Thursday, July 21, 2016

_-_-_-লাভ ফর বোনের বন্ধু -_-_-_

_-_-_-লাভ ফর বোনের বন্ধু -_-_-_

-কিরে শাঁকচুন্নি সারাক্ষন চুল নিয়ে এত
ব্যাস্ত কেন?
-ভাইয়া উহু উহু....(বৃষ্টি)
-চোখে আবার কাজল দিয়েছে পেত্নি
লাগছে তোকে।
-লাগে লাগুক তোর কি?
-আমার আর কি বল কোন বেচারার গলায়
ঝুলবি আল্লাহই জানে।
-সে নিয়ে তোকে ভাবতে হবেনা নিজের
চরকায় তেল দে।
-কেন রে?
-তুই নাকি আজকাল মায়ার পিছু পিছু ঘুরিস।
-কোন মায়া কিসের মায়া?আমি কেন ঘুরব?
-ন্যাকা খোকা একবেরা ন্যাকামি
করবিনা।
-আশ্চর্য আমি যাকে চিনিনা তার পিছনে
কেন ঘুরব।
-আমার বান্ধবী মায়াকে তুই চিনিস না?
-ও ওই মায়া পেত্নির মত দেখতে ওকে তো
চিনি।
-ও পেত্নির মত তাই না?
-না মানে ওর পিছনে কেন ঘুরতে যাব?
-তাইতো আহারে বেচারা।
-হুম তুই বল আমার সময়ের মূল্য আছে না,ওর
পিছে ঘোরার সময় কই।
-তাইতো এটা তো ভেবে দেখিনি।
-হুম মিথ্যে অপবাদ দিলি শুধু শুধু।
-একদম চুপ।
-কেন?
-দেখ ভাইয়াা মায়া আমার বান্ধবী।
-জানি।
-ও খুব ভাল মেয়ে।
-আমিও তো খারাপ নই।
-ওর পিছনে ঘুরিস না।
-কেন?
-কাল ওকে নাকি প্রপোজ করেছিস?
-ইয়ে মানে আস্তে বল আম্মু শুনবে তো।
-সেই ব্যাবস্থায় হচ্ছিল।
-মানে?
-মায়া এসেছিল সকালে আম্মুকে জানাতে
তুই ওর সাথে কেমন ব্যাবহার করিস।
-কি সাংঘাতিক তারপর কি হল?
-আমি রিকুয়েষ্ট করাতে এবারের মত মাফ
করে দিয়েছে।
-হু কে চাইছে ঐ পেত্নিটার কাছে মাফ।
-ভাইয়া প্লিজ ও আমার একটা ভাল বন্ধু।
-ভাবী হলে আরও ক্লোজ হবি।
-প্লিজ ভাইয়া ওর কাছে আমায় ছোট করিস
না।
-ছোট কেন রে তুই তো ওর ননদ হবি।
-ভাইয়া ও প্রেম করে না আর কখনও করবেও
না।
-বললেই হল।
-এটাই সত্যি।
-মানিনা।
-প্লিজ ভাইয়া।
-আর দাড়ালাম না বেরিয়ে পড়লাম বাইরে।
-ভাইয়া মনে থাকে যেন চেচিয়ে বলল
বৃষ্টি।
.
