Monday, August 19, 2024

Romantic story : বোরকা পড়া মেয়ে
>>>
বছর ৩ আগের এক রাতে বোরকা পরা এক
মেয়ে আমার কাছে রাতে থাকার জন্য
আশ্রয় চায় .!!
ব্যাপারটা গুছিয়ে বলা দরকার।গুছানো সব
জিনিস মানুষ পছন্দ করে।
অফিস থেকে একটু লেট করে বাড়িতে
ফিরছিলাম।কলিগ নতুন বিয়ে করেছে তাই
আভিজাত্য একটা হোটেলে ডিনার করার
জন্য নিয়ে গিয়েছিল।হেটে হেটে বাড়ি
ফিরা আমার পুরোনো অভ্যাসগুলোর মধ্যে
একটা।বর্ষাকাল চলছিল তাই বাইরে গুড়ি
গুড়ি বৃষ্টি পরছিল।আশে পাশের সব দোকান
বন্ধ।আমি হেটে হেটে এলাকায় আসতেই
লক্ষ্য করলাম জনি ভাইয়ের চায়ের
দোকানের বেঞ্চে বোরকা পরা কে যেন
বসে ছিল।
এত রাতে বৃষ্টির মধ্যে একটা বোরকা পরা
মেয়ে বসে থাকা নজরে লাগার মতো।আমি
থমকে গিয়ে ছোট চোখ করে উচ্চস্বরে
জিজ্ঞাস করলামঃ
>কে?কে ওখানে?
মেয়ে টি আমার আওয়াজ শুনে আমার
উদ্দেশ্যে উঠে এসে সামনে দাঁড়িয়ে বললঃ
>আস সালামুয়ালাইকুম।
সালামের আওয়াজ যেন সরাসরি বুকে লাগল।
এত সুন্দর কন্ঠ আমি আগে কখনো শুনি নি.!
আমি বুঝতে পারলাম বোরকার পিছনে একজন
মেয়ে আছে,পর্দাবতী মেয়ে। আমি ভ্রু-কুচকে
মেয়েটার সালামের উত্তর না দিয়েই
জিজ্ঞাস করলামঃ
>কে আপনি?আর এত রাতে এখানে কি
করছেন?
মেয়েটাও আমার কথার উত্তর না দিয়ে
আমাকে জিজ্ঞাস করলঃ
>আপনি কি মুসলিম?
!
প্রশ্ন শুনে মেজাজ খারাপ হলো। ভ্রু-কুচকে
মেয়েটাকে বললামঃ
>হ্যাঁ মুসলিম।কিন্তু আমার প্রশ্নের সাথে
আপনার প্রশ্নের কোন মিল নেই।
>মিল নেই আমিও জানি কিন্তু শুরুতে আমি
আপনাকে সালাম প্রদান করেছিলাম যার
জবাব দেওয়া আপনার উপর ওয়াজিব করা
হয়েছে।আপনি কি এই ব্যাপারে অজ্ঞ?
...
কথা শুনে চোখ বড় বড় হয়ে গেল।আমি হা
করে বোরকার আড়ালের মেয়েটার দিকে
তাকিয়ে ছিলাম।নজরটা নিচে নামিয়ে
প্রথমে মেয়েটার সালামের জবাব দিলামঃ
>ওয়ালাইকুম আস সালাম।
মেয়েটা মনেহয় সন্তুষ্ট হয়েছিল।তারপর
বোরকার আড়াল থেকে আবার মেয়েটা
বলতে শুরু করেঃ
>আপনি কি আমাকে একটু সাহার্য্য করতে
পারবেন?
>কি সাহার্য্য?
