Saturday, August 24, 2024

কলেজ থেকে ফেরার পথে পড়লাম মহা
বিপদে।বিরাট এক জ্যামে আটকে পড়লাম।
বাইকটা নিয়ে দাড়িয়ে আছি অনেক্ষণ হল।
তার মাঝে সূর্যের তেজটাও দ্বিগুণ
বেড়েছে।পুরাই জলসে যাচ্ছি।এরি
মাঝে মোবাইলটা কান্না জুড়ে দিল।
মোবাইলের স্কীনে তাকিয়ে দেখি মিস
পেত্নীর ফোন।রিসিভ না করলে আমাকে ও
কান্না জুড়ে দিতে হবে।তাই রিসিভ
করলাম।
.
.
-হ্যালো বানর তুর প্রেকটিকাল খাতা
আমার ব্যাগে কেন।(তাসমিয়া)
.
ওমা কল রিসিভ করার সাথে সাথে আমারে
ঝাড়ি দেওয়া শুরু করছে।জ্যামে আটকে
আছি আবার ঝাড়িও দেয় পুরাই মাথা গরম
হয়ে গেল।কিন্তু মাথা গরম করে কথা বললে
হবে না।আড্ডার সময় বুদ্ধি করে খাতাটা ওর
ব্যাগে ডুকিয়ে দিয়েছিলাম। আঁকাজোকা
এগুলো আমার দারা হয় না।খাতাটা ওর
ব্যাগে ডুকিয়ে দেওয়ার কারণ টা হল যাতে
ও সব একে দেয়।সরাসরি বলা যেত তবুও
বুদ্ধিটা করলাম কারণ সরাসরি বললে তখন
বলত করতে পারি তবে খাওয়াতে হবে এ
করতে হবে সে করতে হবে মানে পুরাই
মানিব্যাগের বারোটা বাজত।এখন পরে
মোবাইলকরে পাম্প টাম দিয়ে বললে কাজ
শেষ
জাস্ট মাএ ৫ থেকে ১০ টাকা খরচ হল। তাই
ভাল ভাবে বললাম।
.
.
-আরে আমার প্রেকটিকাল খাতা তুর
ব্যাগে যাবে কেন।(মিথ্যা)
-আমি মিথ্যা বলতাছি তাই না তুর ব্যাগ
চেক করত দেখি।
.
.
কি ব্যাগ চেক করব খাতা ত তুর ব্যাগে।তবুও
আবার বললাম।
.
.
-আরে ওয়েট কর।আমি দেখতাছি।
-দেখ দেখ।
.
.
জ্যাম এখনো ছুটে নায়।এরি মাঝে আমাকে
নাটক ও করতে হচ্ছে।কিছুক্ষন ব্যাগ এমনে
চেক করার পর।
.
.
-আরে দোস্ত সত্যি আমার ব্যাগে ত খাতা
নাই।
-আমি জানি তুই বুদ্ধি করে আমার ব্যাগে
খাতা ডুকিয়ে দিয়েছিস।আমি তোকে
হাড়ে হাড়ে চিনি।
.
.
আরে গেলাম ফেঁসে কি বলব বুঝতে পারছি
না।একটু কাশি দিয়ে সময় নিলাম কি বলব
ভাবতাছি।
.
.
-আরে দোস্ত তুইত জানস আমি এসব আকঁতে
পারি না।
-ত আমি কি করব।
-আরে কিছু করতে হবে না জাস্ট একেঁ দিলে
হবে।
-আমি পারব না।
-দোস্ত এই দূর সময়ে তুই যদি হেল্প না করিস
আর কে করবে বল।তুই আসলে আমার অনেক
ভাল ফ্রেন্ড।
-তাই বুঝি আমাকে পাম্প দেওয়া হচ্ছে।
-একদম না।
-আমি পারব না বললাম ত।
.
.
আমি রাগ করে কলটা কেটে দিলাম।আমি
জানি রাত হলেও সব করে আমার খাতাটা
কাল নিয়ে আসবে।ও এতক্ষন যার কথা
বললাম তার পরিচয়টা বলতে ভুলে গেলাম।
তাসমিয়া ইবনাত আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড।
কেয়ারিং,রাগ অভিমান এসব নিয়ে ভালই
চলছে আমাদের বন্ধুত্ব।আমি ওকে পেত্নী
বলে ডাকি আর ও আমাকে বানর বলে
ডাকে।প্রায় সময় এটা নিয়ে ঝগড়া হয়।
.
.
তাসমিয়া সাথে আমার বন্ধুত্বটা শুরু হয়
অদ্ভুত ভাবে।ফেসবুকের এই নীল কালো
জগতে টুকটাক
লেখালিখি করতাম।সে সুবাধে বিভিন্ন বড়
বড় পেজে আমার লেখা ছোটখাটো গল্প
