Saturday, August 24, 2024

সবাই পড়বেন,অনেক ভালো লাগবে
.
কলিংবেল বাজছে।
নিশ্চয়ই আমার বর বাবু এসেছে।
খুব ইচ্ছে করছে নিজেই গিয়ে দরজাটা খুলে
দেই। হাতে বেসন, চুলায় বেগুনী।রেখে
যেতে ও পারছি না
কেউ খুলছে না কেন...
শশী ও শশী দেখোতো কে এল।
দাদা ভাই এসেছে ভাবী....
.
পিচ্চি ননদটা বলতে বলতে রান্না ঘরে এসে
হাজির।তোমাকে কোন হেল্প করতে হবে
ভাবী?? না পিচ্চি বুড়ি কিছু করতে হবে
না।
আমার প্রায় শেষ।
তুমি যাও। দেখ তোমার দাদা ভাইয়ের কিছু
লাগবে কি না।
হুম লাগবে তো।
তাহলে দিয়ে আসো।
দাদা ভাইয়ের যেটা লাগবে সেটা তো
এখানে,বলেই কেমন মিচকি মিচকি হাসছে
পিচ্চিটা।
আমি বললাম কি.... শশী বলল, তোমাকে
লাগবে।
তবে রে পাজি বলে যেই ওকে ধরতে যাব
অমনি ও দৌঁড়ে রান্নাঘর থেকে বের হয়ে
যায়।
.
আর ঠিক তখন ও রান্নাঘরের দরজায় এসে
দাঁড়ায়। মুখটা কেমন থমথমে হয়ে আছে।
মুখে একটা অনিচ্ছাকৃত হাসি টেনে বলল....
দাও শরবতটা বানিয়ে ফেলি।অন্যদিনের
মত বলছে না....বউ এটা দাও,বউ ওটা কই
রাখছো, আমার বউটার বুঝি খুব কষ্ট হচ্ছে।
চুপচাপ নিজের মনে কাজ করছে। হঠাৎই ওর
এই চুপ হয়ে যাওয়াটা চোখে লাগছে।
.
ভুল করে চিনির বদলে লবণের কৌটা থেকে
লবণ দিয়ে ফেলছিল।
আরে.... আরে কর কি??
ওটা তো লবণ। আমার আচমকা চিৎকারে ওর
হাত থেকে চামুচ পড়ে যায়।
মলিন একটা হাসি দিয়ে বলে..ও হে তাই
তো।
.
বুকের ভেতরটা কেমন যেন করছে।ওর কি কিছু
হয়েছে। নাহ এখন কিছু জিজ্ঞেস করব
না,জানি কিছু জিজ্ঞেস করলেও ওর পেট
থেকে কিছু বের করতে পারব না এখন।
এইদিকে ইফতারের ও টাইম হয়ে এসেছে।
ওকে সরিয়ে নিজেই শরবত বানাতে
লাগলাম।
তুমি যাও রেস্ট নাও গিয়ে।আমি করতে
পারব। হুম জানি তো আমার লক্ষী বউটা
তো সব পারে। পারি না বুঝি,একটু
অভিমানের সুরেই বললাম।
হুম পারেন তো...পরশু লেবু কাটতে গিয়ে
আঙুলটাই যে কেটে ফেলেছেন।
হুম রোজ রোজ কি আর এমন হবে নাকি।
যাও তো তুমি,বলেই ওকে জোর করে
রান্নাঘর থেকে পাঠিয়ে দিলাম।
.
ইফতারের আর কিছু সময় বাকি।সব কিছু
সাজিয়ে টেবিলে রাখছি। সাথে আমার
পাকনা পিচ্চি ননদটা যুক্ত হয়েছে আমাকে
হেল্প করার জন্য। বিয়ে হয়েছে খুব
বেশিদিন হয় নি।এর মধ্যেই পরিবারের
সবাইকে কেমন আপন আপন লাগে।অন্যদিন ও
হেল্প করে। কিন্তু আজ যে ও অন্যদিনের
মুডে নেই।চুপচাপ সোফায় বসে আছে।
.
মা ও মা ইফতারের টাইম হয়ে গেল যে,
বাবাকে নিয়ে আসেন।
এই হল আমার বউ। আমাদের বিয়ে হয়েছে ৪
মাস। আর এই কদিনেই ও কেমন সব্বাইকে
আপন করে নিয়েছে। আর আমি কিনা
কিছুই.....ধুর এই ঈদেই কেন এমন হতে হল।
নাহ্ আর ভাবতে পারছি না। বোনের ডাকে
ভাবনায় ছেদ পরলো।
.
ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি ও এখনো সোফায়
বসে আছে।ননদকে দিয়ে ওকে ডাকালাম।
আযান দিচ্ছে। ঠিক করে কিছু খেতে
পারছি না।বার বার ওর দিকে চোখ যাচ্ছে।
বাবা -মা সামনে থাকায় ঠিক করে
তাকাতে ও পারছি না ওর দিকে। অন্যদিন
দুই ভাই- বোন ইফতার নিয়ে কাড়াকাড়ি
করত। আর আজ কিছুই মুখে দিচ্ছে না।একটু
খানি খেয়েই উঠে গেল।
.
সব কিছু গুছিয়ে নামায পড়ে রুমে এসে
দেখি আমার কলিজাটা (বর) চোখ বন্ধ করে
শুয়ে আছে। অন্যদিনের মত বার বার ডাকছে
না। দরজার পেছন থেকে এসে জড়িয়ে ও
নেয়নি আজ।
ওর পাশে গিয়ে বসলাম।ও টেরও পায়নি।
মাথায় হাত দিতেই চোখ মেলে তাকিয়ে
আমার হাতটা নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে
নিল।
.
ও বর কি হইছে তোমার, শরীর খারাপ
লাগছে?
অফিসে কোন প্রবলেম? অফিস থেকে এসেই
চুপ হয়ে আছো যে।
কিছু হয়নি গো আমার বউটা.... বলেই
আমাকে ও ওর বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরল। ওর
বুকে মাথা রেখে আমি ও একটু খানি
অভিমানী কন্ঠে বলে উঠলাম- কিছু না হলে
এমন চুপ করে আছো কেন?
.
প্রতিদিনই তো বকবক করি,তোমাকে
জ্বালাই।আজ না হয় একটু চুপ থাকলাম।
আর তুমিই তো বল- পাজি বর,অসভ্য বর
খালি পকপক করে।তাই আজ চুপ করে আছি,
বলেই হেসে উঠলো।
আমি বুঝি কিছু বুঝি না,না?
কেন জানি খুব রাগ হল,ঠিক রাগও না কষ্ট।
ওকে আর ও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম।
আমার এমন চুপচাপ বর চাই না। আমার অসভ্য,
পাজি বর ই চাই। বলেই কেঁদে দিলাম।ও
আমার হঠাৎ এমন আচরণে মোটেই প্রস্তুত
ছিল না।মাথাটা বুক থেকে তুলে ওর দুহাত
দিয়ে আমার মুখটা তুলে বলে- এই বউ কি
হচ্ছে এটা, কাঁদছো কেন?
.
মাথাটা ওর বুকে রেখে বললাম,
তবে বল তোমার কি হইছে,এমন চুপ হয়ে
গেলে কেনো হঠাৎ? ও আমার কথার কোন
উত্তর দেয়না। গোপনে ছাড়া দীর্ঘশ্বাসটা
বুকের মধ্যে কেমন ধাক্কা দিল।
কি হল চুপ করে আছো কেন, বলো..
.
এইবার ঈদে বেতন পাব না,বোনাস তো নাই।
কাউকে কিছুই দিতে পারব না।তার উপর
আমার এক ও একমাত্র বিয়ে করা নতুন
বউটাকে ঈদে কিছুই দিতে পারব না।বিয়ের
পর এটাই তো তোমার প্রথম ঈদ। সব
মেয়েরাই আশা করে বিয়ের পর প্রথম ঈদ
একটু স্পেশাল হবে।আমি তো তোমার বর
হওয়ার ও যোগ্য.....
.
আমি ওকে আর কিছুই বলতে না দিয়ে ওর মুখ
চেপে বললাম -আপনার লেকচার দেওয়া শেষ
হইছে,লেকচার গাইড?
এইবার আমি বলি।
পাজি বর, শয়তান বর,কুত্তা বর,বিলাই বর এই
কথা.......
ঘুসি দিয়ে বোচা নাকটা আরো বোচা
বানিয়ে দিব। আমার কিছুই লাগবে না। এই
সামান্য ব্যাপারে কেউ মুখ পেঁচার মত করে
রাখে?
আর তুমিই তো বলে দিলে..... নতুন বউ।
তা নতুন বউয়ের সব কিছুই তো নতুন।
কত্তগুলি শাড়ি আছে।নতুন। এখনো পরাই
হয়নি।
ওগুলি দিয়েই আমার ঈদ হয়ে যাবে, বুঝলা
কলিজা।
আর হুম এই ঈদ আমার জন্য সত্যিই স্পেশাল।
এই ঈদে তো আমার বর আছে,শ্বশুড়বাড়ি
আছে। এটাই তো আমার বোনাস, আমার
সবচেয়ে বড় গিফট। আমার কথা শুনে ও
আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
এই মুখ বন্ধ কর,মশা ঢুকবে...
.
আর আমার কাছে কিছু টাকা আছে। তা
দিয়ে বাবা-মা আর শশীর জন্য কিছু কিনে
দিও।
টাকা!!!! তুমি টাকা পেলে কই?
বারে সবাই যখন আমাকে দেখতে
এল,আমাকে
সালামি দিল না, ওই টাকা। ওই টাকা কি
আমি খরচ করেছি নাকি।
.
ও আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।
বউ আমাকে তুমি মাফ করে দিও।
আবার, বলেই ওর চুল গুলি মুঠি করে
টেনে ধরলাম।
উফফ ব্যাথা পাইতো।
আর যদি এসব বলনা একটা চুল ও আর মাথায়
রাখব না,বলে দিচ্ছি।
ওকে, ওকে এইবার তো চুল ছাড়ো
হুম ছাড়ছি, তবে আমার একটা জিনিস
লাগবে।
কি লাগবে??
আমার এই পাজি বরটাকে আর....
আর??আর তোমার নাকটা ।
নাক!!!! হুম নাক।
আমি ওর বোচা নাকটা আলতো করে চেপে
ধরে বললাম -ওটার উপর একটা ট্রাক
চালাবো কিনা তাই।বলেই দুজনে হেসে
উঠলাম।
ও আমার কপালে একটা ভালবাসার কিসসি
এঁকে দিলো।
আহ্! ঈদের আগেই ঈদের আনন্দ।কি শান্তি।

