Tuesday, February 21, 2017

_______ ব্লাকমেইল লাভ

_______ ব্লাকমেইল লাভ
>>
(বিকাল ৫:১৫ টা)
_____ আমাকে এখানে তুলে আনার উদ্দেশ্য
কি? ( ছেলে, হাত-পা একটা চেয়ারের
সাথে বাধা অবস্থায়)
_____ তোমাকে দেখব বলে....(মেয়ে,
হাতে একটা ছুড়ি! সেটা ঘুড়াতে ঘুড়াতে!)
_____ দেখলে তো! এখন ছেড়ে দাও?
_____ অত সহযে না চান্দু মিয়া!
_____ কেন?
_____ সেদিনের পরে, সবকিছু চেঞ্জ করে
দূড়ে চলে গিয়েছিলে কেন?
_____ আমার ইচ্ছা!
_____ তাহলে এখানে আমি যতদিন রাখব
ততদিনই থাকতে হবে!
_____ কিন্তু কেন?
_____ আমার ইচ্ছা!
_____ প্লিজ, আমাকে ছেড়ে দাও?
_____ প্লিজ,আমাকে একটু ভালবাসা দাও?
_____ সম্ভব না!
_____ কেন?
_____ প্লিজ, বাসায় বাবা-মা চিন্তা
করছে!
_____ এতবড় ছেলের জন্য চিন্তা করবে না!
_____ আমার বাবা-মায়ের আমি ছাড়া
কেউ নেই! টাকা পাঠাতে না পাড়লে,
তাদের না খেয়ে থাকতে হবে!
_____ বাড়িতে বলে দেয়া হয়েছে, তুমি
অফিসের কাজে বাইরে গেছ! আর টাকাও
পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে!
_____.............. ( অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে, থু থু
ফেলল)
_____ তোমার এত কিসের ঘৃণা? কিসের
অহংকার? কিসের অভাব আমার? ( শক্ত
করে ছুড়িটা গলার সাথে ঠেকিয়ে, যার দরুণ
হালকা কেটে গিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল!)
_____.................. ( কিছুই বলতে পারে না!
সুধু একটু নড়া-চড়া করে)
______ আজ তোমার সমস্ত অহংকার,ঘৃণা
ভেঙ্গে দিব! ( ছুরিটা হাত থেকে ফেলে
দিয়ে,পিছন থেকে শক্ত করে ছেলেটির
মাথার চুল ধরে, গলার রক্তের জায়গায় চুমু
খেয়ে, সামনের দিকে এসে ঠোঠে-মুখে
ভালবাসা একে দিতে লাগল!)
ছেলিটি নড়া-চড়ার মাধ্যোমে যথাসাধ্য
চেষ্টা করে ছোটার জন্য। একপর্যায়ে
চেয়ার শুদ্ধ পড়ে যায়, সাথে মেয়েটিও!
_____ এই রনি, ওকে এভাবেই বেধে রাখবি!
খাওয়া-দাওয়া দিবি না। একফোটা পানিও
না। আমি বাড়ি থেকে না আসা পর্যন্তু
যেন এভাবেই পড়ে থাকে!........... ( বলতে,
বলতেই চলে যায় মেয়েটি)
>>
কথা হচ্ছিল রাজ ও রিফার মাঝে।
এর পিছনের ঘটনাটি জানতে হলে, আমাদের
ফিরে যেতে হবে প্রায় দেড়বছর আগে!
…………………
.
তখন রাজ অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র। তখন
রিফার সাথে রাজের ভালো বন্ধুত্ব ছিল।
রাজ নিজে গরিব বলে, বড়লোকদের তেমন
দেখতে পারত না!
ও নিজে স্মার্ট, সুন্দর, মেধাবি ছাত্র।
মেয়েদের সাথে তেমন মিশত না, বন্ধুত্বও
করত না!
তারউপর যাকে দেখে বোঝা যেত, সে
বড়লোকের মেয়ে? তার সাথে তো
কোনমতেই না!!
.
ওদিকে রিফা তার বান্ধবিদের সাথে
বাজি ধরে, সে রাজের সাথে বন্ধুত্ব করবে।
আর বাজিতে জেতার জন্য সে ছদ্দবেশ
ধারণ করে! কোনও ভাবে রাজকে বুঝতে দেয়
না সে বড়লোকের মেয়ে!
