Sunday, February 19, 2017

পরিক্ষার খাতায় ভালবাসা....

পরিক্ষার খাতায় ভালবাসা....
.
লেখাঃ প্রিয় নীলকাব্য (স্বপ্নপরির হবু বর)
.
-:এই ড্যাপ ড্যাপ করে কি দেখিস?
--আ, ও, না নাহ। কিছু নাতো।
-:এই সত্যি করে বল?
--আমিতো কোনো দিন পরি দেখিনি।
তবে যদি কোনো দিন দেখতাম। তাহলে
মনে হয় তোর চেয়ে সুন্দর হতো না। তোকে
দেখে যেন আমি আর এই প্রথিবীতে নেই।
-:এই জাহ। আমাকে এতো টাও সুন্দর লাগছে
না।
--হা ঠিকি বলেছিস। তোকে একদমি সুন্দর
লাগছে না।
(পাশ দিয়ে মেয়ে যাচ্ছিলো)
এই যে Excuse me আপনাকে অনেক সুন্দর....
(বলতে না দিয়ে কলার ধরে)
-:এই তুই অন্য মেয়ের সাথে কিছুতেই কথা
বলবি না। আর প্রশংসা তো কখনোই না।
--কেনো তুই আমার কে হোস?
-:(কি করে যে বলি এই গাধাটারে অরে
আমি কত ভালবাসি) কেউ নাহ, জা ভাগ।
--আচ্ছা, গেলাম বাই।
-: এই শোন, তুই সত্যি চলে যাবি?
--কেনো তুই না বললি, এখান থেকে চলে
যেতে?
-:আমি বললেই তোকে চলে যেতে হবে?
--না গেলে কি হয়? মেম সাহেব বলেছেন
আর আমি করবো না।
-:তুই আসলেই একটা গাধা। জাহ এখান
থেকে।
--আচ্ছা বাই, বাড়িতে ভাল করে চলে
জাস।
-:(গাধাটাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না) বাই।
এতক্ষণ কথা হচ্ছিলো নীল ও নীলার সাথে।
দুইজনই বন্ধু কলেজের প্রথম থেকে। দুইজনই
দুজনাকে খুব ভালবাসে কিন্তু কেউ কাউকে
বলতে পারে না। দুই জনই ভয় পেয়ে থেমে
যাই। যদি বন্ধুর সর্ম্পক নষ্ট হয়ে জাই।
প্রতিদিন বিকালে ক্লাস শেষে তারা
ক্যাম্পাসে একসাথে বসে গল্প করে। আজও
তাই করছিলো কিন্তু আজ নীলা রেগে গেল।
এত করে সেজে গুজে আশলাম নীল তাকে
মনের কথা বলতে বলে কিন্তু আজও গাধাটা
বলতে পারলো না।
.
রাত দুইটা বাজে নীলের কথা খুব মনে
পড়ছে নীলার। তাই একটু কল করেই দেখি।
ক্রিং ক্রিং ক্রিং.....
ঘুমের ঘরে ধরলো
--হ্যালু কে বলছেন (নীল)
-:হ্যালো আমি নীলা।
--হ্যা বল।
-:কি করিস রে?
--এইতো বুড়িগঙ্গা নদিতে ফুটবল খেলছি।
খেলবি, খেললে আই।
-:কিহ, এতো রাতে তুই ফুটবল খেলিশ।
--হা, কি আর করবো তুই তো আমাকে
সাধারণ মানুষ ভাবিস না। যে সাধারন
মানুষের মত ঘুমাবো।
-:হ্যা, এই কথাটা সোজা ভাবে বললেই হয়।
তা কাল কলেজে আসবি?
--হাইরে মোর খোদা এই কথাটা
জিজ্ঞাসা করার জন্য আমাকে এতো রাতে
ডাকলি? কাল কলেজে আসতে পারবো না।
-:হ্যা ডাকছি বেশ করেছি। কেন রে জাবি
না, কেন?
