Thursday, July 21, 2016

"রোমিও v/s জুলিয়েট"

"রোমিও v/s জুলিয়েট"
`
লিখা- মেহেদী হাসান শুভ
`
`
পরিক্ষা শেষে কিছু দিনের জন্য মামার
বাড়ি বেড়াতে যায় শুভ। একদিন সে
ব্যালকুনিতে দাঁড়িয়ে বাহিরে বৃষ্টি ঝরা
দৃশ্য দেখছিল। হঠাত্ পাশের বিল্ডিং এ
চোখ পরে তার। লক্ষ্য করল কেউ একজন গুনগুন
সুরে গান তুলে ছাদের উপর হেলেদুলে
বৃষ্টিতে গা ভিজাচ্ছে।
.
অপলকে তাকিয়ে রইল শুভ। এত্ত সুন্দর এক
অষ্টাদশী তরুনির দিকে তাকাতেই কেঁপে
উঠল তার হৃদয়ের স্পন্দন। এ যেন সাক্ষাত্
কোন ডানাকাটা পরীর পদাচরণ ঘটেছে
ভূপৃষ্ঠের এই বৃষ্টি ভেজা ছাদের উপর।
অসম্ভব সুন্দরী একটি মেয়ে।
.
টানা টানা চোখ, ধনুকের মত কপালের ভ্রু,
খাড়া নাক, পাতলা ঠোট, লম্বা কালো চুল,
আর বৃষ্টি ভেজা পুষ্ট দেহ।
.
আহ! সব কিছু মিলিয়ে যেন মনে হচ্ছে
স্বর্গের অপ্সরী। হয়ত পথ ভুল করে দুনিয়াতে
এসেছে। যার মায়াবী ঐ মিষ্টি মধুর
মুখ্খানির দিকে তাকানোর প্রথম লগ্নেই
মন পাখি উড়াল দিতে চায়। এভাবে
কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকতেই কখন যেন
মেয়েটির দৃষ্টি পরল শুভর দিকে। হঠাত্
থমকে দাঁড়ায় মেয়েটি। কৌতুহলি চোখে
শুভর দিকে একপলক তাকিয়েই পরক্ষনে
দৌড়ে ছাদ থেকে চলে যায় সে।
.
কিন্তু ঐদিকে শুভর মনে প্রেমের ঘন্টি
বেজে গেল। প্রথম পলকেই অদৃশ্য এক মায়া
জালে আটকা পরে যায় শুভ। প্রাণ পাখিটা
হাড়িয়ে যায় অচেনা অজানা একটি মেয়ের
নীড়ে। প্রথম দেখাতেই এ কি হল তা ঠিক
বুঝে উঠতে পারেনা শুভ।
.
.
যাইহোক, তারপর বিকেলে শুভ বাহিরে
যাওয়ার জন্য অনুকে (মামাতো বোন) ডাক
দিল। কিন্তু অনুর কোন সাড়া না পেয়ে শুভ
নিজেই অনুর রুমে গিয়ে হাজির। দেখল অনু
আয়নার সামনে বসে আছে। অমনি পিছন
থেকে দু'হাতে গলা চেপে একটা ঝাকি
দিয়ে শুভ বলল,
.
=সেই কখন থেকে ডাকছি কানে যায় না
তোর? এতো সাজুগুজু দিয়ে কি করবি হুম?
`
হঠাত্ পিছন থেকে টাওয়েল জড়ানো ভিজা
চুলে বাথরুম থেকে বেরিয়ে আসা কাহারও
গর্জন শুনতে পায় শুভ।
.
=কুত্তা তুই কাকে ধরেছিস?
.
পিছনে ফিরতেই দেখল অনুকে। তারাতারি
ঐ মেয়ের গলা থেকে হাত নামিয়ে একটু
পিছ পা হয়ে দাঁড়ায় শুভ। আর অমনি শুরু হয়
অনুর ক্যালমা! ইরাকের বোমার মত ধুমধুম
শব্দে কিল r ঘুষি পড়তে থাকে শুভর গায়।
.
আসলে ঐ মেয়েটা হল অনুর প্রিয় বান্ধুবী
ইতি। শুভ যাকে ছাদে দেখেছিল সেই
মেয়েটিই আয়নার সামনে বসে ছিল। আর
তাকেই অনু ভেবে গলা টিপে দিয়েছে শুভ।
শুভ অনেক লজ্জা পেয়ে হাবলু মিয়ার মত
স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর ঐদিকে অনু
তার মহা প্রলয়ের ঝর চালিয়ে যাচ্ছে শুভর
উপর দিয়ে।
.