রিফা দেখতে যথেষ্ট সুন্দরি ও বুদ্ধিমতী।
রিফা বাজিতে জিতে যায়, কিন্তু নিজের
কাছে হেরে যায়! রাজকে ভালো লেগে
যায় তার। ভালবেসেও ফেলে, কিন্তু বলতে
পারেনা। এভাবে ৯ মাস কেটে যায়।
ভালোই চলছিল। হঠাৎ একদিন রাজ দেখে
> রিফা শহরের একটা নামকরা রেস্টুরেন্ট
থেকে বেরুচ্ছে। রাজ আড়ালে থেকে লক্ষ
করতে থাকে। এক পর্যায়ে রিফা একটা
দামি প্রাইভেট 'কারে' উঠে বসে! রাজ
একটা ট্যাক্সি নিয়ে পিছু নেই। একদম
রিফার বাসা পর্যন্ত আসে। গেটে
দারোয়ানের থেকে জানতে পারে,,
রিফার এই বাসার এবং বড়ো দুটি
ইন্ড্রাজট্রির একমাত্র কর্ণধর!!
তারপরেই রাজকে আর খুজে পাওয়া যায় না!
.
>ইতিমধ্যো সে অনার্স পাশ করে একটা
চাকরি করছে। গ্রাম থেকে ১ মাস হল,
বাবা-মা কে নিয়ে এসেছে।
আজ, অফিস থেকে ফেরার পথে হেটেই
আসছিল, মাঝপথে একটা কালো গাড়ি
থেকে দুই-তিনটা ছেলে ওকে তুলে নিয়ে
যায়
>>>
রাত ১০ টা>
রিফাঃ নাও খাও.......
রাজঃ আমার খিদে নেয়....
রিফাঃ খিদে তো অবশ্যই আছে! কি জন্য
খাবে না তাই বল?
রাজঃ এমনি........
রিফাঃ খাও বলছি........
রাজঃ না......
তবুও রিফা জোর করে রাজের মুখে খাদ্য
তুলে দেয়! রাজ খাদ্য মুখ থেকে বের করে
খাবারে থু থু দেয়!
রিফাঃ এত কিসের ঘৃণা তোমার? আমি কি
ক্ষতি করেছি তোমার?
রাজঃ আমি তোমার কি ক্ষতি করেছি?
রিফাঃ আমি তোমাকে ভালবাসি........
রাজঃ আমি বাসি না.....
রিফাঃ ভালো তো বাসতেই হবে!
রাজঃ না বাসলে কি করবে?
রিফাঃ খুন করে ফেলব!
রাজঃ তো কর না কেন?
রিফাঃ ভালবাসি তাই!
বলেই রিফা থু থু দেয়া খাদ্যই খেতে লাগল!
রাজঃ যতই ছলনা কর, কাজ হবে না....
রিফাঃ সে তো দেখাই যাবে!
খাওয়া শেষে রনিকে হুকুম দিয়ে গেল, কিছু
খেতে চাইলে যেন খাওয়াই! রাত্রে যেন
কোন অসুবিধা না হয়! ইত্যাদি ইত্যাদি.......
>>
এভাবে ৪-৫ দিন কেটে গেল। রিফাও
নাছোরবান্দা! রাজও রাজি হয়না।
প্রতিদিন ২-৩ বার আসত রিফা। এসে
কখনো ভালবাসার আদরও করত! কখনো ভয়
দেখাত! কখনো বা অনুরোধ করত ভালবাসার
জন্য!
.
আজ ৬-৭ দিন হল রিফা আর আসে না।
৮ দিনের মাথায় এক সন্ধ্যায় হঠাৎ রিফা
আসে......
.
রিফাঃ যাও, তোমাকে ছেড়ে দিলাম!
কিন্তু, জেনে রেখ তোমাকে ছাড়া কাউকে
ভালবাসা আমার সম্ভব না ( দড়ি খুলতে
খুলতে! এতদিন বাধায় ছিল, সুধু প্রয়োজনে
খুলে দিত। তবে কোন পালানোর সুযোগ
রাখত না!)
রাজঃ.............. ( ধীর পায়ে হেটে যাচ্ছিল)
রিফাঃ দাড়াও......
রাজঃ........... ( ঘুরে দাড়ায়)
রিফাঃ যাওয়ার আগে একবার বলে যাও,,
তুমি কি কখনো আমাকে ভালবাসনি?
রাজঃ সে কথা জেনে তুমি কি করবে? তুমি
একটা মিথ্যাবাদী,ঠক, বন্ধুদের সাথে
বাজি ধরে, আমার সাথে বন্ধুত্ব করেছিলে!
রিফাঃ............. ( নিঃশব্দে মাথা নিচের
দিকে দিয়ে বসে পড়ল)
>>
বাসায় আসার পরে.....
মাঃ বাবা, তুই এতদিন কি কাজে
গিয়েছিলে? এত শুকিয়ে গেছিস কেন?
একবারও কি অামাদের খোজ নেয়ার সুযোগ
পাস নি? তোর বাবা তো...........
রাজঃ কি হয়েছে বাবার?
মাঃ ৬-৭ দিন আগে তোর বাবার হার্টের
রোগ বেড়ে যায়! এই অচেনা শহরে টাকা-
পয়শা নেই, চেনা-জানা নেই, কি করি বল?
রাজঃ বাবা কোথায়?
মাঃ হঠাৎ তোর অফিসের কলিগ না কি?
একটা মেয়ে এসে, তোর বাবাকে
হসপিটালে ভর্তি করল! টাকা দিয়ে বলল,
তুই নাকি দিতে বলেছিস। তারপর রাতদিন
সেবা-শুশ্রুষা করে সাড়িয়ে তুলল। আমি
বললাম, মা তোমার কাজ-কর্ম ফেলে...
সে বলল, আমার মা নেই, আপনি আমার
মায়ের মত! চাকরি গেলে চাকরি পাব,,
কিন্তু আপনি যা হারাবেন? তা কি পাওয়া
যাবে?
রাজঃ তারপর?
মাঃ তারপর আরকি? আমি আর বাধা
দিলাম না! তোর বাবা কাল থেকে
মেয়েটাকে দেখতে চাইছে? কিন্তু কোথায়
পায় বল?
>
রাজ কথাগুলো শুনে যেমনি এসেছিল?
তেমনিই আবার রওনা দেয়। হাটকে হাটতে
রিফার বাসার দিকে রওনা দেয়!
আর ভাবতে থাকে, মেয়েটির মা নেই!
সত্যিই তো! আবার ওকে ভালবাসে, সুধু
ওকেই না, ওর পরিবার সুদ্ধ সবাইকে! যদিও
ওর জন্যেই এ অবস্থা। তবুও তো সত্যিই
ভালবাসে। বড়লোক বলে কোন অহংকার
নেই।
এখন রাত ১১ টা..
হঠাৎ একটা প্রাইভেট কার এসে রাজের
সামনে দাড়ায়......
______ উঠে এস.... ( দড়জা খুলে দেয়)
রাজ উঠে পড়ে।
গাড়ি যথারীতি রিফার বাড়িতে গিয়ে
পৌছায়। ঘরে ঢোকার পড়ে.....
রিফাঃ বসো, কতদিন হল ভালো করে
খাওয়া-দাওয়া হয় না!
রাজ কোন কথা না বলে বসে পড়ে!
এমন সময় রিফার বাবা এসে উপস্থীত হয়।
রি... বাবাঃ এই সেই ছেলে? ( রাজের
দিকে তাকিয়ে)
রিফাঃ হুম, পছন্দ হয়েছে?
রি.... বাবাঃ তোর মুখে তো সব শুনেছি!
আচ্ছা, পরে আলাপ করা যাবে। খেতে দে,
আমি ঘুমাতে গেলাম
রিফাঃ খাও......
রাজঃ বাবা, একবার তোমাকে দেখতে
চেয়েছেন?
রিফাঃ আমি দেখা করেই এসেছি! আর
বলেছি তোমার যেতে দেরি হবে....
.
রাজ অনেক শান্তি করে খাচ্ছিল। হঠাৎ
রিফাঃ এই খাবার একদিন ঘৃণা
করেছিলে,না?
রাজঃ........... ( খাওয়া বাদ দিয়ে, রিফার
দিকে তাকায়, মুৃখে হাসি হাসি ভাব!)
রিফাঃ নাও খাও, কিছু মনে কর না এমনি
বললাম.....
.
অবশেষে খাওয়া শেষ হল।
.
রিফাঃ চল, পৌছে দিয়ে আসি....
রাজঃ............. ( ধীরে ধীরে হাটতে থাকে)
রিফাঃ আমাকে কি এখনও ভালবাসো না?
( মুখে স্মীত হাসি)
.
রাজ হঠাৎ ঘুরে দাড়িয়ে, রিফার হালকা
গোলাপী লিপিস্টিক লাগানো ঠোঠে
অতর্কিত হামলা করে! সেদিন এক পক্ষের
বাধা ছিল! কিন্তু, আজ কোন বাধা নেই,
কতক্ষণ এভাবে ছিল বলা মুশকিল!!...
হঠাৎ রিফা জোর করে ছাড়িয়ে নেয়।
রিফাঃ নাও, আর ঢং করতে হবে না,,, চল....
রাজঃ আমার তো যেতে ইচ্ছে করছে না?
রিফাঃ না, তা চলবে না, আগে তো বিয়ে
হোক!
রাজঃ তুমি কিই বা বাকি রেখেছ? সুধু কবুল
বলা তো? বললাম, কবুল, কবুল, কবুল......
↓↓↓

→ # লেখকঃ অথোই সাগরের ঢেউ ( মিঃ ম্যাড)

No comments:

Post a Comment