Monday, February 20, 2017

গল্প: "বিয়ে বাড়ি"

গল্প: "বিয়ে বাড়ি"
,
,
সকাল সকাল খুব করা একটা ঘুম হচ্ছিল এমন
সময় আপু এসে আমার ঘুমের বারোটা
বাজিয়ে দিল।
,
কিরে আবির তুই এখনও ঘুমা থেকে ওঠছ নাই
আমরা কখন যাব,,,,,,,,,,??? (আপু)
,
আপু যা তো এখন একটু শান্তিতে ঘুমাতে দে
যা ডাকিস না প্লিজ।(আমি)
,
কি তুই ঘুমালে আমরা বিয়ে বাড়ি যাব
কেমন করে। কে নিয়ে যাবে আমাদের,,,,,,???
(আপু)
,
বিয়ে বাড়ি কার বিয়ে,,,,,,???(আমি)
,
কেন তুই জানস না আজ বড় মামার মেয়ে
নিপার গায়ে হলুদ আর কাল বিয়ে,,,,,???(আপু)
,
আজ গায়ে হলুদ,,,,??আমি তো ভেবেছিলাম
আর কিছু দিন পর,,,,(আমি)
,
হইছে হইছে তকে আর ভাবতে হবে না যা
এখন তাড়াতাড়ি তৈরি হয় আমরা এখনই
বেড়িয়ে পরবো।(আপু)
,
আরামের ঘুমকে জলাঞ্জলি দিয়ে বিছানা
ছেড়ে ওঠে পড়লাম তা না হলে বাসায়
সুনামি বয়ে যাবে।
,
বিছানা ছেড়ে ওঠতে ওঠতে ফোনটা
বাজতে লাগলো।দুর এত সকালে আবার কে
ফোন দিতে পারে।ফোনটা হাতে নিয়ে
দেখলাম স্কিনে ভেসে ওঠছে শাওনের
নাম।
,
শাওন আমার মামাতো ভাই।আমার থেকে
দুই বছরের ছোট।ফোনটা রিসিভ করতে না
করতেই ঐপাশ থেকে শুরু করে দিল যানয়
তা,,,,,
,
ঐ হারামি তুই কই,,,,,,??(শাওন)
,
আরে সকাল সকাল কি শুরু করলি আমি
আবার কোথায় থাকবো বাসায়,,,,,(আমি)
,
তুই বাসায় আর তুই আমাকে গত সপ্তাহে কি
বলছিলি গায়ে হলুদের আগের দিন আমাদের
বাড়িতে থাকবি,,,,,??? (শাওন)
,
সরি ভাই আসলে কাজের চাপে একদম মনে
ছিলো না আমি দুই ঘন্টার মধ্যে তর সামনে
থাকবো তুই চিন্তা করিস না,,,।(আমি)
,
আজকে আয় আগে তুই পরে বুজবি তোর
একদিন কি আমার একদিন হারামি,,,,,,,(শ
াওন)
,
আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে
ফোনটা কেটে দিলো। আজ কপালে কি
আছে কে জানে।মাথা চুলকাতে চুলকাতে
বাথরুমে ডুকে পরলাম।
,
,
তৈরি হয়ে সেই কখন থেকে বসে আছি
এদিকে আমার দুই আপু ২০মিনিট আগে
আমাকে বলেছে তাড়াতাড়ি তৈরি হতে
ওনারা নাকি তৈরি কিন্তু আধাঘন্টা হয়ে
যাচ্ছে তাদের কোন খবর নাই।
,
অবশেষ মহারাণীদের আসার সময় হল।
আপুদের রাগানোর জন্য বলতে লাগলাম,,,,,
,
দেশের ময়দার দাম এদের জন্যই দিন দিন
বাড়ছে।যে হারে ময়দা মাখে,,,,,(আমি)
,
কি বললি তুই আমরা ময়দা মাখি তর বউ যে
সময় মুখে ময়দা মাখবে তখন দেখবো তুই কি
বলিস,,,,,, (ছোট আপু)
,
আমার বউ মোটেও ময়দা মাখবে না কারণ
সে এমনি অনেক সুন্দর হবে তরা দেখেনিস,,,,
(আমি)
,
হে হইছে হইছে আমাদের আর বলতে হবে না
এখন চল না হলে অনেক দেরি হয়ে যাবে
যেতে যেতে,,,,(বড় আপু)
,
হুম সেটাই ভালো চল,,,,(আমি)
,
ড্রাইবার ছুটিতে চলেগেছে তার গ্রামের
বাড়িতে এখন গাড়ি আমাকেই চালাতে
হবে।
আমি গাড়ি কোন সময় আস্তে চালাতে
পাড়ি না। গাড়িতে বসলেই আমার কি যেন
