Sunday, August 28, 2016

!!!you are not only waiter but also my boyfriend!!!

!!!you are not only waiter but also my boyfriend!!!

সন্ধ্যার আকাশে স্পষ্ট আমার ব্যর্থতার দৃশ্য
দেখতে পাচ্ছি। অনেকক্ষণ ধরে হাটছি। আর
ভালো লাগছে না হাটতে। কিন্তু হাটতে তো
আমাকে হবেই। কারণ পকেটে মাত্র ২০ টাকা
আছে। এখান থেকে ১০ টাকা রাতে খাব আর ১০
টাকা আগামীকাল দুপুরে। হঠাৎ করে স্যান্ডেলটা
ছিড়ে গেল। হাহা!!! স্যান্ডেলটাও বিশ্বাসঘাতকতা শুরু
করল। একজোড়া স্যান্ডেলই মাত্র। এগুলাও ছিড়ে
গেল। তার মানে আমার আর রাতে খাওয়া হবে না ।
খাওয়া থেকে জরুরি আমার স্যান্ডেলজোড়া
সেলানো। কারণ এখন তো তাও কিছু
কোম্পানিতে ঢুকতে দেয়। স্যান্ডেল না
থাকলে কোন কোম্পানিতে জায়গা পাবনা।
.
স্যান্ডেলজোড়া সিলিয়ে নিলাম। স্যান্ডেলগুলা
হাতে নিয়ে নিলাম। যদি আবার ছিড়ে যায়। রাস্তার
সোডিয়াম আলোর নিচে একনাগাড়ে হাটছি তো
হাটছিই। রাস্তা আর শেষ হচ্ছে না। দুপুরেও না
খেয়ে ছিলাম। আজ রাতেও খাওয়া হবে না। থাক
রাতে খেয়ে কি করব। দিন তো শেষই। কাল
সকালেই একবারে খাব। হঠাৎ মনে হলো পকেটটা
কাপছে। ফোনটা ধরার ইচ্ছা নেই। তবে
দেখতে ইচ্ছা করতেছে কে ফোন দিছে।
ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি মায়ের ফোন।
অনিচ্ছাসত্ত্বেও ধরলাম।
.
- হ্যা মা বলো। (আমি)
- কেমন আছিস বাবা? (মা)
- এইতো মা। খুব ভাল।
- তোর গলাটা এমন শুনাচ্ছে কেন বাবা?
- এমনি মা। ঠান্ডা লেগেছে।
- তুই তো ঠান্ডা সহ্য করতে পারিস না।
- কয়েকদিন রাস্তায় ঘুরলে মা সব ঠিক হয়ে যায়।
- দুপুরে খাইছিস?
- হ্যা মা খুব পেটভরে খাইছি।
- কি দিয়ে খাইলি?
- খাশির মাংস মা।
- হোস্টেলে খাসির মাংস?
- হ্যা মা। খুব স্বাদ হইছে।
- রাতে খাবি না?
- খাব তো। স্যার ফোন করতেছে তাড়াতাড়ি
যাওয়ার জন্য।
- স্যার তোদের এত্ত খেয়াল রাখে?
- হ্যা মা।
- কেন এভাবে মিথ্যা বলে যাচ্ছিস? ফিরে আয় না
বাবা।
- না মা মিথ্যা না। আর ফিরে যাওয়ার জন্য আমি বাড়ি
থেকে বেড়োইনি।
- সেদিনের মত প্রিয়াস আমি কোনদিন দেখিনি।
- সময়ের প্রয়োজনে মানুষকে অনেক কিছু
হতে হয়। আমার কথাই দেখোনা। এইতো চারদিন
আগেও কি সুন্দর বিছানায় ঘুমাইছি। আর এখন রাস্তায়
ঘুমাতে হয়।
- এভাবে বলছিস কেন?? তোর বাবা তো তোর
ভালোর জন্যই বলেছে। এত্ত জেদ
দেখানোর কোন মানে আছে?
- আচছা মা রাখি।
- প্রিয়াস শোন। প্রিয়াস
- টুট টুট টুট....
.
চোখ থেকে দুইফোটা জল গড়িয়ে পড়ল। না
আমার কাদলে হবে না। ছেলেদের কাদতে
নেই। পায়ের নিচে মনে হচ্ছে কিছু বিধেছে।
নরম পা তো। এখনো এতটা শক্ত হয়নি। তবে
গত চারদিনে অনেক শক্ত হয়ে গেছে।
ফুটপাতে বসে পড়লাম। পায়ের ভেতরে ছোট
একটা কণা ঢুকে গেছে। বের করতে হবে
এটাকে। পাশে তাকিয়ে দেখি একটা ভাঙা কাচের
টুকরা পড়ে আছে। কোনদিন এসব করিনি। তবু আজ
করতে হবে। নইলে হেরে যাব আমি।
এলোপাথারি চালিয়ে দিলাম কাচের টুকরাটা। ছোটখাট
একটা চিৎকার মুখ থেকে বেরিয়ে এল। কণাটা
বেরিয়ে গেছে। অঝোরে রক্ত পড়ছে।
কিন্তু আজ আমি রক্ত দেখে ভয় পাচ্ছিনা।
স্যান্ডেলগুলা পড়ে নিলাম। যেদিক দিয়ে হাটছি
মোটামোটি হালকা করে রক্তের ছাপ বসে
যাচ্ছে। স্যান্ডেলটাও মোটামুটি রক্তে লাল হয়ে
গেছে।
.