বৃষ্টি আমার বোন।আমি আম্মু আব্বু আর ছোট
বোনটা এই আমাদের পরিবার।ছোট বললে
ভুল হবে পাকা বুড়ি।এস এস সি উত্তীর্ন হয়ে
এবার কলেজে উঠেছে।আর আমি
ভার্সিটিতে চান্স পেয়ে অনার্স করছি
দ্বিতীয় বর্ষে।যাকে নিয়ে এতক্ষন কথা হল
মেয়েটির নাম মায়া।ওকে আমার ভাল
লাগে অনেকদিন এই বলতে গেলে প্রথম
দেখা থেকে বৃষ্টির সাথে আমাদের বাসায়
।সে দিন থেকেই ভাল লাগে।আমাদের
বাসা থেকে সামান্য একটু দূরে ওর বাসা।
স্কুল টাইমে বৃষ্টি সাথে থাকে বলে যেতে
পারিনা কিন্তু অন্যসময় টুকু ওর বাসার
সামনে গিয়েই ঘুর ঘুর করি ।গতদিন বিকেলে
সামনা সামনি পড়তেই জোরপূর্বক দাড়
করিয়ে প্রপোজ করেছিলাম।তখন শুধু ড্যাব
ড্যাব করে তাকিয়েছিল।নরম দেখতে হলে
কি হবে একেবারে বিচুটি পাতা।সকালে
নাকি আম্মুর কাছে নালিশ করতে
এসেছিল।করুক নালিশ ভয় পাই নাকি।
নালিশের ভয়ে কখনও প্রেম থেমে গেছে
নাকি।যতই না না করুক একবার হলেও তো
তাকায় এতেই অনেক।মায়ার সব থেকে
একটা জিনিসই আমার বেশি ভাল লাগে
সেটা হল ও খুব সুন্দর করে ভ্যাংচি কাটতে
পারে।তেমনি হয়েছে আমার বোনটা এত
বোকা কেন যে তোর বান্ধবী তোর ভাবী
হলে ক্ষতি কি শুনি।
.
পরেরদিন বিকেলে....
-ও মায়া দাড়াও না?
-এটা কোন ধরনের ডাক হুম?(মায়া)
-আদর করে ডাকলাম তো।
-আচ্ছা পৃখিবীতে কি আমি ছাড়া আর কোন
মেয়ে নেই?
-না তো নেই।মায়া একটাই।
-আপনি বোঝেন না আপনি আমার বিরক্তির
কারন?
-না তো।
-আপনাকে আমার সহ্য হয় না শুধু বৃষ্টির
ভাইয়া বলে...
-কি বল?
-কিছুনা।দেখেন পাগলামী বন্ধ করেন।
-এটা কখন পাগলামী হল প্রেমে পড়লে মানুষ
তো এরকমই করে।
-দেখেন প্রেম তো জীবনে করব না তারপর
আপনার মত একটা আজাইরা পাব্লিকের
সাথে তো কখনই না।
-করবে গো করবে।
-দেখেন এই গো টো বাদ দেন না হলে আমি
কিন্তু আন্টিকে বলতে বাধ্য হব।
-বলতে পার সমস্যা নেই।
-আপনার লজ্জা করেনা আপনার বোনের
বান্ধবী যে কিনা আপনার বোনের সমবয়সী
তার সাথে পড়ে।
-দেখ সব নারীই তো মায়ের জাত। তারপরও
কাউকে না কাউকে তো জীবন সঙ্গিনীরুপে
বেছে নিতে হয়।সেটা না হয় তুমিই হলে।
-দেখেন শেষবারের মত রিকুয়েষ্ট করছি
আমাকে ডিষ্টার্ব করবেন না।
-সেটা কখনও সম্ভব না।
-কেন?
-আমি তোমাকে ভালবাসি যে।
-ধ্যাত.....
চলেই গেল।এত রাগ কেন এই মেয়েটার।
বৃষ্টির বান্ধবী বলে আমিও কিছু বলিনা না
হলে এতদিন বিয়ে করে ফেলতাম।এতদিন ঘুর
ঘুর করে শেষে কিনা বলে আমি আপনার
সমবয়সী। তুই একটু পিচ্চি টাইপই তো হবি
বুড়ি হবি নাকি। বাসার দিকে পা
বাড়ালাম।
.
সাতদিন পর.....
ভাইয়া আম্মু ডাকছে তোকে?(বৃষ্টি)
-কেন?
-জানিনা।
-ওকে তুই যা আমি আসতেছি।
-ভাবতে ভাবতে আম্মুর রুমের দিকে
গেলাম।
-আম্মু ডেকেছ আমাকে?
-ঠাশ.....
-আম্মু কি হল?
-ঠাশ.....
-কি হয়েছে বলবা তো?
-মায়া নামের মেয়েটাকে কি বলেছিস?