হয়। গাড়ি জোড়ে চালাতে আমার অনেক
ভালো লাগে।গাড়ি চলছে তার আপন
গতিতে। দুই দিকে সাড়ি সাড়ি গাছ তার
মঝ দিয়ে আঁকা বাকা পথ দিয়ে ছোটে
চলছে আমাদের গাড়ি।
আমরা সবাই ভালো ভাবে মামার বাড়িতে
চলে আসলাম।এর আনেক বার শাওন ফোন
দিয়েছে আসতে আর কত সময় লাগবে তা
জানার জন্য।
,
গাড়ি থেকে নামার আগেই দেখলাম
গাড়ির সামনে শাওন দাড়িয়ে আছে রাগি
একটা মোড নিয়ে।কিছু না বলেই তেড়ে
আসলো আমার দিকে।
আমি তো ভেবে ছিলাম আমাকে মারবে
কিন্তু না সে এরকম কিছুই করল না। সবাই
বাসার ভিতর চলে আসলাম।আপুরা সবাই
ব্যস্ত হয়ে পরলো কাজে। কিন্তু আমি সারা
বাড়িতে একজনকে খুজে বেড়াছিলাম। না
তাকে কোথাও খোজে পাচ্ছিলাম না
শেষে শাওনের কাছে জিগ্গেস করতে হলো
বাধ্য হয়ে,,,,,
,
শাওন তোর ঐ ছোট খালা আসেনি
বিয়েতে,,,,,(আমি)
,
হে এসেছে কিন্তু কেন,,,,,,,(শাওন)
,
না মানে তোর খালাতো বোনটা কোথায়
রে,,,,?? তাকে তো দোখলাম না আর তোর
খালাকেও দেখলাম না তাই জিগ্গেস
করলাম,,,,,,(আমি)
,
তুই আমার সাথেও মিথ্যা বলিস তুই কি
ভাছিস আমি জানিনা কিছু,,,,,,???(শাওন)
,
তুই কি জানিস,,,,,???(আমি)
,
কেন তুই আমার খালাতো বোনকে পছন্দ
করিস না,,,,,???(শাওন)
,
তরে কে বলছে আমি পছন্দ করি,,,,,(আমি)
,
আমি নিজে দেখেছি তুই লাষ্ট টাইম যখন
আমাদের বাড়িতে আসলি তখন তুই অহনাকে
প্রপোজ করেছিলি,,,,(শাওন)অহনা শাওনের
খালাতো বনের নাম
,
তুই যখন জানিস তাহলে বলনা তোর বোন
কোথায়,,,???(আমি)
,
আছে গুরু সময় হলে ঠিকই দেখতে পাবে,,,,,,
(শাওন)
,
,
অহনা হচ্ছে আমার বড় মামার শালির
মেয়ে।দেখতে তেমন একটা সুন্দর না হলেও
কোন পরীর থেকে কম না।যদিও আমি কোন
দিন পরী দেখিনি কিন্তু যেদিন অহনাকে
প্রথম দেখে ছিলাম সেদিন আমার হৃদয়ের
স্পন্দন বন্ধ হয়ে গিয়ে ছিলো কিছু সময়ের
জন্য।
,
মেয়েটাকে প্রথম দেখায় আমার ভালো
লেগে যায়। কিন্তু এই মেয়ে আমাকে
দেখলে আমার সামনেই আসে না। যেদিন
মামার বাড়ি থেকে চলে আসবো সেদিন
তাকে বলে ছিলাম "তোমাকে আমি
ভালোবাসি কিন্তু এই মেয়ে আমার কথার
কোন উওর না দিয়ে একটা মুচকি হাসি
দিয়ে চলে গেল।
আমি আবার এই মেয়েদের হাব ভাব
বুজিনা। আর তার এই রহস্য ময় হাসির মাঝে
কি লুকিয়ে ছিলো তা আর জানতে পারলাম
না।
,
আজ প্রায় তিন মাস পর অহনাকে দেখবো
কিন্তু এই মেয়ে কোথায় আছে কে জানে।
সেই আসার পর থেকে খুজছি এখন পেলাম
না।
এদিকে সন্ধ্যা হয়ে আসছে আর কিছু সময় পর
গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হবে সবাই সেই
জন্য ইচ্ছে মত মুখে আটা ময়দা মাখছে।
আমি শুধু দেখছি।
,
,
কনেকে গায়ে হলুদের স্টেজে এনে বসানো
হয়েছে।গায়ে হলুদের স্টেজটা খুব সুন্তর করে
ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে।একে একে সবাই
এসে কনের সাথে বসছে তার মধ্য থেকে
