Sunday, August 28, 2016

******* ভীষণ ভালোবাসি পাগলি*****

******* ভীষণ ভালোবাসি পাগলি*****
.
.
.
প্রথম দিন---------------
প্রেমা ব্যালকনিতে বসে চা খাচ্ছে,,,,,,।
.
দ্বিতীয় দিন----------------
প্রেমা ছাদে থেকে আকাশের দিকে থাকিয়ে
আছে।
.
তৃতীয় দিন--------------
ছাদ থেকে প্রেমা আমাদের কলেজ যাওয়া
দেখছে।হাতে একটা ক্যাটব্যারি চকোলেট।
.
প্রতিদিন এভাবে প্রেমাকে কলেজ যেতে
একেক সময় একেক ভাবে দেখে যাই।
,
ফেসবোকে প্রেমা নাম দিয়ে সার্চ দিলাম।
অনেক ঘাটাঘাটি করে একটা আইডির দিকে নজর
গেলো।
**প্রেমা প্রেয়সী মায়াবীনী এক কন্যা**
বিশাল এক নামের আইডি।
,
আইডিটির ফটোসে গিয়ে দেখলাম শুধু কয়েকটা
চোখের ফটো দেওয়া। কাজল কালো চোখ।
ভয়ানক সুন্দর।যে চোখের দিকে তাকালে
কোনো এক অজানা কারণে হৃদ কম্পন হতে শুরু
করে।
.
ফ্রেন্ড লিস্টে যেয়ে দেখলাম মাত্র একজন
ফ্রেন্ড।আমার ছোট বোন রিদি।
.
টাইমলাইনে রেডিও মুন্না,সঙ্গি,পদ্মার কয়েকটা
পোস্ট শেয়ার করা।
কমেন্ট বক্সে লেখা সবাই কমেন্ট করে
জানান।অথচ ফ্রেন্ড মাত্র একটাই আমার বোন।
সুতরাং দিন শেষে তার কমেন্ট টি ই ভাসে
নোটিফিকেশনে।পাগলির পাগলামি ছাড়া কিছু না।
.
অবশেষে আমি নিশ্চিত হলাম যে ইহাই সেই
প্রেমা।দিলাম রিকো।এক্সেপ্ট হবার সম্ভাবনা খুবই
ক্ষীণ।
.
-----------আমি অভ্র।থাকি মৌলভীবাজারে।পড়ালেখা
করি মৌলভীবাজার সরকারী কলেজ এ অনার্সে।
প্রেমা অই কলেজেই ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষে
পড়ে আমার বোনের সাথে।
.
প্রেমার বাসা আমাদের বাসার পাশেই।দুবছর হলো
ওরা আমাদের পাশের বাসায় উঠেছে।
পাশাপাশি বাসা থাকায় প্রেমার মা ও আমার মায়ের
মধ্যে বিশেষ বন্ধুত্ব পূর্ণ মনোভাব
লক্ষণীয়।
ঠিক তাদের দুই মেয়েদের মাঝেও লক্ষণীয়।
.
প্রেমা ভীষণ চুপচাপ শান্তশিষ্ট স্বভাবের।কারো
সাথে প্রয়োজনেও কথা বলবে না।
তবে আমার বোনের সাথে খুব হাসিখুশীভাবে
কথা বলতে দেখি।
.
প্রেমার সাথে আমি দুইবার কথা বলছি।একবার আমার
বোনের নোট নিতে এসেছিলাম প্রেমার কাছ
থেকে।
তখন শুধু প্রেমাকে বলছিলাম কেমন আছো।
জবাব না দিয়ে বললো দাঁড়ান নোট দিচ্ছি।
.
আরেকবার প্রেমাদের বাসায় কথা হয়েছিলো।
বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তানের ক্রিকেট খেলা
দেখতে যাওয়ায়।রিদিও ছিলো।আমি যেতে চাই নি।
রিদি ই জোরাজোরি করছিল যেতে।ওর বুঝি
প্রেমার সাথে বাজি।বাংলাদেশ পাকিস্তান কে ওয়াইট
ওয়াস করবে এর পক্ষে ছিলো প্রেমা।বিপক্ষে
রিদি।
,
খেলায় খেলায় কথা হয়েছিলো।ক্রিকেট
খেলাকে যে প্রেমা ভীষণ পছন্দ করে ওর
সাথে খেলা না দেখলে বুঝতে পারতাম না।
বাজিতে প্রেমাই জিতলো।
,
.
.
---------------------------পরের দিন------
প্রেমা বাচ্ছাদের সাথে নিয়ে বাসার পাশে
ক্রিকেট খেলছে।আমি যেতেই ব্যাট ফেলে
চলে গেলো।সাথে একটা হুমকিজনক দৃষ্টি দিয়ে
গেলো।
.
আমি কিছু বুঝলাম না।যাইহোক সাত পাঁচ না ভেবে
কলেজে চলে গেলাম।
.
