Monday, July 25, 2016

স্মার্টনেস ভালবাসা

স্মার্টনেস ভালবাসা

-এই জিহান তুমি এমন ক্ষ্যাত কেন
বলোতো?নিম্মি আর তুরিনের
বয়ফ্রেন্ডকে দেখছো না?
-হুম দেখছি...
- দেখছো ওরা কত স্মার্ট আর তুমি?এমন
ক্ষ্যাত মার্কা টাইপের কেন???মাথায়
কি দিছো এইটা?
-সরিষার তেল।
-ছিঃ ... তুমি কি এভাবেই থাকবে ?
নিজেকে কি বদলাবেনা?
-......
-দেখো এভাবে যদি চলতে থাকে
আমি কিন্তু তোমার সাথে সম্পর্ক
রাখতে পারবোনা।ওরা কিভাবে বড়
মুখ করে ওদের বয়ফ্রন্ডদের সাথে পরিচয়
করিয়ে দেয় আর আমাকে কি করতে হয়
জানো তুমি?? সবার থেকে লুকিয়ে
তোমার সাথে দেখা করতে হয়।
বন্ধুদের
সামনে মাথা উঁচু করে বলতে পারিনা
যে তুমি আমার বয়ফ্রেন্ড।
কথা গুলা বলা শেষে ব্যাগ নিয়ে
উঠে
চলে গেলো সুস্মিতা..
জিহান বসে বসে ভাবছে আসলে তো
সে ক্ষ্যাত মার্কা। নিজেকে এবার
বদলানো উচিৎ।অনেকদিন তো হলো...
ওয়ালেটটা চেক করে একটা রিক্সা
ডাকলো।যথেষ্ট পরিমাণ টাকা না
থাকলেও নিজের মামার মার্কেট যা
ইচ্ছা তাই নেওয়া যাবে।বিল মামাই
দিয়ে দিবেন।রিক্সায় ওয়ালাকে
বললো নিউ মার্কেটে নিয়ে যেতে।
এখন তাকে স্মার্ট হতে হবে।তার জন্য
যা যা দরকার সেগুলা কিনতে হবে।
.
গোলগাল চেহারার উজ্জ্বল শ্যাম
বর্ণের মেয়েটার চশমার আড়ালে
লুকিয়ে থাকা রাগী চোখ জোড়ার
মায়ায় জিহান অনেক বছর আগেই
পরেছিলো।এত সুন্দর চোখ দুইটা চশমা
দিয়ে কেন যে ঢেকে রাখতো এটা
ভেবে তখন জিহানের খুব আফসোস
হতো।
জিহান আর সুস্মিতার পরিচয়
হয়েছিলো ওদের স্কুলে।ক্লাস নাইনে
উঠার পরে ছেলে-মেয়ের একসাথে
ক্লাস শুরু হয়।দুজনেই বিজ্ঞান
বিভাগের স্টুডেন্ট ছিল।জিহান সে
বছরের নতুন ছাত্র ছিলো।তাই সবার
থেকে একটু দূরে দূরে থাকত।জিহানের
পরিবার স্কুলের কুয়ার্টারে থাকতো।
জিহানের বাবা ছিলো ওই স্কুলের
একজন শিক্ষক।আর সুস্মিতা ছিল ওদের
ক্লাস ক্যাপ্টেন।ক্লাস ক্যাপ্টেন গুলা
কেন জানিনা সবসময়েই খুব রাগি হয়।
মেয়েটাকে দেখলেই জিহান
নার্ভাস ফিল করতো সবসময়।জিহানের
পাশ দিয়ে সুস্মিতা চলে গেলেই
কেমন একটা অদ্ভুত অনভুতি হতো
জিহানের।সাথে বুকের মধ্যে
কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে যেত।মাঝে
মাঝে ক্লাসের ফাকে লুকিয়ে
লুকিয়ে দেখতো।চোখেচোখ পড়লেই
অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিতো।কারোর
সাথে প্রয়োজন ছাড়া জিহান তেমন
একটা কথা বলতো না।স্যার ব্ল্যাক
বোর্ডের সামনে ডাকলে জিহান
জানা প্রশ্নের উত্তরও দিতে
পারতোনা।কারনটা ছিলো সুস্মিতা।
উত্তর কি দিবে এটা শোনার জন্য যখনই
সুস্মিতা মনযোগ সহকারে ওর দিকে
তাকাতো তখনই জিহানের দুনিয়া
ওলটপালট হয়ে যেতো।তখন নিজেকে
খুব
অসহায় মনে হতো।
.
