Saturday, November 5, 2016

আমার লক্ষী বউ জুনিয়র Vs সিনয়র

আমার লক্ষী বউ
জুনিয়র Vs সিনয়র
||
||
অর্নাস তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রাতুল।
মোটামুটি মেধাবিই ধরা চলে। ভালই
দিন চলছিলো তার।
কখনই ভাবে নি তার জীবনে প্রেম
ভালবাসা নামক ছন্দটা চলে আসবে।
তাও আবার সিনিয়র কাউকে
ভালবাসবে।
একদিন রাতুল ক্যাম্পাসে বসে আছে
বন্ধুদের সাথে হঠ্যাৎ তার সামনে
দিয়া চলে গেলো একটি মেয়ে।
জীবনের প্রথম ক্রাশ খেলো রাতুল
বন্ধুদের বললো আচ্ছা দোস্ত ঐই
মেয়েটা কেরে,আরে জানি না?
রাতুল মেয়েটাকে ফলো করতে
থাকলো।
এভাবে বেশ কয়টা দিন কেটে গেলো।
সবার কাছে থেকে জানতে পারলো
মেয়েটা নাকি ওর সিনিয়র।
নাম জান্নাত কি করবে রাতুল ভেবে
পাইনা।
যাইহোক ফলো করতে লাগলো একদিন
মেয়েটা রাতুলকে ডাক দিলো।
মেয়েটা:এই ছেলে শোনও।
রাতুল:আমাকে ডাকছেন।
মেয়েটা:হ্যা তোমাকেই।
রাতুল:জ্বী বলুন।
মেয়েটা:সমস্যা কি তোমার।
রাতুল:কোনও সমস্যা নেই তো।
মেয়েটা:প্রতিদিন ফলো করো কেনো।
রাতুল:একটা কথা বলবো।
মেয়েটা:বলো।
রাতুল:আপনি কি প্রেম করেন।
মেয়েটা:এক চড়ে দাদ ফালাইয়া দিমু
সব।
রাতুল:আপনার নামতো জান্নাত রাইট।
মেয়টা:হুম জান্নাত তো।
রাতুল হাতের আঙ্গুল গুলা গুনতে গুনতে
গেল আর বলতাছে জান্নাত জান্নাত?
.
জান্নাত:কি অভদ্র ছেলে। রাতুল আবার
ফিরে আসলো।
রাতুল:আমাকে কিছু বললেন।
জান্নাত:জানো আমি তোমার
সিনয়র।
রাতুল:হ্যা তো।
জান্নাত:হ্যা তো মানে।
রাতুল:আম খাবো তার মানে সে
গাছে জাত বংশের নাম জানতে হবে।
জান্নাত:আমাকে গাছের সাথে
তুলনা করলা।
.
রাতুল:না তা না।
জান্নাত:তো কি বলো।
রাতুল:দেখুন আমি আপনার সাথে ঝগড়া
করতে আসি নি।
জান্নাত:তো কি জন্য তোমায়
ডাকছি।
রাতুল:জানিনা।
জান্নাত:আমাকে ফলো করো কেনো?
.
রাতুল:একটু একটু লাভ করি।
জান্নাত:কি আজিব।
রাতুল:সরি,বুঝতে পারি নি।
রাতুল মাথা নিচু করে চলে আসলো।
কেনো জানি জীবনের প্রথম হেরে
চলে আসলো।
তারপর চার পাচ দিন চলে গেলো
জান্নাত রাতুলকে অনেক খুজলো
পেলোই না।
একদিন কলেজে একটা আয়োজন হচ্ছিল
হঠ্যাৎ জান্নাত দেখে রাতুল।
জান্নাত:এই রাতুল এই রাতুল। এ কদিন
কোথায় ছিলে তুমি।
রাতুল:কোথাও না বাড়িতে কেনো
বলুন তো।
জান্নাত:ভালবাসো যাকে তাকে এক
মুহুর্ত না দেখে থাকতে পারলা।
রাতুল:জুনিয়র সিনিয়র এটা সম্ভব হয় না?
