Saturday, November 5, 2016

{}--_-_--আমার কিউট পেত্নী--_-_--{}

{}--_-_--আমার কিউট পেত্নী--_-_--{}

..
সকাল থেকে খুব বৃষ্টি হচ্ছে | এদিকে
পেত্নীরা ফোন করে করে ফোনের সব চার্জ
খেয়ে ফেলছে | আজ দুইটা পেত্নীকে নিয়ে
ঘুরতে যাওয়ার কথা | যদিও যাওয়ার কোনো
ইচ্ছা নাই তবুও ওদের ফোনের গতিতে বের
হতেই হল | বাসা থেকে বের হয়ে একটা
রিক্সা নিয়েই রওনা দিলাম | পৌছানো
মাত্রই শুরু হল ঝড় | ও হ্যা ওদের সম্পর্কে
আগে একটু বলি | বন্যা আর অরিন এই দুইজন
আমার ভার্সিটি বন্ধু | ওদের স্বভাব টা একটু
ঘার মটকাবে মটকাবে ভাব তাই ওদের কে
পেত্নী উপাধি দিয়েছি | তো পৌছানোর
সাথে সাথে,
>ঐ কুত্তা এতো দেরি করলি ক্যান? বন্যা
>আর বলিসনা দোস্ত, রাস্তায় একটা
মেয়েকে দেখে ক্রাশ খাইছিলাম |
ভাবলাম ওর পিছে ঘুইরা ওর কোনো ফোন
নাম্বার পাওয়া যায় নাকি দেখি | তো
কাছে যায়তেই কয় আই এম বুকিং | আরে
আমি এখনো কিছু কইলাম না তার আগেই
উত্তর | কোনো কিছু না বলে ওর সামনে
থেইকা চইলা আসছি | সারা রাস্তা আসতে
আসতে ভাবলাম মাইয়াডা আমার মনের
কথা বুঝলো কেমনে যে ওর সাথে আমি
লাইন মারবার চায় |(আসলে এই রকম কিছুই
ঘটেনি দেরি হয়ে গেছে তাই একটা
বাহানা মাত্র)
>হাহাহাহাহাহা এক্কারে ঠিক হইছে |
উচিৎ শিক্ষা পাইছিস তুই |অরিন
>ঐ থাম তোরা | চল এখন অনেক দেরি হইয়া
গেছে | আমি
>হুম চল | বন্যা
একটা সিএনজি ভাড়া করে আমরা গন্তব্য
স্থানের দিকে যাত্রা করলাম | গন্তব্য
স্থানটি হল একটি লেক | সেখানে অরিন
তার পরিবারের সাথে অনেকবার গেছে |
আর জায়গাটা ঐ পছন্দ করল তো আমি আর
বন্যা কোনো দ্বিমত করলাম না | সেখানে
পৌছানো মাত্রই বন্যা বলল,
>কি সুন্দর জায়গা বলেই অরিনকে জড়িয়ে
ধরে বলল দোস্ত সত্যিই তোর চয়েজ আছে |
>থাক থাক আর পাম দিস না ফেটে যাব
তাহলে |অরিন
>নারে বন্যাতো ঠিকই কইছে | জায়গাটা
সত্যিই দারুণ | আমার হেব্বী পছন্দ হইছে |
যদি কখনো গার্লফ্রেন্ড হয় তাইলে এখানে
নিয়ে আসব | আমি
বন্যা আর অরিন দুজনেই একসাথে বলে উঠল
তাই??(অরিন আস্তে আস্তে বলল,
গার্লফ্রেন্ড কইরা দেখিস তোর হাড্ডি
গুড্ডি ভাইঙ্গা হাসপাতালে পাঠাইয়া
দিমু)
>অরিন কিছু কইলি??আমি
>বলতাছি জায়গাটা তোদের সত্যিই পছন্দ
হইছে নাকি আমাকে খুশি করার জন্য ঢপে
চপ দিচ্ছিস??অরিন
>নারে জায়গাটা অনেক সুন্দর |বন্যা
>আইচ্ছা আইচ্ছা থ্যাংকু এবার চল ভিতরে
যাওয়া যাক |অরিন
>হুম হুম চল |আমি
ভিতরে গিয়ে একটা ব্রেঞ্চে বসলাম | ওরা
দুইজন বকবক করেই যাচ্ছে | ওদের কথা বুঝতে
না পেরে আমি আনমোনা হয়ে ব্রেঞ্চের
একপাশে বসে আছি |
>কিরে অভ্র কি ভাবিস?অরিন
>ভাবতেছি তোরা...
