Thursday, July 21, 2016

''অভিমানী ভালোবাসা''

''অভিমানী ভালোবাসা''
.
.
ফোন স্ক্রীনে রাফাতের নাম্বারটা ভেসে
উঠতে দেখেই আরোহীর বুকের ভেতর হালকা
মোচর মেরে উঠল। সেই সাথে রাজ্যের সকল
রাগ অভিমান যেন একসাথে এসে বুকের
ভেতর হানা বিধতে লাগল। হন্তদন্ত হয়ে
একটা সিদ্ধান্ত নিয়েই নিল, ওর সাথে কোন
কথা নাই। গত দুইদিন কোথায় ছিল ও?
আরোহী একটা বিষয় ভেবেই কুল পায় না যে
ছেলে ওর সাথে কথা বলা ছাড়া এক ঘন্টাও
থাকতে পারেনা সে কিনা টানা দু'টা দিন
ওর সাথে কথা না বলে কিভাবে থাকতে
পারল! এইবুঝি ওর ভালবাসা? ও কথা না বলে
থাকতে পারলে আমিও পারব। কথাগুলো
ভাবছে আর রাগে গজগজ করতে থাকে
আরোহী। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার ফোনটা
বেজে গেছে। এই ছেলেটাও না একটা
নাছোড়বান্দা! যতক্ষন ও ফোন পিক না
করবে কতক্ষন একনাগারে ফোন দিয়েই
যাবে। শেষমেষ নিজের কাছে হার মেনে
ফোনটা পিক করতেই হল।
-হ্যালো টিয়াপাখি!
রাফাতের কথা শুনে আরোহীর রাগ যেন
মুহুর্তেই কোথায় উধাও হয়ে গেল। এই
ছেলেটা কত সুন্দর করে ওকে টিয়াপাখি
বলে ডাকে! আচ্ছা এত মিষ্টি করে ডাকার
কি আছে? পাগল একটা! আরোহীর এত রাগ
করার পেছনের কারনও আছে। গতকাল ওর
জন্মদিন ছিল। ও ভেবেছিল রাফাতই প্রথমে
ওকে উইশ করবে। কিন্তু কোথায় কি? গত
দুইদিন ধরে সাহেবের কোন খোজই নাই!
ভাবতেই আরোহীর কষ্ট হচ্ছে কত কিছুর
প্লান করে রেখেছিল ও! ঐদিনটা কেবল দুজন
একসাথে কাটাবে। এয়ারপুটের পেছনে ওর
পছন্দের সেই লেকটাতে যাবে। কতদিন হয়ে
গেল সেখানে যাওয়া হয়না। একসাথে
হাতে হাত রেখে হাটবে। ফাকে ফাকে
দুজন দুজনের দিকে আড়চোখে তাকাতে
গিয়ে চোখাচোখি হবে। আর তখন দুজনেই
লজ্জায় হেসে চোখ গুড়িয়ে নেবে। আরো
কতকিছুইনা ভেবেছিল মেয়েটা কিন্তু
কিছুতেই কিছু হলনা। আরোহীকে চুপ
থাকতে দেখে ও বলল
-কি হল! কথা বলবেনা তুমি?
-না বলব না, তোমার সাথে কোন কথা নাই?
গতদুই দিন কোথায় ছিলে তুমি? আমার কথা
কি একবারও মনেপরে নি? তখন কথা বলার
ইচ্ছেটা কোথায় ছিল তোমার? একদম কথা
বলবানা তুমি।
একনাগারে কথাগুলো বলে গেল আরোহী।
রাফাত ছেলেটা ওকে এমনিতে ভিষন ভয়
পায়। ওর ঝারি খেয়ে ভয়ে কাচুমাচু হয়ে
থাকে সবসময়। আরোহীও কম যযায় কিসে!
একটা সুজোগ পেলেই চলে। নিজেকে কঠিন
করে একগাধা কথা শুনাতে একটুও দেরি করে
না। কেবল রাফাতের ভীতু চেহারাটা
দেখার জন্যই এমনটা করে ও।
-আসলে….
কিছু বলতে গিয়েও চুপ করে গেল রাফাত।
আরোহীর রাগটা যেন আরো একধাপ উচুতে
উঠে গেল আর বলল
-আসলে কি…?