ঐতো হোস্টেলটা দেখা যাচ্ছে। হঠাৎ আবার
পকেটটা কেপে উঠল। ফোনটা বের করে
দেখি বাবার ফোন। না আজকেই ফোনটা
বন্ধুকে ফেরত দিয়ে দিতে হবে। অনেক
জ্বালাচ্ছে আমাকে ফোনটা। ফোনটা অফ করে
সিমটা ডাস্টবিনে ফেলে দিলাম। এবার থেকে
শান্তি পাব আমি। গেট দিয়ে ঢুকতেই দেখি বন্ধুটা
নিচে দাড়িয়ে আছে। এদিক ওদিক পায়চারি করছে ।
আমাকে দেখতে পেয়েই ছুটে এল।
.
- কিরে প্রিয়াস সারাদিন কই ছিলি? (আতিক)
- খাবারের জন্য টাকা জোগাড় করতে গেছিলাম।
(আমি)
- কি পাগলামি করছিস? চল বাড়িতে দিয়ে আসি
তোকে।
- কেনরে তোর রুমের ফ্লোরে তোর এই
বন্ধুটাকে একটু জায়গা দিতে পারবি না?
- এসব কি বলছিস?
- সমস্যা নেই দোস্ত। আমি এই হোস্টেলের
রাস্তায়ই শুয়ে পড়ব। খালি একটু পানি খাওয়াবি?
- প্রিয়াস বেশি হয়ে যাচ্ছে উপরে চল।
- না তুই পানি নিয়ে আয়। আমার উপরে উঠে আবার
নামাটা খুব কষ্ট হয়ে যাবে। আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।
- প্রিয়াস উপরে চল বলছি।
- আচ্ছা চল।
.
সিড়ি দিয়ে উঠছি। আর আতিক আমার আগে আগে
উঠছে। এজন্য সিড়িতে রক্তের ছাপ দেখতে
পাচ্ছে না। এখনো হালকা রক্ত পড়ছে।
এত্তক্ষনে তো আমার অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার কথা।
হয়তবা কষ্টটা সহ্য হয়ে গেছে। রুমে যেতেই
আতিকের বাকি রুমমেটরা দৌড়ে আসল।
একেকজনের একেক প্রশ্ন। বুঝতে পারছি সবাই
খুব চিন্তা করছিল। যাক কয়েকজন আমাকে নিয়ে
ভাবে। এটাই আমার জন্য যথেষ্ট। রুমে ঢুকেই
আতিককে বললাম
.
- দোস্ত একটু কাপড় এনে দিবি? (আমি)
- কেন?? (আতিক)
- এনে দে একটু। প্লিজ।
- আনতেছি।
.
কাপড় আনতেই পায়ে কাপড়টা বাধতে গেলাম।
আতিক আমার পা দেখেই আতকে উঠল।
.
- কিরে তোর পা এমন হলো কিভাবে? (আতিক)
- কণা ঢুকছিল। বের করতে গিয়ে এমন অবস্থা।
(আমি)
- তাই বলে তুই আমাদের না বলে কাপড় বেধে
রাখবি? এত্ত সহ্যক্ষমতা তোর আসল কিভাবে। তুই
তো আগের প্রিয়াস না।
- কিছু কিছু সময় আসে যখন মানুষকে অনেক কিছু
সহ্য করতে হয়।
- খুব কথা শিখে গেছিস। দাড়া এটা ওয়াশ করে দিচ্ছি।
.
আতিক অনেক সুন্দর ভাবে ওয়াশ করে ব্যান্ডেজ
করে দিল।
.
- তোকে খুব কষ্ট দিচ্ছি তাই নারে আতিক? (আমি)
- এসব কি বলিস? তুই আমার ভাই তোর জন্য যদি এটুকু
না করতে পারি তবে তোর ভাই কিজন্য আমি।
(আতিক)
- আচ্ছা এই নে তোর ফোন।
- কেন?? তোর লাগবে না?
- নারে। সিমটা ফেলে দিছি।
- কি করতেছিস তুই এসব?? আচ্ছা বাদ দে। রাতে
খাইছিস?
