Thursday, July 21, 2016

___স্নিগ্ধিত আকাশ___ (3rd part)

___স্নিগ্ধিত আকাশ___
(3rd part)
======
এদিকে আমার গা জ্বলে যাচ্ছে.. আর ওদিকে বাবা
মা'র দিকে তাকিয়ে দেখি,,
ওনারা মিটিমিটি হাসছেন।। ইহহহহ.....
ধ্যাৎৎৎ!!!
.
ও হ্যাঁ!! স্নিগ্ধাটা কে??
তাই তো!!
আর আমিই বা ওকে চিনলাম বা জানলাম কি করে??!
বলছি,,,,,
.
' স্নিগ্ধা হলো আমাদের ভার্সিটির একমাত্র
দজ্জালীনী।
ওর সাথে কোন ছেলে ঘেঁষা তো দূরের
কথা, কথা বলতে গেলেও নিজের পরবর্তী
অবস্থার কথা হাজার বার চিন্তা করে নিবে।
এত রাগী আর বদমেজাজী মেয়ে জীবনে
বোধহয় কেউ দেখেনি।
ওকে দেখলেই সবাই ওর থেকে নিরাপদ
দুরুত্বে অবস্থান করে।
.
ও যেমন ভয়ংকর রাগী আবার তেমনই ভয়ংকর
সুন্দরী!! তবে এই সৌন্দর্য্য নিয়ে ওর তেমন
অহংকার বা ভাব নেই....
ওর যত রাগ,হিংসে-বিদ্বেষ তা সবই ছেলেদের
উপর।।
জন্ম থেকেই যেন পৃথিবীর সব ছেলেরাই ওর
শত্রু।
সৃষ্টিকর্তা যেন ওকে ছেলেদের শত্রু করেই
পাঠিয়েছেন।।
.
আর এই সুন্দরীকে নিয়ে যদি কেউ ভুলেও
স্বপ্ন দেখে... আর ও যদি এটা জেনে
ফেলে,,,
তাইলে তার খেসারত দিতে দিতে জীবনটাই
শেষ ওর।
তাই এই ভার্সিটিতে কেউ নতুন আসলেই তাকে এই
দজ্জালীনী সম্পর্কে অবহিত করা হয়...
যাতে প্রেম ট্রেম তো দূরের কথা., কথা
বললেও যেন সাবধানে বলে।।
.
আর আমিই একমাত্র 'ছেলে', যে কিনা ওর বন্ধু।।
শুধু বন্ধু বললে ভুলই হবে,, ওর সারাদিনের একমাত্র
সঙ্গী আমি।।
.
ও এত রাগী আর বদমেজাজী বলে ওর সাথে
কেউ ভুলেও মেশে না।।
তাই ছেলেদের উপর ও'র যত ক্ষোভ আর
বিদ্বেষ ছিল, তা শুধু এতদিন জমা'ই করে এসেছে।।
কারো উপর প্রয়োগ করার সুযোগ পায়নি।।
.
আর এখন আমাকে পেয়ে যেন ওর সব রাগ ঝাড়ার
সুন্দর একটা জায়গা পেয়েছে ও।।
.
সারাদিনই আমার সাথে লেগে থাকবে ও।।
আর এই সারাদিন ও আমাকে যত বকাবকি, ঝাড়ি দিবে তা
আমার ভদ্রতার সহিত মন দিয়ে খেতে হবে...
এর ব্যতিক্রম হলে আবার ঝাড়ি.,.....
.
আপনারা কি ভাবছেন??
ভাবছেন যে, এই দজ্জালীনীর সঙ্গে আমার
সম্পর্কটা হলো কিভাবে!!
আমাকে ও মেনে নিল'ই বা কি করে???
তাই না!!!
.
হ্যাঁ, তাও আরেক কাহিনী।।
.
আমি যখন এই ভার্সিটিতে নতুন আসি,, তখন আমার
মোটামুটি কয়েকজন বন্ধু ছিল।।
বাবা-মা'র নিষেধ ছিল, ভালো কাউকে ছাড়া বন্ধু না
বানাতে।
আর আমিও অনেকটা বাবা মা'র কথা মেনে চলার
চেষ্টা করতাম।।
.
আর এই ডিজিটাল যুগে ভালো কাউকে তো খুঁজে
পাওয়াই মুশকিল।।
সেখানে আবার ভালো বন্ধু!!!
তাই আমার বন্ধু-বান্ধব খুব কমই ছিল।। আর যা বন্ধু
ছিল, তা সবই ছেলে।। তবে যারা আমার বন্ধু ছিল,,
তারা খুবই দুষ্ট ছিল।
তবে আমাদের দুষ্টামী লিমিটের মধ্যেই
থাকত।।
আমরা সবাই ভদ্র-দুষ্ট।।।
.
মেয়েদের সাথে দরকার ছাড়া একদমই মিশতাম না।।
বলতে পারেন, স্নিগ্ধার মত আমারও মেয়েদের
প্রতি এলার্জী রয়েছে।।
তবে সেটা এলার্জী না বলে 'ভয়' বলাটাই
বেটার।।
খুব ভয় পাই আমি মেয়েদেরকে।।
.
রতনে রতন চিনে।।
সৃষ্টিকর্তা বুঝি দুজনের জন্যই দুজনকে
বানিয়েছিলেন।।
.
যাকগে!! সেসব বাদ। আসল ঘটনায় আসি।
কি যেন বলছিলাম??
ও হ্যাঁ! ওর আর আমার পরিচয়ের ঘটনা।।
.
"সেদিন খুব ভোরেই ভার্সিটিতে গিয়েছিলাম।
