Monday, February 20, 2017

গল্প: "বৌ-ভালবাসা"

গল্প: "বৌ-ভালবাসা"

-বাবা মা আমার বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে শুরু
করেছে। আমি যতই বলি যে দেখো বিয়েটা
কিছুদিন পরে করলে হয় না। না তারা এইমাসেই আমার
বিয়ে দিবে দিবেন। তারা আর দেরি করতে চান না।
আমার আর কিছুই বলার থাকলো না।
..
..
-এই শুভ শোনে যা বাবা।
-কি বলো।
-তোর কি কোন মেয়ে পছন্দ আছে, থাকলে
বল।
-না নেই।
-আমার একটা মেয়ে পছন্দ করা আছে,।
-তোমাদের যা ভালো লাগে তোমরা তাই
করো।
..
..
-কিছুদিন পরে বাবা মা আমার বিয়ে ঠিক করে
ফেললেন। মেয়ের বাড়ি গ্রামে। আমার বাবার
অফিসের এক বন্ধুর মেয়ে।
শেষ পর্যন্ত বাবা মা আমার কপালে গ্রামের
মেয়ে জুটালো।দুনিয়াতে এত মেয়ে থাকতে
শেষ পর্যন্ত গ্রামের মেয়ের সাথে আমার
বিয়ে দিবে।
-বাবা মায়ের পছন্দের ওপর তো না করতে পারি না।
তাহলে তাদের অপমান করা হবে । সেজন্য
রাজী হয়ে গেলাম।.
..
..
-আজকে বিয়ের দিন, বিয়ে করে বউ কে নিয়ে
আসলাম। কিন্তু মনে শান্তি নাই। কারন আমাকে
গ্রামের মেয়েকে বিয়ে করতে হলো তাই।
শুধু বাবা মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বিয়েটা করছি

