Sunday, July 24, 2016

তাকে পাবো ভাবিনাই

তাকে পাবো ভাবিনাই

ইদানিং একটা আইডি আমার নিউজফিডে বার
বার আসছে, মেয়েটার
আইডিতে আমার ফ্রেন্ড সার্কেলের সবাই লাইক,
কমেন্ট করে তাই আমার ফিডে আসে।
.
বিকেল বেলা বসে আছি ভালো লাগছে না তাই
নিউজফিড ঘাটাঘাটি
নিয়ে ব্যাস্ত হঠাৎ সেই মেয়েটার আইডি ভাসছে,
আমি নামের উপরে ক্লিক করে তার প্রোফাইলে
ঢুকে গেলাম, ঢুকে অবাক হয়ে গেলাম প্রথমে
ফলো লিস্টে ঢুকলাম আমিও আছি সবচাইতে
অবাক হলাম মেয়েটার সাথে আমার 120 Mutual
ফ্রেন্ড থাকা সত্তেও আমার সাথে পরিচয় নাই।
.
আমাকে ফলো করে রেখেছে। তাই ভাবলাম
একটু
পরিচয় হই, ফ্রেন্ড রিকু না দিয়েই ম্যাসেজে
গুতো দিলাম, ওমা ম্যাসেজ অপশনে দেখি
আমাকে আগেই পাঠিয়েছে হ্যায়... ভাইয়্যা.....!!
আমি অবাক হয়ে গেলাম তাই একটু ভাব নিয়ে
উত্তরে বললাম আপু কিছু বলবা? (ম্যাসেজটা ছিল
১ মাস আগের)
.
সাথে সাথে রিপ্লাই....
.
:- কেমন আছেন ভাইয়্যা...??
:- জ্বি ভালো... তুমি?
:- জ্বি ভালো...
:- কি করেন?
:- এইতো বসে আছি...
:- একা....?
:- হুম একা?
:- কোথায় আছেন?
:- এত্ত যেনে কি করবা তুমি?
:- না এমনিতে বললাম... অনেক দিন ধরে আপনার
সাথে
চ্যাট করার জন্য ওয়েট করছি.. আজ
যেহেতু পেয়েই গেছি ডিস্টাব করবই।
:- ও আচ্ছা.... তোমার বাড়ি কোথায়?
:- আমাকে আপনী চিনবেন না ভাইয়্যা, আগামী
কাল কলেজে আসবেন?
:- এই আমি কলেজে আসবো কি আসবো না তুমি
কি করবে?
:- কেন জানতে পারি না? আমি আপনার খুব
কাছের কেউ, এখন চিনবেন না।
:- (........................) !!!!
.
ভালোই কথা হয় কিছু দিন, প্রতিদিন অনলাইনে
বসে থাকে আমার ম্যাসেজের জন্য। আমিও
অপেক্ষা করি, কখনো এসে মেয়েটাকে না
পেলে
আবার চলে যাই। একদিন ম্যাসেজ না দিলেই
রেগে যায়, অকারনে রাগ করে.... অধিকার ছাড়াই
জায়গাটা দখল করার চেষ্টা করছে। আমি অনেক
দিন দেখা করার কথা বলেছি করবে করবে বলে
সময় হওয়ার ১ঘন্টা আগে যেকোন কারণ বসত না
বলে দেয়।
.
শুক্রবার একটু বেশীই ঘুম্পায়, তাই আজকে একটু
ঘুমথেকে উঠতে দেরী হয়ে গেছে, ঘড়ির
দিকে
তাকিয়েই দেখি ১২.০০টা, ঘুম থেকে উঠে
গোসল
করে নামাজ পড়লাম। বাড়ি এসে মোবাইল ধরেই
দেখি ঐশীর ৭টা কল ১টা ম্যাসেজ। “আজকে
দেখা
করতে পারবা” ম্যাসেজটা দেখে অবাক হয়ে
গেলাম আমি যাকে প্রতিদিন দেখা করার জন্য
বলি আজ আমাকে বলছে!!! আমি ফোন ব্যক করি।
.
:- হ্যালো...
:- এই তুমি ফোন ধরছোনা কেন?
:- সরি আমি নামাজে ছিলাম।
:- তোমার জন্য কি মোয়াজ্জিম ১১.৫০বাজেই
নামাজ শুরু করছে নাকি?
:- আসলে আমি ফোন দেখি নাই।
:- ঠিক আছে আর বলতে হবে না। আজকে দেখা
করতে পারবা?
:- দেখাতো কয়েকবারই করলাম... আবার?
:- এই দেখ আমি দুষ্টুমি করছি না.. পারবা কি
না?
:- ঠিক আছে বিকেলে আমি লেগের পারে
থাকবো।
:- এই না। ঐখানে যাইতে পারব না। তুমি