মেয়েটার নিকাবের কালো পর্দা তার মুখ
থেকে একটু দূরে সরে গেল।বুঝতে পারলাম
সে দীর্ঘনিশ্বাস ফেলেছেঃ
>আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি আপনি
কি আমাকে আজ রাত আপনার বাড়িতে
থাকার সুযোগ দেবেন ?সকাল হলেই চলে
যাবো।
এই সাহার্য্যের কথা শুনে প্রথমেই আমার
মহিলা জঙ্গির কথা মনে পরল।
এই মেয়েও যদি মহিলা জঙ্গি হয় তাহলে
বাড়িতে গিয়ে আমাকে মেরেই বের হবে।
>দেখুন আমি দুঃখিত এই ধরনের কোন
সাহার্য্য আমি করতে পারবো না।
মেয়েটা যেন আমার বলা কথাটার জন্য
প্রস্তুত ছিল। তাই বলার সাথে সাথেই গিয়ে
আবার বেঞ্চটাতে বসে পরল।এমন মনে হলো
আমার আগেও অনেকের কাছে সাহার্য্য
প্রার্থনা করেছে সবাই আমার মতোই না
করে দিয়েছে।বৃষ্টিতে মেয়ের বোরকা সহ
ভিজে গিয়েছিল তবুও মুখের নিকাব খোলার
কোন প্রয়াস ছিল না।এই অবস্থা দেখে
আমার মায়া লেগে গেল,আসলে এমন
মেয়েদের প্রতি মায়া বেশি কাজ করে।
আমার ভাবনা আবার উল্টে গেল।মনে মনে
ভাবলাম "বিপদে পরেই তো মেয়েটা
সাহার্য্য চেয়েছে।আর শালা আমি কি
দেশের প্রধানমন্ত্রী নাকি যে আমাকে
মারতে কেউ ঘরে প্রবেশ করবে?রাতের
ব্যাপার এখণ তো নিয়ে যাই। বাড়িতে গিয়ে
সব শুনা যাবে।তাছাড়া মা তো আছেই।
আমি পিছনে গিয়ে মেয়েটাকে ডাক
দিলামঃ
>এই যে শুনছেন!!চলুন আমার সাথে।
মেয়েটা আমার দিকে চেয়ে বেঞ্চ থেকে
উঠে আসলো।আমরা দুজন হাটতে শুরু করলাম।
মেয়েটা একদম স্তব্দ হাটছে,মুখ দিয়ে
ধন্যবাদ দেওয়ার নাম গন্ধও নেই।না
দেওয়াটাই স্বাভাবিক কারন মানুষ হিসেবে
সাহার্য্য করা আমার কর্তব্য।কিছুক্ষণের
মধ্যেই আমরা বাড়িতে পৌঁছে যাই।বাবা
5বছর আগেই মারা গেছে তাই বাড়িতে মা
একা আর আমার জানা আছে সে এখনো ঘুমায়
নি।ঘরের কলিং বেল টিপতেই মা এসে দরজা
খুলল।প্রথমে আমার দিকে চেয়ে পরে
মেয়েটার দিকে চেয়ে কে জানে কি বুঝে
একটা ছোট চিৎকার দিয়ে উঠে বললঃ
>ওহিদুর তুই আমাকে না জানিয়েই বিয়ে
করে ফেললি?কত আশা ছিল তোর বিয়ে নিজ
হাতে দেবো ।তুই একা একাই এই কাজ সেরে
ফেললি?
মেয়েটা এখনো চুপ করে আছে।ঝাড়ি দিতে
দিতে ঘরে ঢুকলামঃ
>আরে ধুর!!কিসের বিয়ে করেছি?উনার
সাহার্য্যের দরকার ছিল তাই বাড়িতে নিয়ে
এলাম।
মা আমার দিকে ভ্রু-কুচকে চায় আর
জিজ্ঞাস করেঃ
>বাড়িতে আবার কিসের সাহার্য্য?
>ভিজে গেছি।কাপড়টা পাল্টে নিই।
এতক্ষণে তুমি উনার কাপড় পাল্টে তাকেই
জিজ্ঞাস করো।
আমি আমার রুমে যাওয়ার আগে মেয়েটার
দিকে চাই,দেখলাম দরজার সামনে মূর্তির
মতো দাঁড়িয়ে আছে।মাকে মেয়েটাকে ঘরে
আসার আমন্ত্রণ জানায়।মেয়েটা ঘরে ঢুকে
আমিও নিজের রুমে চলে যাই।আমি যখন
কাপড় পাল্টে বিছানায় ক্লান্তভাবে শুয়ে
পরি তখন ঘরের মেঝে থেকে মায়ের গলার
আওয়াজ শুনা যাচ্ছিল।মা মেয়েটাকে
গোয়েন্দার মতো প্রশ্ন করছিল আর মেয়েটা
মনে হয় খুব নিচু স্বরে উত্তর দিচ্ছিল কারন
মেয়েটার গলার আওয়াজ আমার কান পর্যন্ত
আসছিল না।
...