- হ্যা। একটু আগে খেয়ে আসলাম মাত্র।
- মিথ্যা বলতাছস কেন?
- সত্য। আমি মাত্র খেয়ে আসলাম।
- আমি জানি তুই খাস নাই। আমি খাবার আনছি। চল
দুজনে ভাগ করে খাই।
- না দোস্ত তুই খেয়ে নে। আমি খাইছি তো।
- দশ টাকায় কই খাবার পাওয়া যায় শুনি? চল আমিও খাব
ওখান থেকে।
- দশ টাকায় খাব কেন। একশ টাকায় খাইছি।
- সকালে তোর পকেটে ২০ টাকা ছিল আর এখন
১০ টাকা আছে। তো?
- আচ্ছা তুই খা না। আমি পানি খাব।
- খাইতে বসতে বলছি না?
- আচ্ছা বসছি।
.
ভাত পর্যাপ্ত ছিল। কারণ হোস্টেলে ভাত যতখন
খুশি খাওয়া যায়। কিন্তু তরকারিটা একজনের ছিল।
পেটভরে খেলাম। আমি জানি টাকা থাকলে আতিক
দুইজনের তরকারিই আনত। ওর কাছেও টাকা নাই। তবু
যথেষ্ট করতেছে আমার জন্য। যাক তাহলে কাল
রাত পর্যন্ত আবার না খেয়ে থাকতে পারব।
.
সকাল হয়ে গেছে আমাকে বেড়োতে
হবে। আজও মাত্র ১০ টাকা আছে। আতিক এখনো
ঘুমোচ্ছে। আস্তে করে বেরিয়ে পড়লাম।
পায়ের ব্যাথাটা আজও খুব লাগছে। কিন্তু আমাকে
বেরোতেই হবে।
.
আজও কোন চাকুরির ব্যবস্থা করতে পারলাম না।
পাবলিক ভার্সিটির নাদুসনুদুস বাচ্চাকে কেউ
গ্রাজুয়েশনের আগে চাকরি দিতে রাজি নয়। আজও
পথে পথে হাটছি। হঠাৎ কেন জানি মন চাইল
ক্যাম্পাসে যেতে। গেলাম ক্যাম্পাসে।
.
আমার চাকরির ব্যবস্থা হয়ে গেছে। কাল সকাল
থেকে জয়েন। মনটা যতটা না খুশি লাগছে তার
চেয়ে বেশি কষ্ট লাগছে। কিছুই করার নেই চাকরি
যতটাই খারাপ হোক। আমাকে যে চাকরিটা করতেই
হবে।
.
আজও খাওয়া হয়নি। তবে খিদেটা দূর হয়ে গেছে
চাকরির কথা শুনে। হোস্টেলে গিয়ে দেখি
আতিক আজও খাবার নিয়ে বসে আছে। আজও
ভাগাভাগি করে দুই ভাই খেয়ে নিলাম।
.
সকাল ৮.০০ টা। আমি আমার চাকরির জায়গায় এসে
গেছি। ক্যাম্পাসে আস্তে আস্তে
ছেলেমেয়ে বাড়ছে আর আমিও ব্যস্ত হয়ে
পড়ছি। হ্যা আমি ক্যাম্পাস ক্যান্টিনের সামান্যতম
একজন ওয়েটার। অনেকে হয়তবা আমাকে
দেখে অবাক হয়। কিন্তু আমি মোটেও
নিজেকে দেখে অবাক হই না।
.
দুপুর বেলা। তাই ক্যান্টিনে মোটামুটি ভীড়। এর
মধ্যে কয়েকটা মেয়ে ঢুকল ক্যান্টিনে। আমি
ওদের দেখেই পিছনে ঘুরে গেলাম। হঠাৎ
কেউ একজন ডাক দিল
.
- হ্যালো ওয়েটার (মেয়ে)
.
আমি ঘুরতে বাধ্য। ঘুরে ওদের টেবিলের
সামনে গিয়ে দাড়ালাম। ওরা সবাই আমাকে দেখে
মনে হচ্ছে প্রচন্ড শক খেল। কিন্তু আমি
স্বভাবত ওয়েটারের মত জিজ্ঞেস করলাম
.
- বলুন মেম... (আমি)
- প্রিয়াস তুমি? (মেঘা)
- সরি মেম। একটু তাড়াতাড়ি বলুন কি লাগবে।
- প্রিয়াস কি হয়েছে তোমার?
- সরি মেম। আমার অন্য কাজ আছে। কি লাগবে
তাড়াতাড়ি বলুন।
- ঠিক আছে। তোমার যখন আমার প্রতি এটেনশান
নাই আমার ও তোমার প্রতি এটেনশান রাখার মানে
হয় না। যান ওয়েটার পাচটা পিজ্জা আর পাচটা
কোল্ডড্রিংকস নিয়ে আসুন।
.