#Love_Exam

"সম্মানিত যাত্রীগন, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সুন্দরবন এক্সপ্রেস আর কিছুক্ষণের মধ্যে এসে পৌছবে। আপনারা নিজেদের টিকেট এবং মালামাল নিয়ে ২ নং কাউন্টারে অবস্থান করুন, ধন্যবাদ"

ষ্টেশনে আসা মাত্রই ছোট ছোট মাইক গুলোতে শোনা গেলো রেল কর্তৃপক্ষের ঘোষণা। যাক বাবা, সময় মত পৌছানো গেছে। ইরা তার লাগেজ দুইটা নিয়ে ২ নম্বর কাউন্টারে  এসে দাড়ালো। আশেপাশে তাকিয়ে বসার জায়গা দেখলো, কিন্তু সেখানে বসে তার দামী জামাটা মোটেও নষ্ট করতে রাজি নয় সে। জামাটা তার ছোটবোন ইফাত টাঙ্গাইলের সমস্ত মার্কেট খুঁজে পছন্দ করে কিনেছে বোনের জন্য। আসলেই ওর পছন্দ আছে স্বীকার করতে হবে। হালকা পেষ্ট রঙে বেশ মানায়ও ইরা কে। তার সাথে কালার কম্বিনেশন করেছে ঠোঁটের লিপিষ্টিক, টিপ, স্যান্ডেল। এমনকি হাত ঘড়িটাও। সব মিলিয়ে যে তাকে বেসম্ভব কিউট লাগছে সেটা রিকশাওয়ালাকে ভাড়া দিতে গিয়েই বুঝেছে সে। তার বাসা থেকে ষ্টেশনের ভাড়া ৩০ টাকা। রিকশাওয়ালার হাতে ৫০ টাকার নোট দিলো। কিন্তু ওই বলদ টা তাকে ৭০ টাকা ফেরত দিল!!
-"মামা, আপনি তো ২০ টাকা ফেরত দিবেন!! আমি তো আপনাকে ৫০ টাকা দিলাম!!"
-"ওহ!! আপা খিয়াল করিনাই! মুই ভাবছি ১০০ ট্যাহা দিছেন!!" ৩৪ টা দাত বের করে বলল সে। তাও যদি ভাগ্নে বা মামা বলত মানাত ... যেখানে ইরা বলল মামা, আর সে বলেকিনা আপা!!

তাড়াহুড়ো করে আসতে গিয়ে চুলটাও ঠিকমতো শুকনো হয়নি। ভেজা ভেজা চুলে সৌন্দর্যের মাত্রাটা আরেকটু উর্ধ্যগামী।
দুর থেকে দেখা যাচ্ছে চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশন এর মাইল ফলকের পাশ দিয়ে ছুটে আসছে ট্রেনটা। চুয়াডাঙ্গা হলো ইরার বাবার বাড়ি। মেট্রিক পরীক্ষা পর্যন্ত এখানেই বেড়ে ওঠে সে। ইরা লাগেজ দুটো শক্ত করে ধরে প্রস্তুত হলো। ট্রেন এসে থামলো। নির্দিষ্ট বগির দরজার সামনে দাড়িয়ে অপেক্ষা করছে নেমে পরা যাত্রীদের জন্য। একে একে সবাই নেমে যাওয়ার পর সে উঠে পরলো ট্রেনে। নির্দিষ্ট আসন গ্রহণ করলো তার লাগেজ দুইটা পাশে রেখে। আরাম করে বসল জানালার পাশে। এমনিতেই ট্রেন জার্নি সে খুব উপভোগ করে তার উপর জানালার পাশের ছিট তার চাই চাই। জানালার পাশে বসে গ্রাম বাংলার অপরূপ দৃশ্য দেখতে দেখতে যাওয়ার মজাই অন্যকিছু। কিছুদিন নানার বাড়িতে বেড়াতে যাবে এমনটাই সে তার বাবা মা কে বলে বের হয়েছে। আসলে তা নয়!! সে তার নানার বাড়িতে যাচ্ছে ঠিকই কিন্তু উদ্যেশ্য ভিন্ন!

লম্বা হুইসেল দিয়ে ট্রেন তার যাত্রা শুরু করলো। এসময় হঠাৎ একটা পরিচিত গন্ধে ইরা চমকিয়ে উঠল! ধক করে উঠলো বুকটার মধ্যে। কি যে আপন এই গন্ধটা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। এই গন্ধটার সাথে আজ ৩ বছরের সংসার তার। আর ৫ বছরের প্রেম ছিলো এই গন্ধটার সাথে। সব মিলিয়ে ৮ বছরের সম্পর্ক ফয়সালের সাথে। ইরা চোখ বন্ধ করে শ্বাস নিল, এবং নিশ্চিত হলো এ তার মনের ভুল নয়। এবং এটা কোন পারফিউম নয় যে বাজার থেকে কিনে ট্রেনের কোন যাত্রী গায়ে মেখে ঘুরে বেড়াচ্ছে!! এটা হলো তার স্বামী, তার প্রেমিক, তার বন্ধু, তার সত্বা, তার একমাত্র বেচেঁ থাকার সম্বল ফয়সালের শরীরের মিষ্টি ঘামের গন্ধ। কিন্তু এই গন্ধ এখানে কি করে এলো? ইরা জানে এই ট্রেনে বা বগিতে ফয়সালের থাকার কোন প্রশ্নই ওঠেনা! তার পরেও একবার এদিক সেদিক তাকিয়ে মন কে সান্ত্বনা দিল। কিন্তু গন্ধটা আসছে কোত্থেকে? ... হঠাৎ মনে পরলো!! মনে পরতেই নিজেই নিজের মাথায় ছোট্ট করে চড় মারল। তার ভ্যানিটিব্যাগ টা খুললো। তার ভিতর থেকে বের করল ফয়সালের ব্যাবহৃত একটা শার্ট। নীল শার্টটার বুকের ১ম বোতাম টা ছেড়া! আদর করার সময় ইরা ছিড়ে ফেলেছিল বোতাম টা! কলারে আর হাতায় বেশ ময়লা জমেছে। কিন্তু ধুয়ে ফেললে যে ফয়সালের শরীরের গন্ধটা হারিয়ে যাবে!! তাছাড়া ওটা তো আর ধোয়ার জন্য সে তার ব্যাগে করে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে না!! ওটা সে চুরি করে এনেছে তার কাছে। নীল রঙের দুইটা আলাদা আলাদা ডিজাইনের শার্ট কিছুদিন আগে কিনে দিয়েছিল ইরা। সেখান থেকেই একটা নিয়ে এসেছে নিজের সাথে! যখনই খুব বেশি খারাপ লাগবে তখনই শার্ট টা নাকে চেপে ধরে একটা লম্বা শ্বাস নিলেই সব কষ্ট দুর হবে। ওই গন্ধটাই তার মস্তিষ্কে বেচেঁ থাকার খাবার জোগাবে।