কলেজ থেকে ফিরতে আমি সাধারণত
প্রেমাদের অই বাসার ছাদ কিংবা ব্যালকনির দিকে তাকাই
না।কারণ অই সময়ে প্রেমা কলেজে থাকবে
নতুবা বাসায় টিভি দেখবে।
.
কিন্তু আজ কেনো জানি চোখ পড়ে গেলো।
দেখি প্রেমা পথের দিকে চেয়ে আছে।
কারো যেনো অপেক্ষা করছে।
.
আমাকে দেখেই হাত দিয়ে দাঁড়াতে বললো।
আমি ভাবিনি আমাকে ডাকছে।এই মেয়ে আমাকে
সহ্য ই করতে পারে না।তাই নিশ্চিত হওয়ার জন্য
আমি হাটা শুরু করলাম।এবার চিল্লি দিয়েই বললো অই
দাঁড়ান।
কাছে এসো বললো,,,,,,,,,,,,,,,,,
------নিজেকে কি মনে করেন?
---কিছুই না ত।কেনো কি করলাম?
----------আপনি আমাকে ফ্রেন্ড রিকো দিলেন
কেনো ফেসবোকে।আমি কি আপনার
ফ্রেন্ড লাগি?
.
আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেলাম।ফেসবোকে ফ্রেন্ড
হতে হলে রিয়েল লাইফের ফ্রেন্ড হতে হয়
আগে জানতাম না।
প্রেমাকে বললাম-------
----আমি ত রিকো দেই নি।
----------ফাইজলামি করেন।অনুভবে অভ্র আইডি
আপনার না?আপনার ছবি দেওয়া।
----ওহ আচ্ছা।তাওলে রিকো দিছলাম মে বি।
----------জ্বী।আমি আপনার ছোট বোনের
বন্ধু। আপনার নাহ।
----আচ্ছা।
-------আচ্ছা কি হুম।হুম।আপনি আমারে রোজ
ফলো করেন কেনো।আমি কিছু বুঝি না মনে
করছেন।
---রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট ত আর করবে না।তাই
ফলো করি।
------মানে?
--কিছু না।কেমন আছো?
,,,,,,,,,প্রেমা উত্তর না দিয়ে চলে যাচ্ছে।আমি
চেয়ে আছি। প্রেমার পথচলা দেখছি।হঠাৎ
থেমে পিছন ফিরে বললো '''আর যেনো না
দিকে ফলো মিশন।
,
আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম।
.
বাসায় ছিলাম চারদিন।যাই নি কলেজে।যাই নি
প্রেমাদের বাসার পাশ দিয়ে।
.
হুমায়নের ''''ময়ূরাক্ষী '''' বইটা বসে বসে
পড়ছিলাম।
রিদি এসে বললো ভাইয়া তুই প্রেমাকে কি
বলছিস??
রিদির এমন প্রশ্নে হঠাৎ ভ্যাবাচেকা খেলাম।
বললাম--------------- কেনো।কি হইছে।
,
---------কি হয় নি তাই বল।প্রেমা বলে......তোর
ভাইয়ের ত সাহস কম না।তর ভাইকে বলিস আমার
সাথে দেখা করে যেতে।
নিজেকে কি মনে করে।সব জায়গায় ভাব খাটে
না.............।
আরো এই সেই।সত্যি করে বলতো প্রেমার
সাথে কি হইছে তর।ঘটনা কি?হুম?
.
আমি দ্বিগুণ ভ্যাবাচ্যাকা খাইলাম এবার।মেয়ে বলে
কি।আমি ভাব!!!ধ্যাত মাথাটা হ্যাং হয়ে যাচ্ছে।
------------অই তর হলো টা কি?
----কিছু না বলে প্রেমার সাথে টেবিল বৈঠকে
বেরিয়ে পড়লাম।
প্রেমা আমাকে স্মরণ করছে।ভাবতেই গা টা
ছিমছিম করে উঠলো।
.
প্রেমা একটা নীল জামা পড়ে ছাদে দাঁড়িয়ে
আছে।অপরুপ লাগছে।গান গাইতে ইচ্ছে
করছে,,,,,
""""তুমি সুন্দর ও তাই চেয়ে থাকি,সে কি মর অপরাধ।
,
আমাকে দেখেই ছাদে যাওয়ার নিমন্ত্রণ দিলো।
গর্বে বুকটা ফুলে ফেঁপে কলাগাছ হয়ে যাচ্ছে।
,
বাসায় শুধু আন্টি।টিভি দেখছেন।আন্টির অনুমতি
নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
ছাদে এসে প্রেমার কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম।
প্রেমা বললো একটা জিনিষ দেখবেন?
আমি বললাম,কি?
,
প্রেমা বললো----------- অই গুলা কি?
---------কেনো ফুল!
