Saturday, November 5, 2016

গল্প: ভালবাসার কোনো মানে হয় না!!!

গল্প: ভালবাসার কোনো মানে হয় না!!!

-এইযে শুনো, আমি অফিসে গেলাম।
-এত তারাতারি যাবে, সময় তো হয়নি
এখনো।
-না আমাকে এখনই যেতে হবে। তুমি খাওয়া
দাওয়া করে নিও।
-তোমার তো প্রতিদিনই আগে যেতে হয়
অফিসে। আজকে দেরি করে গেলে হয় না।
-কেনো আজকে পরে কেনো যাবো ।
-তোমাকে জড়িয়ে ধরে আরেকটু ঘুমাবো।
-কেনো সারারাত তো জড়িয়ে ধরেই
ঘুমিয়েছিলে।এখন আবার নতুন করে কি উদয়
হলো তোমার মনে।
-কিছুই উদয় হয় নি, একটু থাকো না প্লিজ।
-অভি তুমি তো জানো যে আমার জন্য
অনেক রোগী অপেক্ষা করে, আমি একটু
দেরিতে গেলে তাদের যে কোন সময় বিপদ
বেশি হতে পারে।
-তাই বলে আমাকে একটু সময় দিবে না।
-কে বলেছে তোমাকে সময় দিই না। তুমি
তো আমারি। তোমাকে তো আমার সময়
দিতেই হবে , সাথে রোগীদেরকেও দিতে
হবে।
-আচছা যাও।
-রাগ করো না অভি।
-তোমার উপর আমার কোন রাগ নেই অরিন।
-অমনি অরিন আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে
তার অফিসে চলে গেলো।
আসলেই মেয়েটা আমাকে বড্ড বেশি
ভালোবাসে।
..
..
-আজকে আর অফিসে যেতে ভালো লাগছে
না।
সেজন্য অরিনের মেডিকেলে যাবো,
পরিকল্পনা করলাম।
সকল কাজ সেরে অরিনের অফিসের দিকে
রওনা দিলাম।
গিয়ে দেখি অরিনের সামনে লম্বা লাইন।
আমিও লাইনে দাড়িয়ে গেলাম।
প্রচন্ড রোদ পড়ছে, অসহ্য গরম, এর ভিতরেও
আমি লাইনে দাড়িয়ে আছি।
শেষ পর্যন্ত আমার সিরিয়াল আসল।
-কি সমস্যা আপনার (মাথা নিচু করে
জিঙ্গেস করল)
-না তেমন কিছু না, সামান্য একটু জ্বর।
-সামান্য কারনে আমার কাছে আসা
লাগবে।
-কি করবো বলুন, আপনি নাকি অনেক বড়
ডাক্তার আর সেইজন্য তো এখানে আসছি।
-কাগজে ওষধ লেখা আছে, কিনে নিয়ে
নিয়ম অনুযায়ী খেয়ে নিবেন।
-একটা কথা বলি।
-বলেন।
-আমার বউও ডাক্তার তবে এমন ভাবে
কোনদিন আমাই এই কথা গুলো বলে নি।
-অরিন তখন উপরের দিকে তাঁকিয়ে দেখে
আমি দাড়িয়ে আছি ।
কি ব্যাপার অভি তুমি এখানে কেনো।
-আমি অসুস্থ তাই এখানে।
ডাক্তারের কাছে সবাই কেনো আসে তুমি
জানোনা।
-হুম জানি তো। তবে এত রোদের মাঝে
দাড়িয়ে থাকবে।
-দেখলাম এদের কেমন কষ্ট হয় দাড়িয়ে
থাকতে।
-হয়েছে এখন ভিতরে গিয়ে বসো, এদেরকে
দেখে আমি আসছি।
-কিছুদুর যেতেই আমার মাথাটা ঘুরতে শুরু
করল।
আমি মাটিতে পড়ে গেলাম। আর কিছুই মনে
নেই।
-একজন নার্সকে দেখছি আমার সেবা করছে।
-এইযে আমি এখানে কি করে আসলাম।
-আপনি মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন,তখন
আমরা আপনাকে এখানে নিয়ে আসি।
