Thursday, July 21, 2016

(চাঁদ মামার বউমা)

(চাঁদ মামার বউমা)

লিখাঃÔñtöhîñ Kâfi (তিন ফোটা বৃষ্টি)

-এই...
-ইম্ম কি?
-উঠো।
-উঠে কি করবো?
-নাচবো।
-এই ভোরে!
-হিম্ম।
-ঘুম পাচ্ছে খুব।
-তো?
-একটু পরে উঠি না।
-ইম্ম হিম্ম আজান দিচ্ছে,উঠে নামজ পরতে
যাও।
-আজ না গেলে হয় না?
-আজ সারাদিন না খেয়ে থাকতে পারবা?
-না।
-তাইলে তাড়াতাড়ি যাও।
-আচ্ছা।
-আর শুনো।
-আবার কি?
-নামাজের পর,২ কিলো হেটে আসবা।
-২ কিলো!!!
-হিম্ম,কথা না বাড়িয়ে যাও,নইলে কিন্তু
সকালের নাস্তা অফ।
-এ্যা!!!
-জী হ্যা।আমি নামাজে দাঁড়াবো,তারপর
রান্না করবো এসে যেন তোমায় না দেখি।
-আর আমার সকালের মিষ্টি টা। (পেছন
থেকে হাত ধরে)
-এখন না।
-তাইলে??
-আগে কাজ করো তারপর পারিশ্রমিক
পাবে
যাও।(বলে পালালো)
কিছুক্ষণ পর (নামাজ ও হাটাহাটি
ততোক্ষণে
শেষ)
-ঐ
-হ্যা ডাকছো কেনো?
-ফুটবল খেলবো।
-আমি ক্লান্ত,পারবো না, ছরি।
-তাইলে থাক আপাততো খাবার টেবিলে
আসেন,নাস্তা রেডি।
-অক্কা?
-কি হলো?
-নাস্তার টেবিলে এগুলা কি??
-খেলার ফুটবল,কেনো দেখতে পারছো
না,সকালের নাস্তা।আমি নিজ হাতে
তোমার
জন্য বানিয়েছি।
-ঠিকাছে কিন্তু......
-কিন্তু কি?
-সবজি কেনো?
-তো!এগুলা কি নাস্তা হতে পারে না?
-হিম্ম কিন্তু আমি তো এগুলা খায় না।
-কেউ নিষেধ করছে খেতে?
-না,ঠিক তা না।
-তাইলে?
-আমার এসব পছন্দ না।টেস্ট নেই।
-কে বলেছে?
-আরে তুমি জানো না,তুমি দাড়াও আমি
এখুনি
দু-প্যাকেট বিরিয়ানি আনছি সেই টেস্টি।
-হাফফ
-কি হলো?
-সকালে কেউ ওগুলা খাই?
-আমি তো এতদিন ওগুলাই খাইতাম।
-এখন থেকে এগুলা খেতে হবে।তুমি হয়তো
জানো না,সবজি কিন্তু খুবই পুষ্টিকর
খাবার।।
-এ্যা!!!
-ঐ বাচ্চা ছেলদের মত এ্যা এ্যা করো
কেনো?চুপচাপ খেয়ে নাও,দ্রুত খাও না হলে
অফিসে লেট হয়ে যাবে।
-কেন যে বিয়ে করলাম?এটা না করলে আর
যাই হক ঠিক ভাবে খেতে তো পারতাম।
(চুপি
চুপি)
-কিছু বললে?
-কই না তো।
-আচ্ছা চুপচাপ খাও।
-এই শুনো (খেতে খেতে)
-কি?
-এত ঝাল দিছো কেনো ঠোঁট তো পুরে
যাচ্ছে
একদম।
-কই আমার তো লাগছে না।
-কিন্তু আমি তো ঝালে খেতে পারছি না।
-হিম্ম বুঝছি।
-কি বুঝছো?
-চোখ বন্ধ করো।
-আচ্ছা।
তারপর নতুন বউয়ের গোলাপি ঠোঁটের
স্পর্শে
দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ মিষ্টি স্বাদ টা বুঝে
নিলাম।
এই মিষ্টির সাথে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ
মিষ্টির দোকানের মিষ্টিগুলোও হার
মানবে।
-ঝাল লাগছে এখনও?
-ঝাল!!সেটা আবার কখন লাগলো?
-মানে?
-আরে আমি তো নতুন বউয়ের ঠোঁটের
মিষ্টান্ন
টা চেক করার জন্য ড্রামা করছিলাম একটু।