একজনের দিকে আমার সজর আটকে গেল।
,
নীল রঙের শাড়ি পড়া একটা মেয়ে, চোখে
মোটা করে কাজল দিয়েছে, কপালের
মাঝখানে কালো টিপ,দুহাত ভরতি কাচের
চুড়ি,তার লম্বা চুল গুলো খুলে রেখেছে যা তার কোমর ছাড়িয়ে গেছে।
হে এই হচ্ছে অহনা যাকে সারা দিন খুজে
ছিলাম কিন্তু এতখনে তার খুজ পেলাম।
আমি অহনার দিক থেকে নজর শরাতে
পাড়ছিলাম না। অহনাও আমার দিকে
একবার তাকিয়ে ছিলো তারপর সেই আগের
মত মুচকি একটা হাসি দিয়ে স্টেজের ওপর
গিয়ে বসে পড়লো।
,
অহনার এই হাসির কারণ ঠিক বুজতে
পারলাম না তাই বাড়ির বাইরে এক সাইডে
গিয়ে সিগারেট খাচ্ছিলাম আর
ভাবছিলাম এই হাসির রহস্য কি।অহনা কি
আমাকে পছন্দ করে, অহনা কি আমাকে
ভালোবাসে এমন হাজার ও প্রশ্ন আমার
মনে কড়া নার ছিলো কিন্তু আমার কাছে
তার কোন উওর ছিলো না।
হঠাৎ পেছন থেকে আপুর ডাক শুনতে পেলাম।
,
কিরে তুই এখানে আসার পরও সিগারেট
খাচ্ছিস কেউ দেখলে কি মনে করবে
বলতো।,,,,,(আপু)
,
কেউ দেখবেনা আপু কিন্তু তুই এখানে
কেন,,,,,(আমি)
,
আমি তোকে খুজতে আসছি চল বাড়ির
ভিতরে চল,,,,,(আপু)
,
,
বাড়ির ভিতরে গিয়ে স্টেজের সামনে বসে
আছি আর এক পলকে অহনার দাকে তাকিয়ে
আছি কি সুন্দর লাগছে। ঠিক যেন কোন
ডানা কাটা পরী আমার সামনে বসে আছে।
,
সেই কখন থেকে অহনার সাথে কথা বলার
চেষ্টা করছি কিন্তু কোন সুযোগ পাচ্ছি না।
তাই রাগে ছাদে গিয়ে বসে রইলাম আর
নিকোটিনের দোয়ার মাঝে ডুবে রইলাম।
এমন সময় পেছন থেকে হাসির শব্দ পেলাম।
পেছনে ঘুড়ে তাকেই দেখতে পেলাম অহনা
পেছনে দাড়িয়ে আছে। আমার হাতে
সিগারেট দেখে রাগে বলতে লাগলো,,,,,
,
আপনি আবারও সিগেরেট খাচ্ছেন,,,,,,,(
অহনা)
,
করবো বল,,,,,??(আমি)
,
নিচে খেকে চলে আসলেন কেন। সবাই কত
মজা করছে চলেন নিচে,,,,,,।(অহনা)
,
না আমি পরে যাবো তুমি যাও,,,,,(আমি)
,
না আপনাকে এখন আমার সাথে নিচে
যেতে হবে,,,,,,,,, (অহনা)
আমার হাত ধরে টানতে টানতে নিচে নিয়ে
আসছে অহনা। আর আমি অহনার দিকে
অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি।
না জীবনে চলার পথে এই মেয়েটাকে
আমার বিষণ প্রয়োজন।না হলে জীবনের সব
থেকে মূল্যবান কিছু একটা হাড়িয়ে যাবে।
,
অহনা আমাকে তার পাশের চেয়ারে বসতে
বললো। আমি ভদ্র ছেলের মত বসে পড়লাম।
সবাই বক্সের গানের তালে নাচা নাচি
করছে। আমাকে অনেক জোড় করছে সবাই
কিন্তু আমি নাচতে পাড়ি না তাই বসে
রইলাম আর অহনার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
,
রাত অনেক হয়ে গেছে সবাই এবার বিশ্রাম
নিতে চলে যাচ্ছে। বাড়িতে প্রচুর মেহমান
ভগবান জানে রাতে ঘুমানোর জন্য জায়গা
হবে কিনা।না হলে সারা রাত ছাদে বসেই
কাটাতে হবে।
যা ভেবেছিলাম তাই হলো আমার আর
আমার ভাই শাওনের ঘুমানোর জায়গা
হয়েছে ছাদের ওপর।অবশ্য মা বলেছিল মার
