Saturday, November 5, 2016

-_-♥-_-♥-_-♥-_-

-_-♥-_-♥-_--_-

-রাস্তার পাশে প্রচন্ড রোদে দাড়িয়ে আছি।
অনেক ভালো লাগছে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে।
তবে মনটা অনেক খারাপ। বাবা আমাকে এমাসের
টাকাটা পাঠিয়েছেন আজকে। টাকাটা তুলে নিয়ে
আসতেই হারিয়ে ফেলেছি। এখন মাথার মধ্যে
অনেক ধরনের চিন্তা ঘুরপাক খাচেছ। মানুষের খুব
বেশি প্রয়োজনীয় টাকা যদি হারিয়ে যায় তাহলেই
তারা টাকার মর্ম বুঝতে পারে। গরীব বা বড়লোক
হলেও তাদের টাকার বেদনা আছে অনেক।
তবে
আমার কোনকিছুই মনে হচেছ না, টাকা গুলো
হারানোর জন্য।
..
..
-তিনদির পরে রেখার জন্মদিন। সেদিন তাঁকে
কিছুতো দিতেই হবে। কিন্তু কি দিবো তাঁকে
টাকাগুলো তো আর নাই।
এ মাসের টাকাটাও দিতে পারলাম না মেসে।
মেসের
মালিক অনেক অপমান করবে আমাকে, তবুও
শুনতে
হবে।সেতো আর বুঝবে না যে আমার টাকাটা
হারিছে। মেসের মালিকের কথাগুলো উপদেশ
মনে করে শুনব। কারো ভালো না লাগলেও
আমার
ভালই লাগবে।
.
.
-ফোন টা বেজে উঠল।
পকেট থেকে বের করার আগেই বুঝতে পারছি,
রেখা ফোন করেছে। ফোন ধরতেই,
-কোথাই তুমি আতিক।
-রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছি।
-কেনো এই অবেলাই তুমি ওখানে কি করছ।
-দাঁরিয়ে আছি।
-এই প্রচন্ড রোদ্রের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকবে না
তুমি।
দ্রুত মেসে গিয়ে ফ্রেস হয়ে খাওয়া সেরে
একটা ঘুম দিবে।
-এরপরে বিকাল ৫ টার সময় আমার সাথে দেখা
করবে।
-কি শুনতে পেয়েছো আতিক, কি ব্যাপার আতিক
কথা বলছ না কেনো ।
-হুম শুনতে পেয়েছি রেখা। এখন রাখি।
-ওকে রাখো তবে কথামতন কাজ গুলো করবে।
ঘুমানোর আগে ফোন টা সাইলেন্ট করবে না
বলে দিলাম।
-আচছা বাই।
-ফোনটা কেটে দিলাম।
মেসের দিকে হাঁটা শুরু করলাম, বিকালে যদি দেখা
না
করি তাহলে মেয়েটা অনেক কাঁদবে।
সামান্য দেখা করা নিয়ে তাঁকে আর কাঁদাতে চাই না।
..
..
-মেসে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম।
ফোনের রিংটোনে ঘুম ভেঙ্গে গেলো।
মোবাইলের দিকে তাঁকিয়ে দেখি মা ফোন
দিয়েছে ।
-হ্যাঁ মা বলো।
-টাকা পেয়েছিস বাবা।
-হ্যাঁ পেয়েছি মা। বাবাকে চিন্তা করতে মানা করবে

তুমি বেশি চিন্তা করবে না, নিয়মিত খাওয়া দাওয়া
করবে।
-আমার জন্য ভাবিস না, তুই ঠিকমত সব কাজ গুলো
করবি। পড়াশোনা ভালোভাবে করিস।
টাকার দরকার পরলে ফোন দিস।
-ঠিক আছে মা। এখন রাখলাম তাহলে।
-ফোন রেখে দিয়ে ভাবতে লাগলাম, প্রতিটা
ছেলেদেরকে মনে হয় তার মা বেশি
ভালোবাসে। সেটা না হলে আমার মা আমার জন্য
এতো ভাবতো না ।
..
..
-বিকাল ৫ টার দিকে রেখার সাথে দেখা করার জন্য
রেখার দেওয়া নির্দিষ্ট যায়গাই গেলাম।
আমি যাবার আগে রেখা সেখানে চলে
এসেছে।
প্রতিদিন আমার লেইট হয়, একদিনও আমি রেখার
আগে আসতে পারি নি । কিন্তু এতে করেও
রেখার
কোন অভিযোগ নেই আমার উপর।
- কি জন্য ডেকেছ রেখা।
-কিসের জন্য ডেকেছি সেটা পরে বলবো।
আগে আমি যেটা বলছি সেটা মনযোগ সহকারে
শুনো।
-হুম বলো।
-আমার ভাইকে তুমি কাল থেকে পড়াতে যাবা।
-কেনো যাবো, আরও তো শিক্ষক আছে।
-আরো শিক্ষক থাকলেও তোমাকেই পড়াতে
হবে। এই নাও প্রথম মাসের বেতন।
-না আমি পড়াতে পারব না, আর টাকা তো আমি নিবো
না

