Sunday, August 28, 2016

# ভালবাসার_গল্প

# ভালবাসার_গল্প

- এই যে শুনছেন ?
কথাটা শুনে পিছনে তাকিয়ে দেখতে
পেলাম
একটা কাল টাইট জিন্স , একটা টি কালো
টিশার্ট
। তার উপর জ্যাকেট পরিহিত একটা মেয়ে
দাড়িয়ে আছে ।। এই পোষাকে এই দেশে
এখনও
মেয়েদের খুব একটা দেখা যায় না তবে
মেয়েটাকে বেশ মানিয়েছে এই পোষাকে
আর
মেয়েটাকে আমি চিনি ।।আমাদের ক্লাসই
পড়ে
নাম নিহা ।।
- জি আমাকে বলছেন ।।
- হুম আপনাকেই বলছি ।। আমি নিহা ।।
আপনি
বাপ্পি রাইট ?
- আমি বাপ্পি না হলে নিশ্চয় আপনি
আমাকে
ডাকতেন না তাই না ।।
- উহ !! আপনি বেশি কথা বলেন ... আচ্ছা
বাদ
দেন , আপনার সাথে থাকে যে, ঐ ছেলেটা
কই
আজ??
- কে? অনিক
- কি যেন নাম জানিনা ।। অনিকই হবে
- কেন??? হয়তো আপনাকেই খুঁজছে...
- মানে???
- হাহাহা,কিছুনা। ফান করলাম। অনিককে
কেন?
কিছু করেছে নাকি ?
- আরে না না ।। প্রায়ই আপনাদের একসাথে
দেখি। ক্লাসেও দেখি আপনারা
পাশাপাশি
বসেন।
- হুম,আপনার জ্ঞাতার্থে বলছি, আমরা
থাকিও
একই রুমে, কিন্তু কেন? কিছু বলবেন ওকে ??
- সরাসরি তাকে বলতে পারলে তো তার
সামনেই
যেতাম। তাই আপনাকেই বলছি,
আপনি তাকে বলে দিবেন প্লিজ... তার
সামনে
তো বলতে পারবো নাহ। লজ্জা লাগে
,আবার
রাগও হয়।
- ওকে বলেন
- ইয়ে মানে... অনেকদিন ধরেই বলবো বলবো
বলে
ভাবছি কিন্তু কলেজে তো আপনাকে একা
পাচ্ছিলামই নাহ...
- আরেহ! আজ তো পেলেন ।। বলে ফেলেন
তো ।।
- ক্লাসে যখনই তাকাই, দেখি অনিকের
পাশে
আপনি। জানেন,এরপর মাঝে-মধ্যে যখন
তাকিয়ে
থাকি, দেখি অনিকও তাকিয়ে আছে আমার
দিকে। বা তাকিয়ে হাসি দেই যখন, তখন
দেখি
সেও আমার দিকে তাকিয়ে হাসে...
- ও,তারপর....
- ছেলেটা কি বোকা,তাইনা?!?
- হুম,এতকিছুর পরও না বুঝতে পারলে তো
বোকাই
বলতে হয়।
- আপনি তাকান না কেন?? আর আপনাকে
এমনিতেই হাসতে দেখিনা কেন? আপনার
হাসিটা কিন্তু খুব সুন্দর!
- মানে???
- আমি তো আপনার দিকে তাকিয়েই হাসি।
আজ
থেকে আপনিও আমার দিকে
তাকাবেন,হাসবেন
।। আর অনিক ভাইকে বলবেন তার
"Misunderstanding" হচ্ছে... আমার আসলে
আপনাকে ভাল লাগে
কথাটা বলেই মেয়েটা দৌড়ে চলে গেল ।।
আমি
অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম ।। আমার খুশি
হওয়া
উচিত নাকি অনিকের জন্য দুঃখ পাবার
কথা
বুঝতে পারলাম না ।।
............... .................... ........................
একসময় নিহা আমার ওপর অনেক নির্ভরশীল
হয়ে
গেল। আমিও ওর মায়ার বাঁধনে এমনভাবে
জড়িয়ে
গেলাম যে মোহ, আবেগ, ভাললাগা আর
ভালবাসার মধ্যে কোন পার্থক্য খুঁজে
পেলাম না।
পরে ভেবে দেখলাম, নিজে ঠিক থেকে সুখী
থাকাটাই আসল কথা। তাহলে কেনই বা
পার্থক্য
খুঁজতে যাব, কেনই বা জীবনের না পাওয়ার
হিসাব মেলাব। আমাদের পড়াশোনা শেষ
হবার
পর নিহাকে সরাসরিই বললাম -
- আচ্ছা আমরা বিয়ে করছি কবে?
- একই দিনে বিয়ে করতে চাও নাকি আলাদা
দিনে?
কথাটা শুনে আমার মাথা গরম হয়ে গেল।
বললাম
-
- প্লিজ এভাবে বল না, প্রেসার বেড়ে
যাচ্ছে
আমার।
- দাড়াও আমার পছন্দের তালিকায় যে
তিনজন
আছে লটারিতে যার নাম আগে আসবে
আমি
তাকেই বিয়ে করব।
- মানে ।। তিনজন কই পাইলা আর কোন
তিনজন ।।
নিহা আমার হাত ধরে বলল -
- শুনবে না কোন তিনজন?
আমি দুর্বলভাবে হ্যা সূচক সম্মতি দিলাম।
নিহা
আমার কানের কাছে এসে খুব আস্তে করে
বলল -
- তুমি, তুমি আর তুমি।
কথাটা শুনেই আমার কেমন যেন লাগতে শুরু
করল ...
আমি নিহার দিকে তাকালাম ।। দেখলাম
মেয়েটার চোখ ছলছল করছে যেন এখনি
কেদে
ফেলবে ।। আমি নিহার হাত ধরে আস্তে
আস্তে
নিজের মুখ ওর মুখের কাছে নিলাম ।।
তারপর টুপ
করে ...
- এই এই কি বলছ এসব আমার মেয়েকে
আমি সামনে তাকিয়ে দেখতে পেলাম
দরজার
কাছে নিহা দাড়িয়ে আছে ।। ওর চোখে
রাগান্বিত দৃষ্টি আর কোমরে হাত ... মনে
হচ্ছে
এখনি আমার উপর ঝাপিয়ে পরবে ...
- বাবা ও বাবা তারপর কি হল বল না ।।
- আর শুনতে হবে না ।। কাল তোমার স্কুল
আছে
না ।। যাও ঘুমাও ।।
- নাহ মা ।।আমি শুনব ।।বাবা তুমি বল ।।
আমি নিহার দিকে তাকিয়ে বললাম -
- আরে শুনুক না ।। আমার তো বলতে ভালই
লাগছে
।। এই তোমার মনে আছে তুমি যে আমার
গালে
কামড় ...
- এই চুপ চুপ ... তুমি আর মানুষ হলে না ।।
নিজের
মেয়েকে কেউ এসব বলে ।।
- কি বললে আমি মানুষ না ।। তাইলে আমি
কি ?
- তুমি একটা বিড়াল ।।
- কি আমি বিড়াল ।। মজা দেখাবনে ।।
- তুমি আমার কচু দেখাবে ।।
কথাটা বলেই নিহা নিহিকে নিয়ে ঘুম
পরাতে
চলে গেল ।।। আমি বসে রইলাম নিহাকে কচু
দেখানোর অপেক্ষায়

( বাপ্পি সাহেব )

No comments:

Post a Comment