-কই কিছু না তো।
-চুপ মিথ্যে বলবিনা।সকালে মায়া এসে
কেঁদে কেঁদে আমাকে সব বলে গেছে।
-কি বলেছে?
-ছি ছি ছি শুভ্র তুই আমাদের মান সম্মান
রাখলি না।
-আম্মু আমি তো।
-চুপ একটাও কথা বলবিনা তোর বিয়ে করা
লাগবে আমায় বলতে পারতিস।
-আম্মু আমি....
-চুপ।পরের মেয়ের হাত ধরার সাহস আসে
কোথা থেকে?
-আমি তো...
-আমার চোখের সামনে থেকে দূর হ।
-আম্মু.....
-তোকে যেতে বলেছি।
-মাথা নিচু করে বেরিয়ে এলাম।
.
এই প্রথম আম্মু আমার গায়ে হাত তুলল।আম্মু
অনেকটা রেগে আছে।রাগার যথেষ্ট কারনও
আছে। আমি তাদের সন্তান হয়ে তাদের
মান সম্মানের কথা চিন্তা করিনি অনেক
পাপ করেছি আমি।ভালবাসার মোহ
মানুষকে অন্ধ বিবেকবুদ্ধিহীন করে তোলে।
যেমনটা আমি হয়েছি।কাল আবারও মায়ার
সামনে গিয়েছিলাম।সত্যি বলতে ওকে
আমি নিজের থেকেও বেশি ভালবেসে
ফেলেছি।তাই ওকে পাওয়ার লোভটা
আমাকে মানুষ থেকে পশুতে তৈরি করে
ফেলেছে।কাল ওকে হাজারবার বুঝিয়েছি
কিন্তু বুঝবেনা।শেষে রাগ করে চলে
যাচ্ছিল।কোন এক কারনে হাতটি
ধরেছিলাম।হাত ধরলেই রেগে গেছিল।
তাইতো আম্মুকে এসে নালিশ করে গেছে।
আম্মু মেরেছে আমাকে তবুও কোন কষ্ট নেই।
কারন অন্যায় করেছি শাস্তি পাব এটাই
স্বাভাবিক।
.
রাত অনেক হয়েছে এখনও মনটা কেন জানি
খারাপ।নিজেকে খুব দোষী মনে হচ্ছে।
আম্মু কয়েকবার ফোন দিয়েছিল রিসিভ
করতে ইচ্ছে হচ্ছিল না।শেষবার ধরতেই
কান্নাকাটি শুরু করল।বাসায় যেতে বলছে।
হাঁটছি বাসার উদ্দেশ্যে।
বাসায় ঢুকতেই আম্মু কান্না শুরু করল।
প্রথমবার আমার গায়ে হাত দিল তো।রাতে
নিজে হাতে খাইয়েও দিল।মায়ার কথা
যেন ভুলে যাই তাড়াতাড়ি সেজন্য ভাবতে
মানা করল।সেদিন অনেকটা কষ্ট
পেয়েছিলাম....।
.
প্রায় মাস খানেক পর....
প্রচন্ড বৃষ্টি নেমেছে।হুট করেই বৃষ্টি
নেমেছে।লোকজন ছুটে নিরাপদ স্থানে
যাচ্ছে।রাস্তায় শুধু গাড়ি ছাড়া মানুষগুলো
বিভিন্ন দোকানে আশ্রয় নিয়েছে আমি
ভার্সিটি থেকে ফিরছি।ছাতা মাথায়
বৃষ্টি খুব প্রিয় তাই হাত বের করে ফোঁটা
ধরছি।পিছন থেকে কেউ একজন এসে ছাতার
নিচে ঢুকল হাপাতে হাপাতে।
-কেমন আছেন?
-জ্বি ভাল তুমি?
-হুম।কোথায় গিয়েছিলেন?
-ভার্সিটিতে।
-আসলে একটা কথা বলার জন্য সুযোগ
খুঁজতেছি কিন্তু পাচ্ছি না।
-কি কথা?
-স্যরি রিয়েলি স্যরি।
-কেন?
-আমার জন্য আন্টি আপনার গায়ে হাত
তুলেছিল।
-ওটা কিছুনা। ভুলে গেছি তুমিও ভুলে যাও।
-কিন্তু...
-থাক না।বাসায় যাবে তো?
-হুম।
-চল পৌছে দেই।
-হুম শোনেন?
-জ্বি।
-আমার একটা কাজ করতে পারবেন?
-কি?
-আগে বলেন রাজি হবেন।
-আশ্চর্য কাজটা কি সেটাতো বলবে।
-আমার ভাইটা এবার পি এস সি পরীক্ষা
দিবে।
-তো?
-একেবারে কথা শোনেনা পড়তে চায় না।
তাই এই কমাস যদি আপনি একটু পড়াতেন।
-আমি ওসব বাচ্চা কাচ্চা পড়াই না মাথা
ধরে পারবনা।তাছাড়া আমি তো খারাপ
অভদ্র আমি কি শিখাতে পারি তোমার
ভাইকে।
-প্লিজ এখনো রেগে থাকবেন না।একটু
উপকার করুন প্লিজ।
-অন্য টিউটর রাখ বাসায়।
-এখন কোথায় পাব।প্লিজ রাজি হয়ে যান।
-কিন্তু....
-আপনাকে বেতন দিব সমস্যা নেই।
-চুপ...।আমি যথেষ্ট সাবলম্বী ফইন্নি নই।
-স্যরি স্যরি।
-বাদ দাও তোমার বাসা এসে গেছে যাও।
-কাল আসবেন কিন্তু।
-কেন?
-পড়ানো শুরু করবেন।
-দেখি।
-প্লিজ আসবেন।
আর দাড়ালাম না।অনেকদিন পর মায়াকে
দেখলাম।এই কদিনে মায়াকে অনেকটাই
ভুলতে শুরু করেছি।আজ আবার হঠাৎ করে
নিজে থেকে এসেছে।আমি তো খারাপ
অভদ্র আমাকে দিয়ে কেন ওর ভাইকে
পড়াবে।ভাবতে পারছিনা যাকে ভুলে
যেতে চাই সেই মানুষটাকে রোজ দেখতে
হবে পারব না এটা কখনও।
.
পরেরদিন....
বিকেলবেলা মায়ার বাসাতে এসেছি।ওর
পিচ্চি ভাই সত্যিই ফাজিলের ডিব্বা।
পড়াচোর একটা।শুধু আলসেমী।পড়াতে
আসতাম না কিন্তু রাতে বৃষ্টি অনেক
রিকুয়েষ্ট করল বলে এলাম।এসেই মনে হচ্ছে
ফেসে গেছি।কারন ও যে এতটা পড়াচোর
ভাল রেজাল্ট কখনই করতে পারবে না।কি
আর করা সানাজীবন অন্যের উপকারটাই
করলাম।নিজেরটা কখনও হলনা।তাও কার
উপকার করছি যে মেয়েটাকে ভালবাসতাম
হাজার অনুনয়েও তাকে পাইনি।
.
আরও কিছুদিন পর....
মায়া আজ শাড়ি পরেছে।শাড়ি অবশ্য
পরেনা তবে আজ কারন আছে বলেই পরেছে।
মায়াকে আজ দেখতে এসেছে।ছেলেও আছে
সাথে।আমি পড়াতে এসে শুনি মায়াকে
দেখতে এসেছে।পিচ্চিটাও সেই সুযোগে
খেলতে গেছে।চলে আসছিলাম মায়ার আম্মু
জোর করে রেখে দিল ছেলেকে দেখার
জন্য।মায়ার বিয়ে হবে।ছেলেপক্ষ বসে
আসে যদিও বিয়ে এখনও ঠিক হইনি তবে মনে
হয় পছন্দ হয়ে যাবে।ছেলে ভাল দেখতে ভাল
জব করে।কিছুক্ষন পর মায়া আসল ঘোমটা
দেওয়া।আমি বসে আছি।মায়া এসে
সবাইকে সালাম দিল আন্টি বলে দিলে।
মেয়ে দেখার জন্য ঘোমটা তোলা হল।কিন্তু
মায়ার মুখটা শুকনো।আমার দিকে
তাকাচ্ছে আড়চোখে।তাকানোটা একটু
অন্যরকম।আমি উঠে গেলাম জরুরী কাজ
আছে বলে বেরিয়ে গেলাম।আমি ওখানে
থাকলে নিশ্চয়ই সমস্যা হত।কারন মায়ার
তাকানোটা স্বাভাবিক নয়।আমি হয়ত
বুঝতে পেরেছি মায়া কেন এমন করছে।
.