কথা শেষ হওয়ার আগেই আইসক্রিমআলা
ডাক দিল | ভাইজান আইসক্রিম খাইবেন?
>খাওয়াইবেন ওকে দেন তিনটা?আমি
>দোস্ত তুই এতো ভালো হইলি কবেরে? বন্যা
>তার মানে তুই বলতেছিস আমি খারাপ
ছিলাম আগে?আমি
>আরে না কোনো দিন আমাদের সাথে
আইসক্রিম খাস নাই তাই আরকি |বন্যা
>এমনিতেই আজ খেতে ইচ্ছে হল |আমি
তারপর সারাদিন অনেক ঘুরলাম খাইলাম
ফিরলাম | সন্ধ্যার সময় ওদেরকে বাসায়
ছেড়ে দিলাম |
..
ফোনের শব্দে ঘুম ভাঙ্গলো | ফোন স্ক্রিনে
দেখলাম বন্যার ফোন,
>হ্যা বন্যা বল..
>ঐ কোথায় তুই.. এখনো মরার মত পরে পরে
ঘুমাচ্ছিস নাকি?বন্যা
>হুম |
>দোস্ত ভার্সিটিতে তাড়াতাড়ি আয়
দরকার আছে |বন্যা
>ক্যান কি দরকার?
>আগে আয় সব বলছি |বন্যা
>ওকে ১০ মিনিটের মধ্যে আসতেছি বাই |
>ওকে |
তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে, বাইক নিয়ে
ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রৌওনা দিলাম |
দেখলাম বন্যা, অরিন আরও অনেকে দাড়িয়ে
আছে | আমি যেতেই অরিন বলল চল আমরা
কিছু পিক তুলি, আমি বললাম ওকে চল | যখন
আমরা পিক দেখছিলাম তখন বন্যা আমার
ঘাড়ে হাত রাখলো | অরিন দেখে মন
খারাপ করে বলল, তোরা থাক আমার কাজ
আছে চলে যাচ্ছি আমি | বন্যা বলল আচ্ছা
যা বাই পরে কথা হবে |
যখন আমি পিক গুলো নিয়ে বাইকের কাছে
গেলাম দেখলাম একটা চিরকুট | চারিদিকে
তাকাইলাম কাউকে না দেখতে পেয়ে
চিরকুটটা খুললাম তাতে লেখা,
"জানি হয়ত তোমাকে পাবো না তবুও
তোমাকে ভালোবাসি আমি,
তাই বিধাতার কাছে শুধু একটা জিনিসই
চাই আর তা হল তুমি"
চিরকুট পকেটে ভরে বাসায় চলে আসলাম |
ফ্রেশ হয়ে কিছু খেয়ে, বেডে হেলান দিয়ে
চিরকুট টার কথা ভাবছিলাম, কে দিতে
পারে আরও অনেক কিছু | ভাবতে ভাবতে
কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি
খেয়াল নেই | বিকালে ঘুম থেকে উঠে
দেখি একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে
একটা মেসেজ,
..
"তুমি সকালের সোনালী রোদের স্নিগ্ধ
আভাস,
নীলিমার স্পর্শ জড়ানো দুরন্ত মেঘাকাশ"
..
