Thursday, July 21, 2016

--------- খালি দুষ্টুমি ----------

--------- খালি দুষ্টুমি ----------

((লিখা: ফায়সাল আহম্মেদ শাওন))

রাতে অফিস থেকে এসে শুয়ে পড়লাম।। খুব
ব্যস্ততার মাঝে ছিলাম আজকের দিনটাতে।। রাত
তখন ১২:১৫ বাজে আমি তখন বিভর ঘুমে ছিলাম।।।
হঠাৎ কানের সামনে একটা আওয়াজ আসলো।।
আমি লাফ মেরে উঠে দেখলাম লিয়া বেলুনটা
ফুটিয়েছে।। ও বলা তো হলো না লিয়া আমার
বউ।। এইতো ছয় মাস হয়েছে আমাদের
বিয়ের।। তারপর আমি বলে উঠলাম এই কেমন
পাগলামি লিয়া।। এতো রাতে কেউ এমনটা করে??
লিয়া: আমি করলাম। কোন সমস্যা?
আমি: হুম আমি ঘুমাচ্ছিলাম আর তুমি এই কাজটা
করেছো।। আর ঘরের এই অবস্থা কেন?? সব
জায়গায় বেলুন দিয়ে এই সব কি করছো??
লিয়া:ক্যালেন্ডারটা সামনে এনে দেখিয়ে
বল্লো দেখো আজ কয় তারিখ??
আমি:হুম ২৪ তারিখ তো কি হইছে?
লিয়া: আরে গাধা আজ তোমার জন্মদিন।
আমি:মুচকি একটা হাসি দিয়ে বল্লাম। তাই বলে এমন
পাগলামি করবা।
লিয়া: বেশ করেছি এখন তারাতারি ছাদে চলো?
আমি:কেন ছাদে কেন?
লিয়া আমার আর কোন কথা না শুনে আমার হাতটা
ধরেই টানতে টানতে ছাদে নিয়ে গেলো।
<>
<>
ছাদে গিয়ে দেখলাম কি সুন্দর করে ছাদের এক
সাইড ও সাজিয়েছে। একটা টেবিল এর চারপাশে
কেন্ডেল আর মাঝখানে একটি কেক।। কেকটা
খুব সুন্দর করে ও বানিয়েছে।। আমাকে ও হাতে
একটা ছুরি দিয়ে বল্লো এখন কেকটা কাটো।
আমি ওকে আমার সামনে টেনে এনে দুইজন
একসাথে ছুরিটা ধরে কেকটা কাটতে লাগলাম।আর
ও বলতে লাগলো Happy birthday to u.।।
কিছুখন ছাদে থাকার পর আমরা রুমে চলে
আসলাম।।
লিয়া: কেকটা কেমন হইছে??
আমি: খুব ইয়ামি।। পুরা তোমার লিপ্সটার মতো।।
লিয়া: যাহ খালি দুষ্টামি।।।
আমি: হুম।। কেকটা না খাওয়িয়ে যদি তোমার লিপ্স
কেকটা খাওয়াতে তাহলে ত এতো কষ্ট করা
লাগতো না। ( মজা করে)
লিয়া:ওরে দুষ্ট। মাথার ভিতর দেখি দুষ্টুমি দিয়ে
ভরা।।
আমি: হুম।। তা তো হবেই।।
লিয়া : হইছে এখন ঘুমাও।
আমি: ওকে বাবুনি। একটু কাছে আসো।
লিয়া: হুম আসলাম কি হইছে বলো?
আমি: ধন্যবাদ এতো কিউট একটা সারপ্রাইজ দেয়ার
জন্য।
লিয়া: উম্মা। ভালো লাগছেতো তোমার আমার
ছোট সারপ্রাইজটা।
আমি:হুম অনেক ভাল লাগছে।
লিয়া: বলো সকালে তুমি কি কি খাবা?
আমি: তোমার যা ইচ্ছা তা রান্না কইরো আমি সব
খাবো।
লিয়া: ওকে।। তাহলে কাল কিন্তু অফিসে যেতে
পারবা না।।
আমি: কি বলো এইসব অফিস যাবোনা কেন??
লিয়া:: প্লিজ লক্ষিটা একটা দিন।। (একটু মায়া
দেখিয়ে)
আমি:ওকে।।
লিয়া: খুব খুশি হয়ে জড়িয়ে ধরে বল্লো
থেনকু।
আমি:এখন একটু ঘুমায় কেমন??
লিয়া:হুম ঘুমাও।
<>
<>
সকালে লিয়ার ডাকেই ঘুম ভাঙ্গলো।
লিয়া: ওই উঠো কয়টা বাজে খেয়াল আছে।
আমি: না। এদিকে আসো।
সামনে এসে বসে বল্লো, কি হইছে বলো?
আমি: বাহ! চোখে কাজল দেওয়াতে খুব সুন্দর
লাগতাছে তোমাকে।। প্রতিদিন কাজল দিবা।
লিয়া:হইছে পাম মারা লাগবেনা। এখন উঠো তাড়াতাড়ি।
এই বলে উঠে গেলো।
আমি:আবার ওকে ডাক দিয়ে আমার হাত দুইটা বাড়িয়ে