আবারও ওপাশে কিছুক্ষন নিরবতা।
-সেদিন অফিস থেকে বাসায় ফিরে দেখি
মায়ের পেশার ল করেছে। মায়ের শরীর
ভীষন খারাপ হয়ে যায়। আমি মাকে নিয়ে
হাসপাতালে ভর্তি করি। হঠাৎ মায়ের এমন
অসুস্থতা আমাকে খুব হার্ড করে আমি
চারপাশে অন্ধকার দেখতে থাকলাম।
মায়ের কিছু হলে আমি কি নিয়ে বাচব?
তুমি তো জানই আমার পৃথিবী জুরে মা-ই
রয়েছে। আমি মাকে হারাতে চাইনা। গত
দুইদিন টানা চিকিৎসার পর আজকে যখন
ডাক্তার বলল 'আর কোন ভয় নেই তিনি এখন
পুরোপুরি সুস্থ' তখন রিলিস করে একটু আগে
বাসায় আসলাম। যখন রিলিস পেপারে
সাইন করি তখনই খেয়াল করলাম আজকে ২৩
তারিখ। গতকাল তোমার জন্মদিন ছিল
যেটা ব্যাস্ততার জন্য ভুলে গেছি। মাকে
বাসায় শুইয়ে দিয়েই তোমাকে ফোন
দিলাম। বিশ্বাসকর আমার সত্যিই খেয়াল
ছিলনা। মায়ের চিকিৎসার জন্য এদিক
সেদিক দৌড়ে আমি সবকিছুই ভুলে
গেছিলাম। আমি সরি আর এমন হবেনা।
রাফাত একেবারে অপরাধীর মত কথাগুলো
বলে গেল। কথগুলো শুনে আরোহী একেবারে
স্তব্দ হয়ে গেছে, ও কি বলবে ভাষাই খোজে
পাচ্ছেনা। ছেলেটা এতবড় বিপদের মধ্য
দিয়ে গেছে আর ও কিনা একটাবারও ফোন
দিয়ে জানতে চায়নি কি হয়েছিল!
কথাগুলো ভাবতেই আরোহীর লজ্জায়
গুটিয়ে আসার মত অবস্থা হল। রাফাতের
আপন বলতে একমাত্র ওর মা। ওর বাবা মারা
যাবার পর তিনিই তাকে কষ্ট করে মানুষ
করেছে। আরোহী ধরাগলায় জানতে চাইল
-আম্মু শরীর এখন কেমন? ওনাকে ঠিকমত যত্ন
নিচ্ছ তো?
-হ্যা, এখন সব ঠিক আছে চিন্তা করনা তুমি।
দু'এক দিনের ভেতরই সব আগেরমত হয়ে
যাবে।
-চিন্তা করব না মানে? ঐ তুমি এত ফাজিল
কেন? এতবড় বিপদেও আমাদের জানালে
না। ওনার যদি কিছু একটা হয়ে যেত তখন কি
হত? কি করতে তুমি? তোমাকে না কষিয়ে দু
গালে দুটা থাপ্পর দিতে ইচ্ছা করছে, গাধা
একটা।
রাফাত দুষ্টুমির ছলে বল
-তাহলে আদর দিবে কে?
আরোহী এবার ফিক করে হেসে দিল। আর
বলল
-বিয়েটা কেবল হোক তারপর দেখ তোমার
কি করি! এমন মজা দেখাবনা হারে হারে
টের পাবা চান্দু।
-তাই নাকি মেডাম! আচ্ছা শুন না, আজকে
আকাশ দেখেছ? চাঁদটাকে খুব সুন্দর
দেখাচ্ছে। তুমি পাশে থাকলে রাতটা গল্প
করে কাটিয়ে দেয়া যেত।
-সত্যি বলছ? কই দেখিনি তো? দাড়াও
জানালটা খোলছি।
আরোহী যেন সত্যিই অবাক হল। আজকে
চাঁদটাকে ভিষন মনোরম লাগছে। ইস এখন
যদি রাফাত ওর পাশে থাকত তাহলে কি
মজাটাই না হত! ভাবতেই মন খারাপ হয়ে
গেল ওর। কিন্তু রাস্তায় চোখ পড়তেই ওর
শরীরে চিকন একটা স্রোতের প্রবাহ বয়ে
গেল। কিছুক্ষন কিছুই বলতে পারল না। মুখ
একেবারেই হা হয়ে গেল। রাস্তার ঠিক
বিপরীত পাশে দেয়ালের সাথে একটা
অবয়ব দেখা যাচ্ছে। আরেকটু কনফার্ম হবার
জন্য ভাল করে দেখেনিল আরোহী।
সোডিয়াম লাইটের আলোতে রাফাতকে
চিনতে বেশি সময় লাগলনা। ভাবতেই
আরোহীর মনে একপ্রকার ভাললাগা বয়ে
গেল। ঐ তো রাফাত! একহাত পকেটে গুজে
অন্য হাতে কানের কাছে ফোনটা ধরে
দাড়িয়ে আছে।
-এই, এত রাতে তুমি এখানে কি করছ?