সাথে শুয়ে থাকতে কিন্তু জায়গা নেই তাই
বাধ্য হয়ে ছাদের ওপর চলে আসলাম।
,
আসার সময় শাওনকে বলে ছিলাম বালিশ
আর কাথা নিয়ে আসার জন্য।আমি ছাদে
এসে অহনার কথা ভাবছি সত্যি কি মেয়েটা
আমাকে ভালোবাসে নাকি অন্য কিছু।
আমি আবার মেয়েদের মতি গতি ঠিক বুজি
না।
,
এসব কথা চিন্তা করছি আর সিগারেট
টানছি। হঠাৎ পিছন থেকে কেউ বলতে
লাগলো,,,,,,,
,
আপনি জানেন সিগারেট সাস্থ্যের জন্য
ক্ষতি কর তারপরও কেন খান এটা,,,,,??(আমি
পেছনে ঘুড়ে দেখলাম অহনা রাগে আমার
সাথে কথা বলছে)
,
ওটা অভ্যাস হয়ে গেছে।চাইলেও ছাড়তে
পারিনা,,,,,,(আমি)
,
কেন ছাড়তে পারেন না,,,???(অহনা)
,
কারণ ওটার প্রেমে পড়ে গেছি।পুরনো প্রেম
অত সহজে ভুলে যাওয়া যায়,,,,,,,(আমি)
,
ওহ তারমানে আপনি আমাকে ভালোবাসেন
না,,,,???
আপনি সিগারেটের সাথে প্রেম করেন
আমি গেলাম,,,,,(অহনা)বলেই চলে যেতে
লাগলো।
,
এইযে মহারাণী কোথায় যাও,,,,,(পেছন
থেকে অহনার হাত ধরে টান দিতেই অহনা
আমার বুকে চলে আসলো)
,
কি হচ্ছে এই সব আমাকে ছাড়ুন কেউ দেখে
ফেলবে,,,,(অহনা)
ধাক্কা দিয়ে আমার কাছ থেকে দূরে সরে
গেল।
,
তো কি করবো হুম।(আমি)
,
আপনাকে ঐ সিগারেট ছাড়তে হবে,,,,,???
(অহনা)
,
শুধু সিগারেট কেন তুসি যা বলবে তাই
করবো কিন্তু তার বদলে আমাকে একটা
জিনিস দিতে হবে।(আমি)
,
কি শুনি,,,,,(অহনা)
,
লোকের মুখে শুনেছি সিগারেটের আগুনের
ছেকা আর মেয়েদের চুমুর মধ্যে কোন
পার্থক্য নেই।আমি সেই ঠোঁটের ছেকা
খেতে চাই,,,,,।(অহনা)
,
অহনার মুখটা লজ্জায় লাল হয়েগেছে।
লজ্জায় কিছু বলতে পাড়ছে না।
,
আমি পারবো না,,,,,(অহনা)
,
ঠিকাছে তাহলে আমিও সিগারেট ছাড়তে
পাড়বো না,,,,(হালকা রাগ করে)
,
সিগারেট না ছাড়তে পাড়লে আমার সাথে
কথা বলবেন না।(অহনা)
,
ঠিকাছে কথা বলবো না যাও,,,
,
অহনা কিছু না বলে হুঠ করে আমার সামনে
এসে দাড়ালো।কি ব্যপার অহনা আমার
দিকে এগিয়ে আসছে।
,
অহনা আমার খুব কাছে চলে আসছে। অহনার
নিশ্বাস ভাড়ি হয়ে আসছে।তারপর কিছু
সময়ের জন্য সবকিছু নিস্তব্দ।
অহনা যাওয়ার সময় শুধু বলে গেল ঐ ঠোঁটে
আর কোনদিন যেন সিগারেট না ওঠে।না এই
ঠোঁটে আর কোন দিন সিগারেট স্পর্শ করবো
না।
,
পকেট থেকে সিগারেটের প্যকেটটা বেড়
করে ছুড়ে ফেলে দিলাম। হাতের মধ্যে
লাইটার টা রয়ে গেছে ভাবছি লাইটারটা
ফেলে দিবো কিনা। না এটার আর কোন
প্রয়োজন হবে না এখন। ফেলে দেওয়াই
ভালো হবে।ছুড়ে মারলাম লাইটারটা বহু
দূরে যাতে এটার আর প্রয়োজন না হয়।
,
সারা রাত ঘুমাতে পাড়িনি শুধুই অহনার
কথা চিন্তা করেছি।ভাবছি কাল সকালে
মার কাছে অহনার কথা বলতে হবে।যে
করেই হোক সবাইকে এই বিয়েতে রাজি
করাবই।আমার মা আমার সব থেকে ভালো
বন্ধু।মা আমার কথা ফেলতে পারবে না
তাছাড়া অহনা দেখতে শুনতে খুব ভালো।
লেখা পড়াও করছে।
,