আমি ক্লান্ত অবস্থায় ঘুমিয়ে পরি,দুনিয়া
ভুলে যাওয়ার মতো ঘুম।সেই ঘুম ভাঙ্গে
ভোরে,ঠিক কটা বাজে আমার খেয়াল নেই।
আমার খুব পানির পিপাসা পেয়েছিল,আমি
বিছানা থেকে উঠে ড্রেসিং টেবিলের
উদ্দেশ্যে যাই পানি পান করব বলে।বাইরের
আলো ঘর খানিকটা আলোকিত করে
রেখেছে।আমি পানি গ্লাসে ঢেলে পান করব
এমন সময় দেখলাম যেই মেয়েটাকে রাতে
নিয়ে এসেছি সে নামাজে পড়ছে ।আজব
ব্যাপার এই জমানার মেয়েরা ফজর নামাজও
পড়ে নাকি?আমি কৌতুহলবশত এক পা দু পা
করে মেয়েটার সামনে যেতে থাকি।মেয়েটা
সালাম ফিরিয়ে হুট করেই আমার উদ্দেশ্যে
বলেঃ
>আমার সামনে আসবেন না প্লিজ,আমি এখন
নিকাব পরিহিতা নই।আপনি আমার চেহারা
দেখে ফেললে আমাকে পর্দা না করার
কারনে আল্লাহর কাছে জবাব দিতে হবে।
আমি থমকে দাঁড়ালাম।মেয়েটাকে ছোট
করার জন্য আমি তাকে একটা প্রশ্ন করলামঃ
>এতই যখন ধর্ম মানেন তাহলে বাড়ি থেকে
পালালেন কেন?বাড়ি থেকে কি ভাল
মেয়েরা পালায় নাকি?
আমি মেয়েটাকে পেছন থেকেই দেখছিলাম।
মেয়েটার ঘাড় নিচের দিকে নেমে গেল আর
দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়ল।তারপর বললঃ
>কাল রাতে আমার বিয়ে ছিল।আমি সেখান
থেকে পালিয়ে এসেছি।
কথাটা শুনে মনে আনন্দ লাগলো।মেয়েটাকে
ছোট করার আরেকটা সুযোগ পেয়ে গেলাম .!
আমি সোফার উপর বসে হাসতে হাসতে
জিজ্ঞাস করলামঃ
>প্রেমের কাহিনী নিশ্চই?তো জানেন না
ইসলামে প্রেম হারাম?
নিজের একটু ইসলামিক জ্ঞান ঝাড়লাম
আরকি।মেয়েটা হয়ত মুচকি হাসি দিয়ে
বললঃ
>কে বলল ইসলামে প্রেম হারাম?আল্লাহ ও
তার রাসূলের সাথে প্রেম করা কি হারাম?...
মেয়েটাকে ছোট করতে গিয়ে নিজেই
বোকা হয়ে গেলাম।তারপর আসতে আসতে
করে বললামঃ
>তা অবশ্য ঠিক।তাহলে বিয়ে বাড়ি থেকে
পালালেন কেন?
>আমার বিয়েটা একটা ধনী পরিবারের
ছেলের সাথে হতে যাচ্ছিল।
আমি মেয়েটার কথার মাঝখানে থামিয়ে
বললামঃ
>তাহলে তো সুখেই দিন পার করতে
যাচ্ছিলেন।পালালেন কেন?
মেয়েটা হয়ত বিরক্তবোধ করল ।আবার বলতে
শুরু করলঃ
>বড়লোকের বিয়ে মানে তো জানেনই,ধুমধাম
করে বিয়ে করিয়ে সবাইকে জানাতে হবে।
বউ স্টেজে সেজে বসে থাকবে আর সবাই
তাকে দূর থেকেও দেখতে পারবে।মাঝে
মাঝে কয়েকজন ছবি তুলবে।আর এটাই আমার
পছন্দ ছিল না।
ব্যস এতটুকু কারন?স্টেজে আপনার বসতে
সমস্যা কি ছিল?
