~~~বোবাপরীর বার্থদে~~~
,
,,,,
আজ খুব তাড়াতাড়ি অফিস থেকে চলে
আসলো সুজয়। তখন বিকেল চারটা। হঠাত্ এই
অসময়ে দরজায় ঠক ঠক শব্দ পেয়ে ঘুম ঘুম
চোখে দরজা খুলল প্রান্তি। সুজয়কে দেখেই
প্রান্তির চোখের সব ঘুম নিমিষেই হারিয়ে
গেলো। একা এত বড় বাসায় বসে সারাদিন
সুজয় আসার অপেক্ষায় থাকে প্রান্তি। সেই
সকাল আট'টায় অফিসে যায় সুজয়, আর ফিরে
আসে রাতে।
এই সারাদিন প্রান্তি একা রান্না করে,
টিভি দেখে, পুতুল নিয়ে একা একা খেলে
আর ঘুমিয়ে কাটায়।
আজকে হঠাত্ সুজয়কে এত তাড়াতাড়ি দেখে
প্রান্তির খুব ভালো লাগছে।
,,,,
- আজকে এত তাড়াতাড়ি (হাসি)
,
> কেন খুশি হওনি? তাহলে আবার চলে
যাচ্ছি।
,
- এই না। আমি আর একা একা থাকতে
পারবো না।
,
> হুম যাবোনা।
,
- তো সাহেবের আজ এত তাড়াতাড়ি
বউমনির কাছে আগমনের কারণটা কি?
,
> বউমনিটাকে নিয়ে আজ খুব ঘুরতে ইচ্ছে
হচ্ছে তাই।
,
- সত্যিইইইইই।
,
> হুম। আজকে আবার সেই পুরোনোভাবে
তোমাকে নিয়ে ঘুরবো। সেই পার্কটাতে
আজকে আবার তুমি চুল খুলে হাঁটবে। ওখানে
আবার তুমি আমার আগের বোবাপরী হবে।
,
- তো হঠাত্ ভিতর থেকে এত ভালোবাসা
জেগে উঠলো কেন? মতলবটা কি আপনার?
।
তারপর আর কি? সুজয় জোর করেই প্রান্তির
লিপ্সটিক গুলোর উপর হামলা করলো।
প্রান্তি আর ছাড়াবার চেষ্টা করেনি।
.
যাহোক আজ প্রান্তির বার্থদে কিন্তু
প্রান্তির একদমই মনে নেই।
.
কিছুক্ষণের মধ্যেই সুজয় আর প্রান্তি ঘুরতে
বের হলো। আজ বাইকটা অকেজো, আজ
তারা রিক্সা নিয়ে ঘুরতে বের হলো। আর
ওইদিকে প্ল্যানমত সবাই বাসায় ঢুকে
গেলো।
.
পার্কে যাওয়ার পথে একটা ফুল কিনে
নিলো সুজয়। তারপর সেই স্মৃতিভরা পার্কে
পৌছেঁ গেলো।
পাশাপাশি হাটঁছে প্রান্তি আর সুজয়।
প্রান্তি তার এত্তলম্বা চুলগুলোর বাধঁন খুলে
দিয়েছে। বাতাসে অগ্রভাগের কিছু চুল
এসে মুখটা ঢেকে যাচ্ছে প্রান্তির, আর বার
বার প্রান্তি হাত দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে।
অদ্ভুদ একটা মায়া কাজ করে এই চুলের
অগ্রভাগ সরাতে। আর এটাই পৃথিবীর
সবচেয়ে দ্বিতীয় সুন্দর দৃশ্য সুজয়ের মতে।
প্রথমটা সুন্দর দৃশ্যটা তার মায়ের মুখ।
,,,
- সুজু মনে আছে এই জায়গাটা?
,
> হুম মনে আছে। আগে এখানে এসেই আমরা
বসে থাকতাম।
,
- কচু মনে আছে তোমার। এখানেই তুমি
আমাকে আমতা আমতা করে ছাগলের মত
ভ্যা...ভ্যা...ভ্যা...ভালোবাসি বলেছিলে।
,
> বাহ। পুরাই ছাগলীর মত বনর্না দিয়েছো।
,
- কিইহহহ? তোমার সাথে আড়ি হুহ।
,
> না না। এই কান ধরছি আর এমনটা হবেনা।
তুমি সব বলবে আমি চুপ।
,
- হবেনা।
,
> তাহলে এখন কি করলে রাগ কমবে আপনার?
,
- এখন এই ফুলটা দিয়ে ঠিকমত প্রপোজ করতে
হবে।
,
> মানে কি? এখন প্রপোজ করে কি হবে?
তুমি তো আমার বউ।
,
- না হবেনা। ওইদিন সুন্দর করে করতে
পারোনি এখনই করতে হবে। তানাহলে.....
,
> ওকে ওকে!! করছি।
,
তারপর একটা লম্বাশ্বাস নিয়ে হাটু গেড়ে
সুজয় বলে ফেলল, "খুব ভালোবাসি তোমায়
বউমনি"
.
প্রান্তি খুব লজ্জা পেয়ে গেলো, কারণ
পাশের সব লোকজন তাদের দিকে হাঁ করে
তাকিয়ে আছে।
প্রান্তি সুজয়কে তুলে নিয়ে দ্রুত সেই স্থান
ত্যাগ করলো।
তারপর সেই পুরোণো কফিশপে কফি আর
পার্কের পাশে ফুসকাওয়ালার কাছ থেকে
ফুসকা খেয়ে বাসায় ফিরলো সুজয় আর
প্রান্তি।
.
বাসার ভিতরে ঢুকলো সুজয়। খানিকটা
ইতস্তত করতে লাগলো সুজয়, এখনো কিছু
হচ্ছেনা কেন? তারপর প্রান্তি ভিতরে
ঢুকার সাথে সাথেই চারিদিকে আলোর
ঝিঁকিমিকি খেলে গেলো। প্রান্তি ভয়ে
সুজয়ের বুকে স্থান নিলো। আর সুজয়
প্রান্তির কানে কানে বলল, "হ্যাপি
বার্থদে বউমনি"
.
ঘরের ভিতর লুকিয়ে থাকা সবাই তখনই
একসাথে চিত্কার করে উঠে "হ্যাপি
বার্থদে বোবাভাবী"
এসব দেখে প্রান্তি যেন বিশ্বাসই করতে
পারছে না। তাদের ভার্সিটির সব পুরোণো
বন্ধুরা আর তার সামনে একটা বার্থদে
কেক।
.
প্রান্তি এখনও দাড়িয়ে আছে। সে কল্পনাও
করেনি হঠাত্ এত কিছু হবে। পরক্ষণে
প্রান্তি কেক কাটলো। তারপর এতদিনের
জমে থাকা সব দুষ্টুমি সবাই একসাথে
করলো।
,,,
- এই তোমার মনে আছে আমার বার্থদে?
,
> ওমা!!! আমার বউমনির বার্থদে আর আমি
জানবোনা।
,
- তো মিষ্টার! আমার গিফট কই?
,
> দিবো তো। এইবার একটা বাবু এনে দিবো।
যাতে আমার বউমনিটা আর একা একা না
থাকে।
,
প্রান্তি সাথে সাথে লজ্জা পেয়ে সুজয়ের
বুকে মুখ লুকিয়ে ফেললো, সুজয়ও খুব শক্ত
করে জরিয়ে ধরল তার লাজুক
"বোবাপরীটাকে"
Saturday, November 5, 2016
~~~বোবাপরীর বার্থদে~~~
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment