Thursday, July 21, 2016

___স্নিগ্ধিত আকাশ___ (2nd part)

___স্নিগ্ধিত আকাশ___
(2nd part)
=====
স্নিগ্ধা!!! স্নিগ্ধা আমার সামনে দাড়িয়ে।
আমার দুচোখকে আমি বিশ্বাস করাতে পারছিলাম
আমার দুচোখকে আমি বিশ্বাস করাতে পারছিলাম
না।।
ও এখানে কেন???
এখানে কিভাবে আসল ও??
.
মাথায় কিছুই ঢুকছিল না আমার।। এর মধ্যেই আবার ও
আমায় নাড়া দিয়ে বলে উঠল,,,
"কি সাহেব! কি কুমতলব আঁটা হচ্ছে??
আমাকে ফাঁসানোর চিন্তা করা হচ্ছে বুঝি!!"
.
আমি অবচেতনভাবে দু পাশে মাথা নাড়িয়া 'না' বুঝালাম।
এবার ও আমার হাতটা শক্ত করে ধরে আমাকে
রুমে নিয়ে আসল...
.
দুজনে চুপচাপ খাটে বসে আছি। আমার দিকে
অপলক নেত্রে তাকিয়ে আছে দুজনে চুপচাপ
খাটে বসে আছি। আমার দিকে অপলক নেত্রে
তাকিয়ে আছে ও।
আমার লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে আর ওদিকে ওনি আমার
দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে।
.
আমি নিচের দিকে তাকিয়ে রইলাম। হঠাৎ আওয়াজ
ভেসে আসল,,
"কি! পাত্রী দেখা হয়েছে?? (লজ্জাবনত
চেহারায়)"
আমি নিচের দিকে তাকিয়েই সম্মতিসূচক মাথা
নাড়ালাম।।
.
-- কি দেখলে?? আমাকে তো ভালোভাবে
একটু চেয়েই দেখলে না। তো, 'হ্যাঁ' বলছ
যে!!
- না দেখেছি তো!! আর প্রতিদিনই সবসময়ই
তো দেখি।।
-- তো, কি! পছন্দ হয়নি??
- হুমম, হয়েছে। (ক্ষণস্বরে)
-- হুম, এই কথাট যেন মনে থাকে!! (একটু অভিমান
মিশিয়ে)
.
মৌনতাতে সম্মতি বুঝালাম.. আবার ও বলে উঠল,,
"এই রুমের বাহিরে গিয়ে যদি মত পাল্টাও তবে
বুঝবে তোমার অবস্থা আমি কি করি!!
এখন তো শুধু বকা ঝকা করি, বাইরে গিয়ে যদি
সবাইকে বলো যে,'পাত্রী পছন্দ হয়নি।' তবে
দেখবে তোমার কি দশা করি আমি! হুম.. "
.
আমি সুবোধ বালকের মত মাথা নাড়ালাম।
যেই না উঠে চলে যেতে চাইলাম, অমনি ও খপ
করে ধরে বসল আমায়।।
আরেকটু কাছে টেনে নিয়েই ঝাঁঝের সাথে
বলল,,
"আমি যেতে বলছি তোমায়?"
আমি ডানে বামে মাথা নাড়লাম।.
"তো উঠলে যে!! এখনই এমন! বিয়ের পর এমন
হলে তো............."
.
আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেল।
ইরিম্মা!! বিয়ের আগেই এমন হুমকি! আল্লাহই
জানে, বিয়ে করলে জানি কি করে!!
.
এই জন্যই বন্ধুরা বলেছিল, "বিয়ে না করে পালিয়ে
যায়.. হাজার কষ্টে থাকলেও মনে শান্তি পাবি।"
.
তখন ওদের কথায় বেশী একটা পাত্তা দেইনি।
এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি, বিয়ে যে কি জিনিষ!!
___ শুধু আফসোস হচ্ছে, কেন যে ওদের কথা
শুনলাম না!
আমিও অবশ্য বিয়েকে আড়চোখেই দেখতাম।
কিন্তু তারপরও একবারের জন্য এক্সপেরিয়ান্স
করতে এসেছিলাম বিয়ে নিয়ে। কিন্তু এখন দেখছি
বিয়ে ই আমাকে এক্সপেরিয়েন্স করতাছে।।
.
আফসোসে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল।।
এত বড় দম ছাড়তে দেখে ও বলে উঠল,,,
"কি! অসহ্য লাগছে??
হুম... ঠিক আছে যাও... তবে হ্যাঁ! যদি গিয়ে বল
যে, 'আমি এই বিয়ে করব না।' তবে পরে আর এই
দীর্ঘশ্বাস ও ফেলার টাইম পাবে না।।"
.
আমি ওর দিকে তাকিয়ে একটা তৃপ্তির হাসি দিয়ে
দরজার দিকে এগোতে লাগলাম।।
হঠাৎ আবার ও ডাক দিয়ে উঠল,,,,
.
ধ্যাৎৎৎ! আবার জ্বালা। তারপরও মুখে একটা কৃত্রিম হাসি
নিয়ে ফিরলাম।
দেখলাম, ও বসা থেকে দাঁড়িয়েছে।