মেয়েটা আমার প্রশ্নের পরিবর্তে আমাকে
প্রশ্ন করলঃ
>আপনি কি কখনো কুমারী পূজা দেখেছেন?
আমি উত্তরে জানালামঃ
>হ্যা অবশ্যই দেখেছি।
>কি হয় ওইখানে?
>একটা মেয়ে স্টেজে বসে থাকে আর তাকে
সকলেই পূজা করে ভক্তি করে।
মেয়েটা হয়ত মুচকি হাসলো আর বললঃ
>আপনি আপনার উত্তর পেয়ে গেছেন।
মেয়েটার কথা শুনে আমার চোখ বড় বড় হয়ে
গেল।নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করলাম
"মেয়েটা কি এই ধরনের বিয়েকে কুমারী
পূজার সাথে তুলনা করল?
চুপ করে ভেবে নিজেই নিজেকে উত্তর
দিলাম "ঠিকই তো,এই ধরনের বিয়ে আর
কুমারী পূজার মধ্যে সম্পূর্ন মিল আছে।
আমি মেয়েটাকে আবার বললামঃ
>তাহলে হিজাব পরে স্টেজে বসতেন।হিজাব
তো পর্দারই অংশ।
মেয়েটা হয়ত রেগে গেল .! গলার স্বরটা একটু
ভারি করে বললঃ
>আপনাকে কে বলেছে হিজাব পর্দার অংশ?
>সবাই তো এখন হিজাব পরেই পর্দা করে।
আমি কত হাজি সাহেবদেরকেও দেখেছি
তাদের বউ ও মেয়েকে হিজাব পরিয়ে
রাখে।
>মাথায় টুপি আর পাঞ্জাবি লাগানো সুন্নত
জেনে হজ্ব করলেই হাজি হওয়া যায় না।
যারা পর্দার মূল অর্থই জানে না তারা হজ্ব
করে কিভাবে আর হাজিই বা হয় কিভাবে?
...
কথা শুনে বুঝতে পারলাম মেয়েটার ইসলাম
সম্পর্কে ভাল জ্ঞান আছে।জ্ঞানী লোক
ভয়ংকর হয় আর মেয়েরা যদি জ্ঞানী হয়
তাহলে তো ভয়ংকরের বাপ হয়ে যায়.!!
আমি
মেয়েটাকে জিজ্ঞাস করলামঃ
>তাহলে পর্দার মূল অর্থ কি?
মেয়েটা কোরআন থেকে দুটি আয়াত শুনালঃ
‘‘হে নবী! তুমি তোমার স্ত্রী, কন্যা ও
মুসলিম রমণীগণকে বল, তারা যেন তাদের
চাদরের কিয়দংশ নিজেদের (মুখমন্ডলের)
উপর
টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজতর
হবে; ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না।
(লম্পটরা তাদেরকে উত্যক্ত করবে না।
’’সূরা আহযাব ৩৩:৫৯
‘‘মুমিন নারীদেরকে বল, তারা যেন
নিজেদের দৃষ্টি সংযত করে ও লজ্জাস্থান
হিফাযত করে এবং যা প্রকাশ পায় তা ছাড়া
তাদের(অন্যান্য) আভরণ প্রদর্শন না করে,
তাদের
গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় (উড়না
অথবাচাদর) দ্বারা আবৃত করে।
সূরা আন-নূর ২৪:৩১
আয়াত বলার পর মেয়েটা প্রশ্ন রাখলোঃ
>এই আয়াত দ্বারা পর্দার ব্যাপারে বুঝা
যায়। যারা এই আয়াত মানে না অবশ্যই তারা
পর্দার ব্যাপারে অজ্ঞ।
পর্দার আলোচনা পুরোপুরি বুঝতে পারলাম।
এবার মেয়েটাকে বললামঃ
>তাহলে আপনি আপত্তি করেন নি কেন?
করেছি কিন্তু খালা শুনে নি।
আমি ভ্রু-কুচকে প্রশ্ন করলামঃ
>খালা মানে? মা-বাবা কোথায়?
