Saturday, July 23, 2016

গল্পের নামঃ কর্কট রাশির কন্যা জেরিন

গল্পের নামঃ কর্কট রাশির কন্যা জেরিন
.
লেখাঃ Alvi Ahmed Shawon (স্টুপিড লাভার)
.
.
১।
~
জেরিন আমার সব থেকে ভালো ফ্রেন্ড।
আমরা কলেজে লাইফ থেকে এক সাথে।
কখনো আমাদের মাঝে কখনো কোনো
ভুল বোঝা বুঝি হয়নি। কারন ওর আমার মাঝে
সম্পর্কটাই ছিলো এমন।
.
.
হ্যা আমরা ঝগড়া করতাম খুব। সব সময় বলতাম "তোর
সাথে আর জীবনেও কথা যদি বলছি তো নাম
চেন্জ করে রাখবো"।
.
.
এত ঝগড়া সত্বেও পরদিন আমরা আবার ঠিকই কথা
বলতাম কিন্তু যখন মনে পড়ে যায় ও হো আমরা
তো ঝগড়া করেছি, এই কথা বলতেই শুরু হয়ে যায়
"যাহ কুত্তা"।
.
.
২।
~
জেরিনের সব থেকে বড় সমস্যা হলো ও খুব
হতাশায় ভোগে। এবং এর একটা অবশ্য কারনও
আছে। সেটা হলো ও কর্কট রাশির কন্যা।
.
এবং বিশেষত দেখা যায় কর্কট রাশির কন্যাদ্বয় একটু
বেশিই হতাশায় ভোগে। কেন যে ওদের এত
হতাশা কিছুই বুঝিনা। তাই মাঝে মাঝে খুব রাগ লাগে
জেরিনের ওপর।
.
কিন্তু তা বেশি সময় থাকেনা। কারন হতাশায় পড়ে
যখন জেরিন ফোনে খুব কান্না শুরু করে দেয়
তখন আর রাগ করে থাকতে পারিনা।
.
.
৩।
~
-- দোস্ত তোর সাথে আর দেখা হবেনা।
-- কি যে বলিস, কেন তুই বিয়ে করবি?
-- আরে না কি যে বলিস।
-- ওহ তাহলে???
-- গতকাল রাতে তোর সাথে কথা বলার পর মনটা
ভালো লেগেছিল। কিন্তু পরে আবার মনটা খুব
ভারী হয়ে যায়।
-- সেটা কেন?
-- জানিনা, তবে কাল সুইসাইড করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।
-- পাগলামো করিস না বুৃঝলি।
.
.
মেয়েটা কে সামলানো খুব কঠিন আমার জন্য।
এই নিয়ে সে ৪-৫ বার সুইসাইডের চেষ্টা
করেছে। কিন্তু মৃত্যুটা এত সহজ না। তাই বরাবর
তেমন কিছুই হয়নি।
.
.
৪।
~
আজ সব থেকে বেশি খারাপ লাগছে। জেরিন
এখন হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে। ডক্টর
বলেছে, ঘুমের ইন্জেকশান দিয়ে দেয়া
হয়েছে। আপাতত Out of danger এ রয়েছে।
.
.
আমি বুঝিনা কর্কট রাশির কন্য গুলো কেন এমন হয়।
আমি যদিও সবাই কে জানিনা। তবুও আমার কাজিন লামিয়াও
কর্কট রাশির মেয়ে ছিলো। এবং সেও এমন
হতাশায় ভুগতো।
.
.
জীবনে হাতাশা জিনিস টা সত্যিই খুব খারাপ। কারন
জীবনের প্রতি যদি একবার হতাশা এসে পড়ে।
তবে সে জীবনটাকে অর্থহীন মনে হয়ে
যায়।
.
.
৫।
~
-- এক্সকিউজ ডক্টর আমি কি ওর সাথে কথা বলতে
পারি???
-- আপনি রোগীর কি হন?
-- ফ্রেন্ড।
- খুব কাছের?
- জ্বী।
- ঠিক আছে তবে যেতে পারেন।
.
.
জেরিন চোখ বুজে শুয়ে আছে। আচ্ছা এমনটা
করার কি খুব প্রয়োজন ছিল??? সুইসাইড যদি
জীবনটাকে সুন্দর করে দিতে পারতো।
তাহলে পৃথিবীতে যারা ব্যর্থ মানুষ। হতাশায়
ভোগে তারা কখনো বেচে থাকতো না। বরং
উভয়েই সুইসাইড করতো।
.