আমার কাছে এসে আবার আমার হাতটা ধরে বলতে
লাগল,,,
"তোমার চেহারা দেখে মনে হচ্ছে তুমি যুদ্ধ
করে যাচ্ছ। আর বাহিরের কেউ যদি এই অবস্থা
দেখে তবে বলবে,"এই দেখো! হবু শুশুর
বাড়ির জামাই আদর।...বিয়ের আগেই হবু বউকে
দেখতে গিয়েই ছেলটার এই অবস্থা! আর বিয়ের
পর জানি কি অবস্থা হয়!"
তখন!! তখন তো সবাই আমাকে অত্যাচারীনী
বলবে।
আচ্ছা তুমিই বলো, আমি কি তোমার উপর কোন
অত্যাচার করেছি??"
.
আমি রোবটের মত শুধু মাথা ডানে বায়ে নাড়ালাম।
ও বলল,
"হুম..এই তো আমার লক্ষী বাবুটা!"
.
এই বলে আমাকে টেনে বেসিনের দিকে
নিয়ে চলল...
বেসিনে নিয়ে আলতো করে আমার মুখ ধুয়ে
দিতে লাগল ও।
আমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করতে লাগলাম ওর আচরণ।
যার ভয়ই কিনা এতক্ষণ কুঁকড়ে যাচ্ছিলাম, তার মাঝেই
এত আদর!!
ওর প্রতিটি স্পর্শে আমি কোথায় যেন হারিয়ে
যাচ্ছিলাম। আমি হয়ত ওকে নিয়ে স্বপ্নও বুনতে
শুরু করেছিলাম,,
হঠাৎ ওর আওয়াজে কল্পনার জগৎ থেকে ফিরে
এলাম।।
"কি সাহেব! আর কত মুখ ধুইয়ে দিব! আমার তো
হাত ব্যাথা হয়ে গেল।"
আমি খুব লজ্জা পেলাম। আমার লজ্জিত অবস্থা
দেখে ও মুচকি হেসে উঠল....
"তুমি কি আমার উপর এখনো রাগ করে আছ??
(অভিমানী গলায়)
রাগ করে না বাবু,,, আমার হবু বরের সাথে দুষ্টামী
না করলে কার সাথে করব বলো???
এখন একটা মিষ্টি হাসি দাও!"
.
আনমনেই আমার মুখে হাসি ফুটে উঠল।।
.
"এই তো আমার লক্ষী বাবুটা! এখন যাও, অনেক্ষণ
হয়ে গেল তো,,,,"
তারপর আমার ঘারে আলতো ছুয়ে কানের কাছে
এসে বলতে লাগল,,,
"এখনই যদি তোমাকে সব দেখে ফেলি তো,
বিয়ের পর আর কি দেখব, হুম.....
আর হ্যাঁ! পাত্রীটা সত্যিই পছন্দ হয়েছে তো!!"
.
কথাটা সলজ্জে বলে আমার দিকে তাকিয়ে একটা
মুচকি হাসি দিয়ে বারান্দায় চলে গেল।।
আর আমি চুপচাপ চলে এলাম।!
.
বের হয়ে একটু আসতেই কোত্থুকে যেন
উড়ে আসল ফুফাত বোনটা।।
এসেই বলতে লাগল,,,
"কি ভাইয়া! বিয়ের আগেই ইটিস পিটিস সেরে
ফেললে নাকি! এতক্ষণ লাগল কেন?? কি করেছ??
হুম.... হি.হি.হি"
.
ওর কথা শুনে লজ্জায় কুঁকড়ে যাচ্ছিলাম আমি। আর
আমার এমন অবস্থাটা যেন ওর হাসির খোরাক
আরো বাড়াচ্ছিল।
অবশেষে বলল,,
"ও তেমন কিছুনা ভাইয়া!
একটু আধটু....... হি.হি.হি!
কোন সমস্যা নেই,,
তবে হ্যাঁ! আমাকে কিন্তু ট্রিট দিতে হবে, নইলে
কিন্তু সব গোমর ফাঁস... হি.হি.হি"
.
পড়লাম আরেক গ্যাড়াপড়লাম আরেক গ্যাড়াকলে!!
আসলেই মাইয়্যা মানুষ একটা আজব চীজ।
না তাদেরকে সওয়া যায়, আর না কিছু বলা যায়!!
.
আব্বুকে আসতে দেখে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস
ফেললাম.. আব্বু এসেই বলল,,
"কিরে! ১ ঘন্টা লাগিয়ে তো মেয়ে দেখলি!
তো, মেয়ে পছন্দ হয়েছে তো!"
.
আমি বাবার দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিলাম। বাবাও
আমাকে দেখে হাসলেন।
পেছন থেকে হঠাৎ মা এসে বলতে লাগল,,
"ও পছন্দ করুক বা না করুক, তাতে কি! মেয়ে
আমাদের পছন্দ। আর এই মেয়েকেই ওর বিয়ে
করতে হবে। ওকে তো শুধু বিয়ের আগে
মেয়েটাকে একটু দেখাতে নিয়ে আসলাম।।"
.
আমি তো আম্মুর কথা শুনে পুরাই টাস্কিত!!
আমার রাগ উঠে গেল..
তারা মানে আমার মতামতের কোন দাম নেই??
.
.
.
চলবে_____,,,,,

No comments:

Post a Comment