সুস্মিতা লক্ষ্য করেছিলো ক্লাসের
সবাই কোন না কোন বাহানাই ওর
সাথে কথা বলতে চাইতো কিন্তু
জিহান কখনোই ওর সাথে কথা বলতে
আসেনি।শুধু মাঝে মাঝে কেমন একটা
করে তাকাতো।জিহানের চোখের
দৃষ্টি যে কিছু একটা বোঝাতে চায়
এইটা সুস্মিতাও খানিকটা বুঝতে
পারে।ওর তাকানোর মাঝে অনেক
কিছু খুঁজতে ইচ্ছা করে সুস্মিতার।
ছেলেটা এত বোকা ভেবে নিজেরই
মনে মনে হাসি পায়।হয়তো বা পছন্দ
করে অনেকটা কিন্তু বলতে পারেনা
মুখ
ফুটে...
.
দুজনের তাকানোর মাঝেই এস.এস.সি
লেভেল শেষ হয়।এর মাঝে কেউ
কারোর সাথে কখনোই কথা বলেনি।
জিহানের রেজাল্ট মোটামোটি
ভালো ছিলো।সুস্মিতার রেজাল্টও
অনেক ভালো ছিলো।স্কুলের প্রত্যেক
টিচারদের বাসাতে সুস্মিতা আর
সুস্মিতার বাবা মিষ্টি দিতে যায়।সব
টিচাররা স্কুল কুয়ার্টারেই থাকতো।
জিহানদের বাসায় কলিংবেল
চাপতেই জিহান দরজা খুলে দেয়।দরজা
খুলে দেওয়ার পরে আবার বুকের মধ্যে
সেই কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে যায়।বাসায়
জিহানের আম্মু ছিলো শুধু।জিহানের
বাবা সেদিন বাসায় ছিলোনা।
জিহানের আম্মু সুস্মিতাকে দেখে
ভিতরে আসতে বলে।সুস্মিতা গিয়ে
ভিতরে বসে।সুস্মিতা জিহানের
আম্মুর
হাতে মিষ্টির প্যাকেটটা ধরিয়ে
দেয়।সুস্মিতার বাবা তখন অন্য এক
টিচারের সাথে নিচে দাঁড়িয়ে
কথা
বলছিলেন।
.
জিহান সুস্মিতার সামনে চুপ করে
বসে...
সুস্মিতাই জিজ্ঞেস করে
- রেজাল্ট কি??
-এ+
জিহানের আম্মু মিষ্টি আর কিছু
নাস্তা দিয়ে চলে যায়...সুস্মিতা
একটা মিষ্টি হাতে তুলে নিয়ে
জিহানকে বলে
-হাঁ করো??
-কেন??
জিহানের গালটা ধরে জিহানের
মুখে মিষ্টিটা ঢুকিয়ে দেয়।মিষ্টির
সাইজটা মাঝারি আকারের হওয়াতে
পুরোটায় মুখের মধ্যে ঢুকে যায়।
সেদিনই
প্রথম ওরা এতটা কাছাকাছি
এসেছিলো এবং প্রথম কথা
বলেছিলো।
-আমাকে খাওয়াবে না??
-ইয়ে মানে...
-এত মানে মানে করো কেন?
জিহান কাঁপাকাঁপা হাতে একটা
মিষ্টি তুলে নেয় হাতে তারপর
সুস্মিতার দিকে এগিয়ে দেয়।
জিহানের এমন অবস্থা দেখে
সুস্মিতার
মনে মনে খুব হাসি পায়।সুস্মিতার ওর
হাত থেকে মিষ্টিটা খেয়ে এক গ্লাস
পানি তুলে নিলো হাতে।তারপর
বললো কোন কলেজে ভর্তি হবে
সিদ্ধান্ত নিলে?
-নাহ...
-ফোন ইউজ করো??
-নাহ...বাবা এখনো কিনে দেয়নি।
- বুঝলাম... আমাকে তোমার বাসার
নাম্বারটা দাও ...