ইরা তার সেল ফোনটা বের করে ডাটা অন করলো। বেশ কিছুদিন হলো ফেইসবুকে সে একটা ফেইক আইডি খুলেছে। আসল আইডি দিয়ে সে Messenger এ লগইন থাকে আর ফেইক আইডি টা দিয়ে লগইন থাকে অন্য ব্রাউজারে। ফয়সালের সাথে ইরার বিয়ে হয়েছে ৩ বছর। এই ৩ বছরে তাদের ভিতরে কোন সমস্যা ছিলনা। কিন্তু কি মনে করে ইরার একদিন ইচ্ছা হলো ফয়সাল কে একটু পরীক্ষা করার । সে ছাড়া ফয়সাল অন্য কোন মেয়েকে নিয়ে ভাবে কিনা বা এই ৩ বছরে ফয়সালের কাছে সে পুরনো হয়ে গেছে কিনা এটা জানার জন্য। ফয়সালের প্রতি বিশ্বাসের কোন ঘাটতি না থাকলেও, কে জানে? পুরুষ জাত!! বলাতো যায়না!!
তাই সে তার ফেইক আইডি দিয়ে ফয়সালের সাথে চ্যাটিং শুরু করে। আইডি টার প্রোফাইল পিকচারেও ব্যবহার করে তার এক সুন্দরী কাজিনের ছবি! কাজিনের নাম এ্যামি। এ্যামি কে ফয়সাল আগে কখনো দেখেনি, ফলে সহজেই টোঁপ টা গিলে ফেলল ফয়সাল। এবং অফিসের উদ্যেশ্যে ফয়সালের বের হবার পর পরই শুরু হয়ে যেত চ্যাটিং! আর এদিকে ইরাও এ্যামি সেজে ধীরে ধীরে অগ্রসর হতে থাকলো তার উদ্যেশ্য হাছিল করার জন্য!

বেশি না, মাত্র দুই সপ্তাহে ফয়সাল বেশ পটে গেছে। আপনি থেকে তুমিতেও এসে গেছে!
এমনকি এ্যামির টেক্সট না পেলে নাকি তার ভালোও লাগে না!! ব্যাক্তিত্বহীনের মত এ্যামির ফোন নাম্বারও চেয়ে বসল একদিন!! আশ্চর্য! ফয়সাল তো এমন ছিলনা!! তবে কি সত্যিই তার আর ইরা কে ভালো লাগেনা?? সব প্রেম, আবেগ, ভালবাসা শেষ?? কই তার তো কখনো এমনটা হয়নি!! তার তো একটা বারের জন্যও ফয়সাল ছাড়া অন্য কারও কথা কল্পনাতেও আসেনি!! তার কাছে তো ফয়সাল পুরনো হয়ে যায়নি!!! তবে কেন?? পুরুষ মানুষ গুলো কি সব এমন? এরা আসলে চায় কি? এদের সব সময় ইনট্যাক চাই? নতুনত্ব চাই? দুদিন পর পুরনো কে ভুলে গিয়ে নতুনদের পিছনে ছুটে নতুন স্বাদের সন্ধানে?

----------------------------------

কোনো এক ষ্টেশনে এসে ট্রেনটা থামলো। জানালা দিয়ে মাথা বের করেও জানতে পারল না জায়গার নাম। জানালার কাছে এক বাদামওয়ালার কাছ থেকে ২০ টাকার বাদাম কিনল সে। বাদাম ছোলার সময়ও মনে পরল ফয়সালের কথা!! একটা বাদামও ভেঙে খাবেনা সে! ইরা কে বাদামের খোসা ছাড়িয়ে দিতে হবে, তবেই সে খাবে। বাদাম খেতে খেতেই ফোনের দিকে তাকাল। ফেইক আইডি টাতে ফয়সাল লিখেছে-
"কি ম্যাম কাল দেখা হচ্ছে তো?"
ইরার চোখে পানি চলে আসলো! মানুষের এত রূপ হয় কিভাবে!! কি সূক্ষ্ম ভালবাসার অভিনয় করে যাচ্ছে ফয়সাল তার সাথে, ভাবতেই বুকের মধ্যে হুহু করে উঠলো। ফয়সাল সেদিন ফোন নম্বর চাওয়ার পর ইরা লিখেছিল -
"ফোন নাম্বার টা না হয় সামনা-সামনি দেবো"
তারপর তারা ঠিক করে খুলনার রায়েরমহলের একটা পার্কে তারা দেখা করবে। আর আগামীকাল হল দেখা করার সেই দিন। যার জন্য আজ সে খুলনা রওনা দিয়েছে।
ইরা প্রতিউত্তরে লিখল -
"জী জনাব কাল আমরা দেখা করছি"
-"সত্যিই?"
-"কেন বিশ্বাস হচ্ছেনা?"
-"না মানে, এত সুন্দরী একজন কে সামনে থেকে দেখলে জ্ঞান হারানোর সম্ভাবনা আছে তো তাই" (লজ্জা ইমো)
-"একটু বাড়িয়ে বলছো না?"
-"মোটেও না, আমি কখনোই কারো প্রশংসা করি না"
-"ওহ তাই বুঝি"

ইরার খুব লিখতে ইচ্ছা হলো 'আচ্ছা তোমার বউ কি দেখতে এতটাই অসুন্দর যে তুমি এভাবে আমার সাথে নষ্টামি করছো?' কিন্তু নাহ্!! তাহলে যে আরো কিছু সত্য জানা থেকে বঞ্চিত হবে সে। যদিও এর থেকে বেশিকিছু জানার প্রয়োজন পরেনা। তার পরেও সে নিজের চোখে দেখতে চায় যে, তার জান, তার কলিজার টুকরো, তার স্বামী কিভাবে অন্য মেয়ের হাত ধরে পার্কে বসে থাকে!!

ইরার কাজিন এ্যামিকে আগে থেকেই সব কিছু শিখিয়ে পড়িয়ে রেখেছে সে ...। এ্যামিও ব্যাপার টাতে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। সেও চায়না তার বোন এভাবে দিনের পর দিন ঠকুক!
------------------
ফয়সাল আর ইরা ঢাকায় থাকে। বাবা, মায়ের জন্য মনটা কেমন করায় কদিন বাপের বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসার কথা বলে ফয়সালের কাছ থেকে বিদায় নেয় সে। ফয়সালও আপত্তি করেনি বরং যেন একটু খুশি খুশি ভাব দেখা দিয়েছিল তার মুখে। ইরাও মনে মনে বলল - তোমার এই খুশি যেন চিরস্থায়ী হয় সে ব্যবস্থা করার জন্যই যাচ্ছি!

ট্রেনের জানালা দিয়ে বাইরে চোখ রেখে গত তিন বছরের স্মৃতিচারণ করছে ইরা। কিভাবে এই মানুষ টাকে ছাড়া থাকবে সে? কেন এত ভালবাসার মানুষ গুলো এমন হয়? থেকে থেকে সে ভাবে এই কাজ গুলো হয়তো না করাই ঠিক ছিলো! কি দরকার একজন মানুষ কে প্রয়োজনের বেশি জানতে যাওয়ার? পৃথিবীর সমস্ত বউরা তাদের স্বামী সম্পর্কে বিষদ জানতে গেলে দেখা যাবে বেশির ভাগ সংসারেই আগুন লেগে গেছে!!
খুব কষ্ট হচ্ছে তার ... ব্যাগ থেকে শার্ট টা বের করে নাকে চেপে ধরে আবারো একটা লম্বা শ্বাস নিল। মুহূর্তেই যেন প্রাণ ফিরে পেল ...!!!

-----------------------------পরদিন সকালে-

নানার বাড়ি থেকে এ্যামিদের বাড়ি ১০ মিনিটের পথ। ইরা সকাল সকাল পৌঁছে গেলো এ্যামিদের বাসায়। এ্যামিও রেডি ছিলো। সকাল ১০ টায় ফয়সালের ওই পার্কে থাকার কথা। অর্থাৎ ফয়সালও এখন খুলনায়! অথচ সকালে যখন সে ফয়সাল কে ফোন দিল, ফয়সাল কি চমৎকার ভাবে নির্দিধায় বলে ফেলল সে অফিসে গেছে! খুব সাভাবিক ভাবেই জানতে চাইলো ইরা কবে ঢাকা ফিরবে! তার বাপের বাড়ি বেড়ানো হয়েছে কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি!! সব থেকে বেশি খারাপ লাগল তখন যখন সে বলল -
"খুব মিস করছি তোমাকে!!"
ইরা "ও, আচ্ছা" বলে কল টা কেটে দিল। সম্পর্কের ৮ বছর পর নিজের উপর প্রচন্ড রাগ হয় এই ভেবে যে - এত সূক্ষ্ম অভিনয় কোনদিনই ধরতে পারেনি সে!!

