Thursday, July 21, 2016

_____________বউ

_____________বউ
>>
রাত ১১:৫০ মিনিট………………
_____ বউ, ও বউ……………
_____………………
_____ বউ………….....
_____ কি……… ( উচ্চ কণ্ঠে)
_____ দড়জাটা খোল না…………
_____ এখন কয়টা বাজে?
_____ না, মানে বন্ধুরা মিলে গল্প করতে
করতে……………
_____ আমি বলছি কয়টা বাজে?
_____ ১১:৫১………
_____ আজকে বাইরেই থাকবা!
_____ তুমি পারবে আমাকে ছেড়ে থাকতে?
_____ খুব পারব………
_____ প্লিজ, আর ভুল হবে না!
_____ ১৫ মিনিট বাইরে দাড়িয়ে থাকো,
তারপরে………
_____ একটু কম করা যায় না?
_____ না
_____ তাইলে আমি ১৫ মিনিট পরেই আসছি!
_____ দাড়াও ( দড়জাটা খুলে গেল!)
_____ লাভ ইউ সোনা………… ( মুখ তার মুখের দিকে
এগিয়ে!)
_____ তুমি আবার সিগারেট খাইছ?
_____ ওরা…………
( কথা শেষ হওয়ার আগেই)
_____ খাইছ কি না, বল?
_____ ভুল হয়ে গেছে সোনা বউ, প্লিজ...! ( দুই
কানে হাত দিয়ে, মুখে ফ্যাকাসে ভাব!)
_____ হয়েছে, খেতে চল ( মুখে হালকা হাসির
ভাব)
_____ আমি তো.........
( কথা শেষ হওয়ার আগেই)
_____ তুমি আমাকে একটুও ভালবাসো না!
( মুহূর্তের হাসি ভাব চলে গিয়ে, রাগ ও দুঃখে
চোখ ভিজে গেছে, কাদতে কাদতে বারান্দায়
চলে গেছে!)
>>
কথা হচ্ছিল আকাশ ও বৃষ্টির মধ্যো।
বৃষ্টি আসলেই খুব বেশিই ভালবাসে আকাশকে।
বিয়েটা দুজনার পছন্দে পারিবারিক ভাবেই হয়েছিল।
প্রতিদিনের থেকে আজ একটু বেশিই ভুল
করেছে আকাশ!
মাঝে মধ্যো সিগারেট খেলেও, একটা চকলেট
অথবা অন্যকিছু খেয়ে সে ভাবটা দূড় করে।
এত রাত করে সচরাচর ফেরা হয় না। আবার বাইরেও
খায় না!
আজকে বন্ধুদের তারনায় পড়ে, আকাশের কিছুই
খেয়াল ছিল না! তাই এতগুলা ভুল একসাথে হয়ে
গেছে।
বৃষ্টি নিতান্তই নরম মনের মানুষ। মেয়েদের মন
আরকি! একটুতেই রাগ, অভিমান আবার একটুতেই
গলে পানি!!
তাই মাফ পেতেও দেরি হয় না!
>>
প্রতিদিন একই "প্লেটে" একসাথে দুজনা খায়!
তাই আকাশ প্লেটে ভাত ও তরকারি নিয়ে খেতে
খেতে বৃষ্টির কাছে গেল………………
আকাশঃ যাই বল, আজকের তরকারিটা খুব স্বাদ
হয়েছে!………………
বৃষ্টিঃ ……………… ( কোন কথা নেই, মাথা নিচের
দিকে দিয়ে এখনো ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদছে)
আকাশঃ দেখতে হবে না কে রেধেছে! আমার
বউ বলে কথা!.....
বৃষ্টিঃ ……………… ( তবুও কোন সাড়া নেই!)
আকাশঃ এত ভাত আমি একা খেতে পারি, বল?
বৃষ্টিঃ …………… (তবুও নিশ্চুপ!)
আকাশঃ কথা বলবে না? এবার কিন্তু আমি কেদে
ফেলব! ( ইতিমধ্যোই কান্নায় চোখ ও কণ্ঠ
ভিজে গেছে !)
বৃষ্টিঃ হি হি হি, হয়েছে কাদতে হবে না! আমাকে
কষ্ট দাও কেন?
আকাশঃ তুমি আমাকে এত ভালবাসো দেখেই
তো!
বৃষ্টিঃ নাও, খিদে লেগেছে!
আকাশঃ নাও……… ( প্লেটটা এগিয়ে দিয়ে)
বৃষ্টিঃ ওই, প্রতিদিনই আমি খাইয়ে দিব? তুমিতো আমার
হাতে "কামড়" মার! এবার একটু কামড় খেয়ে দেখ!
আকাশঃ তাই? আচ্ছা, নাও... ( মুখের দিকে হাত
বাড়িয়ে)
বৃষ্টিঃ …………
আকাশঃ উহ্! ( সত্যি সত্যি কামড় বসিয়ে দিয়েছে!)
আকাশঃ হি হি হি.......
>>
আকাশ অপলক চেয়ে দেখছিল! কি সুন্দর মায়াবি
দেখাচ্ছে বৃষ্টিকে! কি সুন্দর ওর হাসি! এরকম
সোনার প্রতিমাকে ও কত কষ্ট দেয়!
দেখতে দেখতে আকাশের চোখ কান্নায়
ভরে গেল!
.
বৃষ্টিঃ ব্যথা পাইছ?
আকাশঃ আমি বুঝি তোমাকে খুব কষ্ট দেয়, তাই না?
( চোখ দিয়ে পানি পড়ছে)
বৃষ্টিঃ কই নাতো!
আকাশঃ আসলে আমি তোমার যোগ্য নই!
তোমার স্থান…………
( কথা শেষ হওয়ার আগেই, বৃষ্টির নরম হাত
আকাশের মুখ চেপে ধরল)
বৃষ্টিঃ আমার স্থান কোথায়? চল দেখাচ্ছি! অনেক
রাত হয়েছে…………………
>>
খাওয়া শেষে, ঘুমাতে যাওয়ার সময়………
↓→↓
আকাশঃ এটা কি?
বৃষ্টিঃ কি?
আকাশঃ এটা তো সিংগেল খাট! [কোনমতে দুইজন
থাকা যায় এ রকম!( গত কয়েকদিনে খাট বড়, এই
অভিযোগটা ছিল! তাই পাল্টানোর জন্যেও
তোরজোড় চলছিল!) ]
বৃষ্টিঃ তো কি হয়েছে?
আকাশঃ এখানে দুজন থাকব কি ভাবে?
বৃষ্টিঃ দুজন কোথায়?! তুমি আমি দুজন মিলে তো
একজন! তাছাড়া বড় খাটে তুমি একপাশে থাক! আর
আমি একপাশে থাকি! মাঝে থাকে "ইবলিশ শয়তান"!
আকাশঃ তাই, না?
বৃষ্টিঃ তোমাকে আমার স্থান দেখাতে চাইলাম না?
তোমার বুকেই তো আমার স্থান! শুয়ে পড়
তো! ঘুম পেয়েছে…………
>>
আকাশের বুকে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে বৃষ্টি।
আকাশ ওর মাথায় চুলের ভিতর হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
আর ভাবছে, এত ভালবাসা রাখবে কোথায়? কতজন
পাই এত ভালবাসা? বউ, স্বয়ং বিধাতার সর্বশ্রেষ্ঠ
স্বর্গীয় দানগুলোর একটি!
↓↓↓
→ লেখকঃ রূপা বিহীন হিমু (নিশাচর পথচারী)

No comments:

Post a Comment