Wednesday, August 21, 2024

গল্পটা কাল্পনিক হলেও পড়ে দেখেন ভালো
লাগলেও লাগতে পারে,,,,,
,
,
হোস্টেল এর পাশের বাসায় একটা ছেলে
থাকে
বোধহয়। তিথি প্রত্যেকদিন সকাল নয়টা
বাজতেই
শুনতে পায় "আম্মা আমি গেলাম"। গলা
ফাটিয়ে
কেউ একজন এই কথাটা বলছে। সাথে সাথেই
আরেকটা আওয়াজ "আরেকটু আগে উঠলে তো
একটু
নাস্তা করার সময় পাস। আর কত বিরক্ত করবি
আমাকে"। তিথির তখন কলেজ যাওয়ার সময়।
তাই
মা ছেলের বাকি কথোপকথন সে না শুনেই
কলেজ
এ যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়।
আবির প্রত্যেকদিন অফিসে যাওয়ার সময়
দেখে
কলেজ ড্রেস পড়া একটা কিউটি চুইংগাম এর
বেলুন
ফোলাতে ফোলাতে অপেক্ষা করে রিক্সার
জন্যে। অসম্ভব সুন্দর সেই মেয়েটা তিথি।
আবিরের সাথে প্রায়ই চোখাচোখি হয় তার।
একদিন আবির আর তিথি দুজনেই অপেক্ষা
করছে
রিক্সার জন্য । একটা রিক্সা দেখতেই আবীর
ডাক দিলো ডাক দিলো। আর কাছে আসতেই
তিথি লাফ দিয়ে উঠে গেলো রিক্সায়। আবীর
বললো"এটা কি হলো???" সাথে সাথেই উত্তর
এল
"দেখুন ভাইয়া কলেজ এ আমার ইয়ারচেঞ্জ
এক্সাম। সো আই কান্ট ওয়েট" এদিকে আবিরের
নতুন চাকরি। প্রায়শই তার লেট হয় ঘুমের
কারণে।
আজ অফিসে তার মিটিং। দেরি করে গেলে
রক্ষা নেই।
আবীর বলল "তুমি বাচ্চা মানুষ। দেরি করে
গেলেও চলবে তোমার। আমার অফিস আছে।"
বাচ্চা বলাতে বেশ রেগে গেলো তিথি। বলল
"আম এম নট এ কিড" মেয়েটার কথা শুনে বেশ
হাসি পেয়ে গেলো আবিরের। আবির
জিজ্ঞেস
করলো কলেজ কোথায় তিথির। তিথি উত্তর
দিলো। আবীর বললো তোমার কলেজ তো
সামনেই। এর চেয়ে আমি যাওয়ার সময়
তোমাকে
নামিয়ে দিয়ে যাবো কলেজে।" তিথি
দেখলো
আর কোন অপশন নেই তার কাছে। এক্সাম এর
টাইম
হয়ে গেছে। তিথি একটু সরে গিয়ে আবীরকে
বসার জায়গা দিলো। আবীর দেখলো মেয়েটি
একমনে চুইংগাম চিবিয়ে যাচ্ছে। কলেজ এর
সামনে আসতেই তিথি নেমে গেলো। আর
রিক্সাওলাকে জিজ্ঞেস করলো ভাড়া
কতো???
আবীর বলল রিক্সা সে ডেকেছে। তাই ভাড়া
সে
দেবে। তিথি আর কথা না বাড়িয়ে চলে
গেলো।
কলেজ থেকেআসার পর সেছাদে গেলো বৃষ্টি
তে
ভিজতে। এদিকে আবীরে মা ছাদে এসেছে
শুকনো কাপড় নিতে। তিথিকে ভিজতে দেখে
বললেন "মেয়ে ঘরে যাও। ঠান্ডা লাগবে"
তিথি
কিছু না বলে চুপচাপ চলে গেল। পরেরদিন
সকালে
আবার দেখা হলো আবীরে মায়ের সাথে।
কয়েকদিনেই তিথির বেশ ভাব হয়ে গেলো
আবিরের মায়ের সাথে। একদিন তিনি
তিথিকে
জোর করে নিয়ে গেলেন তার বাসায়। তিথি
আগে থেকেই জানতো এই বাসায় একটি ছেলে
থাকে। কিন্তু সেই আন্টির সাথে আবীরের ছবি
দেখে সে বেশ অবাক হলো। ছবির দিকে
তিথিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আবিরের মা
বললো "আমার ছেলে। গত বছর পড়াশোনা শেষ
করে একটা চাকুরি তে ঢুকল"।
এদিকে গল্প করতে করতে আবিরের মা জানতে
পারলেন বাবা-মা নেই তিথির। চাচার
সংসারেই মানুষ যদিও তার চাচী তাকে
একেবারেই পছন্দ করে না। কিন্তু চাচা খুব
আদর
করে। তিথিকে বিয়ে দিতে পারলেই যেন তার
শান্তি। কিন্তু তিনি যে সব ছেলের সাথে
তিথির বিয়ের কথা বলেন তাদের কারোরই
পড়াশোনা তেমন একটা নেই বললেই চলে।
আবীরের মায়ের কেমন যেন একটা অদ্ভুত মায়া