-নাও ধরো বলছি। (ধমকের সুরে)
-টাকাটা নিলাম ভয়ে ভয়ে।
-সত্যিই পড়াতে যেতে হবে।
-হুম যেতে হবে।
-তুমি শেষ পর্যন্ত আমাকে পেলে কেনো।
-কারন হলো তোমার বাবার পাঠানো টাকা তুমি
হারিয়ে
ফেলেছো।
এবং আমার ভাইকে পড়াতে গেলে তুমি আমার
সামনে
থাকবে অনেক্ষন। সেই বিকাল টুকু আমি
তোমাকে আমার পাশেই পাবো। আর তোমার
কাছে টাকা নেই এখন এইজন্য অগ্রিম দিলাম
জেনো তোমার কোন কষ্ট না হয় এইমাসে ।
-আমার চোখ দিয়ে পানি পড়তে শুরু করছে।
এই মেয়েটা আমার জন্য এতোকিছু ভাবে।
মেয়েটাতো আমাকে বড্ড বেশি
ভালোবাসে।
-এই শোন।
-হুম বলো।
-আমার জন্মদিনে তুমি আমাকে একজোড়া নুপুর
কিনে দিবে।
-হুম দিবো।
-ওখানে নুপুরের টাকাটা দেওয়া আছে। তুমি
তোমার
মনের মতন করে একজোড়া নুপুর বানাবে আমার
জন্য।
-তুমি কেনো টাকা দিলে নুপুর বানানোর জন্য।
-এখন তোমার কাছে নাই তাই দিলাম। পরে না হয়
শোধ করে দিবো।
-আর কিছু বলতে পারলাম না রেখাকে।
-চলো আজকে তাহলে উঠি।
-আরেক টু বসো না আতিক।
-কেনো।
-আরকিছুক্ষন থাকো, তোমার সাথে তো
আজকে আর দেখা হবে না।
-প্রতিদিনই তো আমি তোমার পাশে থাকি সবসময়।
-উহু তারপরেও আজকে থাকতে হবে।
-আচছা থাকব।
..
..
-আজকে রেখার জন্মদিন। রেখার জন্য
একজোড়া নুপুর বানিয়েছি।
আজকে সে আমাকে পার্কে আসতে
বলেছে
নুপুর জোড়া নিয়ে।
-পার্কে এসে দেখি রেখা আজকেও আগে
চলে এসেছে।
-রেখার সামনে গিয়ে হাটু গেড়ে বসে পড়লাম।
রেখার পা দুটো আমার হাটুর উপর নিয়ে রেখার
পায়ে নুপুর জোড়া পরিয়ে দিলাম।
-নুপুর পরিয়ে দিয়ে উঠে দাড়াতেই রেখা আমাকে
জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বলছে , আমি
তোমাকে অনেক ভালোবাসি আতিক।
-আমাকে ছেড়ে তুমি চলে যাবে নাতো।
-ছেড়ে যাবার জন্য তো হাত ধরিনী। সারাটি
জীবন
একসাথে বাঁচব বলেই তোমার ঐ হাত দুটি ধরেছি।
তাহলে তোমার হাত আমার হাতের উপর নেই
কেনো।
-তুমি ধরতে দাও নি কেনো।
-আমি কি তোমাকে বলেছি যে আমার হাত ধরবে
না।
-না বলনি তবে,
-তবে কি হ্যাঁ (অভিমানি সুরে)
-ভালোবাসি।
-কাকে।
-একটি পাগলিকে।
-তাহলে তুমি পাগল।
-কার পাগল।
-আমার।
_______সমাপ্ত_______

No comments:

Post a Comment