--পড়া হয়নি। আর কাল ডন মামুর(রসিদ
স্যার, সেইরাম কড়া স্যার) পরিক্ষা! ফেল
করলে আমাকে মেইন রোডে ফালায়ে
ক্যালাবে।
-:হা হা হা। সেটাই ঠিক হবে।
--হা তাতো হবেই। আচ্ছা ঘুম আশছে আর
কথা বলতে পারছি না।
-:কিছু হবে না। তুই আমার তা দেখিস যা।
কাল কলেজে আসবি।
--আচ্ছা দেখুম নে। ঘুমাতো, আর আমাকেউ
ঘুমাতে দেতো।
-:বাই। কলেজে আসবি কিন্তু।
টুট টুট টুট....
হাসতে হাসতে ঘুমাইয়া পড়লো নীলা।
ওদিকে নীলের ঘুম হারাম। একটা মেয়ে
এতোটা সুইট হয় কেমনে? তার কথা, তার
চলা, তার শাসন, তার কেয়ারিং। এতোটা
মায়াবি কেমনে?
এই ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে গেলো
নিজেই বুজতে পারলো না।
.
কলেজে যেতে আজ একটুকু দেরি হইয়া
গেছে। সে আজও অনেক সেজেগুজে
বেরিয়েছে। কলেজে এসেই দেখে নীল
একটা মেয়ের সাথে অনেক হেসে হেসে
কথা বলছে। এটা দেখেই নীলার বুকের ভিতর
কেমন জানি মোচড় দিয়া উঠিলো। সে
অনেক রেগে নীলের সামনে দিয়া হন হন
করে চলে গেল। ক্লাসে মুখ গম্ভির করে বসে
ভাবছে তাকে খেয়ালি করলো না? আজকে
অর মজা আছে!
.
এর কিছুক্ষণ পর ক্লাস মানে পরিক্ষা শুরু
হয়েছে। নীল প্রশ্ন দেখে জল ছাড়া সাগরে
হাবুডুবু খাচ্ছে। আবার নীলাকে দেখাতে
বলছে তাতে নীলা কোনো কান না দিয়ে
হ্যাব্বি ভাবে পরিক্ষা দিচ্ছে। পরিক্ষা
শেষে পুকুর পাড়ে বসে নীলা কাগজ
ছিড়ছে। হঠাৎ কোথা থেকে নীল দোড়
মেরে আসলো।
--ওই তুইই ডেকে বললি পরিক্ষায় দেখাবি।
কিন্তু তুই তো কিছু দেখালি না।
-:(কোনো উত্তর নাই)
--কি হলো রে কিছু বলছিস না কেন?
অজাথা আমাকে বাশ খাওয়ানোর কোনো
দরকার ছিলো?
-:বাশ! কিসের বাশ! আমার তা দেখবি
কেন? ওইজে মেয়েটা আছে না তার সাথে
কথা বললি, তাকে দেখাতে বলগা।
--কোন মেয়েটার সাথে আমি আবার কথা
বললাম?
-:কেনো ওই যে নাবা?
--হা হা হা। হাবা থুক্কু কি বলি নাবা?
হা হা হা
-:হাসবি না, একদম হাসবি না। তোর হাসি
দেখলে গা আমার জলে যায়।
--আরে হাসির ব্যাপার হলে কি করবো?
হাসবো নাতো কি কাদবো?
-:কি এমন হাসির ব্যাপার যে বত্রিশ পাটি
দাত বের করে হাসতে হবে?