মেসেজটা দেখেই ফোন দিলাম ঐ
নাম্বারে কিন্তু ফোন বন্ধ বারবার চেষ্টা
করলাম কোনো কাজ হল না | এই বেপারটা
বন্যা আর অরিনের কাছে গোপন রাখলাম |
বিকালে পার্কে ওদের কে ডাকলাম,
>দোস্ত কয়েকদিনের জন্য গ্রামের বাড়ি
মেহেরপুরে যাচ্ছি |আমি
>তাই কবে যাবি?বন্যা
>কাল |আমি
>অভ্র একটা কথা বলব?অরিন
>হুম বল |আমি
>তোর সাথে আমাকে নিবি, না মানে
জোর করবোনা | না নিলেও সমস্যা নাই |
(কেমন একটা লজ্জা ভাব নিয়ে বলল অরিন)
>হ্যাঁ নিব না কেন? অবশ্যই নিব |আমি
>সত্যি অন্নেক দ্যাংকু |(মুখে হাসি ফুটিয়ে
বলল অরিন)
>তাহলে বন্যাও চল?আমি
>নারে আমি আর যাবো না তোরাই যা |
আমি গাড়িতে চড়তে পারি না বমি আসে |
বন্যা
>ওকে, তাহলে অরিন আমি ২ টা বাসের
টিকিট কাটতেছি কাল সকাল আটটার বাসে
আমরা রৌওনা দিব | তুই সকাল 7:30 এ চলে
আসিস কেমন |আমি
>ওকে |অরিন
রাতে ব্যাগ গুছাচ্ছিলাম তখন আবার ঐ
নাম্বার থেকে মেসেজ আসল, "জানো আজ
আমি খুব খুশি"
সাথে সাথে ফোন দিলাম কিন্তু আবারও
ফোন বন্ধ | তারপর আমি একটা মেসেজ
দিলাম, "কে আপনি?"
পরেরদিন ঘুম থেকে উঠে দেখলাম, অরিন
আমার আম্মুর সাথে সেই আকারে গল্প জুড়ে
দিয়েছে | আমি কিছু বলার আগেই আম্মু
বলল,
>রাস্তায় যেন মেয়েটার কোনো সমস্যা না
হয় |আম্মূ
>বাব্বাহ পেত্নীটা দেখি এসেই তোমার
ঘাড়ে চড়ে বসেছে |আমি
>ঐ কি বললি আমি পেত্নী? তুই তো একটা
ভুতু |অরিন
>তুই..
>এই তোরা থাম | অরিন চলো নাস্তা করে
নাও |আম্মু
>আন্টি আমি বাসা থেকে নাস্তা করে
এসেছি |অরিন
>ও তাহলে ঐ রুমে গিয়ে টিভি দেখো |আম্মু
>আচ্ছা আন্টি |
আম্মুর কাছে বিদায় নিয়ে আমরা রৌওনা
দিলাম |
..
৮:১২ তে বাস ছাড়ল | আমি কানে এয়ার
ফোন ঢুকিয়ে গান শুনছি | আর অরিন
জানালার বাইরের দৃশ্য দেখছে |
>জানিস অভ্র অনেকদিন পর আজ কোথাও
ঘুরতে যাচ্ছি | আচ্ছা মেহেরপুরে দেখার মত
কোনো জায়গা আছে?অরিন
>হুম আছে | বাংলাদেশের এক ঐতিহাসিক
জায়গা মুজীবনগর | অনেক সুন্দর করেছে
জায়গাটা |আমি
>তাই? তাহলে মনে হচ্ছে আমার
যাওয়াটা বৃথা হবে না |অরিন
>হয়ত |আমি
৩ ঘন্টা কেটে গেল | দেখলাম অরিন আমার
কাধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছে | আর
বাতাসে ওর চুল গুলো উড়ছে | কোনোদিন ওর
মুখের দিকে এই ভাবে তাকায়নি | কিন্তু
কেনো জানি না আজ তাকিয়েই থাকতে
ইচ্ছে করছে |
..
দীর্ঘ ৬ ঘন্টা পর মেহেরপুর পৌছালাম | এই
অরিন ওঠ মেহেরপুর চলে এসেছি |
..
তারপর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে উঠলাম |
আম্মু আগেই সব কিছু জানিয়ে রেখেছিল |
তাই আমাদের আর কোনো সমস্যা হল না |
সারাদিন জার্নির ফলে খুব ক্লান্ত
লাগছিল তাই বিকালে বাইরে গেলাম না |
ঐ দিন রাতে আমি, অরিন আমার কিছু
কাজিনরা অনেক রাত পর্যন্ত আড্ডা দিয়ে
যে যার রুমে ঘুমিয়ে পড়লাম |
..