আর আমি খুব ভালো ব্যবসা করি। আমার
থেকে ভালো ছেলে অহনার বাবা মা খুজে
পাবে না এইটা আমি শিউর।যত আজব গুজব
কথা মাথার মঝে ঘুড়ছে।ভাবতে ভাবতে
কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম বুজতেই পারলাম
না।
,
,
ভুরের পাখি কিচিমিচি শব্দে চারিদিক
মুখরিত। গায়ে হালকা হালকা ঠান্ডা
লাগছে। কাথা খুজতেছি কিন্তু শাওন
একটাই কাথা আনছে আর সেটা নিজেই গায়
দিয়ে রাখছে।
হঠাৎ কে যেন আমার গায়ের একটা চাদর
জড়িয়ে দিল।ঘুমের ঘুড়ে আর অতটা লক্ষ্য
করলাম না।
,
বড় মামির ডাকে ঘুম থেকে ওঠলাম।ফ্রেশ
হয়ে হালকা কিছু নাস্তা করলাম।সবাই
ব্যস্ত আজ বিয়ে আর হিন্দু বিয়েতে অনেক
নিয়ম যার জন্য সবাই ব্যস্ত।
,
আস্তে আস্তে সন্ধ্যা হয়ে আসছে আর কিছু
সময় পর বরযাএি চলে আসবে।পুরো বাড়িটা
খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।
চারিদিকে নানারকমের আলো জ্বলছে।
মেয়ে বাড়ি থেকে একজনকে যেতে হয় বর
অনার জন্য।আমাদের বাড়ি থেকেও যেতে
হবে।মামা বলেছে আমাকে আর শাওনকে
যাওয়ার জন্য কিন্তু আমি যাবো না তাই
শাওনকে পাঠিয়ে দিয়েছি।
,
ঘরে বসে গান শুনছিলাম এমন সময় একটা
পিচ্ছি বাচ্চা এসে আমার হাতে ছোট
একটা কাগজের টুকরা দিয়ে ছুটে চলে গেল।
কাগজটা হাতে নিয়ে ভাবছি কে দিতে
পারে এি কাগজ আমাকে।ভাবতে ভাবতে
কাগজটা খলে দেখলাম তাতে লেখা
আছে"ছাদে আসেন অপেক্ষা করছি"।
,
বুজতে পারলাম এইটা অহনা পাঠিয়েছে।
সাথে সাথে ছুটে গেলাম ছাদে।ছাদের
একপাশে হালকা হলুদ রঙের একটা শাড়ি
পড়ে কোন এক রমণী দাড়িয়ে আছে।
আমার দিকে ঘুড়ে তাকাতেই তার রূপে মুগ্ধ
হয়ে আমি কোথায় যেন হাড়িয়ে গেলাম।
,
অহনার কথায় বাস্তবে ফিরে আসলাম,,,,,
,
কি ব্যপার সারাদিন হন্য হয়ে কাকে খুজে
বেড়াছিলেন,,,,,(অহনা)
,
হুম কোন এক রমণীকে খুজেছি,,,,,,,(আমি)
অহনাকে রাগানোর জন্য বললাম
,
কে সেই রমণী জানতে পাড়ি,,,,,,(অহনা) কপট
রাগে
,
এই মূহুর্তে আমার সামনে যেই হলুদ পরীটা
দাড়িয়ে আছে তাকে।কিন্তু সেই রমণী
সারাদিনে আমার একবার খুজ খবরও নিলো
না,,,,??(আমি)
,
কে বলেছে আমি আপনার খুজ রাখিনি
সকালে ছাদে এসে দেখলাম আপনি ঠান্ডায়
জমে যাচ্ছেন তাই আপনার গায়ে চাদর
দিয়ে গেলাম তারপর দুপুরে খেয়েছেন
কিনা তাও আপনার বোনের কাছে জিগ্গেস
করেছি তা আপনি জানেন,,,,,???(অহনা)একে
বারে সব কথা বলে ফেলেছে।।।
,
হুম বুজলাম কিন্তু সারাদিনে একবারও
দেখা কেন করলে না,,,,,??(আমি)
,
আমি আপনাকে লুকিয়ে লুকিয়ে ঠিকই
দেখেছি আপনি দেখেননি,,,,(অহনা)
,
হঠাৎ ফোনটা বাজতে লাগলো।স্কিনে
দেখতে পেলাম অফিসের নাম্বার। রিসিভ
করে জানতে পারলাম কাল সকালে একটা
দরকারি কাজে সিলেট যেতে হবে।কিছুই
করার নেই যেতে হবেই তাও কাল খুব
সকালে।
ফোন রাখার সাথে সাথে অহনা জিগ্গেস
করলো,,,,
,
