Monday, February 20, 2017

গল্পঃ "বৃষ্টিস্নাত ভালোবাসা"

গল্পঃ "বৃষ্টিস্নাত ভালোবাসা"

লিখাঃ রাহিল ইমন

দুপুর থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। থামার কোনো নাম
নেই। আজ বিকেলে নীলার সাথে দেখা করার
কথা। কিন্তু যেভাবে বৃষ্টি শুরু হলো তাতে কি
করে বেরোবে আকাশ তাই ভাবছে। নীলা মানা
করেছে আজ বেরোতে কিন্তু আকাশ, নীলার
কথা শুনতে নারাজ। আজ আকাশ দেখা করবেই
নীলার সাথে।
.
.
বিকেল ৪ টা। বৃষ্টি কিছুটা কমে এসেছে।
নীলা কল দিলো ও বেরোচ্ছে। আকাশ
বললো, তোমার ওই ছোটো ছোটো
নীল ফুলের ড্রেসটা পরে এসো। ফোন
রেখে আকাশ ও বেরিয়ে পড়লো। নীলা
অবশ্য জানে না আকাশের জ্বর। আকাশ বলেও নি।
যদিও আকাশের বৃষ্টিতে ভিজতে ভালো লাগে,
কিন্তু ডাক্তার মানা করেছে। বৃষ্টিতে ভিজলে
আকাশের জ্বর আসে এই কথা নীলা জানে তাই
আকাশ নীলাকে বলেনি।
.
.
আকাশ বেরিয়ে অনেকক্ষণ ফুলের দোকানে
ঘুরলো কদম ফুলের জন্য। কিন্তু পেলো না।
ইতোমধ্যে কাকভেজা হয়ে গেছে
আকাশের। ছাতাটাও হারিয়ে গেছে। শেষ পর্যন্ত
কি খালি হাতেই যেতে হবে তাহলে? হঠাৎ কদম
ফুল দেয়ার ইচ্ছে হল আকাশের। কারণ, নীলা
বলেছিলো, 'তুমি আমাকে ভালো করে
প্রোপোজ করো নি। যেদিন প্রোপোজ
করেছো। কেমনে করছো?
হাই....হ্যালো.....
I Love You.....
এভাবে কেউ প্রোপোজ করে?'
তাই আকাশ ঠিক করেছে, আজ বৃষ্টির মধ্যে কদম
ফুল দিয়ে প্রোপোজ করবে নীলাকে।
নিজেদের পুরোনো ভালোবাসাকে আবার
নতুনত্বের ছোঁয়া দিতে।
.
.
এসব কথাগুলো ভাবছিলো আকাশ আর হাটছিলো
ফুলের দোকানের উদ্দেশ্যে।
যাক অনেকক্ষণ ঘোরার পর শেষ পর্যন্ত কদম
ফুল পেলো মাত্র দুটা। অবশ্য দাম ও বেশী
রেখেছে। ফুল কিনার পর পকেটে আছে মাত্র
১০০ টাকা। রিক্সা নিয়ে যাবে সে ইচ্ছে নাই। কারণ
পরে টাকা কম পড়তে পারে। এই কদম ফুলগুলো
আর সাথে প্রকৃতির উপহার বৃষ্টি এটা যে নীলার
মুখে কতটা হাসি ফুটাবে তাই ভাবছে আকাশ।
নীলা ফোন করলো,
- এই, তুমি কই?
- রোডে। আর একটু অপেক্ষা করো। আসছি।
তুমি কই?
- আমিতো পার্কে। তাড়াতাড়ি আসো।
- হুম, আসছি।
.
.
পার্কে পৌছে গেছে আকাশ। ওইতো
নীলাকে দেখা যাচ্ছে। বসে আছে। খুব সুন্দর
লাগছে মেয়েটাকে। ড্রেসটা দারুণ মানিয়েছে।
নীলা, আকাশকে দেখেই বলল,
- একি অবস্থা তোমার? ছাতা কই?
- ছাতাতো হারিয়ে গেছে।
- আগে বলোনি কেন? পরে দেখা করতাম নাহয়।
- আরে বাদ দাওতো। এই নাও তোমার পছন্দের
কদম ফুল।
নীলা মিষ্টি হেসে ফুলগুলো হাতে নিয়ে কিছু
বলতে যাবে ঠিক তখনি আকাশ ধপাস করে মাটিতে
গড়িয়ে পড়লো। নীলা ওকে স্পর্শ করতেই
বুঝে গেলো ওর গায়ে অনেক জ্বর।
.
.
সন্ধ্যে ৬টা। জ্ঞান ফেরার পর আকাশ নিজেকে
বিছানায় আবিষ্কার করলো। পাশে দেখলো
নীলা বসে অাছে আর ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাঁদছে।
নীলার চোখগুলো ফুলে গেছে। মেয়েটা
অনেক কেঁদেছে। আকাশ একটু হেসে ওকে
ডাকতেই ও ঠাস করে একটা থাপ্পড় দিলো আর
এরপরই নীলার কান্না শুরু। আকাশ কি করবে ঠিক
বুঝে উঠতে পারছিলো না। আস্তে করে আকাশ
বুকে টেনে নিলো নীলাকে আর বললো,
"আমি ভালো আছিতো"।

No comments:

Post a Comment