Thursday, February 23, 2017

অনূভুতি

অনূভুতি

লেখকঃ অতপরঃ হিমু

ইদানিং কেউ সকাল বেলা good morning বললে মাথার
মেজাজ চরম আকার ধারণ করে, প্রত্যেক দিনের
মত বোরিং একটা দিন।
what so good about this morning ! মনে মনে
এমন অনেক কিছু ভাবতে ভাবতে অভি ফেসবুক
থেকে লগ আউট করে।
ফ্রেশ হওয়ার জন্য বাথরুম এ গিয়ে সারাদিনের
পরিকল্পনা করতে থাকে। মিথিলার সাথে গতকাল
রাতে মোটামুটি A লেভেলের ঝগড়া হয়েছে।
যদিও অভি এখনো বুঝতে পারছেনা ঝগড়ার বিষয় কি
ছিল! চেষ্টা করবো আজকে সারাদিন ওকে কল না
করতে , মনে মনে ঠিক করল অভি।
কিন্তু সমস্যা হল ঝগড়ার ফলাফল প্রত্যেকবার অভির
বিপরীতে যায়,,,এবং অভিকে তা প্রত্যেক বার
মেনে নিতে হয়। না মেনে অবশ্য উপায়ও
নেই
মিথিলার মত মিষ্টি মেয়ে খুব কম ই আছে।
অবশ্য প্রথম দর্শনে প্রেম জাতীয় কিছু হয়নি
ওদের,,
উল্টো উদ্ভট কিছু কারণে শুরু থেকেই একজন
অন্যজন কে অপছন্দ করত।
কারণটা ঠিক কি ছিল তারা নিজেরাও সঠিক জানেনা। যাই
হোক বাথরুম থেকে বের হয়ে দেখে
মোবাইলে ৩ টা মিস কল,,,,বুক ধরফর করে উঠে,,
মিথিলা হলে তো নিশ্চিত A লেভেলের ঝগড়া ।
ভাগ্য ভাল মিথিলা নয়,,, রুপুর মিস কল। কল ব্যাক
করবেনা ঠিক করে বাসা থেকে বের হবে ওমনি
আবার কল , রিসিভ করতেই রুপুর ঝাঁজালো কণ্ঠ
- কোথাই ছিলি তুই? কল রিসিভ করতে এতক্ষণ
লাগে?
- কি হয়েছে এত চেঁচাচ্ছিস কেন?
- কাল রাতে কি তোর মিথিলার সাথে ঝগড়া
হয়েছিল?
হঠাৎ করে এই প্রশ্ন কেন! হালকা একটু ভয়
পেয়ে
অভি জিজ্ঞেস করে,,,,,
- কেন বলছিস?
- তোকে কেউ কিছু বলেনি?
- কে কি বলবে?
- আচ্ছা তুই এক কাজ কর গলির মুখে আয়
- কি হয়েছে খুলে বল........
উত্তর পাওয়ার আগেই লাইনটা কেটে দিল রুপু,,,
ভয়টা বেড়ে গেল। তাড়াহুড়া করে রিকশা নিয়ে
গলির মুখে রওনা দিল অভি। মাথার মধ্যে হাজার
রকমের চিন্তা। অভি আসার আগেই রুপু উপস্থিত।
বলল ঃ
- মিথিলা হাসপাতালে।সবাই বলছে কাল রাতে ও
নাকি কি করেছে,!!!
- সকাল বেলা ওকে ডাকতে গিয়ে দেখে ওর
কোন
সাড়া না পেয়ে ওর ভাইয়া ওর রুমের দরজা খুলে
দেখে ও বিছানার নিচে পরে আছে...
রুপুর আর কোন কথা অভির কানে ডুকলোনা ।
কত্তেকে অনেকগুলো জল চোখে এসে
ঠেকল ।
মুখ দিয়ে কিছু বের হওয়ার আগেই চোখ দিয়ে
জল
গড়িয়ে পড়লো। মাথায় স্লাইড শো শুরু হয়ে
গেল।
প্রত্যেক মুহূর্ত ছবির মত অভির চোখের
সামনে
ভাসতে লাগলো,, এমনটা তো হওয়ার কথা ছিলনা।
অভি হঠাৎ ভয় পেয়ে গেল ও অনুভব করল
মিথিলাকে ছাড়া আমি বাঁচবো কি করে? সারা পৃথিবী
অভির কাছে বিষাদময় মনে হল।
এমন সময় রুপুর মোবাইলে কল এলো
- হ্যাঁ বল। হ্যাঁ আমি আসছি। হ্যাঁ হ্যাঁ অভি আমার
সাথেই আছে ।
- তোরা পৌঁছে গিয়েছিস? এই আর মাত্র পাঁচ মিনিট
সারা পথে অভি কিছু বলতে পারলোনা । হঠাৎ
রিকশাটা রেস্টুরেন্টের সামনে এসে থামল।
রুপু বলল
- এই, নাম।
- এখানে কেন?
- কেউ একজন অপেক্ষা করছে!
- মানে?
- আরে নাম তো আগে রিকশা থেকে,,নেমে
রুপু আর অভি সোজা রেস্টুরেন্টের দিকে
হেঁটে গেল।
রেস্টুরেন্টের দরজা খুলতেই অভি দেখতে
পেল
মিথিলার সব বন্ধু-বান্ধবদের। তারা সবাই হাঁসছে।
এতগুলো মানুষের মাঝে অভির চোখ খুঁজতে
থাকে
মিথিলাকে। অবশেষে সবার শেষে অভি
দেখতে
পেল মিথিলাকে। জানালার পাশের টেবিলটায় বসে
আছে,, হালকা রোদ পড়েছে ওর মুখের উপর,
সম্ভব রকমের সুন্দর লাগছে ওকে,ঠিক যেন
অপ্সরা
অভির চোখ ছলছল করে উঠল চোখের
পানিতে, তবে খুশিতে মিথিলার কাছে গিয়ে কাঁপা কাঁপা
গলায় বলল
- আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি তুমি জানো?
- তোমাকে ছাড়া আমি একটা মুহূর্ত আমি থাকতে
পারব না। তোমার কিছু......
কথা শেষ করার আগেই মিথিলা অভিমানী সুরে
বলল
- এত ভালোবাসো যে আমার জন্মদিনটা পর্যন্ত
ভুলে গেলে? গতকাল রাতে এত হিন্টস দিলাম কিন্তু
কিচ্ছু
বুঝলেনা। তাই তোমাকে এই শাস্তিটা দিলাম
অভি এখন বুঝতে পারল গতকাল রাতের ঝগড়ার
বিষয়টা কি ছিল। লজ্জিত সুরে বলল
- I am sorry, and I love you.
(মনে মনে বলল জীবনটা আসলেই অনেক
সুন্দর)
এবারের ঝগড়ার ফলাফলটাও অভির বিপরীতে গেল
, তবু অভি খুব খুশি কারণ অভি জানে মিথিলাকে ছাড়া অভি
অসম্পূর্ণ। মিথিলার এই জন্মদিনের শাস্তি তথা সুসাইড
নাটক অভিকে শুরুতে অনেক কষ্ট দিলেও
শেষে দিল জীবনের অন্যতম বড় পাওয়া.

No comments:

Post a Comment