ডামুড্যা মডেল টাউনে থাকবা,
:- ঠিক আছে? তুমি কোন ড্রেস পরে আসবা?
আর
কে কে আসবা?
:- আমি আর সায়মা, সাধারণ পোষাকে আসবো।
:- তুমি কি পড়ে আসবা?
:- পাঞ্জাবী....!
:- ঠিক আছে তোমার নীল পাঞ্জাবীটা পড়বা
আজকে।
:- ওকে।
.
আমি বসে আছি কোখাও দেখছি না ঐশীকে,
আর
কিভাবেই দেখবো আমিতো চিনিই না। অপেক্ষা
আর ভালো লাগে না। ঐশী বলে কথা থাকতেই
হবে। কিছুক্ষন পরে দেখতে পেলাম আমাদের
ডিপার্টমেন্টের জামিয়া, এটাই সেই জামিয়া
যাকে আমি খুব পছন্দ করতাম কখনো বলতে
পারতাম না,
অনেক রাগি, একবার একটা ছেলে প্রোপোজ
করেছিলো, যার ফলটা কানে ধরে উপভোগ
করতে
হয়েছিল,
.
আমার দিকে উদ্দেশ্য করে আসছে আমি
জামিয়াকে দেখে ঘুরে বসলাম আমি কাছে
আসার শব্দ কানে শুনতে পেলাম জামিয়া আমার
পাশেই দাড়িয়ে আছে। আমি ভয়ে ভয়ে
জামিয়ার দিকে তাকাইলাম।
.
:- কেমন আছো? (ভয়ে ভয়ে)
:- জ্বি .. তো এখানে কি করেন?
:- এইতো বসে আছি..
:- ঐশীর জন্য?
:- আরে না এমনিতেই বসে আছি।
:- দেখ মিথ্যা বলবা না কি জন্য বসে আছো
সেটা বলো?
:- সত্যিই কারো জন্য না।
:- তাহলে ঐখানে ঐশী নামের মেয়েটা দারিয়ে
আছে কেন?
:- ইয়ে মানে...
:- কি হলো?
:- কোথায় মেয়েটা?
:- ঐতো বটগাছের নিচে বসে আছে।
:- জামিয়া তুমি দাড়াও আমি আসছি।
:- এই এই কি হচ্ছে এগুলো...?
:- দাড়াও আমি আসছি...
.
আমি চারপাশ খুজেঁ বেরাচ্ছি কোথাও পাচ্ছি
না।
.
:- ঐ কোথায় মেয়েটা?
:- (কিছুটা দূরে গিয়ে জামিয়া) কিছুক্ষন আগে
ঐখানে দাড়িয়ে ছিল।
.
আমি কিছুটা বুঝতে লাগলাম তাহলে জামিয়া’ই
ঐশীর পরিচয় দিয়ে আমার সাথে ভালোবাসা
নামক শব্দটা নিয়ে খেলছে নাতো?
.
জামিয়া আমার চোখের দিকে দাকিয়ে আছে,
আমি লজ্জায় নিচুমুখী হয়ে দাড়িয়ে আছি,
কিছুক্ষন চুপকরে জামিয়া মুখ খুললো, কই তোমার
ঐশী? এখনো মিথ্যা কথা বলবা? আমি চুপ করে
আছি।
.
আমি ঐখান থেকে ফিরে আসতে লাগলাম,
জামিয়া হাতটা ধরে ফেললো, আমি কিছুটা
আতংকের ভিতরে, যে মেয়েটার সাথে আমার
কথা বলতে ভয় হয় আর সেই মেয়েটা হাত
ধরলো?
.
:- কি হলো দেখা না করে চলে যাচ্ছ যে?
আমি চুপ করে থাকি, ঐশীও কিছুক্ষন চুপ করে সব
বলে আমাকে।
আমি অনেক খুশি হলাম, ঈদের চাইতোও
বেশী,
ছোট থাকতে আব্বু ১০ টাকা দিয়ে একটি চশ্মা
একটি ঘড়ি দিত, ভাবতাম এই বুঝি জীবনের
আনন্দের মুহূর্ত, এখন ভাবি এর চাইতে আর
কখনো
খুশি হওয়া যায় না।
.
আচ্ছা তুমি কি আমাকে সত্যি’ই ভালোবাসো?
জানো ঐশী অনেকবার তোমাকে বলবো
ভাবছি
কিন্তু সাহস পাচ্ছি না।
.
এখন বল??
.
না আমি কাউকে I Love You বলি না লজ্জা
লাগে।
.
ঠিক আছে বলতে হবে না, চলো ঐদিকটা ঘুরে
আসি।
.
যেই মেয়েটার জন্য ঘন্টার পর ঘন্ট ধারিয়ে
থাকতাম
কলেজের সমনে একবারের জন্যও ফিরে
তাকাইতো
না।
.
লিখাঃ- Nahidul Islam Ratul

No comments:

Post a Comment