-"আপু চল, আমি রেডি" এ্যামি বলল ইরা কে। হ্যাব্বি সাজ দিয়েছে সে। আজ ফয়সালের একটা হেস্তনেস্ত করেই ছাড়বে! ওরা রওনা দিল। প্লান টা এমন করা হলো যে এ্যামি আর ফয়সাল এমন এক জায়গায় বসবে যেন ইরা দুর থেকে লুকিয়ে স্পষ্ট সব দেখতে পারে। ইরা এবং এ্যামি আলাদা আলাদা রিকশাতে করে গেল।

৯:৪৫ এ পৌছালো তারা। এ্যামি রিকশা থেকে নেমে পার্কের ভিতরে প্রবেশ করল, আর ইরা দুর থেকে লক্ষ্য রাখলো তার উপর। .....

৯:৫০ .... এ্যামি নির্দিষ্ট স্থানে বসে অপেক্ষা করছে ....!!

৯:৫৫ .... এখোনো কোন খোঁজ নেই ফয়সালের ...!!

৯:৫৯ ...... একটা বাচ্চা মেয়ে বড় একটা ফুলের ঝুড়ি এ্যামির হাতে দিয়ে বলল
-"এইটা একটা ভাইয়া আপনাকে দিতে বলল!!"
এ্যামি অবাক হয়ে ঝুড়িটা হাতে নিতেই দৌড় দিল মেয়ে টা ...!! ব্যাপার টা খুব ই সিনেমাটিক, কিন্তু এটার মানে কি? ... রজনীগন্ধার একটা স্টিকের সাথে একটা কাগজ আটকানো ছিল ... তাতে নীল কলমের কালিতে লেখা ছিলোঃ-
                     " গেটের বাইরে রাস্তার অপর পাশে অপেক্ষা করছি। আমার বউ টাকে আমার কাছে নিয়ে আসুন।"!!!
ততক্ষণে পুরো ব্যপার টা খেয়াল করে এ্যামির দিকে প্রশ্নবিদ্ধ চোখ নিয়ে এগিয়ে এসেছে ইরা ..! এ্যামি কাগজটা এগিয়ে দিলো ইরার হাতে। কাগজ টা হাতে নিয়েই ছুটে গেল সে গেটের দিকে ... এ্যামিও ছুটলো তার বোনের পিছু পিছু ...!!

রাস্তার অপর পাশে ইরার দেয়া দ্বিতীয় নীল শার্ট টা আর অফ হোয়াইট প্যান্ট পরে সব গুলো দাত বের করে দাড়িয়ে আছে ফয়সাল ...!! দুই হাত বাড়িয়ে আহবান করছে নিজের দিকে ... ইরা এক দৌড়ে ফয়সালের বুকে ঝাপিয়ে পরল... ফয়সাল ফিসফিস করে বলল -
"ফেইক আইডি টা খোলার জন্য আর কোন নাম্বার পাওনি? আমার দেয়া নাম্বার টা দিয়েই খুলতে হলো!! তার উপর নাম্বারটাও প্রাইভেসি দাওনি, এত বোকা হলে কবে থেকে? আর তোমার কেন মনে হলো তুমি আমার কাছে পুরনো হয়ে গেছো ? আমার ভালবাসায় কোন ঘাটতি ছিল ইরা?"
নিজের বলদামির জন্য নিজের উপরেই রাগ হলো তার ... তাতে কি? বলদামি থেকে যদি ভাল কিছু হয় তো বলদামিই ভালো। তার এখন কোন কথায় কান দিয়ে ঢুকছে না ..! সে যেন তার জান ফিরে পেয়েছে ... তার প্রাণ ফিরে পেয়েছে .. ফয়সালের বুকে তার নাক মুখ গুঁজে ঘ্রাণ নিচ্ছে ... দম ভরে তার বেচেঁ থাকার ওষুধ নিচ্ছে .... মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সে এই ঘ্রাণের মোহ নিয়ে বেঁচে থাকতে চায়.....

এসময় এ্যামি পাশে এসে ফয়সাল কে উদ্যেশ্য করে বলল -
"দুলাভাই, আপুর বোকামির জন্য এ যাত্রা বেঁচে গেলেন ..!! পরবর্তী পরীক্ষার জন্য তৈরি থেকেন!!" বলে হাহা করে হাসলো। ফয়সাল ইরা কে শক্ত করে ধরে বলল -
"আমি আজীবন ওর ভালবাসার পরীক্ষা দিতে প্রস্তুত ..."

#নাঈম_ফয়সাল ...........................