আমার বউটি এতো মিষ্টি দেখতে চুম্বন না
করে থাকা যায় বলো।
-তাই না।থাক আর ঢং করতে হবে না দ্রুত
খেয়ে অফিস যান।
-যো হুকুম মহারাণী।
নাস্তা শেষ করে অফিসে চলে আসলাম।
অফিস রুমে ঢুকতেই ফোনটা বেজে উঠলো।
-Hello...
-হিম্ম বলো,ফোন দিছো কেনো কিছু
লাগবে?
(আমি)
-না।
-তাইলে?
-অফিসে পৌছাইছো তুমি?
-হিম্ম।
-আমার তো একা ভালো লাগছে না কি
করবো?
-চলে আসবো আমি?
-এই না না।বউ এর প্রতি আদর একেবারে
উতলিয়ে উঠছে দেখছি।
-কেনো আদর থাকবে না শুনি।দশ টা না
পাঁচ
টা না একটা মাত্র বউ আমার।
-হিম্ম বুঝেছি বর সাহেব।এখন শুনেন...
-শুনতেছি তো বলো।
-অফিস টাইমে কাজে একটুও ফাঁকি দিবে
না।
-আরে আমি ফাঁকিবাজ নাকি?
-কথার মাঝখানে কথা বইলো না তো।
-আচ্ছা বলছি না, বলো... ।
-নামাজের টাইমে নামাজ আদায় করে
নিবে,দুপুরে বাইরের খাবার না, আমি যা
রান্না করে দিয়েছি সেটা খাবে,আর
অফিস
শেষে সোজা বাসায় চলে আসবা।।
আবিরঃযো হুকুম বেগম।আর কিছু?
-হিম্ম আর যদি অফিসের কোন মেয়ের
দিকে
তাকাইছো তাইলে তোমার চোখ তুইলা
নিবো।
-এ্যা!!!অন্ধ হয়ে যাবো তো।
-তাতেও কিছু করার নেই।
-তাকাবো না মেডাম,ভয় নেই।
হঠাত_
-স্যার আসতে পারি। (এশা-অফিসের
মহিলা
কর্মকর্তা)
-আরে এশা! হিম্ম এসো।(ইরা,অরূপে আমার
বউ
তখন লাইনে ছিলো)
টুট টুট... শব্দ।স্কিনে তাকিয়ে দেখলাম
ফোন
টা ইরা কেটে দিছে।বুঝতে আর বাকি
রইলো
না এশার কথা শুনতে পেরেই এমন হয়েছে।
মুখে হাত দিয়ে ভাবছি আজ কপালে শনি
আছে।একবার কলেজ লাইফে একটা মেয়ের
সাথে কোন ব্যাপারে যেন হেঁসে কথা
বলার
জন্য থাটিয়ে থাপ্পর মেরেছিলো।হয়তো
মুখে
মশা বসেছিলো তখন।মারের ওয়েটে তিন
দিন
দাগ ছিলো।
তখন তো জি এফ ছিলো ,এখন বউ।এবার
হয়তো
৭ দিন ব্যাথা থাকবে।মেয়েটা আমাকে
অনেক ভালোবাসলেও বড্ড রাগী।
-স্যার শুনছেন?(এশা)
-হিম্ম বলো। (এশার কথায় বাস্তবে ফিরে
এলাম)
-স্যার এই ফাইল গুলো দেখে দিন তো।
-আচ্ছা দেখবো,এখন যাও।
অবশেষে অফিস টাইম শেষ।বাসায়
পৌছালাম।সারা বাড়ি খুজেও ইরা কে
পেলাম না।অবশেষে ছাঁদে দেখলাম মিষ্টি
বউটি রাগে মুখ লাল করে দাঁড়িয়ে।রাগলে
এই মেয়েটাকে এত সুন্দর লাগে বলে বুঝানো
যাবে না।
-ইম্ম হিম্ম... (হালকা কাশির শব্দ করলাম)
-একরাশ বিরক্তি নিয়ে আমার দিকে এমন
ভাবে তাকালো যেন আস্ত খেয়ে ফেলবে
আমায়।
-বাবু ছড়ি।(আসামির মত মাথা নীচু করে)
-ছড়ি কিসের?
-ভুল হয়ে গিছে আর হবে না প্রমিস।
-তুমি আমার সাথে কথা বলবে না।
-তাহলে কার সাথে কথা বলবো?
-তুমি তোমার আদরের এশার কাছে যাও।
-ওর কাছে যাবো কেনো?ও কি আমার বউ?
আমার বউ তো তুমি।
-হিম্ম আমি বাড়ির বউ আর ওটা অফিস বউ।
-ধুর অফিস বউ আবার হয় নাকি?