গিয়েই দেখি আমার বান্দর ফ্রেন্ডগুলা সব বসে
আছে।।
দেখে মনে হচ্ছে, আজ মনে হয় কোন
প্ল্যান আছে।।
আর তাই এতক্ষণ আমার অপেক্ষাতেই ছিল।।।
.
আমাকে দেখেই দেখি ওরা খুশিতে নাচছে..
আমি কিছুই বুঝলাম না।।
ওদেরকে খুশির কারণ জিগ্যেস করতেই ওরা বলল,,
"আমাদের মাঝে এক ফ্রেন্ড প্রেমে
পড়েছে।। ও আজ ওর লাভার কে লাভ লেটার
পাঠাবে!!"
.
হ্যাঁ, বুঝলাম। এটা খুশির খবর। বাট, আমার সাথে এর
সম্পর্কটা কি!?
আমি আসার পরই ওদেরকে এত খুশি খুশি লাগছে
কেন??
আমার কথাই বলছে না তো আবার??
আমি আবার কার প্রেমে পড়লাম??
আজীব!!!
ওদের মাথা পুরাই গেছে।।
.
ওসব ভাবনার মাঝে হঠাৎ সৌরভ বলে উঠল,,
"তো দোস্ত! তোকে ওই লাভ লেটারটা
মেয়েটার কাছে র্পৌছে দিতে হবে!"
.
আমি তো এই কথা শুনে পুরাই টাস্কি!!
যেই আমি মেয়েদের সাথে কথাই বলি না, সেই
আমি কোন মেয়েকে লাভ লেটার দিব??
ও আচ্ছা! এই কাহিনী!!
এ জন্যই আমার আগমনে ওরা এত খুশি!!
সারাটা সময় ওরা বুঝি এই চক্রান্ত করেই কাটিয়েছে।
আর সবাই মিলে আমাকেই নির্বাচন করেছে।।
.
আমি সোজা কথায় ওদেরকে 'না' বলে দিলাম।।
এবার ওদের দিকে তাকিয়ে দেখি ওদের মুখ
পুরো অমবস্যার মত কালো রূপ ধারণ করেছে।।
ওরা সবগুলো আমাকে ধরে বসল,,
"তোকেই যেতে হবে!"
.
এদিকে তো রিয়াদ জেঁকেই বসল যে,,
"ওদের বন্ধুত্বের দাবী নিয়েই আমাকে লাভ
লেটারটা মেয়েটার কাছে র্পৌছে দিতে হবে।।"
.
কি আর করার! রাজী না হয়ে আর পারলাম না।।
অগত্যা ওদের কথাই মেনে নিলাম।।
.
কিন্তু আমি এখনো মেয়েটার নাম তো দূরের
কথা, আমাদের মাঝে কে দেবদাস হয়ে যাচ্ছে,,,
তার নামই জানলাম না।।
তাই ওদেরকে বললাম,
"আচ্ছা! এবার বল, আমাদের কোন বন্ধুর জন্য
আমার এই কাজটা করতে হচ্ছে?? কে এই
রোমিও??"
তছলিম বলে উঠল,,
"এখন বলা যাবে না। আগে তুই কাজটা কর। তবেই
তোকে বলা হবে আমাদের মাঝে সেই বিখ্যাত
ব্যক্তিটা কে!! তবে হ্যাঁ, লেটারটা খুলে দেখা
যাবে না।"
আমি মাথা দোলালাম। তারপর বললাম.,
"আচ্ছা ঠিক আছে। এখন তো অন্তত মেয়েটার
নাম বলবি, নাকি??
না হয় আমার আর লাভ লেটার র্পৌছানো লাগবে
না।।"
.
"স্নিগ্ধা!! স্নিগ্ধার কাছে লাভ লেটারটা র্পৌছাতে
হবে!! ইনিই সেই বিখ্যাত রাজকুমারী। যার কাছে
তোর লাভ লেটার নিয়ে যেতে হবে!!"
পৃথিবীর সবথেকে বড় পারমানবিক বোমাটা যেন
আমার কানের কাছে ফাটালো তছলিম।।
.
আমার চোখ ডিম্ব আকার হয়ে গেল।।
স্নিগ্ধা!! ওই মেয়ের কাছে যাব আমি??
ওরে আল্লাহ! এর থেকে জাহান্নামে যাওয়াও
তো অনেক ভালো।।
.
আমার এমন ফ্যাকাসে চেহারাটা যেন ওদের হাসির
খোরাক জোগল।।
রিয়াদ বলে উঠল,,
"কিরে বীর কাপুরুষ!! ওর নামটা শুনতেই তোর
আত্মা শুকিয়ে গেল। হা.হা.হা."
.
আমার গা ধরে গেল। কেন জানি মনে হলো
যে,
যাই হোক! আমিই ওর কাছে যাব. দেখি কি হয়!!
আমি বলে উঠলাম,
"হ্যাঁ, আমিই যাব!"
.
কথাটা ওদের কানে যেতেই ওরা হাসি থামিয়ে
ফেলল।
ওদের চেহারাতে অবিশ্বাসের ছাপ!
ওরা ভাবতেই পারছে না যে,, আমার মত মানুষ
কিভাবে ওই দজ্জালীনীর কাছে যাবে??
তাও আবার লাভ লেটার নিয়ে।।
.
অবশেষে ঠিক হল যে, ক্লাস শেষ হবার পর আমি
স্নিগ্ধার কাছে লেটারটা নিয়ে যাব!!!
.
.
.
চলবে_____,,,,,,

No comments:

Post a Comment