কলেজ থেকে ফেরার পথে পড়লাম মহা
বিপদে।বিরাট এক জ্যামে আটকে পড়লাম।
বাইকটা নিয়ে দাড়িয়ে আছি অনেক্ষণ হল।
তার মাঝে সূর্যের তেজটাও দ্বিগুণ
বেড়েছে।পুরাই জলসে যাচ্ছি।এরি
মাঝে মোবাইলটা কান্না জুড়ে দিল।
মোবাইলের স্কীনে তাকিয়ে দেখি মিস
পেত্নীর ফোন।রিসিভ না করলে আমাকে ও
কান্না জুড়ে দিতে হবে।তাই রিসিভ
করলাম।
.
.
-হ্যালো বানর তুর প্রেকটিকাল খাতা
আমার ব্যাগে কেন।(তাসমিয়া)
.
ওমা কল রিসিভ করার সাথে সাথে আমারে
ঝাড়ি দেওয়া শুরু করছে।জ্যামে আটকে
আছি আবার ঝাড়িও দেয় পুরাই মাথা গরম
হয়ে গেল।কিন্তু মাথা গরম করে কথা বললে
হবে না।আড্ডার সময় বুদ্ধি করে খাতাটা ওর
ব্যাগে ডুকিয়ে দিয়েছিলাম। আঁকাজোকা
এগুলো আমার দারা হয় না।খাতাটা ওর
ব্যাগে ডুকিয়ে দেওয়ার কারণ টা হল যাতে
ও সব একে দেয়।সরাসরি বলা যেত তবুও
বুদ্ধিটা করলাম কারণ সরাসরি বললে তখন
বলত করতে পারি তবে খাওয়াতে হবে এ
করতে হবে সে করতে হবে মানে পুরাই
মানিব্যাগের বারোটা বাজত।এখন পরে
মোবাইলকরে পাম্প টাম দিয়ে বললে কাজ
শেষ
জাস্ট মাএ ৫ থেকে ১০ টাকা খরচ হল। তাই
ভাল ভাবে বললাম।
.
.
-আরে আমার প্রেকটিকাল খাতা তুর
ব্যাগে যাবে কেন।(মিথ্যা)
-আমি মিথ্যা বলতাছি তাই না তুর ব্যাগ
চেক করত দেখি।
.
.
কি ব্যাগ চেক করব খাতা ত তুর ব্যাগে।তবুও
আবার বললাম।
.
.
-আরে ওয়েট কর।আমি দেখতাছি।
-দেখ দেখ।
.
.
জ্যাম এখনো ছুটে নায়।এরি মাঝে আমাকে
নাটক ও করতে হচ্ছে।কিছুক্ষন ব্যাগ এমনে
চেক করার পর।
.
.
-আরে দোস্ত সত্যি আমার ব্যাগে ত খাতা
নাই।
-আমি জানি তুই বুদ্ধি করে আমার ব্যাগে
খাতা ডুকিয়ে দিয়েছিস।আমি তোকে
হাড়ে হাড়ে চিনি।
.
.
আরে গেলাম ফেঁসে কি বলব বুঝতে পারছি
না।একটু কাশি দিয়ে সময় নিলাম কি বলব
ভাবতাছি।
.
.
-আরে দোস্ত তুইত জানস আমি এসব আকঁতে
পারি না।
-ত আমি কি করব।
-আরে কিছু করতে হবে না জাস্ট একেঁ দিলে
হবে।
-আমি পারব না।
-দোস্ত এই দূর সময়ে তুই যদি হেল্প না করিস
আর কে করবে বল।তুই আসলে আমার অনেক
ভাল ফ্রেন্ড।
-তাই বুঝি আমাকে পাম্প দেওয়া হচ্ছে।
-একদম না।
-আমি পারব না বললাম ত।
.
.
আমি রাগ করে কলটা কেটে দিলাম।আমি
জানি রাত হলেও সব করে আমার খাতাটা
কাল নিয়ে আসবে।ও এতক্ষন যার কথা
বললাম তার পরিচয়টা বলতে ভুলে গেলাম।
তাসমিয়া ইবনাত আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড।
কেয়ারিং,রাগ অভিমান এসব নিয়ে ভালই
চলছে আমাদের বন্ধুত্ব।আমি ওকে পেত্নী
বলে ডাকি আর ও আমাকে বানর বলে
ডাকে।প্রায় সময় এটা নিয়ে ঝগড়া হয়।
.
.
তাসমিয়া সাথে আমার বন্ধুত্বটা শুরু হয়
অদ্ভুত ভাবে।ফেসবুকের এই নীল কালো
জগতে টুকটাক
লেখালিখি করতাম।সে সুবাধে বিভিন্ন বড়
বড় পেজে আমার লেখা ছোটখাটো গল্প
গুলো শেয়ার হত।একদিন আমার এক গল্পে
এক অপরিচিত আইডি থেকে এক ভিন্ন
ধর্মীক কমেন্ট আসে আমি এর উওর দিতে
গিয়ে এক পর্যায়ে অনেক ঝগড়া হয়।
এবং পরে একসময় যখন পরিচয় জানতে
পারলাম তখন ত আমি পুরাই টাস্কি
আমাদের পাশের পাড়ায় আর আমার সাথে
একি ভার্সিটি একি ডিপার্টমেন্টে পড়ি।
কিন্তু কোনদিন কথা হয় নাই।এভাবে
আমাদের বন্ধুত্ব শুরু হয়।
.
.
এরি মাঝে আমি তাসমিয়ার প্রতি দুর্বল
হয়ে পড়ি।আস্তে আস্তে ওর প্রেমে পড়ে
যায়।আসলে কোন ছেলে মেয়ে কোনদিন
বন্ধু হয়ে থাকতে পারে না।একদিন না
একদিন একজন অন্যজনের প্রতি দুর্বল হবেই।
এটা আমার ক্ষেত্রে ও ব্যাতিক্রম নয়।আমি
জানি তাসমিয়া আমাকে ভালবাসে।না
হলে অন্য মেয়েদের সাথে মিশাত দূরের
কথা কথা ও বলতে দেয় না।অনেকবার
ভালবাসার কথা বলতে গিয়ে ও পারিনি।
মা মাঝেমাঝে টিকি বলে আমার মত
অকর্মার দিয়ে কোন কাজ হবে না।যাই
হোক।
.
আজকের মত জ্যাম ট্যাম পেড়িয়ে।বাড়িতে
চলে আসলাম।এরপর থেকে তাসমিয়ার
সাথে আমার সারারাত কথা হয়নি।ও একটি
বারের জন্য ও আমাকে কল দে নাই। আমিও
রাগ করে কল দি নাই
.
.
এরপর দিন সকালে ভার্সিটি যাবার জন্য
রেডি হয়ে বাইকটা নিয়ে রওনা হলাম।
এদিকে বাইক চালাচ্ছি আর তাসমিয়ার
কথা ভাবছি।ভাগ্যটা পুরাই খারাপ ঠীক
ভার্সিটি পৌছানোর আগে অন্যমনস্ক
হওয়ায়।
বাইক টা কখন যে অন্য গাড়ির সাথে
লাগিয়ে দিলাম বুঝতে পারলাম না।
.
.
এরপর আর কিছু মনে নেই জ্ঞান হারিয়ে
পরে নিজেকে আবিষ্কার করলাম
হসপিটালের বেডে।চোখ খুলে দেখি আমার
চারপাশে আমার পরিবারের সবাই দাড়িয়ে
আছে আর মা আমার পাশে বসে কাঁদছে।
ভাগ্য ভাল ছিল হাতে ও পায়ে সামান্য
ব্যাথা পেয়েছি।কিন্তু কোথাও
তাসমিয়াকে দেখতে
পেলাম না।সবার সাথে কথা বললাম। কিন্তু
কিছুক্ষন পর সবাই রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
কারণটা বুঝলাম না
.
তার কিছুক্ষন পর দেখি তাসমিয়া রুমে
প্রবেশ করল।তারপর আমার পাশে এসে বসল।
তাসমিয়ার চোখ মুখ লাল দেখাচ্ছে যেন
মনে হচ্ছে অনেক কেঁদেছে।কিন্তু কাঁদবে
কেন।
.
-এখন কেমন লাগছে নীল।(তাসমিয়া)
-ভাল।
-তোমার কিছু হলে তখন আমার কি হত।
(কেঁদে কেঁদে)
.
.
ঠীক তাসমিয়া কথাটার মাঝে কিছু একটা
ম্যাচ
করলাম।হঠাৎ তুমি বলার কারণ টাও
বুঝলাম না।কিছুক্ষন চুপ থেকে আবার
বললাম।
.
.
-কথাটা সরাসরি বললে হত এত ঘোরাঘুরির
মানে কি।
-কি কথা (না বুঝার ভান করে)
-ভালবাসি
-কাকে
-আমার পেত্নীটাকে।
-বানর কথাটা বলতে এতদিন লাগে।(মাইর
দিয়ে)
-ওমা ব্যাথা পায় ত।
.
.
বাইরে তাকিয়ে দেখি সবাই আমাদের কথা
শুনে হাসছে।ওমা তাসমিয়া দেখি লজ্জায়
লাল হয়ে গেছে।এভাবে শুরু হয় ভালবাসার
এক নতুন অধ্যায়।
.
.
লেখক: রক্তাক্ত লেখক হিমু (মি. নীল)