-হয়,তোমার হয়,তুমি তোমার অফিস বউ এর
কাছে যাও।
-বাবুনি ও আমার অফিসের স্টাফ।অফিসের
কাজেও কি কথা বলবো না?
-না বলবে না।
-কেনো?
-কেনো মানে।কোন মেয়ের সাথে কথা
বলবে
না এটাই।
-আচ্ছা আর বলবো না এবারের মত মাফ করে
দাও।
-মাফ করতে পারি দুটি শর্তে।
-আবার শর্ত লাগবে?
-হিম্ম।
-আচ্ছা বলো।
-১ম শর্ত-কান ধরে ১০০ সেকেন্ড দাড়িয়া
থাকবা।
-কি হবে তাতে?
-ছবি তুলবো?
-এ্যা!!!
-হ্যা।তারপর ছবিটা বড় ফ্রেমে আটকিয়ে
দেয়ালে বাধিয়ে রাখবো।হাজার হলেও বর
সাহেবের ছবি।
-এতে লাভ কি হবে?
-লাভ আছে।
-কি?
-আপনি প্রতিদিন অফিসে যাবার আগে ছবি
টা দেখবেন।আর আজকের কথা মনে রেখে
মেয়েদের সাথে টাংকি মারতে পারবেন
না।
বউ রেগে আছে তাই বাধ্য হয়ে যখনি কান
ধরতে যাবো এমন সময় মিষ্টি বউটি এসে
আমার বুকে মুখ লুকালো।তারপর ঘটলো
ভালোবাসার সবচেয়ে রোমান্টিক ছোয়া
(লিপ কিস),গোলাপি ঠোঁটের উষ্ণ আবার
ছোয়ায় স্পর্শীত হলাম আমি।
ইরা আমাকে জরিয়ে ধরে আছে,আমিও
মিষ্টি বউটির উষ্ণতা উপভোগ করে
রোমাঞ্চিত হচ্ছি।
-তুমি অন্য মেয়ের সাথে কথা বললে আমি
সেটা মেনে নিতে পারিনা।(ইরা)
-কেনো পাগলি?
-হারানোর ভয়।যদি কোনো শাঁকচুন্নি
আমার
বর কে আমার থেকে দূরে নিয়ে যায়।
-হারাবো না বাবুনি ভয় নেই।
-জানো তুমি ছাড়া নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট
হয়।
-আমি তোমায় ছেড়ে কখনও কোথাও যাবো
না পাগলি বউ।
-সত্যি তো?
-হিম সত্যি,সত্যি,তিন সত্যি।
-আমি তোমায় খুব ভালোবাসি।এই বুকের
সামান্য জায়গাটা সারাজীবনের জন্য শুধু
আমার।
এখনও পাগলিটা আমার বুকে মাথা রেখে
আছে।আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
কিছুক্ষণ পর বউটির কপালে উষ্ণ স্পর্শ
দিয়ে_
-আমিও তো তোমাকে অনেক ভালোবাসি
মিষ্টি বউ।আর ২য় শর্ত টা বলবে না? (আমি)
-হিম্ম।কিন্তু লজ্জা লাগছে।
-তোমার বর সাহেব ছাড়া আর কেউ নেই
এখানে মিষ্টি বউ।বলো...
-তুমি তো জানো আমার বাসায় একা ভয়
লাগে।
-হিম্ম তো?
-আমাদের মাঝে একটা তৃতীয় জন চাই।
যাকে
নিয়ে শুরু হবে আমাদের জীবনযাত্রা।ওকে
নিয়ে সাজাবো ভালোবাসার ছোট্ট একটা
ঘর।
-শুধু একটাই চাই?
-যাহ ফাজিল একটা।(লজ্জা শিল
কন্ঠে,বলেই
মিষ্টি বউ টি পালালো)
আজকের রাত টা জ্যোৎস্না রাত।নিশ্চুপ
আকাশের চাঁদ টা আমাদের রোমান্স দেখে
মিষ্টি হাঁসিতে তে জ্যোৎস্না ছড়িয়ে
দিচ্ছে।লাভ ইউ চাঁদ মামা উম্মাহ।।
-ঐ মামা ভাগ্নের ভালোবাসা শেষ করে
খেতে আসো।অনেক রাত হইছে ভোরে উঠতে
হবে আবার।
-হিম্ম আসছি। (আমি)
চাঁদ মামা তোমার বউ মা ডাকছে আসি,শুভ
রাত্রি।
উৎসর্গঃসুখপাখি

No comments:

Post a Comment