জান্নাত:আম ওহ্ তো একটি গাছে আগে
পরে পাকে,তাই কি আম গাছ না।
রাতুল হেসে দিলো।
রাতুল:সত্যি আপনি আমাকে
ভালবাসেন।
জান্নাত:হুম,আপনি কেনো তুমি ওকে।
রাতুল:তুমি।
জান্নাত:দেখো তো এই শাড়িতে
আমাকে কেমন লাগছে।
রাতুল:ঠিক আমার বউ এর মতো।
জান্নাত:জুনিয়র হয়ে সিনিয়রকে এতো
বড় কথা।
রাতুল:বড্ড ভালবাসি তোমায়।
জান্নাত:এক চড়ে সব গুলা দাত ফেলে
দিবো।
রাতুল:এমন করো কেনো।
জান্নাত:জুনিয়রকে শিখাচ্ছি সব।
রাতুল:চলনা বিয়ে করি।
জান্নাত:বিয়ে করে খাওয়াবে কি।
রাতুল:তোমার তো পড়াশুনা শেষের
দিকে পড়াশুনা শেষ করে চাকরি করবা
আমাদের সংসার চলে যাবে।
জান্নাত:ইস শখ কতো।
রাতুল আর জান্নাত সারাদিন অনেক
মজা করলো ফুচকা কতো কি খেলো।
একদিন রাতে জান্নাত রাতুলকে ফোন
দিয়েছে।
জান্নাত:কি করো।
রাতুল:হাটতেছি।
জান্নাত:এতো রাতে হাটো
কেনো,আমি আসবো একসাথে হাতে
হাত রেখে হাটবো।
রাতুল:ওকে আসো।
জান্নাত:চোখ বন্ধ করে ফিল করো আমি
আসছি।
রাতুল:একটু চুলটা টানি।
জান্নাত:কেনো।
রাতুল:ভুত না পেত্নি তুমি সেটা বুঝতে
হবে তো।
জান্নাত:শয়তান ছেলে সবসময় উল্টা
চিন্তা ভাবনা।
রাতুল:প্লিজ রাগ করো না হাতটা ধরি।
জান্নাত:লাগবে না,আমি অন্ধকারে
হারিয়ে যাবো খুশি থাকো তুমি।
রাতুল:আরে বাবা মজা করলাম তো।
জান্নাত:হইছে হইছে।
রাতুল:কোলে নেই তোমায়।
জান্নাত:ফেলে দিবা না তো।
রাতুল:না গো।
.
জান্নাত:চোখ বন্ধ করো তুমি আমায়
কোলে নিয়ে আছো, আমি তোমার
ঘাড়ে হাত দিয়ে আছি। কিছু ফিল
করতে পারছো।
রাতুল:হুম তারপর হঠ্যাৎ একটা ব্রিজ
সামনে পড়লো,কাছে গেলাম আর
তোমাকে পানিতে ফেলে দিলাম।
জান্নাত:শয়তান ছেলে এটাই চাও না
আমি মরি সাতাড় জানি কি।
রাতুল:তারপর আমিও ঝাপ দিলাম
তোমায় জাপটে ধরে তুলে আনলাম।
জানো তখন আমার কি ফিল হচ্ছিল।
জান্নাত:কি।
রাতুল:হিন্দি সিনেমার মতো শাহরুখ
দীপিকাকে তুলে আনলো।
জান্নাত:তুমি না সত্যি অনেক
রোমান্টিক।
রাতুল:হাউজ ফুল মুভি দেখছো।
জান্নাত:হ্যা।
রাতুল:এবার কোলেই তো আছো। হাউজ
ফুল এর অক্ষয় কুমারের মতো,হো জানে
মান মনে করে আবার ফেলে দিলাম।
জান্নাত:শয়তান ছেলে বেয়াদব।
লাইনটা কেটে গেলো।
রাতুল:হ্যালো হ্যালো।
ধুর কেনই যে মজা করি।
.
এভাবে ওদের ঝগড়া ঝাটি চলতেই
থাকে।
একদিন হঠ্যাৎ জান্নাত রাতুলকে ফোন
দেয়।
জান্নাত:রাতুল আমার বিয়ে ঠিক করে
ফেলছে বাবা।
রাতুল:কি বলো এসব,কি করবা।
জান্নাত:আমি ব্যাগ পত্র সব গুছিয়ে
বেরিয়ে পড়ছি।
প্লিজ আমায় ফিরিয়ে দিয়ো না।
রাতুল:কি বলো আমার বউ তার নিজের
বাড়িতে আসবে এতে বলার কি আছে।
বন্ধুরা সবাই মিলে ওদের বিয়ে
দিলো।
আজ ওদের বাসর রাত।
রাতুল রুমে যেতেই জান্নাত এসে
রাতুলকে সালাম করলো।
জান্নাত:আজ আমি অনেক খুশি।
রাতুল:এই কি করো পা
ছাড়ো সিনিয়র হইয়া জুনিয়ারের পা
ধরো ছি।
জান্নাত:শয়তান ছেলে একটা
চড় মারবো বেয়াদব।
রাতুল:নিজের জামাইকে এভাবে
নারী নির্যাতন করছো সরি পুরুষ।
জান্নাত:সবসময় ফ্যাযলামো করো ধেত।
রাতুল:জান্নাতকে পা থেকে সরিয়ে
বুকে নিলো,তোমার স্থান পায়ে নয়
আমার বুকে।
রাতুল আর জান্নাতের একটি সপ্নময়ী
রাত সাফল্য হলো।
সকাল বেলা ভেজা চুলে জান্নাত
রাতুলকে ভিজে দিলো।
.