গুলো শেয়ার হত।একদিন আমার এক গল্পে
এক অপরিচিত আইডি থেকে এক ভিন্ন
ধর্মীক কমেন্ট আসে আমি এর উওর দিতে
গিয়ে এক পর্যায়ে অনেক ঝগড়া হয়।
এবং পরে একসময় যখন পরিচয় জানতে
পারলাম তখন ত আমি পুরাই টাস্কি
আমাদের পাশের পাড়ায় আর আমার সাথে
একি ভার্সিটি একি ডিপার্টমেন্টে পড়ি।
কিন্তু কোনদিন কথা হয় নাই।এভাবে
আমাদের বন্ধুত্ব শুরু হয়।
.
.
এরি মাঝে আমি তাসমিয়ার প্রতি দুর্বল
হয়ে পড়ি।আস্তে আস্তে ওর প্রেমে পড়ে
যায়।আসলে কোন ছেলে মেয়ে কোনদিন
বন্ধু হয়ে থাকতে পারে না।একদিন না
একদিন একজন অন্যজনের প্রতি দুর্বল হবেই।
এটা আমার ক্ষেত্রে ও ব্যাতিক্রম নয়।আমি
জানি তাসমিয়া আমাকে ভালবাসে।না
হলে অন্য মেয়েদের সাথে মিশাত দূরের
কথা কথা ও বলতে দেয় না।অনেকবার
ভালবাসার কথা বলতে গিয়ে ও পারিনি।
মা মাঝেমাঝে টিকি বলে আমার মত
অকর্মার দিয়ে কোন কাজ হবে না।যাই
হোক।
.
আজকের মত জ্যাম ট্যাম পেড়িয়ে।বাড়িতে
চলে আসলাম।এরপর থেকে তাসমিয়ার
সাথে আমার সারারাত কথা হয়নি।ও একটি
বারের জন্য ও আমাকে কল দে নাই। আমিও
রাগ করে কল দি নাই
.
.
এরপর দিন সকালে ভার্সিটি যাবার জন্য
রেডি হয়ে বাইকটা নিয়ে রওনা হলাম।
এদিকে বাইক চালাচ্ছি আর তাসমিয়ার
কথা ভাবছি।ভাগ্যটা পুরাই খারাপ ঠীক
ভার্সিটি পৌছানোর আগে অন্যমনস্ক
হওয়ায়।
বাইক টা কখন যে অন্য গাড়ির সাথে
লাগিয়ে দিলাম বুঝতে পারলাম না।
.
.
এরপর আর কিছু মনে নেই জ্ঞান হারিয়ে
পরে নিজেকে আবিষ্কার করলাম
হসপিটালের বেডে।চোখ খুলে দেখি আমার
চারপাশে আমার পরিবারের সবাই দাড়িয়ে
আছে আর মা আমার পাশে বসে কাঁদছে।
ভাগ্য ভাল ছিল হাতে ও পায়ে সামান্য
ব্যাথা পেয়েছি।কিন্তু কোথাও
তাসমিয়াকে দেখতে
পেলাম না।সবার সাথে কথা বললাম। কিন্তু
কিছুক্ষন পর সবাই রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
কারণটা বুঝলাম না
.
তার কিছুক্ষন পর দেখি তাসমিয়া রুমে
প্রবেশ করল।তারপর আমার পাশে এসে বসল।
তাসমিয়ার চোখ মুখ লাল দেখাচ্ছে যেন
মনে হচ্ছে অনেক কেঁদেছে।কিন্তু কাঁদবে
কেন।
.
-এখন কেমন লাগছে নীল।(তাসমিয়া)
-ভাল।
-তোমার কিছু হলে তখন আমার কি হত।
(কেঁদে কেঁদে)
.
.
ঠীক তাসমিয়া কথাটার মাঝে কিছু একটা
ম্যাচ
করলাম।হঠাৎ তুমি বলার কারণ টাও
বুঝলাম না।কিছুক্ষন চুপ থেকে আবার
বললাম।
.
.
-কথাটা সরাসরি বললে হত এত ঘোরাঘুরির
মানে কি।
-কি কথা (না বুঝার ভান করে)
-ভালবাসি
-কাকে
-আমার পেত্নীটাকে।
-বানর কথাটা বলতে এতদিন লাগে।(মাইর
দিয়ে)
-ওমা ব্যাথা পায় ত।
.
.
বাইরে তাকিয়ে দেখি সবাই আমাদের কথা
শুনে হাসছে।ওমা তাসমিয়া দেখি লজ্জায়
লাল হয়ে গেছে।এভাবে শুরু হয় ভালবাসার
এক নতুন অধ্যায়।
.
.
লেখক: রক্তাক্ত লেখক হিমু (মি. নীল)

No comments:

Post a Comment