পড়ে গেলো মেয়েটার উপর। নিজের মেয়েকে
তিনি চাইলেও আদর করতে পারেন না।
আবিরের
একমাত্র বড় বোন তার স্বামীর সাথে কানাডা
থাকে। বছরে একবার আসে। তাই কেন যেন
তিনি
মনে মনে মেয়েটিকে নিজের মেয়ে বানিয়ে
রাখতে চাইলেন।
কথা শেষ করতে করতে আবীর চলে এল।
তিথিকে
দেখে সে তো অবাক। মুখ ফসকে জিজ্ঞেস
করে
ফেললো "মিস চুইংগাম, তুমি আমার বাসায় ???"
আবিরের মা বললো"ও তিথি। আমাদের বাসার
পাশের হোস্টেল এ থাকে।" তিথি সে দিনের
মত
চলে গেল। কিন্তু আবিরের মায়ের সাথে
সখ্যতা
তার দিন দিন বেড়েই চলেছে। রাস্তায়
কতগুলো
বখাটে ছেলে তিথিকে খুব বিতক্ত করতো।
আবিরদের এলাকারই। একদিন অফিস থেকে
ফেরার সময় আবির দেখলো ছেলেগুলো
তিথিকে
ঘিরে দাড়িয়ে আছে। আবীর রিক্সা থেকে
নেমে এগিয়ে গেলো। আবীরের পেছনে গিয়ে
দাড়াল তিথি। ভয়ের চোটে মনের অজান্তেই
খামচে ধরলো সে আবিরের শার্ট। আর
আবিরকে
দেখে ছেলেগুলো ভয় পেলো বললো"আবি র
ভাই
বুঝতে পারি নাই উনি আমাগো ভাবি। ভুল হইয়া
গেসে। মাফ কইরা দিয়েন" ছেলেগুলোর কথা
শুনে
তিথি বেশ অপ্রস্তুত হয়ে গেলো। সাথে
আবিরও।
বাইরে শোরগোল শুনেইআবিরের মা বাইরে
বেরিয়ে এলেন। তিথিকে দেখে তিনি বুঝলেন
মেয়েটা অনেক ভয় পেয়েছে।তিথি হোস্টেলএ
যেতে চাইলো কিন্তুআবিরের মা তাকে
বাসায়
নিয়ে গেলেন। তিথি আবিরের মাকে জড়িয়ে
কাদতে লাগলো। তিথির কান্না দেখে আবির
বললো "মিস চুইংগাম তো দেখি ভারী
ছিঁচকাঁদুনী " মায়ের চোখ রাঙানো দেখে
আবীর
থেমে গেলো।
তিথির হাত দুটো শক্ত করে ধরে তিনি বললেন
"থাকবি আমার বাসায় আমার ছেলের বউ
হয়ে???
রোজ শুধু আমার ঘুমকাতুরে ছেলেটাকে ঘুম
থেকে
জাগিয়ে দিলেই হবে। রোজ রোজ কলেজ
থেকে
ফিরে হোস্টেল এর জঘন্য খাবার আর খেতে
হবে
না" তিথির মনে হতে লাগলো সে যেন সে তার
মাকে খুজে পেয়েছে। তিথি মাথা নিচু করে
দাড়িয়ে রইলো। আবিরকে ডেকে তিনি
বললেন
"তিথির সাথে তোমার বিয়ে" মায়ের কথা
শুনে
আবির হা করে তাকিয়ে রইলো। "কিন্তু এই
বাচ্চামেয়েকে কিভাবে বিয়ে করবো
আম্মা???
আর আব্বা তো কিছু জানে না"
''তোর আব্বা তো সারাজীবন সংসারে রাষ্ট্র
পতির ভূমিকা পালন করলো। এইবারও তাই
করবেন। বলবেন দেখো ততোমার যা ভালো
মনে
হয় তাই করো। আমার মনে হইতেসে তোরে
বিয়ে
করানোর সময় হইসে" বলেই তিনি চলে গেলেন।
আবির মনে মনে বেশ খুশি। বিকেলেই তিথির
চাচাকে ফোন করে বাসায় আনলেন আবিরের
মা।
বললেন "দেখেন ভাইসাহেব মেয়েটা একা একা
হোস্টেলে থাকে। মেয়েটা আমাকে দিয়ে
দিন।
আমার ছেলের বউ করে রাখবো। এখানে
থেকেই ও
কলেজ এ যাবে। "খুশিতে চোখে পানি চলে এল
তিথির চাচার। হোস্টেল থেকে তিথির সব
জিনিসপত্র এনে রাখা হলো আবিরের রুম এ।
রাতেই বিয়ে হলো। আবির রুম এ এসে দেখলো
তিথি তার আলমারি,ল্যাপটপ রাখার টেবিল
সব
জায়গায় ভাগ বসিয়েছে। আবির বললো "মিস
চুইংগাম আজ থেকে মিসেস চুইংগাম "
এখন রোজ সকালে তিথি আবিরকে ডেকে
তোলে
ঘুম থেকে। কলেজ এ যাবার আগে শাশুড়ি কে
একটু
আধটু সাহায্য করে। আর আবির রোজ চুইংগাম
খাওয়া কলেজ ড্রেস পড়া একটি মেয়েকে
কলেজ এ
নামিয়ে দিয়ে অফিস এ যায়।
_ আকাশের চাঁদ
#taufiq

No comments:

Post a Comment