হুম সেদিনই ইতির সাথে প্রথম কথা হয় শুভর।
তারপর আস্তে আস্তে পরিচয় এবং এক
পর্যায়ে খুব ভাল এটা বন্ধুত্ব তৈরী হয়
ওদের। আর ঐদিকে শুভ তার বোন অনুকে
প্রথম দিনই বলে রাখে "ইতিকে তার ভাল
লাগার কথা"
.
অনুরও খুব পছন্দ ইতিকে। তাই সব কিছু অনুর
বুদ্ধিতেই হচ্ছিল। কারন, ইতির ভালোবাসা
ও ভাল লাগার প্রত্যেকটি বিষয় অনু খুব ভাল
করেই জানে। তাই অনুর প্ল্যান মতই সব কিছু
গুছিয়ে নিল শুভ। এখন শুধু বলার অপেক্ষা,
.
.
অতঃপর একদিন ইতিকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়
শুভ। অনুও সাথে ছিল। সব কিছু অনুর প্ল্যান
মতই হচ্ছে। ওরা তিন জন একই তালে
হাটছিল সমুদ্রের ভেজা বালু চড়ে। হঠাত্
অনুর ইশারা পেয়ে আস্তে ইতির নরম
হাতখানা নিজের হাতে মুষ্টিবদ্ধ করে
চেপে ধরে শুভ। ইতি হঠাত্ চমকে উঠলেও
পরক্ষনে নিজেকে সামলে নিয়ে শুভর মুখের
দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে
আবারও সামনে এগিয়ে চলে তারা। আর অনু
অন্য দিকে কেটে পরে।
.
.
সূর্যটা আকাশের পশ্চিম পাড়ে প্রায় ডুবুডুবু
অবস্থায় অগ্নিকুন্ড রুপে স্থির হয়ে আছে।
মাঝে মাঝে সমুদ্রের বিশাল জলরাশি
তীরে এসে আচড়ে পরে। শনশন শীতল
বাতাস বুকে শিহরণ জাগিয়ে তুলে।
প্রকৃতির এই নির্মল পরিবেশের সঙ্গি হয়ে
হাতে হাত রেখে পাশাপালি হেটে চলছে
দুটি বোবা যুবক যুবতি। উভয়ের মনের ভিতর
নানান কথার ঘোরপাক খাচ্ছে কিন্তু কেউ
আগে মুখ খুলছে না। তারা একটি বেঞ্চে
আসন পাতল। শুভ আরও একটু কাছে এসে ইতির
পাশে বসল। উভয়ের চোখ জোড়াই অনুভূতির
সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে। অদ্ভুত রকমের একটা
লজ্জা বিরাজ করছে তাদের মধ্যে। সরাসরি
কেউ কারও চোখের দিকে তাকানোর সাহস
পাচ্ছে না। শুভর যেন হাত কাঁপছে কিন্তু
তবুও ইতির নরম হাতখানি নিজের কোলে
এনে চেপে ধরল। এভাবে কিছুক্ষন থাকার পর
হঠাত্ শুভ বলে উঠল,
.
=ইতি একটা কথা বলব?
.
হঠাত্ ধ্যান ভাঙ্গে ইতির। এবার একটু চোখ
তুলে তাকায় সে। কিন্তু লজ্জা তাকে হ্রাস
করে ফেলছিল। কারন এমন এক অন্যরকম
শিহরন জাগা অনুভূতি এর আগে কখনই অনুভব
করেনি ইতি। হৃদয় জুরে কেমন যেন অজানা
অনুভূতির ঢেউ এঁকে যাচ্ছে তার। তাই
আস্তে করে মাথা নাড়িয়ে ইতি বলল,
.
=হুম বল?
.
অতঃপর কাঁপা কাঁপা কন্ঠে শুভ বলল,
.
="খুব ভাল লাগে তোমাকে"
.