কে ফোন দিয়েছে,,,,,(অহনা)
,
অফিস থেকে ফোন আসছে,,,,,(আমি)
,
কি বলছে অফিস থেকে,,,,,,,(অহনা)
,
কাল সকালে সিলেট যেতে হবে একটা
দরকারি কাজে,,,,(আমি)মূহুর্তে অহনার
মুখটা কালো হয়ে গেল।
,
না আপনি কাল যেতে পারবেন না।(অহনা)
,
না যেতেই হবে,,,, (আমি)
,
না আমি যখন বলেছব তখন আপনি যেতে
পারবেন না ব্যস,,,,,(অহনা)
,
কথাটা বলেই হন হন করে রাগে আমার
সামনে থেকে চলে গেল।আমাকে কিছুই
বলার সুযোগ দিলো না।
মা আর আপুদের অহনার কথা বলেছি সবাই
বলেছে বিয়েটা শেষ হোক তারপর অহনার
বাবার সাথে কথা বলবে।
,
বর চলে আসছে।সবাই বিয়ের গেটে দাড়িয়ে
আছে বরকে গ্রহন করার জন্য।কিছু মেয়েরা
গেট পাশের জন্য টাকা আদায় করছে। আমি
সবকিছু ছাদে বসে বসে দেখছিলাম।
মনটা বিষণ খারাপ হয়ে গেছে। কাল
সকালে চলে যেতে হবে কথাটা ভাবতেই
কেমন যেন লাগছে।
ঐদিকে অহনার চোখ লাল হয়ে গেছে।
দেখেই বুজা যাচ্ছে কিছুখন আগেও কেদেছে
মেয়েটা।
,
,
সবাই অনেক মজা করছে অনেক হৈ হুল্লর
করছে। শুধু আমি বসে আছি বিষন্ন মনে
ছাদের এক কোনে। বিয়ে সারা রাত হবে
বড় আপু এসে বলে গেছে আমাকে গিয়ে শুয়ে
থাকার জন্য।কাল খুব সকালে আমাকে
বেড়িয়ে পরতে হবে।
,
অহনার সাথে কথা বলার জন্য অনেক চেষ্টা
করছি কিন্তু অহনা আমাকে এড়িয়ে চলছে।
আমিও রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লাম।মোটা
মোটি গুছগাছ করে নিয়েছি।
এখন যাওয়ার পালা।
ভোর হয়ে গেল প্রায় তার সাথে পুরু
বাড়িটাতে কেমন যেন একটা নিস্তব্দতা
ছেয়ে গেল।সবাই কেমন যেন মন মরা হয়ে
বসে আছে।
,
হে আর কিছু সময় পর মেয়েকে নিজের বাড়ি
থেকে বিদায় নিতে হবে।চলে যেতে হবে
সম্পূর্ণ একটা নতুন পরিবেশে যেখানে সবাই
নতুন শুধু মাএ একজন ছাড়া যার সাথে
সারারাত বিভিন্ন মন্ত পড়ে সাতপাকে
বাধা পড়েছে।
,
কনে বিদায়ের সাথে সাথে আমিও তৈরি
হয়ে গেছি এখনই বেড়িয়ে পড়বো। কিন্তু
চারিদিকে সবাই আছে শুধু অহনা নেই।
অবশেষ দেখতে পেলাম অহনা দরজার
পেছনে দাড়িয়ে আছে।বাড়ির সব গুরুজন
সামনে থাকার কারণে অহনার সাথে কথা
বলতে পাড়লাম না।শুধু হাতের ইশারায়
জানিয়ে এসেছি খুব তাড়াতাড়ি ফিরে
আসবো কিন্তু অহনার চোখের কোনে
দুফোটা জল দেখতে পেয়েছিলাম।যা
সকালে সোনালি রোদের আলোয় মুক্তর
দানার মত লাগছিলো
,
আনমনা ভাবে গাড়ি চালাছি বার বার
অহনার মুখটা ভেসে ওঠছে চোখের সামনে।
হঠাৎ ফোনটা বাজতে লাগলো দেখলাম বড়
বোনের নাম্বার। রিসিভ করলাম,,,,,,,
,
হে আপু বল,,,,,,,,,
,
আমি অহনা বলছি,,,,,,,,(অহনা)আমি নিজের
কানকে বিশ্বাস করতে পাড়ছিলাম না।
,
হে অহনা বলো,,,,,,,
,
ভালো ভাবে যাবেন আর যত তাড়াতাড়ি
পারেন চলে আসবেন আমি অপেক্ষায়
রইলাম।(অহনা)
,
জি মহারাণী আমি কাল রাতের মধ্যে চলে
আসবো।
,
হুম আর হে ভুলেও কিন্তু সিগারেট খাবেন
না,,,,,,,???