জিহানের বাসার নাম্বারটা নিয়েই
সেদিন সুস্মিতা চলে যায়... সেদিনই
শুরু হয়েছিলো ওদের জীবনের নতুন
অধ্যায়।সুস্মিতার কথা মত দুজনে সেইম
কলেজে এডমিশন নেয়।তারপর থেকে
এই
পর্যন্ত সম্পর্কটা টিকে আছে।দুজনেই
এখন
সেইম ভার্সিটিতে অনার্স সেকেন্ড
ইয়ারে লেখা-পড়া করছে।কিন্তু
সমস্যা
একটায় জিহান এখনো ওল্ড মডেলের
রয়ে গেছে।মাথায় সরিষার তেল, ফুল
হাতা শার্ট,সাধারণ প্যান্ট,পায়ে
একটা ওল্ড মডেলের স্যান্ডেল,চুল গুলা
একসাইডে বাচ্চাদের মতোন করে
আঁচড়ানো স্বভাবটা এখনো বদলাতে
পারেনাই।সুস্মিতা অনেক বার
বলেছে...কিন্তু জিহানের মাঝে
কোন
পরিবর্তন হয়নি... আজ সে নিজেকে
পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে...
.
নিউ মার্কেট এসে গেছে ... রিক্সা
ওয়ালার ডাকে জিহানের ঘোর
কাটলো,রিক্সা থেকে নেমে
রিক্সা
ওয়ালাকে ভাড়া দিয়ে জিহান
মার্কেটের ভিতরে প্রবেশ করলো...
শপিং শেষে নিজের চশমার ফ্রেমটা
চেঞ্জ করলো। স্যেলুন থেকে লেটেস্ট
হেয়ার কাট দিয়ে জিহান মেসে
ফিরে গেলো...
.
গোসল করে নিজের একটা ছবি তুলে
প্রোফাইলে পিকচার সেট করলো।
আগে
ছবি দেওয়া ছিলো না।তারপর এফবি
পাসওয়ার্ডটা চেঞ্জ করে এফবি
থেকে
বের হয়ে আসলো।আগের পাসওয়ার্ডটা
সুস্মিতা জানতো।তাই এই স্টেপ।সে
স্মার্ট হচ্ছে।ওদের মতো স্মার্ট হচ্ছে।
.
পরেরদিন জিহানের নিউ লুক দেখে
সবাই টাস্কিত ... জিহানের
ডিপার্টমেন্টের মেয়ে গুলা একটু পর পর
জিহানের দিকে তাকাচ্ছে।আর মুচকি
মুচকি হাসছে।প্রতিউত্তরে জিহানও
হাসছে।জিহান আর সুস্মিতার
ডিপার্টমেন্ট আলাদা।ফোন করে
সুস্মিতাকে দেখা করতে
বলে...সুস্মিতা কাল ফেসবুকে যায়নি।
তাই আজ জিহানের নতুন রূপ দেখে
অনেক অবাক হয়ে গেলো।জিন্সের
প্যান্ট, ব্র্যান্ডের টি-শার্ট, স্টাইলিশ
জুতা,আর নিউ হেয়ার কাট দেখেই
একটা বড় রকমের ক্রাশ খেলো
সুস্মিতা।
মনে মনে অনেক খুশীও হলো।এখন আর
জিহানের সাথে লুকিয়ে দেখা
করতে হবেনা।মাথা উঁচু করে সবার
সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে পারবে।
.
মাস খানেক দুজনের সম্পর্ক খুব ভালো
চললো।একসাথে ঘুরতে যাওয়া।ফ্রেন্ড
দের সাথে আড্ডা দেওয়া।এর মধ্যে
জিহানের সাথে নতুন কয়েকটা
মেয়ের
পরিচয় হলো।মেয়ে গুলাই আগ বাড়িয়ে
জিহানের সাথে কথা বলতে আসলো।
এতদিন তো জিহানেরএর দিকে ঠিক
মত তাকাতোই না।আর এখন গায়ে পরে
কথা বলে.....
.
এখন আর জিহান আগের মতো সুস্মিতার
খবর নেয়না আগের মতো কেয়ার
করেনা। সুস্মিতাকে আগের মতো সময়
দেয়না।সুস্মিতা ফোন করলে
জিহানের ফোন ওয়েটিং পায়।আগে
জিহান কল করতো কিন্তু এখন আর
একবারের জন্য কল করেনা।আগে
সুস্মিতা না খেলে জিহান অনেক
রিকুয়েস্ট করতো আর এখন সুস্মিতা যদি
বলে "জানো আজকে না আমি খায়নি "
জিহানের উত্তর "ও আচ্ছা" এর মধ্যেই
সীমাবদ্ধ থাকে। সুস্মিতা মনে মনে খুব
কষ্ট পায়।কিন্তু কিছু বলার সাহস
পায়না।কথা বলতে বলতে জিহানের
চুল
গুলা সুস্মিতার খুব ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছা
করে।জিহানের চুল টাচ করার সাথে
সাথে জিহান বলে ওঠে- আহঃ এইটা
কি করছো চুল গুলা এলোমেলো হয়ে
যাবে... কথাটা খুব হৃদয়ে লাগে
সুস্মিতার...বেশ ভালো মতোই বুঝতে
পারে আগের জিহান আর নেই...