আরোহীর কন্ঠে উদ্বিগ্নতা।
-টিয়াপাখি তোমাকে দেখতে ইচ্ছে হল
তাই চলে আসলাম। গত দুইদিন না দেখে
খারাপ লাগছিল। আজকেও সারারাত ঘুম
আসত না অস্থিরতায় ভোগতাম সারারাত।
তাই বাধ্য হয়েই এ কাজ কারতে হল।
আরোহী ঠিক কি করবে ঠিক বুঝে উঠতে
পারছেনা। ও কি জানালার গ্রিল খোলে
লাফ দেবে নাকি বাসা থেকে বের হয়ে
নিচে যাবে তা বুঝতে পারছে না। ছেলেটা
কত পাগল আর কত্ত ভালবাসে ওকে!
এতরাতে দেখার জন্য ছুটে আসছে। রিয়া
মোবাইল একদিকে ছুড়ে ফেলে রাফাতের
উদ্দেশ্য ভু দৌড় দিল। পাশের রুম থেকে
মিসেস রোহী বিষয়টা লক্ষ্য করে জানতে
চাইল
-এত রাতে নিচে যাচ্ছিস কিজন্য?
-আম্মু রাফাত এসেছে নিচে ওর কাছে
যাচ্ছি।
-তাই নাকি? তাহলে তো ভালই হল এক কাজ
কর এত রাতে ওকে বাসায় পাঠাবার দরকার
নেই আমাদের এখানে থেকে যেতে বল।
সকালে নাহয় এখান থেকে অফিসে চলে
যাবে।
-আচ্ছা ঠিক আছে নিয়ে আসছি।
সময়টা ছিল চৈত্র মাস। এমনি এক রৌদ্রদগ্ধ
দুপুরে রাফাত ভার্সিটির ফাইনাল পরীক্ষা
দিয়ে বাসায় ফিরছিল। কিছুদূর আসতেই
খেয়াল করল রাস্তার একপাশে একটা মেয়ে
কিছু বাচ্ছা ছেলেদের নিয়ে আইস্ক্রীম
খাচ্ছে। গরম আর রৌদ্রতাপে রাফাতের
তখন গলা শুকিয়ে একেবারে কাঠ।
আইস্ক্রীম খাওয়ার ইচ্ছেটা আর দমিয়ে
রাখতে পারল না। মুহুর্তে লজ্জা জিনিসটা
ভুলে ও বলল
-ইক্সিউজ মি সিস, আমি কি আইস্ক্রীম
খেতে পারি।
আরোহী পিছনে তাকিয়ে দেখল একটা
ছেলে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। চেহারা
রৌদ্রের তাপে যেন ঘেমে একাকার
অবস্থা। তবে ছেলেটার চেহারাতে কেমন
যেন নেশা ধরানোর মত একপ্রকার মায়া
ছিল যেটা আরোহীর চোখে এড়িয়ে যেতে
পারল না। তারপরও কোন রকম পাত্তা না
দিয়ে বলল।
-হ্যা অবশ্যই খেতে পারেন কেউ তো
আপনাকে ধরে রাখেনি।
আরোহীর এমন কথায় রাফাতের মুখটা
একেবারে কালো হয়ে গেল। মন খারাপ করে
একপাশে গিয়ে দাড়িয়ে রইল। কিছুক্ষন
বাদেই বিষয়টা আরোহীর নজরে পড়লে ও
আবার জানতে চাইল
-কি ব্যাপার আপনি না আইস্ক্রীম খাবেন?
তাহলে খাচ্ছেন না কেন?