ইদানিং একটা আইডি আমার নিউজফিডে
বার
বার আসছে, মেয়েটার
আইডিতে আমার ফ্রেন্ড সার্কেলের সবাই
লাইক,
কমেন্ট করে তাই আমার ফিডে আসে।
.
বিকেল বেলা বসে আছি ভালো লাগছে না
তাই
নিউজফিড ঘাটাঘাটি
নিয়ে ব্যাস্ত হঠাৎ সেই মেয়েটার আইডি
ভাসছে,
আমি নামের উপরে ক্লিক করে তার
প্রোফাইলে
ঢুকে গেলাম, ঢুকে অবাক হয়ে গেলাম
প্রথমে
ফলো লিস্টে ঢুকলাম আমিও আছি সবচাইতে
অবাক হলাম মেয়েটার সাথে আমার 120
Mutual
ফ্রেন্ড থাকা সত্তেও আমার সাথে পরিচয়
নাই।
.
আমাকে ফলো করে রেখেছে। তাই ভাবলাম
একটু
পরিচয় হই, ফ্রেন্ড রিকু না দিয়েই
ম্যাসেজে
গুতো দিলাম, ওমা ম্যাসেজ অপশনে দেখি
আমাকে আগেই পাঠিয়েছে হ্যায়...
ভাইয়্যা.....!!
আমি অবাক হয়ে গেলাম তাই একটু ভাব
নিয়ে
উত্তরে বললাম আপু কিছু বলবা?
(ম্যাসেজটা ছিল
১ মাস আগের)
.
সাথে সাথে রিপ্লাই....
.
:- কেমন আছেন ভাইয়্যা...??
:- জ্বি ভালো... তুমি?
:- জ্বি ভালো...
:- কি করেন?
:- এইতো বসে আছি...
:- একা....?
:- হুম একা?
:- কোথায় আছেন?
:- এত্ত যেনে কি করবা তুমি?
:- না এমনিতে বললাম... অনেক দিন ধরে
আপনার
সাথে
চ্যাট করার জন্য ওয়েট করছি.. আজ
যেহেতু পেয়েই গেছি ডিস্টাব করবই।
:- ও আচ্ছা.... তোমার বাড়ি কোথায়?
:- আমাকে আপনী চিনবেন না ভাইয়্যা,
আগামী
কাল কলেজে আসবেন?
:- এই আমি কলেজে আসবো কি আসবো না
তুমি
কি করবে?
:- কেন জানতে পারি না? আমি আপনার খুব
কাছের কেউ, এখন চিনবেন না।
:- (........................) !!!!
.
ভালোই কথা হয় কিছু দিন, প্রতিদিন
অনলাইনে
বসে থাকে আমার ম্যাসেজের জন্য। আমিও
অপেক্ষা করি, কখনো এসে মেয়েটাকে না
পেলে
আবার চলে যাই। একদিন ম্যাসেজ না
দিলেই
রেগে যায়, অকারনে রাগ করে.... অধিকার
ছাড়াই
জায়গাটা দখল করার চেষ্টা করছে। আমি
অনেক
দিন দেখা করার কথা বলেছি করবে করবে
বলে
সময় হওয়ার ১ঘন্টা আগে যেকোন কারণ বসত
না
বলে দেয়।
.
শুক্রবার একটু বেশীই ঘুম্পায়, তাই আজকে
একটু
ঘুমথেকে উঠতে দেরী হয়ে গেছে, ঘড়ির
দিকে
তাকিয়েই দেখি ১২.০০টা, ঘুম থেকে উঠে
গোসল
করে নামাজ পড়লাম। বাড়ি এসে মোবাইল
ধরেই
দেখি ঐশীর ৭টা কল ১টা ম্যাসেজ। “আজকে
দেখা
করতে পারবা” ম্যাসেজটা দেখে অবাক
হয়ে
গেলাম আমি যাকে প্রতিদিন দেখা করার
জন্য
বলি আজ আমাকে বলছে!!! আমি ফোন ব্যক
করি।
.
:- হ্যালো...
:- এই তুমি ফোন ধরছোনা কেন?
:- সরি আমি নামাজে ছিলাম।
:- তোমার জন্য কি মোয়াজ্জিম
১১.৫০বাজেই
নামাজ শুরু করছে নাকি?
:- আসলে আমি ফোন দেখি নাই।
:- ঠিক আছে আর বলতে হবে না। আজকে
দেখা
করতে পারবা?
:- দেখাতো কয়েকবারই করলাম... আবার?
:- এই দেখ আমি দুষ্টুমি করছি না.. পারবা
কি
না?
:- ঠিক আছে বিকেলে আমি লেগের পারে
থাকবো।
:- এই না। ঐখানে যাইতে পারব না। তুমি
ডামুড্যা মডেল টাউনে থাকবা,
:- ঠিক আছে? তুমি কোন ড্রেস পরে আসবা?
আর
কে কে আসবা?
:- আমি আর সায়মা, সাধারণ পোষাকে
আসবো।
:- তুমি কি পড়ে আসবা?
:- পাঞ্জাবী....!
:- ঠিক আছে তোমার নীল পাঞ্জাবীটা
পড়বা
আজকে।
:- ওকে।
.
আমি বসে আছি কোখাও দেখছি না
ঐশীকে, আর
কিভাবেই দেখবো আমিতো চিনিই না।
অপেক্ষা
আর ভালো লাগে না। ঐশী বলে কথা
থাকতেই
হবে। কিছুক্ষন পরে দেখতে পেলাম
আমাদের
ডিপার্টমেন্টের জামিয়া, এটাই সেই
জামিয়া
যাকে আমি খুব পছন্দ করতাম কখনো বলতে
পারতাম না,
অনেক রাগি, একবার একটা ছেলে প্রোপোজ
করেছিলো, যার ফলটা কানে ধরে উপভোগ
করতে
হয়েছিল,
.
আমার দিকে উদ্দেশ্য করে আসছে আমি
জামিয়াকে দেখে ঘুরে বসলাম আমি কাছে
আসার শব্দ কানে শুনতে পেলাম জামিয়া
আমার
পাশেই দাড়িয়ে আছে। আমি ভয়ে ভয়ে
জামিয়ার দিকে তাকাইলাম।
.
:- কেমন আছো? (ভয়ে ভয়ে)
:- জ্বি .. তো এখানে কি করেন?
:- এইতো বসে আছি..
:- ঐশীর জন্য?
:- আরে না এমনিতেই বসে আছি।
:- দেখ মিথ্যা বলবা না কি জন্য বসে আছো
সেটা বলো?
:- সত্যিই কারো জন্য না।
:- তাহলে ঐখানে ঐশী নামের মেয়েটা
দারিয়ে
আছে কেন?
:- ইয়ে মানে...
:- কি হলো?
:- কোথায় মেয়েটা?
:- ঐতো বটগাছের নিচে বসে আছে।
:- জামিয়া তুমি দাড়াও আমি আসছি।
:- এই এই কি হচ্ছে এগুলো...?
:- দাড়াও আমি আসছি...
.
আমি চারপাশ খুজেঁ বেরাচ্ছি কোথাও
পাচ্ছি
না।
.
:- ঐ কোথায় মেয়েটা?
:- (কিছুটা দূরে গিয়ে জামিয়া) কিছুক্ষন
আগে
ঐখানে দাড়িয়ে ছিল।
.
আমি কিছুটা বুঝতে লাগলাম তাহলে
জামিয়া’ই
ঐশীর পরিচয় দিয়ে আমার সাথে
ভালোবাসা
নামক শব্দটা নিয়ে খেলছে নাতো?
.
জামিয়া আমার চোখের দিকে দাকিয়ে
আছে,
আমি লজ্জায় নিচুমুখী হয়ে দাড়িয়ে আছি,
কিছুক্ষন চুপকরে জামিয়া মুখ খুললো, কই
তোমার
ঐশী? এখনো মিথ্যা কথা বলবা? আমি চুপ
করে
আছি।
.
আমি ঐখান থেকে ফিরে আসতে লাগলাম,
জামিয়া হাতটা ধরে ফেললো, আমি
কিছুটা
আতংকের ভিতরে, যে মেয়েটার সাথে
আমার
কথা বলতে ভয় হয় আর সেই মেয়েটা হাত
ধরলো?
.
:- কি হলো দেখা না করে চলে যাচ্ছ যে?
আমি চুপ করে থাকি, ঐশীও কিছুক্ষন চুপ
করে সব
বলে আমাকে।
আমি অনেক খুশি হলাম, ঈদের চাইতোও
বেশী,
ছোট থাকতে আব্বু ১০ টাকা দিয়ে একটি
চশ্মা
একটি ঘড়ি দিত, ভাবতাম এই বুঝি জীবনের
আনন্দের মুহূর্ত, এখন ভাবি এর চাইতে আর
কখনো
খুশি হওয়া যায় না।
.
আচ্ছা তুমি কি আমাকে সত্যি’ই
ভালোবাসো?
জানো ঐশী অনেকবার তোমাকে বলবো
ভাবছি
কিন্তু সাহস পাচ্ছি না।
.
এখন বল??
.
না আমি কাউকে I Love You বলি না লজ্জা
লাগে।
.
ঠিক আছে বলতে হবে না, চলো ঐদিকটা
ঘুরে
আসি।
.
যেই মেয়েটার জন্য ঘন্টার পর ঘন্ট ধারিয়ে
থাকতাম
কলেজের সমনে একবারের জন্যও ফিরে
তাকাইতো না। এখন তার হাতে হাত রেখে হাটছি।
.
লিখাঃ- Nahidul Islam Ratul

Wednesday, August 21, 2024

চুমু খাওয়া বা বুকের উপর পড়ে থাকাটা ভালবাসার অংশ হলেও
আরো কিছু স্পর্শ আছে যা তোমাকে শুন্যে ভাসিয়ে
নিয়ে যাবে।
যার অর্থ শুধু কামনা না, ভালবাসি তোমাকে। প্রচন্ড ভালবাসি।
তোমার ভালবাসার মানুষটা যখন তোমার সামনে শাড়ি পড়া, তার
পেছনে দাঁড়িয়ে আঁচল সরিয়ে পিঠে একটা চুমু খাওয়ার
মানে জানো?
তোমার চুমু তাকে বলে দিচ্ছে তুমি তার ভরসা। তোমার
ঠোঁট তার পিঠ ছুতেই সারা শরীর কেঁপে উঠবে। সে
জানবে তার সামনে হাজার বাঁধা এলেও তার পিঠের উপর
তোমার নিশ্বাস আছে। এক রাশ ভরসা দিয়ে তুমি তাকে
আগলে রেখেছ।
তোমার ভালবাসা যখন তোমার সামনে স্লীভ লেস ব্লাউজ
পড়া, তুমি তখন তার পেছনে দাঁড়িয়ে কাঁধে হাত রাখ। বাহুতে
নাক ঘষে দাও। হাতের তালুতে পুরো হাত টা ছুঁয়ে দাও। এর
মানে কি জানো?
সে তোমার আমানত। তোমার সর্বস্ব জুড়ে শুধুইই সে ।
হাতের উলটো পিঠে চুমু খাওয়ার মানে জানো?
ইউ আর মাই প্রিন্সেস। নট আই যাস্ট লাভ ইউ। আই রিস্পেক্ট
ইউ মোর।
পেটের উপর নাভির ডান পাশে চুমু খাওয়ার মানে জানো?
আমার অস্তিত্ব তোমার মাঝে। আমি স্বামী, আমি বাবা, আমি
সংসার।
ঘাড় থেকে চুল সরিয়ে কানের পেছনে চুমু খাওয়ার
মানে জানো?
প্রচন্ড আদর চাই। তোমার ভালবাসার তাপে চোখের
সামনে আমি আইস্ক্রিমের মত গলে যেতে চাই।
হাতের উপর শুইয়ে দিয়ে গলার ঠিক মাঝ খানে চুমু খাওয়ার
মানে জানো?
আজ তোমায় স্বর্গ দেখিয়ে দিব ।
দুহাত দিয়ে গাল চেপে নাকে নাক ঠেসে ধরার মানে
জানো?
মানে হচ্ছে পাগলী একটা। আমার ভালবাসার পরী।
কোমড়ের উপর পিঠের ঠিক নিচে একদম মেরুদন্ড বরা
বর চুমুটা কি বলে জানো?
আমি তোর রাজা এ রাজ্যে রানী শুধু তুই.........
আর যদি কাওকে ভালবেসে খুন করতে চাও তাহলে,
মুখো মুখি সামনে গিয়ে দাঁড়াও। কপালের উপর সিথী বরাবর
ঠিক দুই ভুরুর মাঝে ঠোঁট লাগিয়ে পড়ে থাক অনন্তকাল। মাথা
তুলে দেখবে জলে ভরা এক জোড়া চোখ কি পরম
শ্রদ্ধায় তাকিয়ে আছে তোমার দিকে।
( ইহাতে স্বামীস্ত্রীর প্রেম ভালোবাসা বোঝানো
হয়েছে। দয়া করে এই ভালোবাসার মাঝে কেউ
অশ্লীলতার তকমা দিয়েন না।)।
লিখাঃ আশিক রহমান

ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং
- ধুর। এই সাত-সকালে কোন সালায় রে? (ফোন রিসিভ করে)
- অই কুত্তা তুই কি বল্লি?
- (অবাক হয়ে! ফোনে মেয়ে আসলো কোথা থেকে) আপনি কে আফামনি?
- সালা লুচ্চা। আমি তোর আফা লাগি? (ইস্পিতা)
- তাইলে কে আপনি। (রাফি)
- হারামজাদা নাম্বার চেক কর। (রাগের ইমো😈)
- ওকে ওয়েট।
নাম্বার চেক করে দেখে মহারানীর ফোন। (খাইছে আম্রে। আম্রে কেও বাচা!!! সকাল সকাল রাগায় দিলাম। জানিনা আজকে কপালে কি আছে?  মাম্মি মাম্মি আমাকে বাচাও😂😂😂)
-ওওও জানপাখি তুমি। আগে বলবানাহ। আমি তো ভাবছি যে কে না কে ফোন দিসে।
- ওই আমি কে না কে?. কেন আমার নাম্বার তোর মোবাইল এ সেভ করা নাই হা? আয় আজকে তোর খবর আছে।
- ওমা😱 জানপাখি তুমি আমাকে তুই করে বলতেছ কেন।
- তুই জানস না কেন বলতাসি হুহ।👿। আজকে আমাদের কি দেখা করার ডেট ছিলো?
- (উরিম্মা ভুলে ই গেছি। আজকে কপালে শনি, রবি, সোম সব ই আছে) ওহ নু। জানু একদম ভুলে গেছিলাম। তা কখন যেন দেখা করার কথা?
- সকাল ৯টায়।
- আর এখন কয়টা বাজে?
- ৮:৪৯.
- হেহেহে. আর আপনি এখন কোথায়?( লেট লতিফ)
- তোর মতন একটা হারামজাদার জন্য পার্কে অপেক্ষা করতেছি।
- হিহিহি😁😁😁 আপনি শাস্তি রেডি রাখেন ম্যাডাম আমি আসতেছি। (পার্ক এ যাইতে ই লাগে ১৫ মিনিট আর আমার হাতে আছে ১১ মিনিট)
- ওই তুই বকবক রাইখা একটু জলদি আসবি নাকি আমি ই তোর মেস এ আসবো?
- নাহ গো জানপাখি আপনি ৫মিনিট বসেন আমি ১৫ মিনিটে আসতেছি।
- হুম প্লিজ সোনা জলদি আসো। কয়েকটা ছেলে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমার খুব বিরক্ত লাগতেছে (নরম সুরে সাথে আবার তুমি. মাইয়াজাতী তুমি পারো ও)
- কিহ আমার জানের দিকে নজর। আমি আইসা লই। ওদের কে চাবিয়ে চাবিয়ে ডাস্টবিন এ ফালায় দিমু।
- জলদি আসো না জান।
- এইতোহ আইসা পড়ছি।

এইইইইই। যাহ। আপনাদের তো পরিচয় ই দিতে ভুলে গেছি। আমি হলাম রাফি। মধ্যবিত্ত পরিবার এর ২মাত্র শয়তান।।।উপস সর‍্যি। সন্তান। এবার মাস্টার্স শেষ করে শিক্ষিত বেকার হয়ে আছি। আর সে হলো ইস্পিতা। বড়লোক বাবার পিচ্ছিলোক মাইয়াহ। সে অনার্স পাচুর্থ বর্ষে পড়ে। আর আমার একমাত্র ইয়ে। মানে আর কি ইয়ে বুঝেন না?. আর বুঝাইতে পারুম না। বাকিডা বুইঝা লন।

কথা বলতে বলতে পার্কে আইসা পরছি। (তার প্রিয় বেলিফুলের মালা নিতে কিন্তু ভুলিনাই!!! তানাহলে যে আমাকে আর আস্ত রাখবে না)

ওইযে দেখা যায় একটা বেঞ্চের কোনায় গুপটি মেরে বসে আছে। দূর থেকে কত নিষ্পাপ লাগে চেহারা টা। আর যখনি কাছে যাই তখন ভুলে যাই যে আমি এইমুহুর্তে কোনো মানুষের সামনে আছি। মনে হয় মানুষের বাচ্চা বাঘিনীর সামনে দারিয়ে আমি। আমাকে যা যা আদেশ দিবে তা মাথা পেতে মানতে হবে। যাইহোক এবার গল্পে আসি।
- হাই জানু। (হাটু গেরে তার সামনে বসে মালা সহ হাত টা তার সম্মুখে তুলে ধরে)
-  কে আপনি? (চিনেনা আমাকে😭😭😭)
- সর‍্যি জানপাখি। (কানধরে উঠবস শুরু হয়ে গেছে)
- এই এই কি করতেছ তুমি থামো এবার। (দৌড়ে এসে আমাকে থামিয়ে দিলো)
- সর‍্যিহ আর এমন হবে না। প্লিজ।
- প্রতিবার ই তো বল যে আর হবে না। কিন্তু পরের বার তো ঠিক ই লেট কর। আমার বুঝি একা বসে থাকতে খারাপ লাগে না?😖😖😖(মন খারাপ করে)
- এরপর থেকে আর হবে নাহ। সেই ব্যবস্থা ই করতেছি। (মুখে আমার দুষ্টু হাসি)
- তুমি আবার কি করবা?
- আমার লাল টুকটুকে ময়না পাখিটাকে আজীবনের জন্য আমার করে নিবো।
- এই কি বলতেছ এগুলা উল্টা-পাল্টা। আগা মাথা কিছুই বুঝতেছি নাহ। (কাধে মাথা রেখে)
- তোমার কুছু বুঝতে ও হবে না। জাস্ট শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নাও।
- যাহ কি বল এইসব। আমার বুঝি লজ্জা লাগে না? (ন্যাকামো সুরে)😊😊😊
- হায়রে আমার লজ্জাবতী রে। দাড়াও। তোমার লজ্জা আমি দূর করে দিচ্ছি। (বলেই তার মুখের দিকে মুখ এগিয়ে নিচ্ছি আস্তে আস্তে)
- এই কি কর। সবাই দেখবে তো। বলেই হুট করে জরিয়ে ধরলো।
- এই যাহ। মিস করলাম।
- এর উসুল আমি সুদেআসলে উঠাবো।
- হুহ দেখা যাবে। এখন চলো খুব ক্ষুদা লাগছে।
- ওকে ম্যাম চলেন। আমার ও ক্ষুদা লাগছে। সকালে কিছু না খেয়ে ই চলে আসছি।

তারপর নাস্তা করে হালকা ঘুরাঘুরি করে তাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসলাম। এবার বলি পাগলি টা আমার হলো কিভাবে।
আমি ছিলাম ফেছবুক-খোর। খাইতে, নাইতে, বাইরে, ঘরে, পড়ার টেবিলে, ঘুমাইতে সময়, এমনকি টয়লেট এও আমার সাথে আমার প্রিয় ফোন থাকতো। ইট জাস্ট ওনলি ফর ফেছবুক। তা একদিন একটা পোষ্ট এ কমেন্ট করলাম। সাথে সাথে ই দেখি আরেকটা কমেন্ট এসে হাজির এবং সেটা আমার বিপক্ষে। বেধে গেলো আমাদের মাঝে তুমুল ঝগড়া। সেখান থেকেই পরিচয়। তারপর ধীরে ধীরে পরিণয়। এবং অবশেষে আমি আর সে এক সুতোয় গাথা।

সারাদিন এদিক ওদিক ঘুরে রাতে বাসায় এসেছি। দেখি তৃণয় টেবিলে মুখে বিজয়ী হাসি নিয়ে বসে আছে। গিয়ে দেখি হাতে একটা হলুদ খাম।