শুভর মুখনিসৃত কথাটি শুনে ইতি যেন
লজ্জায় মুখ লুকানোর ব্যর্থ চেষ্টা করতে
লাগল। কিন্তু ঐ মুহুর্তে ইতি মুখে কিছু না
বললেও ইশারায় ঠিকই বলেছে। ইতিও শুভর
মুষ্টিবদ্ধ হাতটি শক্ত করে চেপে ধরে তার
ভাল লাগার সাড়া দিয়ছে। শুভকে যে তারও
ভাল লাগে সেই ইঙ্গিত যেন তার হাতের
স্পর্শেই প্রকাশিত হল। আর শুভও এই ইশারা
সুস্পষ্ট ভাবেই বুঝতে পারল।
.
তারা তাদের মুষ্টিবদ্ধ হাত দুটি চেপে ধরে
একে অপরের চোখের দিকে অপলকে
তাকিয়ে রইল। যেন চোখে চোখে বলে
যাচ্ছে অনেক কথা। উভয়ের বুকের ভিতর
কম্পন সৃষ্টি হতে লাগল। শ্বাষ ঘন হয়ে আসল
তাদের। এ যেন এক অন্যরকম অনুভূতির ঢেউ
খেলে যাচ্ছে তাদের হৃদয়ে। নাহ আর যেন
চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে থাকতে পারছে
না তারা। হঠাত্ ইতি লজ্জায় চোখ
ফিরিয়ে নিল এবং নিজের হাতখানা শুভর
কাছ থেকে ছারিয়ে নিয়ে বসা থেকে উঠে
দাঁড়াল,
.
=শুভ এখন চল প্লিজ!
=ঠিক আছে চল।
.
.
সেদিনের মত এভাবেই কেটে গেল তাদের।
রাত অনেক হয়েছে কিন্তু কারও চোখেই ঘুম
নেই। শুভ তো সেই প্রথম দেখাতেই পাগল
হয়ে আছে। আর ঐদিকে ইতিও আজ অনেক
অস্থির হয়ে উঠেছে শুভর জন্য। সমুদ্র
সৈকতে বসে শুভর মুখনিসৃত কথাটি বার বার
ইতির কানে ঝংকারের ন্যায় বেজে উঠে।
কথা গুলো ভাবতেই কেঁপে উঠে ইতির হৃদয়ের
স্পন্দন। অজানা শিহরনে ফটফট করতে থাকে
সে। নিজের অজান্তে ইতিও ভালবেসে
ফেলে শুভকে। সেদিনের মত শুভকে ভেবেই
সারাটি রাত এপাস ওপাস করে কটিয়ে দেয়
ইতি।
আজ খুব সেঁজেছে ইতি। ইতি যদিও
এমনিতেই খুব সুন্দর কিন্তু সাঁজলে তাকে
আরও ভয়ংকর রকম সুন্দরী লাগে। আজ তার
এত সাজুগুজুর উদ্দেশ্য একমাত্র শুভকে
ঘিরেই। শুভও কম নয়, যেকোন মেয়েই শুভকে
দেখে ক্রাশ খাবে।
.
যাইহোক, নিত্য দিনের মত অনুদের বাসায়
আজও আগমন ইতির। ইতি এসে রুমে বসতেই
অনু জিজ্ঞাস করল,
.
=কিরে আজ এত সকাল সকাল?
=কই ঠিকই তো আছে।
=হুম বুঝি বুঝি (মৃদু হেসে)
=কি বুঝিস?
=এত সাজুগুজু কার জন্যে?
=ধ্যাত্ কই?
=ঐ রুমে আছে ডেকে দিব?
=কাকে ডাকবি?
=হুম ন্যাকামি!
=অনু . . . .
=হি হি হি
.
কিছুক্ষন পর ইতি বলল,
=আজ ক্লাসে যাবি না?
=না বাসায় ক্লাস করব।
=কে করাবে?
=শুভ করাবে মহারাণী!
=মানে?
=এত মানে মানে করিস নাতো? এদিকে আয়
দেখাচ্ছি।
.
কথাটি বলেই ইতিকে টেনে বসার ঘরে
নিয়ে যায় অনু। সেখানে গিটার নিয়ে আগে
থেকেই বসে আছে শুভ। ইতি আর অনু এক
সাথে গিটার বাজানো শিখতে যেত।
কিন্তু শুভ অনেক ভাল গিটার বাজাতে
পারে বলে এই ক'দিন ওর কাছেই শিখবে
বলে ভাবছে। তাই অনু ইতিকে উদ্দেশ্য করে
বলল,
.
