুক্কু থুক্কু ঈশানাকে ফলো করা
শুরু করলাম। ওদের বাসা থেকে শুরু করে
কলেজ,কোচিং সব জায়গাতেই আমার
উপস্থিতি ছিল সন্তোষজনক......
'
'
'
ওর কলেজ শেষ হতে আর কিছুক্ষন বাকি।
তাই কলেজ থেকে একটু দূরে ওয়েট
করছিলাম। কিছুক্ষন বাদে পিছন থেকে কে
যেন ডাক দিল...
"এই যে মিস্টার ফলোয়ার"...
পিছনে ফিরে দেখি ঈশানা।ওর তো কলেজ
থেকে বের হওয়ার কথা ছিল।তাহলে পিছন
থেকে আসল কিভাবে?
-কি খুব অবাক হচ্ছেন তাই না।আমি অনেক
দিন থেকেই লক্ষ্য করছি আপনি সব
জায়গাতেই আমাকে ফলো করেন।তাই
আপনাকে ধরার জন্যই আজ কলেজ থেকে
আগে বের হইছি।
কি ব্যাপারটা কি হুম।(কোমরে দুই হাত
দিয়ে)।
-না,মানে,ইয়ে চকলেট নিতে এসেছি।
-মানে কি?আমি কি চকলেট মন্ত্রী নাকি
যে আপনি আমার কাছে চকলেট নিতে
এসেছেন।
-না মানে আপনার দেওয়া চকলেট গুলি
অনেক টেস্টি।আর চকলেট গুলি কোথাও
পাইনি তো তাই।
-আচ্ছা, অনেক টেস্টি। তা আমার বাসার
সামনে ঘোরাঘুরি করেন কেন?
-এই রে।একদিন ও তো ওকে ওর বাসার
সামনে গিয়ে দেখতে পেলাম না।তাহলে
ফাজিলটা আমাকে দেখল কিভাবে।
-বাইরে থেকে আপনি আমাকে দেখতে না
পেলেও থাই গ্লাসের ভিতর থেকে আমি
ঠিক আপনাকে দেখতে পাই।
-মাইনকা চিপায় পইরা গেছি।তাই চুপটি
করে দাড়িয়ে রইলাম।
-আপনার মোবাইলটা দিন।
-বলতে দেরি, দিতে দেরি নাই।
-এটাত লক করা।পাসওয়ার্ড বলুন।
-জি,N I S A N A
-একটা মুচিকি হাসি দিয়ে বলল ফাজিল...
এটা আমার নাম্বার।যদি কখনও চকলেটের
দরকার পরে তাহলে এই নাম্বারে কল দিবেন
বাট বাসা, কলেজে ঘোরাঘুরি করবেন না।
এটা আমার পছন্দ না।
কথাটা বলেই ঈশানা একটা রিকশা নিয়ে
চলে গেল।কিছুক্ষন বাদেই আমি মোবাইল
টা বের করে ওর নাম্বারে কল দিলাম।
ডিসপ্লে তে চকলেট নাম টা ভেসে উঠল।
-হ্যালো।
-এটা কি chokletisana
-কিছুক্ষন হাসির শব্দ।জি বলছি বলুন।
আপনার কি ধরনের চকলেট লাগবে।
-জি,লাভ চকলেট লাগবে।
-এটা তো স্টক সীমিত।তাই মাত্র একটা
আছে।
-আমার ঐ একটা হলেই যথেষ্ট। দেওয়া যাবে
কি।
-যত্ন করে রাখতে পারবেন তো নাকি
দেওয়া মাত্র খেয়ে শেষ করে ফেলবেন।
-খুব পারব।আমার কাছে একটা আছে।
আপনার টা আর আমার টা খুব যত্ন করে
রাখব।
-আর আপনার চোখের নিশানা?
-নিশানা নামটা যেহেতু আপনাকেই
দিয়েছি,সেহেতু চোখের নিশানা টা সব
সময় আপনার দিকেই থাকবে।
-হুম,মনে থাকে যেন।
'
'
'
'সম্পর্ক শুরু হওয়ার ছয় মাস পর.....
'
-আচ্ছা,তোমাদের পদবী কি হক।
-হুম,তোমাদের কি?
-মিঞা।
-হি হি হি।সোহেল মিঞা।হি হি হি।
-খুব মজা পাচ্ছ তাই না।আমার নিজেরই তো
ভাল লাগে না পদবী টা।তোমাকে কি বলব।
-কেন,ভালই তো,বিয়ের পরে তুমি যখন অফিস
থেকে বাসায় আসবে,আর মা যখন বলবে কে
এসেছে?তখন আমি কি বলব জানো?
-কি?
-বলব মিঞার বেটা মিঞা আসছে।হি হি
হি।
-খুব মজা তাই না।
-হুম।
-তবে আমি একটা জিনিস ঠিক করছি।
-কি?
-মেয়েরা তো বিয়ের পর তার হাজবেন্ড এর
পদবী ইউস করে।তাই আমি এবার রেকর্ড
ব্রেক করব।
-মানে?
-বিয়ের পর আমি তোমার পদবী ইউস করব।
ঈশানা হকের হাজবেন্ড সোহেল হক।হা হা
হা
-হি হি হি।এই দুষ্টু যদি কেউ জেনে যায়।
-আরে, আমরা আমরাই তো।আর এটা তো শুধু
আমি আর তুমি জানব।
-ওকে,মিস্টার সোহেল হক।
-হা হা হা।থ্যাংকইউ আমার চকলেট টা।

No comments:

Post a Comment