কিন্তু জিহানের তো কোন দোষ নেই।
সে স্মার্ট হয়েছে তাদের মতো স্মার্ট
যেটা সুস্মিতা চেয়েছিলো।
.
এগুলা ভেবে রাতে খুব কান্না পায়
সুস্মিতার।আগের জিহানকে এখন খুব খুব
মিস করে সুস্মিতা। অনেকক্ষণ কাঁদার
জন্য সুস্মিতার চোখ ফুলে যায়।সকালে
জিহানের সাথে দেখা হলো কিন্তু
জিহান সেটা দেখেও না দেখার
ভান করে রইলো...আর আগে একটু
কাদলেই জিহান সেটা বুঝতে
পারতো।সুস্মিতা জিহানকে কিছু
বলার আগেই জিহানের ফোনে কল
আসলে জিহান সুস্মিতাকে কিছু না
বলে চলে যায়।সুস্মিতার তখন প্রচণ্ড
কান্না পায়। কোন রকমে নিজেকে
সামলে বন্ধুদের কাছে যায়।
গিয়ে দেখে নিম্মির কান্না করছে।
-কিরে কাঁদছিস কেন?
-হৃদয় ফোন করে আমাকে দেখা করতে
বলেছিলো। প্রায় এক সপ্তাহ আমাকে
ফোন কল কিচ্ছু করেনি।আমি কন্ট্যাক
করতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারিনি।
হৃদয় নিম্মির স্মার্টেস্ট বয়ফ্রেন্ড...
-সে তো ভালো কথা এতে এত
কান্নার
কি আছে??
-দেখা করার পর ও আমাকে বলেছে
আমি যেন ওকে আর ডিস্টার্ব না করি।
আমার সাথে ও আর রিলেশন রাখতে
চাইনা...ও আমার থেকে মুক্তি চাই। এই
কারণেই আমার সাথে দেখা করতে
চেয়েছিলো। কথা গুলা বলেই নিম্মি
আবার কান্না শুরু করলো।
সুস্মিতার আর সেইখানে থাকা হলো
না। বাসায় এসে নিজেও খুব ভেঙ্গে
পরলো নিজের অজান্তেই আবার খুব
কান্না পেলো।মনের মধ্যে
জিহানকে
হারিয়ে ফেলার ভয় চেপে ধরছে
সুস্মিতাকে।নিম্মির বয়ফ্রেন্ডের মত
জিহান ও কি ওকে ছেড়ে চলে
যাবে??
ইচ্ছা করেই জিহান কে তিনদিন ফোন
করেনা সুস্মিতা।এই তিনদিন জিহান
নিজেও কোন টেক্সট বা কল করেনি।
হঠাৎ চার দিনের দিন সন্ধ্যায় জিহান
ফোন করে।
জিহানের ফোন পেয়ে সুস্মিতা
অনেক খুশী হয়।জিহান ফোন করে
সুস্মিতাকে সকাল সাতটায়
ক্যাম্পাসে দেখা করতে বলে।
.
জিহানের দেখা করতে বলাতে
সুস্মিতার খুশীর বদলে খুব করে কান্না
পাচ্ছে।সম্পর্কটা হয়তো বা শেষ করে
দেওয়ার জন্যই জিহান ডেকেছে।
সারারাত না ঘুমিয়ে বসে বসে
কান্না করে সুস্মিতা।
.
সকাল বেলা জিহানের ফোন পেয়ে
অনিচ্ছা স্বত্বেও সুস্মিতা বের হয়।মনে
মনে খুব ভয় করছে।এতদিনের সম্পর্ক যে
জিহান শেষ করে দিবে ভাবতেই
কান্না পাচ্ছে।জিহানের পছন্দের
সাদা সেলোয়ার কামিজটা পরে
ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রউনা দেয়
সুস্মিতা।এই জামাটা পড়লে নাকি
সুস্মিতাকে অনেক সুন্দর লাগে ... এটা
একসময় জিহান বলেছিলো। কথাটা
মনে পড়াতে মুচকি হেসে ওঠে
সুস্মিতা।কিন্তু হাসিটা খানিক
বাদেই মলিন হয়ে যায়।
খুব সকাল সকাল এসে পড়েছে।এখনো
তেমন কেউ আসেনি।কিন্তু জিহানের
দেওয়া সময় থেকে আধা ঘন্টা লেইট
করে ফেলেছে।ওইতো জিহানকে
দেখা যাচ্ছে বটগাছটার কাছে ফোন
হাতে দাঁড়িয়ে আছে।
সুস্মিতা জিহানের সামনে এসে
দাঁড়ায়...