দিলাম।
প্রতিদিন এর মতো আমার হাত ধরে টান দিয়ে
উঠালো। আর আমি সুযোগ বুঝে ওকে ধরেই
আবার কেক খেয়ে নিলাম।
লিয়া: ওই এইটা কি করলা?
আমি:কেক খেলাম। সকাল সকাল ইয়ামি কেক।
লিয়া: আসলেই তুমি দিন দিন অনেক দুষ্ট হইতেছ।
আমি: হাসতে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।
<>
<>
ফ্রেশ হয়ে এসে খেতে চলে গেলাম।
যেয়ে দেখি আম্মু আর আব্বুকে লিয়া
খাওয়াচ্ছে। একটু দাড়িয়ে দেখতে লাগলাম আর
ভাবতে লাগলাম। কত খেয়াল রাখে এই মেয়েটা
আমাদের। আব্বুর ডাকে হুশ এলো।
আব্বু:কিরে তুই এখানে দাড়িয়ে আসিস কেন?
খেতে আস।
আমি: হুম আসছিতো।
আব্বু: ওই শুন আমি আর তোর মা একটু তোর
নানীদের বাসায় গেতাছি একটু কাজ আছে। বউমার
খেয়াল রাখিস।
এই বলে আম্মু আর আব্বু উঠে গেলো।।
তারপর সকালে নাস্তাটা শেষ করে ফেসবুকে
ঢুকলাম। বাহ বন্ধুরা Birthday wish করে ভরে
ফেলছে।
লিয়া আমার সামনে একটা লিস্ট নিয়ে এসে বলে
যাও বাজার থেকে এগুলা নিয়ে আসো।
আমি: এইতো এর জন্যই বাড়িতে থাকতে চাই না।
একটু ফ্রি থাকলেই হয়তো বাজারের লিস্ট না হয়
ঘুড়তে চলো।
লিয়া: হাসতে হাসতে বল্লো যাও বাজার নিয়ে
আসো।
আমি না পাড়তে ওর হাত থেকে বাজারের লিস্টটা
টান দিয়ে মানিব্যাগটা নিয়ে বাজারে রওনা দিলাম । আর
ও আমার দিকে তাকিয়ে হাসতে লাগলো।
<>
<>
বাজার থেকে এসে ওর হাতে সব কিছু দিয়ে
যেই রুমে শুবো ঠিক তখনি ও আমার কাছে টাউল
নিয়ে এসে বলে যাও আগে গোসল করে
আসো।। ওর উপর চরম রাগ উঠে গেলো।।
কিছুনা বলেই টাউলটা টান দিয়ে গোসল করতে
চলে গেলাম।।। গোসল করে এসে দেখি ও
লুডুস হাতে নিয়ে বসে আছে।। লুডুসটা আমি খুব
পছন্দ করি ও ভালো করে জানে।
লিয়া: এই নেও খাও।
আমি ওর কথা না শুনে বিছানায় শুয়ে পারলাম।
লিয়াও আমার পাশে এসে শুয়ে বলতে লাগলো,
সরি বাবুই! আমি কি তোমাকে দিয়ে এগুলা ইচ্ছা
করে করাই। (একটু মন মরা মন মরা হয়ে)
আমি: ওকে ঠিক আছে। বাটিতে কি আনছিলা?
লিয়া: এক লাফ দিয়ে উঠে বলতে লাগলো আমার
বাবুইটার জন্য লুডুস বানিয়ে আনছি। এই বলেই
লুডুসটা এনে আমাকে খাওয়িয়ে দিতে লাগলো।
আসলেই মেয়েটা আমাকে অনেক ভালবাসে।
আমি ওর উপর একটু ও রাগ করে থাকতে পারিনা।
আমি এর মাঝেই ওকে বলে উঠলাম, যাও বাজার গুলা
ফ্রিজে রেখে রেডি হয়ে নাও আজকে
বাইরে খাবো। আর বিকেলে তোমাকে নিয়ে
ঘুরাঘুরি করে একদম রাতে বাহির থেকে ডিনার
করে বাড়িতে ফিরবো।। কথাগুলা বলার পর ওর
চেহারাতে যেই খুশিটুকু দেখতে পেলাম মনে
হয় ওর সামনে হিরার চাক্কা এনে দিলেও এতো
খুশি হতো না।
আমার ককথাগুলো শুনে ও আমাকে জড়িয়ে
ধরে এতগুলা আদর দিয়ে বলতে লাগলো ওকে
আমি এখনি রেডি হয়ে নিচ্ছি।।
আমি আবার বলে উঠলাম এই শুনো।
লিয়া: হুম বলো।
আমি: উম্মা।।।
লিয়া: যাহ দুষ্ট।। খালি দুষ্টুমি।

------ লিখা: ফায়সাল আহম্মেদ শাওন--------

বি:দ্র: নিজের আপন মানুষটাকে খুশি করার জন্য শুধু
তার পিছনে কিছু সময় ব্যয় করলেই তাতে সে
অনেক খুশি হয়ে উঠে।।

No comments:

Post a Comment