আমি মোটেও একটু কষ্ট পেলাম না। কারণ এখন
আমি ওদের স্টেটাসের নই। তো আমাকে
ওয়েটার ডাকবেই। ওদের অর্ডার ওদের সামনে
নিয়ে রাখলাম।
.
- এনিথিং এলজ মেম? (আমি)
- নো। (মেঘা)
.
ঘুরে আসতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু কেউ একজন হাতে
ধরে ফেলল। ঘুরে দেখি মেঘা। এই মেয়েটা
এমন কেন। অনেক ভালবাসে আমাকে । যদিও
আমিও অনেক ভালবাসি। কিন্তু সবসময় সব ভালবাসা
বাচিয়ে রাখতে নেই। কিছু ভালবাসাকে নিজে
থেকে আত্মহত্যা করতে হয়। হয়তবা আমার
ভালবাসাটাও এমনি। মেঘাকে জিজ্ঞেস করলাম
.
- হ্যা বলুন মেম। (আমি)
- লোকতো আমরা চারজন। তো পাচটা পিজ্জা
দিয়ে কি করব? (মেঘা)
- ওকে মেম। আমি নিয়ে রেখে দিচ্ছি।
- রেখে দেয়ার জন্য তো অর্ডার দেই নি।
- তো কি করতে পারি বলুন?
- একটা পিজ্জা তোমাকে খেতে হবে প্রিয়াস।
- সরি মেম। ওয়েটাররা কাষ্টমারদের থেকে কিছু
খেতে পারেনা।
- তুমি এখন ওয়েটার না। তুমি আমার বয়ফ্রেন্ড।
খেতে বলছি তোমাকে।
- মেঘা কি পাগলামি করছ? বুঝার চেষ্টা কর। আমি
এখানে কাজ করি । আমি এখানে তোমার কাছ
থেকে কিছু খেতে পারিনা। তিনদিন না খেয়ে
থেকে তবে কাজটা পাইছি । দয়া করে এ কাজটাও
চলে যাবার ব্যবস্থা করোনা। প্লিজ।
- তুমি তিনদিন না খেয়ে আছ?
- আরে না। কথার কথা বললাম।
.
মেঘা আমাকে পিজ্জা খাইয়ে দিচ্ছে। ওর
বান্ধবীরা মুচকি হাসছে। কিন্তু আমি খাওয়াতে চরম
তৃপ্তি পাচ্ছি। মেঘার মুখ দেখে বুঝা যাচ্ছে
মেঘাও অনেক খুশি আমাকে খাওয়াতে পেরে।
যাক আজ রাতটাও এই খাওয়ায়ই কেটে যাবে।
.
একমাস পূর্ণ হলো। আমি আজ প্রথম বেতন
পেয়েছি। হ্যা নিজের পায়ে দাড়াতে পেরেছি।
হঠাৎ দেখলাম ক্যাম্পাসে একটা গাড়ি এসে থামল।
আমার গাড়ির মতই মনে হচ্ছে। ভিতর থেকে বাবা-
মা নামল। হয়তবা এই একমাসে অনেক খুজেছে
আমাকে। কিন্তু কখনো ক্যাম্পাসে আসেনি।
আজ হঠাৎ ক্যাম্পাসে। আমার ক্যান্টিনে আসল।
আমার সামনে এসে দাড়াল। আমি মাথাটা নুয়িয়ে
রেখেছি।
.
- প্রিয়াস তোর এত্ত রাগ? (বাবা)
- তো? (আমি)
- এবার তো বাড়ি ফিরে চল বাবা। (মা)
- মা আমি নিজের পায়ে দাড়াতে শিখে গেছি। কারও
করুণার পাত্র আমি হতে চাই না। (আমি)
- বাবা আমি হেরে গেছি। তুই জিতে গেছিস। আমি
হার শিকার করলাম। তবু বাসায় ফিরে চল। (বাবা)
.
বাবা কেদে দিল। বাবাকে কখনো কাদতে
দেখিনি। যতই রাগ থাকুক বাবা চোখের পানি সহ্য
হচ্ছে না। আমিও কেদে দিছি।
.
হ্যা আমি বাবা মার সাথে ফিরে যাচ্ছি। পিছনে তাকিয়ে
দেখি আতিকের চোখে পানি। এটা আনন্দের
পানি। ক্যান্টিনের মামাটাও হাসছে। সামনে ঘুরে
দেখি মেঘা গাড়ির সামনে দাড়িয়ে আছে। আর
মেঘার মুখে অন্যরকম আনন্দের হাসি। আমারও
আনন্দ লাগছে। খুব আনন্দ।
.
~LoNeSoMe PRiYeS (চাঁদপরীর রাজকুমার)~

No comments:

Post a Comment