এ কদিন পড়াতে এসে মায়ার অনেকটা
পরিবর্তন দেখেছি।প্রথম প্রথম আমিই ওকে
আড়চোখে দেখার চেষ্টা করতাম।কিন্তু
ইদানিং ওই আমাকে দেখে।ওর ভাইকে যখন
পড়াই দরজার আড়ালে দাড়িয়ে থাকে।মুখে
সবসময় মুচকি হাসি।বাসায় ঢুকলেই খাবার
দেওয়া শুরু এটা খাও ওটা খাও।কয়েকদিন
আগে আমি মাত্র বাসায় ঢুকেছি মায়াই
দরজা খুলেছে।ভিজে গেছি বৃষ্টিতে মায়া
দরজা লক করে পিছনে ফিরবে এমন সময়
কাছে কোথাও বজ্রপাত হল।আর কি
মেয়েরা যা পারে এই সময়ে জড়িয়ে ধরল।
কিছুক্ষন পর নিজে থেকেই সরে গিয়ে
লজ্জায় মাথা নিচু করে ছুটে পালাল।
সেদিনের পর থেকেই দেখছি মায়া আমার
দিকে অন্যভাবে তাকায়।যদিও আমি
পাত্তা দেই না।
.
পরের দিন ওদের বাসায়....
-কেমন আছেন?
-এইতো ভাল তুমি?
-হুম ভালই।
-তোমার বিয়ের খবর কি?
-বিয়ে পেলেন কোথায়?
-কাল তো দেখতে এসেছিল তোমাকে?
-হুম দেখতে আসলেই বিয়ে করতে হবে
নাকি?
-না তা নয় তো কি হল শেষপর্যন্ত ছেলেটা
তো ভালই।
-না করেছি।ছেলে পছন্দ হয়নি।
-তো কেমন ছেলে তোমার পছন্দ?
-সাধা-সিধে যে আমাকে অনেক
ভালবাসবে।
-হুম পেয়েছ তাকে?
-হয়ত।
-ভাল।
-আচ্ছা শুনুন?
-কি?
-পড়ানো শেষ হলে আমার সাথে একটু দেখা
করে যাবেন।
-কেন?
-দরকার আছে।
-আচ্ছা।
পড়া শেষ হতেই দেখি ও রুমের সামনে
দাড়িয়ে আছে।পিচ্চিটা ছাড়া পেয়ে দিল
ভো দৌড়।
-কি হয়েছে?
-এটা আপনার?(একটা ঘড়ি এগিয়ে দিল)
-আমার মানে?
-বোঝা লাগবেনা কাল থেকে হাতে
দিবেন।
-আমার ঘড়ি আছে।
-তো কি ওটা বাদ এটা পারবেন।
-পারব না।
-নিন এটা প্লিজ।
-স্যরি।
-কেন?
-এটা ঠিক না।
-কেন?
-জানিনা।(বলেই হাটা দিলাম)
-এই শুনুন?
-হুম কি?
-আপনার সাথে আমার আরও কথা আছে।
-আমার তো নেই।
-আপনার না থাকলেও আমার তো আছে।
-তোমার কি কথা আছে আমি জানি।
-কি জানেন?
-এটা কখনও সম্ভব নয়।
-কিন্তু কেন?আমি তখন না বুঝে আপনাকে
ফিরিয়ে দিয়েছি বলে আজ আপনি তার
প্রতিশোধ নিবেন?
-দেখ যেটা অতীত তাকে আর না ভাবাই
ভাল।
-আপনি তো আমাকে আগে ভালবাসতেন।কত
কি করেছেন আমার জন্য।
-ভালবাসতাম এখন বাসিনা।আর যা
করেছিলাম ভুল ভেবেই করেছিলাম।
-আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলেনন তো
ভালবাসেন না?