জান্নাত:উঠো উঠো বলছি কলেজে
যাবা।
রাতুল:ঘুমাতে দাও না একটু।
জান্নাত:বিয়ে তো করলাম একটা
চাকরি খুজতে হবে এখন কিভাবে
নিজেরা চলবো।
রাতুল:সমস্যা নাই হয়ে যাবে।
জান্নাত:কে নিয়ে দেবে বলো।
রাতুল:আরে মামাকে বলবো নি,হয়ে
যাবে।
জান্নাত:তাহলে তো ভালই হয় আমার
অর্নাস ওহ্ শেষ এ বছর জব করি। তুমি
অর্নাস শেষ করে বের হও তারপর দুজনে
মিলে মাস্টার্স শেষ করবো।
.
রাতুল জান্নাতের জন্য একটা চাকরি
ব্যাবস্থা করলো।
সুখের সংসার চলছে ওদের। একদিন
রাতুলের অনেক বন্ধু বেড়াতে আসলো
জান্নাত ওহ্ বাসায়।
বন্ধুরা:আরে দোস্ত ফ্যামিলি
প্ল্যানিং এর কি অবস্থা।
রাতুল:পুরা বিনদাস ১২বছরের টার্গেট।
বন্ধুরা:মানে।
রাতুল:১২বছরে ১২টা হবে
বাচ্চা,পুরা বাংলাদেশ টিম।
ওদিকে জান্নাত রান্না ঘর থেকে সব
শুনে ফেলেছে।
জান্নাত:শয়তান ছেলে কোথাকার
বেয়াদব কি বললা এসব।
রাতুল:এই তো টি টোয়েন্টি
খেলছি, রাগো ক্যান।
জান্নাত:এমন কথা বলবাতে একদম
ডির্ভোস দিয়ে, গলায় রশি দিয়ে মরে
যাবো।
রাতুল মুখটা চেপে ধরে।
রাতুল:কখনো এমন বলবা না তুমি আমার
দশটা না পাচটা না একটা মাত্র বউ।
সবার সামনে রাতুল জান্নাতকে কিস
করলো।
বন্ধুরা চিল্লাইয়া ফেললো নো বল
পিপ।
জান্নাত:শয়তান ছেলে ছাড়ো।
রাতুল:না ছাড়বো না।
জান্নাত:প্লিজ ছাড়ো।
রাতুল:আজ ইউকেট হাতে নেবই।
জান্নাত রাতুলকে টেনে নিয়ে অন্য
রুমে গেলো।
জান্নাত:তোমার কি লজ্জা শরম বলতে
কিছুই নেই সববার সামনে।
রাতুল:লোভ সামলাতে পারি নি।
জান্নাত:এখন কি করবা করো। রাতুল
জান্নাতকে_থামুন থামুন বুঝে নিন।
রাতুল:লক্ষী বউ আমার।
দেখতে দেখতে দুইটা বছর কেটে যায়
রাতুলের ঘরে ফুটফুটে একটি মেয়ে হয়
মেয়েটাকে দেখতে ঠিক জন্নাতের
মতো।
মেয়েটার নাম রাইটারের পছন্দের নাম
অথৈই।
তাদের কোল জুড়ে অথৈই আসে। ওরা
দুজনে মাস্টার্স শেষ করে। দুজনেই জব
করে,জান্নাতের বাবা মা ওদের
মেনে নেয়।
জান্নাত:অথৈইকে কখনই
জুনিয়র এর সাথে বিয়ে দেবো না।
রাতুল:আমি কি করলাম আবার।
জান্নাত:বেশি মায়া থাকে
জুনিয়ারদের প্রতি বুঝলা।
রাতুল:ওহ্ আচ্ছা।
চলছে রাতুলের লক্ষী বউকে নিয়ে
জুনিয়র Vs লক্ষী বউ।

No comments:

Post a Comment