আমি, অরিন আর আমার ২ টা কাজিন
সকালের নাস্তা সেরে মুজীবনগরে ঘুরতে
গেলাম |
>কি সুন্দর জায়গা দোস্ত | আমি আজ প্রথম
এতো সুন্দর একটা জায়গাতে এলাম | ভীষণ
খুশি খুশি ভাব নিয়ে বলল অরিন |
>তাই? আমি
>হুম |অরিন
যতবারই অরিনকে দেখছি ততবারাই এক অন্য
রকম ভালো লাগা কাজ করেছে | বারবার
মনে হচ্ছে ও এতো সুন্দর | এতোদিন একসাথে
থাকলাম আর কোনো দিন আমি বুঝতেই
পারলাম না |
>ঐ ভুতু আমার মুখের দিকে হা করে কি
দেখছিস?অরিন
>বাস্তবে ফিরে.... ক.কই কিছু নাতো |আমি
>ও তাই বুঝি?অরিন
>তা নয়তো কি হুম |আমি
অনেক ঘুরাঘুরির পর বাসায় চলে আসলাম |
বারবার শুধু অরিনের কথা মনে পড়ছে | ঠিক
মত খেতে, ঘুমাতে পারছি না | বারবার
মনে হচ্ছে ওর দিকে সারাজীবন তাকিয়ে
থাকি | হঠাৎ মেসেজের শব্দে বাস্তবে
ফিরলাম | মেসেজে লেখা,
"তুমি তোমার মনের কথা তোমার মনের
মানুষকে বলে দাও"
সাথে সাথে ফোন দিলাম কিন্তু ফোন বন্ধ |
মেসেজের কথা এবার অরিনকে বলতেই ও
যেন কিছু না শোনার ভান করে এড়িয়ে গেল
| আমি এইটা নিয়ে আর মাথা নি ঘামিয়ে
বারবার অরিনকে ফলো করতে লাগলাম |
এইভাবে ৬ দিন কেটে গেল বুঝতে পারলাম
অরিনকে আমি ভালোবেসে ফেলেছি |
কিন্তু বন্ধুত্ত ভেঙ্গে যাবার ভয়ে বলতে
পারছি না |
..
একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে, অরিনকে
কোথাও দেখতে পেলাম না | সারা বাড়ি
খুঁজলাম কিন্তু কোথাও পেলাম না | ওর জন্য
ভীষণ টেনশন হতে লাগলো | সবাইকে
জিজ্ঞাসা করলাম কেউ বলতে পারছে না ও
কোথায় | টেনশনে আমার চোখে পানি চলে
আসল | পাগলের মত ওকে খুজচ্ছিলাম |
বাড়ির বাইরে এসে দেখি ও আর আমার
একটা কাজিন বাড়ির দিকে আসছে | ছুটে
গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে বললাম,
>এই পেত্নী তুই আমাকে রেখে কোথায়
গিয়েছিলি | জানিস তোকে কতজায়গায়
খুজেছি | আমার জীবন তো চলেই গিয়েছিল
|আমি
>তাই বুঝি?অরিন
>হুম , আমি তোকে খুব ভালোবাসি অরিন খুব
ভালোবাসি |আমি
>যাক তাহলে আমার দেওয়া মেসেজ গুলো
কাজ করেছে |অরিন
>মানে.... আমি
>তোকেও আমি খুব ভালোবাসি তাই মাঝে
মধ্যে তোকে মেসেজ দিয়ে ঐগুলো বলতাম |
আর আমি জানতাম তুই আজ আমাকে প্রোপজ
করবি তাই তোর জন্য গোলাপ ফুল কিনতে
গিয়েছিলাম | এইনে...অরিন
>ওরে আমার কিউট পেত্নীরে.... আই
ল্যাবু.....আমি
>আই ল্যাবু টু....অরিন
অতঃপর দুজনেই একসাথে হেসে উঠলাম
হাহাহাহাহা.....

No comments:

Post a Comment