-মায়া তুমি এইরকম করলে আমি কিন্তু আর
আসবনা পড়াতে।
-আপনাকে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে
বলতে হবে বলুন ভালবাসেন না?
-ধ্যাত যেতে দাও আমাকে।
-না আগে বলুন।
-মায়া সরে যাও বলছি।
-না।
-পাশ কাটিয়ে জোরপূর্বক বেরিয়ে আসলাম।
-আপনি এভাবে লুকিয়ে যেতে পারেন না
সত্যিটা।(কেঁদে কেঁদে বলল)
আজ ওর আম্মু বাসায় থাকলে কতটা খারাপ
ভাবত আমাকে আল্লাহই জানে।মেয়েটা
যে এত অবুঝের মত ব্যাবহার করে কেন
জানিনা।ওর চোখের দিকে তাকালে আমি
সব গুলিয়ে ফেলব।আমি চাইনা দ্বিতীয়বার
সেই ভুলটা করতে তাই তো চলে এলাম।
.
নয়দিন পর.....
একটু আগে আমার বিয়ে হয়ে গেছে।একা
একাই বসে আছি।বিয়েটা শেষ পর্যন্ত করেই
ছাড়ল মেয়েটা।সেদিনের পর আমি আর ওর
ভাইকে পড়াতে যাইনি।বাসায়
কান্নাকাটি শুরু করেছে না খেয়ে থাকছে
শেষে মায়ার আম্মু আমার আম্মুকে বুঝিয়ে
বিয়েটা ঠিক করল।আম্মুর কথায় আমি রাজি
হয়নি প্রথমে কারন প্রথম অপমান ভুলিনি।
কিন্তু পরে আম্মু বুঝাল তখন রাজি হতেই
হল।আমি বুঝতে পারছি না আমাকে
পাওয়ার জন্য এখন এতকিছু তখন তো পাত্তাই
দিত না।কত কথা শুনিয়েছে।আমি এখনও যে
ভালবাসি তবে মনে মনে।যাই হোক
বিয়েটা করেই মায়ার কান্না একেবারে
হারিয়ে গেছে।হেসে হেসে বান্ধবীদের
সাথে কথা বলছে।
-এটা কি হল?(আমি)
-চিনতে পারছ এটা?(ঘড়ি পরিয়ে দিল মায়া)
-হুম কিন্তু...
-আজ কোন কিন্তু নেই।
-আছে আমি পরব না তোমার ঘড়ি।
-বউ কিছু দিলে নিতে হয়।
-না।
-কেন?
-জানিনা।
-চল খেতে চল।
-তুমি যাও।
-মানে কি খেতে চল বলছি।
-এই যে ধমক দিবানা একদম বউ বউয়ের মত
থাকবে।
-দিব একশতবার অন্যায় করলে।
-চুপ।
-আহা কি পিরীত গো।(বৃষ্টি)
-আরে দোস্ত।(মায়া)
-চুপ ফইন্নি ননদ ডাকবি ননদ।
-হুম।
-কি রে পেত্নি এত খুশি কেন?
-বাহ শেষপর্যন্ত এই মায়া পেত্নিকেই
আমার ভাবী বানিয়ে ছাড়লি।
-কি আমি পেত্নি?
-ভাইয়া বলেছে আমি না।
-আমি কখন বললাম।
-আজ বাইরে শুতে হবে।
-বাহ সব তো জান স্বামী নির্যাতন কেমনে
করতে হয়।
-আরও কত কি জানি দেখবা পরে।
-পেত্নি।(বিড়বিড় করে বললাম)
-কি বললে।
-পেত্নি বলেছে হি হি হি হি।(বৃষ্টি)
-কিইই পাঁজি ভুত একটা।
-হইছে এবার খেতে চল।(বৃষ্টি)
-হুম চল।।।।
.
.
লিখা:অন্তহীন শ্রাবন

No comments:

Post a Comment