-আসলে হয়েছে কি আমার কাছে না একদম
খুচরা টাকা নাই। তাই আপনাকে বলছিলাম
খাওয়াতে পরে একসময় শোধ করে দিবব।
আরোহী এবার ছেলেটার দিকে ভাল করে
তাকাল। দেখে তো বেশ ভদ্রই মনে হচ্ছে।
তবে কোন মতলব নেই তো? আরোহী যেন
দিধায় পরে গেল আর বলল।
-শোধ করবেন কিভাবে আপনি কি আমাকে
চেনেন? দেখেন আপনাদের মত ছেলেদের
আমার ভাল করেই জানা আছে। টাকা শোধ
করার জন্য দেখা যাবে আপনি আমার
নাম্বার চেয়ে বলবেন রিচার্জ করে দিব।
তারপর হিরো ভাব নিয়ে পটানোর ফন্দি।
সরি মিষ্টার আমি এসবে নেই।
-দেখুন মিস সবাইকে এক ভাবাটা আপনাদের
মত মেয়েদের মুদ্রাদোষে পরিনত হয়েছে।
আপনিই খান বেশি করে আমার খেতে হবে
না।
রাফাত আর সেখানে দাড়াল না। সোজা
বাসার উদ্দেশ্য হাটা দিল। আরোহীর
নিজের উপর খুব রাগ হল। আসলেই তো!
ছেলেটার বিষয়ে কিছু না জেনে হুট করে
একটা মন্তব্য করে দিল ও। কত আশা নিয়ে
ছেলেটা এসেছিল। এখন কি হবে? তারপরও
সংকোচ কাটিয়ে ডাক দিল ও
-এই যে মিষ্টার রাগ করবেন না প্লিজ আমি
সরি।
ঐদিন আইস্ক্রীম খেতে খেতে দুজনের মধ্যে
অনেক কথা হয়। দুর থেকে দেখেই
মেয়েটাকে ভাল লেগে গেছিল তাই ইচ্ছে
করেই প্লানটা করে ও। এর পর বেশকিছু দিন
কেটে যায়। হঠাৎ একদিন শপিংমলে দেখা।
সেদিন রাফাত একপর্যায়ে জোর করেই
আরোহীকে ক্যাফে উষাতে নিয়ে যায়।
দুপুরের লাঞ্চটা ওখানেই হয়। তারপর সবকিছু
যেন খুব তারাতারি এগুতে থাকে।
ভাললাগাটা ধীরে ধীরে ভালবাসায় রূপ
নেয়। প্রথম প্রথম আরোহীর খুব ভয় হত ওর
বাবা-মা যদি বিষয়টা মেনে না নেয়!
কিন্তু ছেলেটার ভেতর হয়ত যাদু আছে
নাহলে যেদিন ওর বাবা-মায়ের সাথে
প্রথম দেখা করতে আসল সেদিন থেকেই
ওদের পরিবারের আরেকজন সদস্য হয়ে গেল।
আরোহীর বাবা মা এখন ওর থেকেও বেশি
আদর করে রাফাতকে। করবেই বা না কেন?
অপছন্দ করার মত ওর কিছু ছিলনা।
আরোহী যখন রাফাতের সামনে দাড়াল
লক্ষ্য করল রাফাত ওর দিকে একদৃষ্টিতে
তাকিয়ে আছে। কত গভীর ছিল সে চাহনি
তা কেবল সেই জানে। এই জিনিসটা
আরোহীর খুব ভাল লাগে যখন রাফাত
সবকিছু ভুলে ওর দিকে বোকার মত চেয়ে
থাকে। এভাবে কিছুক্ষণ কেটে গেল আর
আরোহী লজ্জায় লাল হয়ে বলল
-কি?
-তোমাকে দেখি।
-আগে দেখনি?
-তোমাকে যতই দেখি ততই প্রেমে পড়ার শখ
জাগে। তাই চেয়ে থাকি প্রিয়।
-এভাবে ভেরার মত তাকিয়ে থাকবেনা।
এজন্যই তো বলি দিনদিন আমার চেহারার
এমন অবনতি হচ্ছে কেন। সব দোষ তোমার।
কথগুলো বলে মুখ বাকাল আরোহী। রাফাত
ওর কথা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়ল। তাও
একটা দুটা নয় একেবারে সাত আকাশ থেকে।
অবাক হয়ে বলল
-ওমা, আমি আবার কি করলাম!
-কিছু করনাই, সব আমিই করছি হয়েছে?
-উফ রাগ কর কেন? তোমার হাতটা দাও তো
দেখি।
-না দিব না, হাত দিয়ে কি হবে?
-আরে ধুর আরে দাও তো!