------প্রতিদিন আমি অই ফুল গাছে পানি দেই।
দেখাশুনা করি।বিপদজনক কিটপতঙ্গ থেকে ফুল
কে রক্ষা করি।
সময় মত গাছেল ডালপালা গুলো কে কেটে গাছ
কে নতুনভাবে বেঁড়ে উঠতে সাহায্য করি। যেন
গাছ থেকে আমি ফুল পাই।
প্রতিদিন গাছের এভাবে দেখাশুনা করার মাধ্যমে
গাছের সাথে আমার এক অদ্ভুত বন্ধন শুরু হইছে।
নিশ্চয় আমি অই ফুল গাছগুলো কে প্রতিদিন
দেখাশুনা করতে চাইবো।একদিন ও বাদ যাবে না।
,কিছু বুঝলেন?
.
-------না।
---অহ।আচ্ছা। আপনি আসতে পারেন।
,,,,,,,
প্রেমা আমাকে কি বুঝাতে চাইলো।ধ্যাত কত আশা
নিয়ে এসেছি।আর কি পেতে হলো।কপাল।
আমার কপাল।
.
কথাগুলো বাড়ী তে এসে রিদিকে বললাম।
রিদি বললো ভাইয়া তুই প্রেমাকে কি ভাবিস সেটা
আগে বল।
বললাম আমি প্রেমাকে ভালোবাসি।ভীষণ
ভালোবাসি।
রিদি বলে----------ভাইয়া তুই এ কি বলছিস?
--------আমি প্রেমাকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না
রে।
.
------কিন্তু বাবা মা?
---অই গাধী প্রেমা কে বাবা মা দেখিস না কত
ভালোবাসে।
-------বুঝলাম।কিন্তু?
-----কি?
---------কথাগুলা প্রেমা তকে বলেছে।তা তুই বুঝলি?
--না রে।বুঝে কি হবে।
---------অই গাধা প্রেমা তকে ভালোবাসে।
---কেমনে কি?
---তুই হচ্ছিস ফুল গাছের পরিচায়ক।আর প্রেমা
হচ্ছে সে গাছ।গাধা প্রেম করবে অথচ সাধারণ
জ্ঞান টুকু নেই।
-----তাই ত।এখন কি করবো?
--------গাধা। প্রপোজ কর।তাও বলে দিতে হয়!!
.
আমি দৌড় দিলাম প্রেমার উদ্দ্যেশে।ভালোবাসি
প্রেমা।
ভীষণ ভালোবাসি তোমাকে।
,
প্রেমা এখনো ছাদে দাঁড়িয়ে আছে।
ওদের ফুল গাছ থেকে একটা ফুল নিয়ে হাঁটু
গেড়ে প্রেমার সামনে দাঁড়ালাম,,,
******প্রেমা প্রপোজ করতে হয় কিভাবে।আমি
জানি না।ভালোবাসতে কিভাবে হয় তা ও জানি না।শুধু
বলবো প্রথম যেদিন তোমরা এই বাসায় উঠো।
সেদিন ই তোমাকে আমার ভীষণ ভালো
লেগে যায়।প্রতিটা দিন প্রতিটা রাত আমি তোমাকে
ভাবি। কলেজ যেতে তোমাকে এক নজর না
দেখলে ভালো লাগে না।যদি এটা ভালোবাসা হয়,
তাহলে আমি তোমাকে ভালোবাসি।
হবে কি আমার ফুল গাছ?
করবে কি তোমার পরিচায়ক?
,,,,,,,
প্রেমা বললো""""হয়েছে হয়েছে।প্রস্তাব
মঞ্জুর। দাঁড়াও এবার।
,
আমি দাঁড়ালাম।অমনি ই গাধীটা আমার বুকে ঝাঁপ
মেরে পড়লো।
------গাধা,ভালোবাসতে জানে অথচ ভালোবাসার
মানুষটির ভালোবাসা বুঝে না।
কেনো আমি প্রতিদিন তোমার কলেজ যাওয়ার
সময় বাইরে আসবো।কেনো আমি আমাকে
প্রতিদিন তোমার সামনে একেক দিন একেকভাবে
উপস্থাপন করবো।বুঝো না?
------ভালোবাসি।তোমাকে ভালোবাসি প্রেমা।
------ভালোবাসি পাগল।
,
প্রেমার চোখ থেকে অশ্রু গাল বেয়ে নিচে
পড়ছে।আমি গাল দুটো মুছে দিব না।
পড়ুক না কিছু অশ্রু। এ অশ্রু যে আনন্দের অশ্রু।
এ যে ভালোবাসার মানুষটিকে প্রাপ্তির অশ্রু।
,,,আমি প্রেমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে
ধরলাম।সারাজীবন এভাবে আগলে রাখবো
পাগলিটাকে।
.
.
লেখাঃ Shuvro paul sobuj (sp)

No comments:

Post a Comment