আমাদের অরিন ম্যাডাম আপনার সব কিছু
চেকাপ করে বললেন আপনি একটু দুর্বল হয়ে
পড়েছেন। আপনার এখন রেষ্ট দরকার ও
ভালো খাবার দরকার।
আপনার বাড়িতে তো আমরা জানাতে
পারিনি, যদি ঠিকানাটা বলতেন।
-জানানো লাগবে না আমি একাই যেতে
পারব। আপনি এখন আসুন।
..
..
-ঘন্ঠা খানিক পরে অরিনের আগমন।
-আজকে বাড়িতে চলো তোমাকে আজকে
বুঝাবো।
-কি বুঝাবে।
-অংক করে সেটা বুঝাবো। তুমি তো অংক
বুঝো না।
-উহু আমি তো পারি।
-উহু করে লাভ নাই চলো।
..
.
-বিকালের দিকে অরিনের সাথে বাসাই
আসলাম।
-যাও ফ্রেস হয়ে এসো, আমি খাবার
টেবিলে নাস্তা দিচিছ।
-ফ্রেস হয়ে খাবার টেবিলে এসে দেখি
অনেক ধরনের খাবার।
-কি ব্যাপার অরিন এতো খাবার কে খাবে।
-কেনো তুমি খাবে। তোমার তো শরীর
খারাপ। ভিটামিনের অভাব আছে তোমার।
সেইকারনে পুষ্টিকর খাবার গুলো রান্না
করছি।
-কে বলেছে তোমাই, আমি তো ঠিকই আছি।
-তখন তুমি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলে, চেক করে
দেখেছি সেই সময়।
-উহু আমি খাবো না এতো খাবার।
-না বলে কোন লাভ নেই। সব গুলো তোমার
জন্য রান্না করেছি, তুমিই সবগুলো খাবে।
-জোর করছ।
-জোর করব কেনো।তোমার কোনকিছু হলে
তো আমার অনেক সমস্যা হবে।
-তোমার আবার কি সমস্যা হবে।
-তুমি সেটা বুঝবে না। তোমার কোনকিছু
হয়ে গেলে আমি বাঁচব না। তুমিই তো
আমার সব।
-আমি আর কিছু বলতে পারলাম না।
-অরিনের কথামতন সব খাবার গুলো খেয়ে
নিলাম। না হলে আবার কখন কি করে বসে।
..
..
-রাতে অরিন রুমে বসে টিভি দেখছিলো ।
-আমি একটু বাইরে গিয়েছিলাম, এসে দেখি
অরিন সোফাতে বসে আছে।
-কি দেখছো অরিন।
-দেখছো না টিভি দেখছি।
-ও ও, একটা কথা ছিলো।
-বলো কি কথা।
-আমিও একটু টিভি দেখব।
-তো দেখো মানা করছে কে।
-তোমার কোলে মাথা দিয়ে টিভি
দেখবো।
-শখ কত তোমার।
-হু, দিবে না মাথা রাখতে।
-কেউ কি মানা করেছে ।
-না করেনি।
-তাহলে জিঙ্গেস করছ কেনো ।
-অরিনের কোলে মাথা রেখে আমিও টিভি
দেখতে শুরু করলাম।
-অরিন আমার মাথাই হাত বুলিয়ে দিচেছ,
আর মনযোগ সহকারে টিভি দেখছে। দেখুক
না টিভি, সারাদিন সে কত কাজ করে ,
একদিকে বাড়িতে অন্যদিকে তার
ডাক্তারি।তারপরেও সে একলা কতকিছু
সামাল দেয়। কি করে যে করে এতগুলো কাজ
আমি বুঝিনা।
অরিন কে পেয়ে আমি আসলেও অনেক সুখী
যেটা বলে কখনো শেষ করা যাবে না।
তোমাকে অনেক ভালোবাসি অরিন।
-কোন কথা নেই একভাবে টিভির দিকে
তাঁকিয়ে আছে।
কিছুক্ষণ পরে আমিও তোমাকে তোমার
চেয়ে বেশি ভালোবাসি অভি।
-পাগলি একটা।
-তোমার।
______সমাপ্ত_______

No comments:

Post a Comment