মনে থাকে যেন,,,,,,(অহনা)
,
অব্যশই মনে থাকবে। তোমার ঐ ঠোটের
স্পর্শ ছাড়া আর কোন দিন এই ঠোটে
সিগারেট ওঠবে না।।।
(অহনা লজ্জায় কথা ঘুড়িয়ে বলতে লাগলো)
,
হইছে এখন ভালো ভাবে গাড়ি চালান আর
হে আস্তে চালাবেন গাড়ি ঠিকাছে,,,,,??(অ
হনা)
জি একদম আস্তে গাড়ি চালাবো এখন
রাখছি পৌছে ফোন দিবো,,,
,
ফোনটা রেখে দিলাম আর গাড়ির গতি
আরও বাড়িয়ে দিলাম যাতে তাড়াতাড়ি
পৌছে যেতে পাড়ি আর সকল কাজ যেন
তাড়াতাড়ি শেষ করে কাল রাতের মধ্যে
ফিরে আসতে পাড়ি।
,
,
সিলেট পৌছতে পৌছতে প্রায় বিকেল হয়ে
গেল।এসেই কাজ নিয়ে বসে পড়লাম।
অফিসের সবার সাথে দরকারি মিটিং
ছিলো সেটা শেষ করতে করতে রাত অনেক
হয়ে গেল।
এর মধ্যে অহনার সাথে একবার কথা
হয়েছিলো। এখন শুয়ে আছি কিন্তু ঘুম আসছে
না বারবার অহনার কথা মনে পড়ছে।কিন্তু
এত রাতো মনে হয় অহনা ঘুমিয়ে গেছে।
,
আফিসের সকল কাজ আজই শেষ করে
ফেলেছি ভাবছি কাল সকালে ফিরে যাবো
মামার বাড়ি কিন্তু তার আগে কাউকে
কিছুই জানাবো না। বাড়িতে গিয়ে
সবাইকে চমকে দিবো বিশেষ করে
অহনাকে।
ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লাম।
,
,
সকালে ঘুম থেকে ওঠতে একটু দেরি হয়ে
গেল। ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলাম ১০টা
বেজে গেছে।খুব দ্রুত স্নান শেষ করে তৈরি
হয়ে বেড়িয়ে পরলাম অফিসে। অফিসে
সবার কাছ থেকে বিদায় নিতে নিতে ১২টা
বেজে গেল।
,
এর মধ্যে অপরিচিত একটা নাম্বার থেকে দুই
বার ফোন আসছে। কিন্তু রিসিভ করতে
পারিনি।
গাড়িতে বসে সেই নাম্বারে ফোন দিলাম
একবার রিং হওয়ার সাথে সাথে রিসিভ
হয়ে গেল,,,,,
,
আমার ফোনটা রিসিভ করারও কি সময় নেই
আপনার কাছে,,,,,,???(এখন বুজতে পাড়লাম
এইটা অহনার নাম্বার)
,
না মানে (তুতলাতে তুতলাতে)
,
হইছে আর মানে মানে করতে হবে না
(অহনা)
,
না আমি মিটিংয়ে ছিলাম তাই রিসিভ
করতে পাড়ি নাই,,,,,
,
হইছে আর মিথ্যা কথা বলতে হবে না।এখন
কি করছেন,,,,??(অহনা)
,
তোমার সাথে কথা বলছে আর গাড়ি
চালাচ্ছি,,,,,
,
কি এখনই ফোন রাখেন না হলে কোন বিপদ
হবে,,,,,,(অহনা)
,
কিছুই হবেনা তুমি আমার সাথে কথা বলতে
থাক,,,।
,
না না আপনি এখনই ফোন রাখেন আমি
বলছি,,,,,(অহনা রাগে বলছে)
,
আরে বাবা কিছুই হবেনা আমি গাড়ি ঠিকই