-আসতে লেইট হলো যে?
-স্যরি... রিক্সা পাচ্ছিলাম না...
জিহান একবারের জন্য সুস্মিতাকে
ভালো মত দেখলো না ফোন নিয়ে
ব্যস্ত।সুস্মিতা অশ্রুসিক্ত চোখে
জিহানের দিকে তাকিয়ে আছে।
জিহান ফোনটা পকেটে ঢুকিয়ে বলে
- ও আচ্ছা... আসলে তোমাকে যে
কথাটা বলার জন্য ডেকেছি তা হলো
আমি আর...... কথাটা শেষ করার আগেই
জিহানকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে
উঠলো
সুস্মিতা... কাঁদতে কাঁদতে জিহানকে
বললো-
" আই এম স্যরি জিহান।আমি আর কখনো
তোমাকে চেঞ্জ হতে বলবো না।
কখনো
না। তুমি আগে যেভাবে ছিলে আমি
তোমাকে সেভাবেই
ভালোবাসবো।
প্লীজ তুমি আমাকে ছেড়ে যেওনা।
আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে
পারবো না।আমার আগের জিহানকে
ফিরিয়ে দাও।আমি আমার সেই আগের
জিহানকে ফেরত চাই।আমি আর
পারছিনা তোমার অবহেলা সহ্য
করতে।
প্লীজ আমার কাছে সেই আগের
জিহান হয়ে ফিরে আসো।নাহলে
আমি মরেই যাবো।আমাকে ছেড়ে
যেওনা।
.
নাহ অনেক হয়েছে এই স্মার্ট হওয়ার
নাটক।।জিহান নিজেও আর পারছেনা
পাগলীটাকে কষ্ট দিয়ে থাকতে।
কারণ
এই কয়েকদিন জিহান নিজেই অনেক
কষ্টে ছিলো।দম বন্ধ হয়ে আসছিলো
এভাবে চলতে।পাগলীটা ওর ভুল বুঝতে
পেরেছে এটাই অনেক ...
-এই উপরে তাকাও...
-......
সুস্মিতা তাকাচ্ছে না।আরো শক্ত
করে
জড়িয়ে ধরে আছে।মনে হচ্ছে ছেড়ে
দিলেই জিহান ওর কাছ থেকে
হারিয়ে যাবে।জিহান সুস্মিতার
মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো
-আরে পাগলী আমাকে তো কথাটা
শেষ করতে দিবে নাকি?তার আগেই
কি সব আবোল তাবোল বলে কান্না
জুড়ে দিলে।এইইই উপরে তাকাও না
আমার মুখের দিকে?সুস্মিতা এবারে
মুখটা তুলে উপরের দিকে তাকালো...
জিহান চোখের পানি মুছে দিয়ে
বললো... বিশ্বাস করো এভাবে আমিও
ভালো ছিলাম না সব সময় তোমাকে
মনে পড়তো।কারন আমিও যে খুব
ভালোবাসি তোমাকে।এই কয়দিন খুব
কষ্ট পেয়েছো তাইনা?
-হুম...
এই দেখো কান ধরছি এবারের মত মাফ
করে দাও।আমি তোমার আগের
জিহান
হিসেবে ফিরে আসতে চায়।এটাই
বলার জন্য ডেকেছিলাম।আর তুমি কি
সব উল্টা বলে কাঁদা শুরু করে দিলে।
জিহানের কান্ড দেখে সুস্মিতা
হেসে দেয়।
আহঃ এতক্ষণে জিহান যেন একটু
শান্তি
পেলো।সুস্মিতা জিহানের চুলটা
আগের মতো করে দিলো।
.
আর ওদের সম্পর্কটা সেটাও আগের মত
হয়ে গেলো..জিহান তো এটাই
চেয়েছিলো।এখন আর সুস্মিতা
জিহানকে চেঞ্জ হতে বলেনা।
জিহানের যেমন ওকে তেমন ভাবেই
ভালোবাসে।বরং আগের থেকে
আরো
বেশি ভালোবাসে...
এমন ভাবেই অটুট থাকুক ওদের
ভালোবাসার বন্ধন....
.
ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন...

No comments:

Post a Comment