--শুনবি, তাহলে শোন আমার বন্ধু নুর
নাবার সাথে প্রেম করে। তারা দুই জনে এক
পার্কে বসে প্রেম করছিল ভাল কথা। কিন্তু
কোথা থেকে নুরের বাপ এসে হাজির। তার
পর পার্কের সব লোকের সামনে তারে কান
ধরাইয়া ওঠ বস করাইছে। আরো কত কি! তোর
সোনা লাগবো না। শুনলে হাসতে হাসতেই
মইরা জাবি।
-:ও তাই বলে আমি তোর সামনে দিয়া
আসলাম তা দেখলি না।
--আচ্ছা বাবা সরি। গল্পের মদ্ধে মজে
ছিলাম তাই কিছু বলিনি। আর তুই এটা কেন
করলি? আমাকে একটু না দেখিয়ে তো কলমে
আগুন ধরায়ে লিখে গেলি।
-:তুই জানস, তোকে আমি অন্য মেয়ের
সাথে কথা বলতে দেখলে আমার মাথাই
রাগ উঠে জাই। আর সেই রাগে তোকে এই
শাস্তি দিছি।
--কিন্তু তুই তো বেচে জাবিনি। আমিতো
পথে বইসা কান্দা ছাড়া কোনো উপায়
দেখতে পারছিনা।
-:তা পরে দেখা যাবে। এখন চল ফুসকা
খাবো। আর তোকেও খাওয়াবো।
--ওকে চল।
তারপর দুজনে ফুসকা খেয়ে একটুকু ঘুরে বাড়ি
চলে গেলো।
.
দুই দিন পর ক্লাসে বসে তারা গল্প করছে।
গতদিনের পরিক্ষার খাতা দিবে। এই শুনে
সবাই দুয়া দরুদ পড়া শুরু করে দিছে। নীলেরও
টেনশনে কেরসিন অবস্থা। এদিকে নীলার
কিছুই হচ্ছে না। তা দেখে অবাক হলো না
নীল। কারন সে যানে নীলা অনেক ভাল
ছাত্রী। সবার নম্বর বলা হচ্ছে। নীল
পেয়েছে ৫০ এর মদ্ধে মাত্র ৫। আর নীলার
নম্বর সুনে নীল আরো অবাক হলো। কারন সে
পেয়েছে শুন্য। আর ভাগ্য ক্রমে নীলার
খাতা নীলের কাছেই পড়লো। কৌতুলে
দেখলো এতো মনোজগ দিয়া সেদিন কি
লিখলো তাহলে? সে খাতা খুলে জা
দেখলো তা দেখে পুরাই অবাক মানে
আসমান থেকে প্যারাসুট নিয়া লাফ দিছে
কিন্তু পরে দেখছে তা প্যারাসুট না স্কুল
ব্যাগ দেখলে যেমন অবস্থা হবে। সে
দেখলো পুরো খাতাই লেখাছিলো।
"নীল আমি তোমাকে ভালবাসি।
তোমাকে আমি অন্য জনের পাশে কিছুতেই
দেখতে পারবো না।"
এই কথা বারে বারে লেখা। নীলা
তাড়াতাড়ি তা নীলের কাছ থেকে নিয়ে
নিলো।
--নীলা তুই তো আগে কখনো বলিস নি। তুই
আমাকে ভালবাসিস।
-:(কোনো উত্তর নেই। লজ্জাই মুখ নিচু করে
আছে)
নীল নীলার মুখ তোলে,
--আমারে ভালবাসিস?
-:তুই কেমনে বুজবি তোকে আমি কতটা
ভালবাসি। তুই তো গাধা। কিন্তু তুই কি
আমাকে ভালবাসিস?(এক নিশাসে বলে মুখ
খারাপ করে)
--তোকেও তো আমি খুব ভালবাসি রে
পাগলি।
-:তবে আগে বলনি কেন?
--তোকে ভয় পেতাম!
-:আচ্ছা, এখন থেকে আর তুই করে বলবে না।
এখন আমরা শুধু তুমি করে বলবো। আর অন্য
মেয়ের সাথে কথা তো দূরে থাক, দেখবেও
না।
দেখলে চোখ তুলে নিবো।
--হা হা হা। আচ্ছা মেম সাহেব
.
[শুরু হয়ে গেল আরেকটি পবিত্র ভালবাসা।
বেচে থাক ভালবাসা।
সবার মদ্ধে ছড়িয়ে থাক ভালবাসা।]
মজার ব্যাপার হচ্ছে সেদিন আর রসিদ
স্যার কলেজে আসিনি।।।

No comments:

Post a Comment