=ভাইয়া তোকে মাত্র ১সপ্তাহের মধ্যেই
গিটার বাজানোর সমস্ত কৌশল শিখিয়ে
দিবে দেখিস।
.
কথাটি বলেই শুভকে আড়াল থেকে
চোখটিপ্পুনি মেরে চলে যায় অনু। আর
ঐদিকে শুভকে দেখতে পেয়ে ইতির চোখ
জোড়া ঝলঝল করে উঠল। শুভও এক ধ্যানে
তাকিয়ে রইল ইতির অপরুপ চেহারার দিকে।
আজ ইতিকে একদম ডানাকাটা পরীর মত
লাগছে। শুভ ইশারায় কাছে ডাকল
পরীটাকে। পরীটাও বাধ্য মেয়ের মত চুপচাপ
পাশে এসে বসল। শুভ আরও কাছে এসে একদম
পাশাপাশি বসল।
.
এরপর গিটারখানা ইতির কোলে বসিয়ে
দিয়ে গিটার ধরার কৌশল দেখিয়ে দিল।
আহ! আবার সেই নরম হাতের ছোয়া। ইতির
গা থেকে বইছে দামী পারফিউমের সুবাস।
মিষ্টি ঘ্রাণে পাগল হয়ে যাচ্ছে শুভ।
কাজল কালো চোখ দুটি যেন পলক পরেনা
তার। শুভ আরও কাছে এগিয়ে এসে ইতির
কানে ফিস ফিস করে বলে দিচ্ছে গিটার
ধরার কৌশল। ইতির বুকটা যেন ধুকধুক করছে।
উফ! এত উত্তেজনা যেন সইতে পারছে না
সে। হঠাত্ সে ফিরে তাকায় শুভর চোখের
দিকে। অপলকে তাকিয়েই থাকে তারা। এ
যেন সত্যিই এক শক্তিশালী মন্রযাদু বয়ে
যাচ্ছে তাদের চোখে চোখে। হ্যা শুভও
বুঝতে পারে এই চোখের ভাষা। শুভ আস্তে
ইতির গালে পরে থাকা এলো চুল গুলো
আঙ্গুলের হালকা স্পর্শে সরিয়ে দিল। শুভর
ছোয়া পেয়ে ইতি যেন কেঁপে উঠল। অনুভব
করতে লাগল অকৃত্রিম অনুভূতির প্রতিটি
ছোয়া।
.
এভাবে যে কতক্ষন কেটে গেল তা আর
খেয়াল নেই তাদের। শুভ আরও কাছে এগিয়ে
আসতে লাগল। একেবারে নাকের কাছে।
ইতির রাঙ্গা ঠোট জোড়া শুভর সামনে
ঝলঝল করছে। এবার শুভ তার চোখ নামিয়ে
নিল। দৃষ্টি ফিরাল ইতির ঠোটের দিকে।
শ্বাষ ঘন হয়ে আসতে লাগল ইতির। ইতি
হাত চেপে ধরল শুভর। শুভ যেন বীর
পালোয়ানের মত আরও কাছে এগিয়ে যেতে
লাগল। একদম কাছে এগিয়ে এল। ইতি
লজ্জায় চোখ দুটো হঠাত্ বন্ধ করে ফেলল।
শুভ আরও কাছে এগিয়ে গেল, একদম ঠোটের
কাছে।
.
(ওহ নো! ঠিক সেই মুহুর্তে হঠাত্ অনু চলে
আসল। হায় হায় কি হল এটা? হা হা হা!
থামেন একটু হেঁসে নেই )
.
হুম ঐ মুহুর্তে অনু চলে আসে। ইতি আর শুভকে
ঐভাবে ফেবিকলের মত একসাথে চিপকে
থাকতে দেখে অনু মোটেও চমকায়নি। কিন্তু
ওরা দুজন একটু লজ্জা পেয়ে স্বাভাবিক হয়ে
বসল এবং এক চিলতে মৃদু হাসি দিল। অতঃপর
শুভ নিজেই গিটারটা তার হাতে নিয়ে
বাজাতে লাগল। গাইতে শুরু করল তার একটা
পছন্দের গান,
-
-
তোকে দেখে হয়েছে মনে
প্রেমের হাতে খড়ি. . . . .
তুই যে আমার খুব আদরের
ডানা কাটা পরী. . . . . .
তোকে দেখে হয়েছে মনে
প্রেমের হাতে খড়ি. . . . .