একপ্রকার জোর করেই আরোহীর হাতটা
টেনে নিল। শপিং করতে গিয়ে আরোহীর
পছন্দ করা সেই হীরের আংটিটা ওর হাতে
পড়িয়ে দিল। আরোহী তো খুশিতে
আত্মহারা হওয়ার অবস্থা। রাফাত সেদিন
লুকিয়ে এটা কিনে নিয়েছিল ওর জন্মদিনে
দিবে বলে।
-আমার যে এটা পছন্দ হয়েছিল তুমি সেদিন
বুঝলে কি করে?
-ভালবাসলে সবকিছুই বোঝা যায়। প্রিয়ার
চোখ দেখে যদি না বুঝি সে কি চায় তাহলে
কিসের প্রেমিক হলাম।
-হু, একদম ঢং করবা না। ভালবাসা চুয়ে চুয়ে
পড়ছে দেখি।
এইবার রাফাত আর দেরি করলা না।
আরোহীকে টেনে বুকে নিয়ে শক্ত করে
ধরল। আরোহী নিজেকে ছাড়ানোর ব্যার্থ
চেষ্টা করে রাফাতের বুকে এলোপাথারি
কিল ঘুসি মারতে থাকল। আর বলল
-এই কি করছ কেউ দেখে ফেলবে তো। ছাড়
প্লিজ! আব্বু আম্মু এখন জেগে আছে। দেখলে
কি ভাববে?
-দেখলে দেখুক। আমার বউয়ের সাথে আমি
যা ইচ্ছা তাই করব। এতে কার কি হ্যা?
-জ্বি না, আগে বিয়ে হউক তারপর বউ বলবে।
হু, শখ কত বিয়ে করার চিন্তা নাই আসছে বউ
বলতে।
রাফাতের মখ কালো হয়ে গেল। এরকম করে
বলার কি আছে। এই মেয়েটা না আস্ত একটা
ফাজিল। সারাক্ষণ শুধু খোচা দিয়ে কথা
বলা ছাড়া আর কোন কাজ নাই। রাফাতকে
রাগাতে পেরে আরোহী মুচকি হাসছিল।
ওকে রাগিয়ে ভিষন মজা পায় আরোহী।
কেবল একটু খোচা মারলেই চলে। বাচ্ছাদের
মত মুখ ফুলিয়ে তাকিয়ে থাকে।
-রাগ করলে? শুন না তোমার জন্য গুড নিউজ
আছে।
-কি?
-আম্মু বলেছে আজকের রাতটা আমাদের
বাসায় কাটাতে। এতরাতে বাসায় যেতে
নিষেধ করেছে।
-ওয়াও, সত্যি বলছ তো! এ দেখি মেঘ না
চাইতে বৃষ্টি! শ্বাশুরি আম্মাকে যে কি
বলে ধন্যবাদ দিব।
রাফাত দুষ্টুমি ভরা চোখে আরোহীর দিকে
তাকিয়ে থাকে। রাফাত কি বুঝিয়েছে তা
ঠিকই ধরতে পেরে লজ্জায় মাথা নিচু করে
বলে।
-একদম বাজে চিন্তা করবে না। তাহলে
কিন্তু বাসায় ঢুকতে দিব না।
রাফাতের মুখে আবারও বিরক্তির ছাপ। এই
মেয়ের মাথায় মনেহয় সমস্যা আছে।
নাহলে কথা কথায় ওর সাথে ঝগড়া করবে
কেন? অন্যদিকে আরোহী আবারও মিটমিট
করে হাসছে। তা দেখে রাফাতের রাগ হল
খুব। এমন করার কি আছে একটু নাহয় মজা
করছিল ও। তাই বলে এভাবে বলতে পারল।
বদমেয়ে কোথাকার!
অনেকক্ষন থেকেই জানালার পাশে বসে
আফজাল আহম্মেদ ও তার স্ত্রী মিসেস
রোহী আহম্মেদ ওদের এমন খুনসুটি
ভালবাসা দেখছিলেন আর হাসছিলেন।
ছেলেমেয়ে দুটো দিনদিন বড় হচ্ছে আর
ওদের পাগলামী গুলো যেন বেড়ে যাচ্ছে।
ওদের বিয়েটা খুব শিঘ্রই দেবার চিন্তা
দুজনেরই।
.
✍═══লেখাঃ রাফাত সাগর [দিশেহারা
রাজপুত্র]

No comments:

Post a Comment