..
..
-রাত বারোটা, এখন আমি ছাদে দাড়িয়ে আছি। রুমে
যেতে ভালো লাগছে না।
তারপরেও গেলাম।রুমের ভেতরে গিয়ে দরজা
লাগিয়ে সামনে যেতেই, বউ বিছানা থেকে
নেমে আমাই সালাম করল।
-দেখুন আমি বাবা মায়ের চাপে আপনাকে বিয়ে
করেছি, আমার এ বিয়েতে কোন মত ছিলো।
(আমি)
-আসলে আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না।
(মেয়েটি)
-কিছুই বুঝা লাগবে না। আপনি শুধু আমার বউ সো এর
বেশি কিছু নিজেকে ভাববেন না। আর আমার প্রতি
বউয়ের অধীকার টা খাটাবেন না।
-মেয়েটি শুধু মাথা নাড়াল।
-এখন বিছানা ছেড়ে নামুন আমি ঘুমাবো।
-মেয়েটি বিছানা ছেড়ে নেমে গেল।
ফ্লোরের ভিতরে একটি চাঁদর বিছিয়ে ঘুমিয়ে
পড়ল সে, আর আমি বিছানাই ঘুমিয়ে পড়লাম।
..
.
-পরের দিনের অনুষ্ঠান টা ভালোভাবেই শেষ
হলো ।
মেয়েটি আমার সাথে ঠিক ভাবেই কথা
বলছে,মনে হচেছ আমরা আসলেও স্বামী -
স্তী।আমাদের দুজনকে নাকি বেশ মানিয়েছে।
এদের এসব কথা শুনে মনে হলো যে এতের
মাথাটা ফাটিয়ে দিই। কিন্তু পারলাম না ।
..
..
-এই উঠুন অফিসের দেরি হয়ে যাচেছ।
(মেয়েটি)
-এই তোমাকে না বলেছি যে আমার প্রতি
তোমার যেনো কোন মায়া না থাকে।
-কই আপনার প্রতি তো আমার কোন মায়া নাই।
-তাহলে ডাকছ কেনো।
-অফিসে যাবার জন্য।
-না মেয়েটি একটু বেশি বুঝে এর সাথে কথা
বলে কোন লাভ নাই।যা বলি তার উল্টোটা করবে।
রাগ দেখিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে নাস্তা করে
অফিসে চলে গেলাম।
..
..
-হ্যালো শুভ,।
-হ্যাঁ মা বলো।
-তোর মামা অসুস্থ হয়ে পড়েছে , আমাকে
ফোন দিয়েছিলো,আমি সেখানে যাচিছ। তুই আর
বউমা বাড়িতে থাক।
-হ্যালো মা, টুট টুট টুট, যা লাইন টা কেটে
গেলো। কিছুই বলতে পারলাম না।
..
..
অফিস শেষে বাসাই গেলাম গিয়ে দেখি, বাবা মা
এখনো আসেনি। ফোন দিয়ে জানতে পারলাম ৭
দিন পরে আসবে।
-ফ্রেস হয়ে খেতে আসুন ( মেয়েটি)
-না মেয়েটি তো দেখছি অনেক বেড়ে
গিয়েছে সব কাজে মাথা ঘামানো শুরু করছে। এর
কিছু একটা করা দরকার।কিছু একটা বলবো সেটা আর
পারলাম না যদি রাগ করে চলে যায় রান্না করার তখন
কেউ থাকবে না।
ফ্রেস হয়ে খাওয়া দাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়লাম।
..
..
এর পর থেকে মেয়েটি আমার সকল খোজ
খবর নিতে শুরু করেছে । কখন কি করি কোথাই
যায়,না আর মেয়েটির সাথে আমি পেরে উঠতে
পারলাম না।
..
..
-আজকে বাবা মার আসার কথা কিন্তু আসেনি। আর
অফিসের অনেক কাজের চাপ ছিলো তাই অনেক
ক্লান্ত লাগছিলো। তাই খেয়েই ঘুমিয়ে
পড়েছিলাম।
..
..
-সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি মেয়েটি
আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে
আছে। এমন অবস্থাই না পারছি কিছু বলতে না পারছি
বিছানা ছেড়ে উঠতে । কিছুক্ষন পরে দেখি
মেয়েটি নিজেই উঠে পড়ল।
-সরি (মেয়েটি)
-কিসের সরি, তোমাকে কি বলেছি মনে নাই,কথাটি
বলেই জোড়ে করে একটা চড় মারলাম।
-আজকেই বাড়ি ছেড়ে তুমি চলে যাবে।
-আসলে কালকে রাতে আমার অনেক ভয়
করছিলো তাই আপনার কাছে এসে ঘুমিয়েছিলাম।
আপনি হয়ত রেগে যাবেন ভেবে আবার নিচে
ঘুমিয়ে পড়ি ।কিন্তু তখন আরো ভয় লাগছিলো।
এই জন্য আপনার সাথে ঘুমিয়েছিলাম। কথা গুলো
বলে সে গালে হাত দিয়ে রুম থেকে চলে
গেলো।
-নিজেকে বড় অপরাধী মনে হচিছলো । না
জেনেই আমার এমন টা করা ঠিক হয়নি।
পরে আমি অফিসে চলে আসি, তাকে সরি বলার
আর সাহস পাইনি ।
..
অফিস থেকে ফিরে দেখি সে নেই , সারা বাড়ি
খুজে তাকে পাইনি আমি।
-কি খুজিস বাবা ।(মা)
-কিছুনা ।
-আরে নিপা তো বাবার বাড়ি বেড়াতে
গিয়েছে,কিছুদিন থেকে চলে আসবে।(মা)
সেদিন বাবা মা বাড়িতে চলে আসে। তার পরেই
নাকি নিপা বাবার বাড়িতে চলে যায়। আজকেই
মেয়েটির নাম জানলাম।
কি সুন্দর নাম।
-কিন্তু সে এমনি নই আমার খারাপ ব্যাবহারের কারনে
চলে গিয়েছে। বাবা মা সেটা জানে না ।
তবে আমার ভালই লাগছিলো নিপা না থাকাই।
..
-কয়েকদিন আমার খুব আনন্দে দিন কাটলে লাগল।
কারন নিপা নেই, আর তার বক বকানি ভালো লাগত না ।
কিছুদিন যাবার পরে নিপাকে ছাড়া আর মাথাই কিছু
আসছিলো না। নিপার সকল কিছু অনেক মিস
করছিলাম। তার শাসন, আদর, সকালে ডেকে দেওয়া
এগুলো আমার কঠিন মনে পড়তে লাগলো ।
তাকে ছাড়া আমার আর কিছুই ভালো লাগছিলো না।
নিপাকে ভীষন মনে পড়তে শুরু করল।
..
-নিপাকে ভীষন মিস করতে শুরু করলাম।
নিপাকে ছাড়া আর কিছুই ভালো লাগত না আমার।
-কিছুদিন পরে বসের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে
নিপাদের বাসাই গেলাম। আজকে প্রথম শ্বশুর
বাড়িতে এসেছি।
বাসার কলিং বেল চাপতেই নিপার মা দরজা খুলে
দিলেন।
-আরে বাবা কি খবর, ভালো আছো ।
-হ্যাঁ ভালই আছি, আপনি কেমন আছেন।
-আমিও ভালো আছি। এসো ভেতরে এসো।
-আমি একটু আসছি, তুমি বসো এখানে।
-নিপা কোথাই আছে মা।
-নিপা ওই ওপাশের রুমেই আছে।
..
-আমি আস্তে আস্তে নিপার রুমের দিকে
গেলাম। রুমে লক করা নাই,তাই হুট করে ভেতরে
ঢুকে পড়লাম।ঢুকেই দেখি নিপা শুয়ে আছে।
-কি ব্যাপার আপনি এখানে।
-কেনো আসতে পারি না বুঝি।
-আসবেন তো অব্যশই, কারন এটাও আপনার বাসা।
-হুম ঠিক বলেছ।
তুমি শুকিয়ে গেছ কেনো।
-কই নাতো।
-তুমি মিথ্যা বলছ নিপা। তুমি আসলেই আগের
চেয়ে দেখতে অনেক টা খারাপ হয়ে গেছ।
-কি যে বলেন আপনি।
-সেদিনের ঘঠনার জন্য সরি নিপা। আমি আসলে
তোমাকে বুঝতে পারিনি। তুমি চলে আসার পরে
তোমাকে অনেক মিস করেছি আমি। তোমাকে
ছাড়া থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না নিপা। আমি
তোমাকে ভালোবাসি নিপা।
-নিপা আমার কথা গুলো শুনে কান্না শুরু করেছে।
-কাঁদছ কেনো নিপা।
-সুখে কান্না চলে আসছে। এটা হলো
তোমাকে কাছে পাওয়ার কান্না শুভ।
-সাথে সাথে নিপাকে জড়িয়ে ধরলাম। অনেক
ভালোবাসি নিপা অনেক।
-কাকে ভালোবাসো।
-নিপাকে।
-সত্যি।
-হুম।
-আবার নতুন করে তাদের প্রেম শুরু হলো।
-----গল্পটা কাল্পনিক।
-ভুল ক্রটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
..
..
লিখা :-রাফি (নিল পরির জামাই)

No comments:

Post a Comment