চালাতে পাড়বো।
অহনার সাথে কথা বলছিলাম আর একটা বড়
ট্রাক ওভারটেক করতে গিয়ে উলটা দিক
থেকে একটা মাইক্রোবাস এসে আমার
গাড়ির মুখ মুখি ধাক্কা দিয়ে দিলো
তারপর আর কিছুই মনে নেই।
,
,
যখন আমি চোখ খুলে তাকালাম তখন আমি
নিজেকে হাসপাতালের বেডে আবিষ্কার
করলাম।মাথার কাছে মা বসে আছে
মাথার উপর আপুরা দাড়িয়ে। চারিদিকে
পরিচিত মানুষ দাড়িয়ে আছে।
,
মা বসে বসে কাদছে সবার মুখে একটা
বিষণতার ছাপ।মাকে জিগ্গেস করলাম,,,,,,,
,
কাদছো কেন মা,,,,,,,
,
দুই দিন পড়ে তোর ঙ্গান ফিরেছে আর তুই
বলছিস কাদছি কেন,,,,,,(মা)
,
এখন তো আমি ঠিক আছি এবার কান্না
থামাও,,,,,
,
আর একটা মেয়েকে গত দুদিনে একবারের
জন্যও বাড়ি যায়নি সারাক্ষণ তর পাশে
বসে ছিলো তোর কোন খবর আছে।,,,,,,(মা)
,
কে অহনা,,,,,??
,
হে এখনও বসে আছে বাইরে,,,,,,,,, (মা)
,
অহনাকে ভেতরে আসতে বলো মা।
মা আমার পাশ থেকে ওঠে যাওয়ার সাথে
সাথে কেবিন খেকে সবাই বেড়িয়ে গেল।
একটু পর অহনা আমার কাছে আসলো।
অহনাকে দেখে বুজাই যাচ্ছে মেয়েটা গত
দুদিনে প্রচুর পরিমাণে কেদেছে।
,
আমি ওঠে বসার চেষ্টা করতেই অহনা
আমাকে বসিয়ে দিলো।এখনও মেয়েটা
কাদছে আর তার চোখ থেকে টপটপ করে
বেড়িয়ে পড়া পানিকে হাতের মাঝে
নিয়ে নিচ্ছি।
,
না এই মেয়েটাকে আর কাদানো যাবেনা
এবার বিয়েটা করতেই হবে।
,
কি দরকার ছিলো গাড়ি চালাতে চালাতে
আমার সাথে কথা বলার,,,,,,??? যদি কিছু
একটা হয়ে যেত তখন কি হত আমার কি
বাচবো আমি তোমাকে ছাড়া,,,,,,??(অহনা
বলছে আর তার চোখ থেকে অজোড় ধারায়
জল পড়ছে)
,
কিছু হয়নি তো আর আমি এখন ঠিকাছি,,,,
,
হুম আমাকে কষ্ট দিলে তোমার অনেক
ভালো লাগে তাইনা,,,,,(অহনা)
,
মোটেও না। এখন কান্না থামাও আমি
বলছি,,,,,,,
,
নিজের হাতে অহনার চোখের জল মুছে
দিলাম তারপর অহনাকে নিজের বুকের
মাঝে নিয়ে নিলাম এমন সময় পিছন থেকে
মা বলতে লাগলো
,
সামনের সপ্তাহে তোদের বিয়ে ঠিক
করেছি,,,,,(মা)
,
অহনা লজ্জায় চলে যেতে চাইছিলো কিন্তু
আমি যেতে দিলাম না।
,
,
,
,
সুস্থ্য হওয়ার পর আমাদের বিয়ে সবাইকে
বিয়েতে দাওয়াত রইলো আসবেন কিন্তু।
,
,
,
,
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,(সমাপ্ত),,,,,,,,,,,,,,,,,,,

No comments:

Post a Comment