পৃথিবীতে তুই আমার আর
আমি শুধু তোরই. . . . .
কোথায় তোকে লুকোই আমি
সেই ভাবনায় মরি. . . . .
তুই যে আমার খুব আদরের
ডানা কাটা পরী . . . . .(২)
_
হুমমম চলতে চলতে হঠাত্ করে
সে দিনের সেই প্রথম দেখায়
হুমমম মনটা যেন হারিয়ে গেল
খুঁজে পাওয়া ছিল দায়. . . .
ওওও আজকে তবে একটি কথা
বলছি সরাসরি. . . . . .
তুই যে আমার খুব আদরের
ডানা কাটা পরী. . . . .(ঐ)
_
চোখ দুটো তোর মায়ায় ভরা
হাসিটা এ হৃদয় কাড়ে. . . .
একটা মানুষ এত সুন্দর
কেমন করে হতে পারে. . . .
হুমম এই হৃদয়ে ছিল যত
আশার ছড়াছড়ি. . . . . .
আজকে যে তা পূরণ হল
সেই খুশিতে মরি . . . .(ঐ)
_
তোকে দেখে হয়েছে মনে
প্রেমের হাতে খড়ি. . . . .
পৃথিবীতে তুই আমার আর
আমি শুধু তোরই. . . . .
তোকে দেখে হয়েছে মনে
প্রেমের হাতে খড়ি. . . . .
তুই যে আমার খুব আদরের
ডানা কাটা পরী. . . . . (২)
-
-
এতক্ষন মুগ্ধ হয়ে শুভর কন্ঠে গানটা শুনছিল
ইতি আর অনু। এতদিন জানত শুভ শুধু গিটার
বাজাতে পারে কিন্তু এত ভাল গান গাইতে
পারে তা জানত না। তাই হঠাত্ অনু বলে
উঠল,
.
=একদম ফাটিয়ে দিয়েছ বস!
.
কথাটা শুনেই তারা ৩জন এক সাথে হেঁসে
উঠল। সেদিনের মত এভাবেই হাঁসি আনন্দে
কেটে গেল দিনটি।
.
.
ঠিক ১সপ্তাহ পর, আজ ইতির খুব মন খারাপ।
কেঁদে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে সে। কারন,
আর ২দিন পরেই শুভ বাড়িতে চলে যাবে।
দেখতে দেখতে পুরো ১টি মাস কিভাবে যে
কেটে গেল তা বুঝতেই পারেনি তারা।
মাত্র কিছুদিনের জন্য বেড়াতে এসে পুরো
জীবনটাই সপে দিল একটি মেয়ের কাছে।
হয়ত ইতির ভালবাসার প্রতিটি মুহুর্তকে
ঘিরেই কেটেছিল তার এই ক'দিন।
.
আজ শুভ চলে যাচ্ছে। আবার কখন দেখা হয়
জানেনা তারা। শুভ ইতির কাছে এসেছে
বিদায় নিতে। ইতি বড্ড অভিমান করে গাল
ফুলিয়ে বসে আছে। শুভকে বিদায় দিতে
তার মন সায় দিচ্ছে না। তাই ইতি একটি
গানের মধ্যে বুঝিয়ে দিল তার মনের কথা।
ইতিও গিটারটি হাতে নিয়ে গাইতে শুরু
করল একটি গান,
-
-
পৃথিবীর যত সুখ
যত ভালবাসা. . . . .
সবি যে তোমায় দিব
একটাই আশা. . . . .
তুমি ভুলে যেওনা আমাকে
আমি ভালবাসি তোমাকে(২)
-
-
পুরো গানটি গাওয়া শেষ করেই ইতি দৌড়ে
শুভর বুকে ঝাপিয়ে পরে হু হু করে কেঁদে
উঠল। শুভকে শক্ত করে বুকে চেপে ধরেছে
ইতি। এই ক'দিনে শুভকে অনেক ভালবেসে
ফেলেছে সে। তাই কাঁন্না মাখা কন্ঠে
ইতি বলল,
.
=বল আমাক ভুলে যাবে নাতো?
.
শুভ ইতির কপালে একটা ছোট্ট চুমু দিয়ে বলল,
.
=না, কখনই ভুলবনা।
.
অতঃপর দুজন দুজনকে শক্ত করে তাদের বুকে
জড়িয়ে নিল।


The End.

No comments:

Post a Comment