>মা-বাবা অনেক আগেই মারা গেছে ।
খালার কাছে বড় হয়েছি।
>তাহলে উনি আপনার সাথে এমন করছিলেন
কেন?
>আপনি কি কখনো অন্যের ঋন নিজের কাধে
নিয়েছেন?
>না।
>তাহলে বুঝবেন না।মেয়ে মানুষ ঋনের মতো
হয়।যত তারাতারি শোধ করা যায় তত ভাল।
আর অন্যের ঋন যদি ঘাড়ে চেপে বসে
তাহলে তো শ্বাস নেওয়াও মুশকিল।
মেয়েটার প্রতিটা কথায় যুক্তি ভরাআমার
মেয়েটার প্রতি কৌতুহল বেড়ে গেল।আমি
পর্দার ব্যাপারে আরো কিছু জিজ্ঞাস
করলামঃ
>আচ্ছা পর্দা করতে শুধু কালো বোরকাই
কেন পরেন অন্য কোন কালারের সাথে কি
দুশমনি আছে?
মেয়েটা হয়ত মুচকি হাসলো আর বললঃ
>দুশমনি নেই কিন্তু আপনি কি কখনো
লাল,নীল,হলুদ,সবুজ আকাশে চাঁদকে উঠতে
দেখেছেন।চাঁদের সৌন্দর্য কি সেখানে
প্রকাশ পাবে?
আমি মেয়েটার যুক্তি বুঝতে পেরে উল্টা
প্রশ্ন করলামঃ
>আপনি কি নিজেকে চাঁদের মতো সুন্দর
দাবি করছেন?এটা কিন্তু অহংকারের
পর্যায়ে চলে গেল।
>দাবি করার কি আছে,প্রতিটা মানুষকে
আল্লাহ চাঁদ-সূর্য্য এমনকি সৃষ্টি জগতের
সবচেয়ে সুন্দর করে সৃষ্টি করেছেন।
বুঝা গেল মেয়েটার সাথে পেরে উঠা খুব
কঠিন ।সব কথার পরে যুক্তি দেয়.! আমি
জানতাম নাস্তিকরা ভাল যুক্তি জানে কিন্তু
ধার্মিকরা যে এত যুক্তি জানে জানা ছিল
না।মেয়েটার প্রতি আমার শ্রদ্ধা বাড়তে
থাকল।হয়ত মেয়েটাকে ভালবেসে
ফেলেছিলাম।
আমি মেয়েটাকে উদ্দেশ্য করে বললামঃ
>আমি যদি এখন আপনাকে প্রেম নিবেদন
করি?
মেয়েটা হয়ত আঁতকে উঠলঃ
>আল্লাহ মাফ করুক।এমন কাজের কথা
ভাববেনও না।প্রেমগুলো এখন সরু হয়ে গেছে
অথচ প্রেমগুলো ত্রিভুজাকৃতির হওয়া উচিত
ছিল।
>মানে?
>আমার দোয়াটি আল্লাহ পর্যন্ত যাবে মানে
একটি রেখা।আমাকে পাওয়ার জন্য যে
দোয়া করবে তার থেকে আল্লাহ পর্যন্ত
আরেকটা রেখা।আর আল্লাহ আমাদের মাঝে
যে রেখাটি টানবেন সেটা দিয়ে একটা
ত্রিভুজ হওয়া দরকার ছিল কিন্তু এখন তেমন কিছু হয়
না।
...