আমি: কিরে ক্যাবলা কান্ত। ক্যালাস ক্যান! আর হাতে কি?. প্রেম পত্র নাকি।।।😂😂😂.
তৃণয়: আরে তুই কখন এলি। আর এটা প্রেম পত্র তোকে কে বলছে.
আমি: তোর যে ভাবসাব দেখা যাচ্ছে।  তাই বললাম আর কি।
তৃণয়: অই🔫 তোএ বকবক থামাবি নাকি মাইর খাবি।
আমি: আচ্ছা যা একদম চুপ মেরে গেলাম। এখন কাহিনী কি বল।
তৃণয়: আগে বল ট্রিট দিবি কবে। আর কোথায়?.
আমি: কিসের ট্রিট। কি যাতা বলছিস.
তৃণয়: আরে এটা তোর জয়েনিং লেটার। কয়দিন আগে যে ইন্টার্ভিউ দিয়ে আসলি সেখানে। ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে। শুরুতেই স্যালারি ৩০ হাজার দিবে। সাথে গারি আর বাড়ি দুইটাই দিবে।
আমি: কি বলিস!!!😱(অবাক হয়ে) দেখি দে তো খাম টা।
খাম থেকে লেটার টা পড়ে তো আমি পুরাই 'থ'. কিভাবে কি হলো। যাইহোক। যা হয় ভালোর জন্যই হয়। আলহামদুলিল্লাহ। এই সুখবর টা আগে বাসায় জানাই।

- হেলো মা।
- হ্যা বাবা বল। কেমন আছিস।
- ভালো মা। তোমরা কেমন আছো
- আছি ভালো আছি বাবা আল্লাহর রহমতে।
- বাবা কেমন আছে মা।
- উনিও ভালো আছে।
- মা একটা সুখবর আছে।
- কি সুখবর বাবা?.
- আমার চাকরি হয়ে গেছে মা। ভালো টাকা বেতন আর ব্যবহারের জন্য বাড়ি গারি দিবে।
- বলিস কি। যাক আলহামদুলিল্লাহ। সুনে ভালো লাগলো বাবা। এবার তোর একটা গতি হোক।
- মানে! তুমি কি বুঝাইতে চাইছো মা।
- বুঝছ ই তো বাবা আমরা বুড়ো হয়ে গেছি। বড় টার তো একটা গতি হয়ে ই গেছে। এবার তোর টা হয়ে গেলেই দায়িত্ব থেকে মুক্ত হই।
- মা। কিসব উল্টা পাল্টা কথা বলতেছো। আর মাত্র চাকরি টা পাইলাম। কয়দিন তো যাইতে দাও নাকি।
- আচ্ছা বাবা আচ্ছা। তোর যা ভালো মনে হয় তাই কর।
- ঠিক আছে মা। বাবাকে সালাম দিয়ো আর সবাই কে সুখবর টা বলিও।
- ঠিক আছে বাবা। তুই ও নিজের খেয় রাখিস।
- আচ্ছা মা। ভালো থেকো। ররাখছি।

অত:পর ফোন দিয়ে আমার রাগকুমারী কে খবর টা দিলাম। সে সুনে তো লাফালাফি শুরু করে দিয়েছে।
পরের মাসেই শিফট হয়ে গেলাম নতুন বাসায়। আর শুরু হয়ে গেলো প্যারাময় অফিসওয়ালা জীবন। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। গ্রাম থেকে বাবা, মা আর ভাবী এসেছে আমার এই ছোট্ট সংসার টাকে গুছিয়ে দিতে। ভাইয়ার কাজের জন্য আসতে পারে নি। এভাবেই দিনগুলা যাচ্ছিলো। তো একদিন কাজ শেষে বাড়ি ফিরে খুব ক্লান্ত লাগছিলো তাই বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। এতই ক্লান্ত ছিলাম যে সাথে সাথেই ঘুমের দেশে তলিয়ে গেলাম। ঘুম ভাংলো অনেক সময় করে।  চোখ মেলে দেখি আমার গায়ে কাথা দেওয়া আর জুতা খুলে রাখা। নিশ্চয় ভাবির কাজ। মানিব্যাগ টা ও দেখি বালিস এর নিচে রাখা। ঘরিতে তাকিয়ে দেখি রাত ১১ টা বেজে গেছে। ফ্রেশ হয়ে সবাই কে নিয়ে ডিনার টা সেরে নিলাম। রুমে এসে আবার ঘুম। সকালে উঠে ফ্রেশ হয়ে ডিউটির জন্য ফরমাল ড্রেস পরলাম। মানিব্যাগ হাতে নিয়ে দেখি কে যেন নাই। ভালোভাবে খেয়াল করে দেখলাম যে ইস্পিতার ছবিটা ই গায়েব। এই কাজ ভাবি ছাড়া আর কারো পক্ষে ই সম্ভব নয়। এইজন্যই তো বলি কাল রাত থেকে ই দেখছি ভাবি আমাকে দেখলেই মুচকি হাসিতেছে। এটাই তাহলে ভাবির মুচকি হাসির রহস্য। আসল বোমাটা ফাটাল নাস্তার টেবিলে। আমি নাকি নিজে নিজে বিয়ে করার জন্য উতলা হয়ে যাচ্ছি, আর মেয়ে ও নাকি ঠিক করে ফেলেছি। মেয়ের ছবি হিসেবে ইস্পিতার ছবি টাকে দেখিয়ে দিলো। আমি আর যাই কোথায়, খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে সব বের করে ফেললো। বাবা/মার ও নাকি ইস্পিতাকে পছন্দ হয়েছে। তারা ইস্পিতাকে বাসায় নিতে বল্লো আর ইস্পিতার বাড়ির ঠিকানা চাইলো কারণ আমার বিয়ের পাকাকথা দিতে যাবে। (হাসির ইমু)
বিকালে কাজ শেষে ইস্পিতাকে ফোন দিয়ে বললাম সব। আর এ ও বললাম যে তাকে বাবা/মা দেখতে চেয়েছে। ও বললো ওর বাসার সামনে যেয়ে ওকে নিয়ে আসতে। চলে গেলাম ওর এলাকায়। ওকে নিয়েই বাসায় ফিরলাম। সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম। সবাইও ওকে আপন করে নিলো। এখন এমন অবস্থা যে আমাকেই কেউ চিনেনা। সবার ব্যস্ততা ওকে ঘিরেই। ইস্পিতা ও সবাই কে অল্পতেই আপন করে নিয়েছে। যাইহোক ভালই হলো একদিক দিয়ে। বিয়ের পর নতুন ফ্যামিলি নিয়ে ইস্পিতার কোনো জ্বরতা থাকবে না। কয়েকদিন এর মধ্যেই ইস্পিতার বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো হলো। আর বিয়ের কার্যক্রম শুরু হয়ে গেলো। বুঝতেই পারছিলাম যে ব্যাচেলর জীবন থেকে পরিত্রাণ পেতে যাচ্ছি খুব শিঘ্রই। অবশেষে তিন কবুলের মাধ্যমে বিয়েটা হয়েই গেলো। কনে নিয়ে ফেরার সময় ইস্পিতার ক্রন্দন দেখে আমার ই কান্না চলে আসছে! আবেগ টাকে কন্ট্রোল এ রেখে তাকে নিয়ে বাড়ি ফিরলাম! তারপর ও কত কত ঝামেলা। আগে জানলে বিয়ে ই করতাম নাহ। সব শেষে আসলো সেই মহিন্দ্রখন। যেটা নিয়ে একজন মানিষের হাজারটা সপ্ন থাকে। সেই সপ্নের বাসর। কিন্তু বিধিবাম এখানে ও এখন রাজনীতি। নিজের ঘরে নিজের একমাত্র নতুন বৌ এর কাছে যাবো তাও নাকি ট্যাক্স দিতে হবে। নাহলে ঢুকতে দিবে না। কি আর করার বাসর রাতে বৌকে ছাড়া থাকার ইচ্ছা কারই বা থাকে। সাপের লেজে পা দিছি। ছোবল তো খেতে ই হবে। সব ঝামেলা পার করে গেলাম রুমে। আসলে কাল পর্যন্ত এটা আমার রুম ছিল। আজ থেকে আমাদের হয়ে গেলো এই যাহ। আমি দরজা লাগিয়ে খাটে উঠতে যাবো বৌ অমনি আমাকে থামিয়ে খাট থেকে নেমে পা ছুয়ে সালাম করলো। আমি তাকে বুকে টেনে নিলাম। কিন্তু হঠাৎ সে আমাকে ধাক্কা দিয়ে খাটে ফেললো আর আমার উপরে চরে বসলো। তারপর।।।।তারপর

এইযে ভাই/বোনেরা। কিছু তো প্রাইভেসি দেন। আর নিচে নামার দরকার নাই।