আমি সত্যিই মেয়েটার প্রতি আসক্ত হয়ে
গেলাম।সকাল হয়ে গেছে,বাইরে সব স্পষ্ট
দেখা যাচ্ছিল।আমার জন্য হাজার বছরের
শ্রেষ্ঠ সকাল।আমি মায়ের সাথে কথা বলে
মেয়েটাকে আর ঘর থেকে বের হতে দিইনি।
একজন মায়ের কথা একটা মেয়ে অমান্য
করতে পারে না এটা মেয়েদের দুর্বলতা।
আমি মেয়েটার ব্যাপারে কিছুই জানতাম না
এমনকি নামও না তবুও মেয়েটাকে সেইদিনই
বিয়ে করে ফেলি।মধুচন্দ্রিমার রাতে যখন
বৈধভাবে মেয়েটার চেহারা দেখলাম বুঝতে
পারলাম কেন আল্লাহ বলেছেন,তিনি
মানুষকে সবথেকে সুন্দর করে সৃষ্টি করেছেন।
আমার ঘরে যেন চাঁদের থেকে সুন্দর একটা
মুখ প্রবেশ করেছে।আমি আল্লাহর শুকরিয়া
না করে পারলাম না।
মেয়েটাকে বিয়ে করার পর আমি তার নাম
জিজ্ঞাস করেছিলাম উত্তরে সে বলেছিল
"জোবাঈদা ইসলাম ভাবনা"।ভাবনা পবিত্র
ভাবনা।ওর নামটাই যেন আমার ভাবনাগুলো
পবিত্র করে দিয়েছে।আসলেই যে আল্লাহর
উপর বিশ্বাস রাখে তার জন্য আল্লাহই
যথেষ্ট।ওই যে একটা আয়াত আছে না "মুমিন
পুরুষের জন্য পতিতা নারী হারাম"এখানে
এটা দ্বারা শুধু মুমিন আর পতিতা অর্থে
বুঝায় নি।এটার মূল অর্থ হলো যে যেমন সে
তেমনই পাবে।আমি কখনো কারো সাথে
প্রেম করি নি।ভাবনাও কারো সাথে প্রেম
করে নি।আজ একটা কথা ভাবি আর আর
বুঝতে পারি কেন আল্লাহ বলেছেনঃ
নেককার স্ত্রী একজন মুমিনের জন্য সবচেয়ে
বড় পুরুষ্কার।
...
আমার আরেকটা ধারনা পাল্টে গেছে
ইসলাম হয়ত রোমান্টিক না।কিন্তু বিয়ের পর
দেখা গেল যেটাকে আমরা রোমান্টিকতা
মনে করি ওইগুলা আসলে নোংরামি আর
ইসলাম রোমান্টিকতার বাপ।ভাবনা
প্রতিদিন ভোরে আমার কপালে চুমু দিয়ে
ফজর নামাজ পরতে ডাক দেয়।
জুম্মার দিনে
পাগড়ী বেধে দেয় চোখে সুরমা লাগিয়ে
দেয়।বর্তমানের কয়জন স্ত্রী তার স্বামীর
সাথে এমন আচরন করে?আর বৃষ্টিতে
ভিজাকে আমরা রোমান্টিকতা বলি না
এইখানেও ইসলাম রোমান্টিক।আসলে
বৃষ্টিতে ভেজাও সুন্নত।কয়েকদিন আগে
ভাবনা আমাকে বৃষ্টিতে ভেজার জন্য ছাদে
টানতে লাগল।আমি যেতে মানা করায়
আমাকে ও একটা হাদিস শুনালঃ
আনাস ইবনে মালিক রাঃ বর্ণনা করে
"আমরা একদিন বৃষ্টিপাতের সময় রাসূল সাঃ
এর সাথেই ছিলাম এমন সময় তিনি তাঁর
গায়ের জামা খানিক আলগা করে দিলেন।
পতিত বৃষ্টি তার ত্বক ভিজিয়ে দিল।আমরা
জিজ্ঞাস করলাম "হে আল্লাহর নবী আপনি
এমন কেন করলেন?উত্তরে তিনি বললেন "এটা
মাত্রই আমার রবের নিকট থেকে পতিত
হয়েছে। (সহীহ মুসলিম)
ইসলাম যে মানুষকে এত রোমান্টিক বানায়
আগে জানা ছিল না।ধর্মের কথা মারাত্মক
কথা।আগেই একটা কথা বলেছিলাম মানুষ
সাজানো গুছানো জিনিস পছন্দ করে,তো
ইসলাম এতটাই গুছানো যে কেউ এটার একটা
জিনিসও অস্বিকার করতে পারবে না।আমার
গর্ব হচ্ছিল এই ভেবে যে আমি একজন
পর্দাবতীর স্বামী।রূপবতীর রূপ,মায়াবতীর
মায়া,লজ্জাবতীর লজ্জা সব জায়গায় সমান
নাও হতে পারে !!

No comments:

Post a Comment