.
৬।
~
জেরিন আমার সব থেকে ভালো ফ্রেন্ড তা
সত্বেও "কেন যে এমন করে" কখনো বলেনি
আমাকে সেটা।
.
.
- কেমন আছিস আলভি?
- চুপ আগে বল কেন এমন করেছিস?
- আগেই বলেছি frustration.
- Oh Just Shut Up...okkkk..
.
.
কথাটা বলেই অন্য দিকে তাকিয়ে রইলাম। এবং সে
আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তা আমার কাছে
অস্বস্তিকর লাগছে।
.
.
৭।
~
"আলভি জানিস, কেউ আমাকে ভালবাসেনা, কেউনা।
কেউ কখনো আমাকে ভালবেসে জড়িয়ে
ধরেনি, একটিবার ভালবাসি বলেনি, তাহলে তুই বল
কেন বাচবো আমি??? আর দেখনা কি দুর্ভাগ্য
আমার, এখন মৃত্যুও আমার সাথে মজা করছে" __কথা
গুলো বলে চোখ টা বুজে ফেলে জেরিন।
যার জন্য ওর চোখ বেয়ে জল পড়তে থাকে।
.
.
.
-- তুই এমন করিস না জেরিন তোকে ছেড়ে
আমি কিভাবে থাকবো বল??
-- কেন তোর আর কি তুই কত মেয়েদের
সাথেই কথা বলিস।
-- ঠিক আছে আর কারো সাথে বলবোনা।
-- আমি কি বারন করেছি নাকি?
.
.
আবার কিছু সময় নিস্তব্ধতা। আচ্ছা জেরিন যেন কি
বলল? আমি অন্য মেয়েদের সাথে কথা বলি।
আচ্ছা ওয়েট ওয়েট সে কি জেলাস ফিল করে??
.
.
করতেও পারে। কারন আগে সব সময় আমার হাতটা
শক্ত ভাবে জড়িয়ে রাখতো। বন্ধুত্ব ভেবে
আমি সিরিয়াস নেইনি।
.
.
-- জেরিন?
- বল?
-- পৃথিবীর কোনো ছেলে যদি তোকে না
ভালবেসে থাকে তবে শুনে রাখ আমি
তোকে খুব ভালবাসি।
.
.
কথাটা বলার সাথে সাথে জেরিনের চোখ
বেয়ে জল পড়তেছে। আচ্ছা জেরিনের কি
নেই? দেখতে ভালো, সব দিক দিয়েই ঠিক ঠাক
তবুও এমন করে কেন???
.
.
-- তুই ভালবাসবি আমায় আলভি!!!
- হ্যা।
-- মিথ্যে বলিস না।
- মিথ্যে বলছিনা এই তোকে ছুয়ে বললাম।
-- ঠিক আছে তবে অন্য মেয়েদের সাথে কথা
বলতে পারবিনা।
- উমমমম ভাবতে হবে।
- যাহ তোর সাথে কথা বলবোনা দুষ্টু।
.
.
এই বলে বিপরীত দিকে ফিরে শুয়ে থাকলো
সে। এর অর্থ সে আমার সাথে অভিমান
করেছে। এখন কি করা উচিত???
.
উম কিস করবো ওকে??? করতে পারি। কারন
জেরিন ও হয়ত সেটাই চায়।
.
তাই একটু উবু জেরিনের কপালে, গালে, নাকে,
শেষে ঠোটে একটা কিস করলাম। সাথে সাথে
জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিলো।
.
.
- কি হলো ম্যাম কাদছেন কেন??
- আমাকে ছেড়ে কখনো যাবিনা?
- কখনো নয়।
- সব সময় ভালবাসবি আমায়?
- হ্যা।
.
.
আর একটু strongly জড়িয়ে ধরলো সে। ভাবতেই
অবাক লাগে। মেয়েটার বুকে কারো জন্য এতটা
ভালবাসা বেধে রেখেছে অথচ কাউকে
ভালবাসতেই পারতো না সে। যদি সুইসাইড
করতো।
.
.
তাই বলি এমন কাজ মোটেও ভালো না। যাই হোক
জেরিন কে জিগ্গাসা করলাম। "আচ্ছা তুই সব সময়
হতাশায় ভুগতি কেন বলতো? কখনো তো বলিস
নি হয়ত কোনো কারন আছে"
.
.
একটু মন খারাপ করে মাথা নিচু করে বলল
"নিউজপেপার থেকে"।
.
আমি অবাক হয়ে গেলাম নিউজ পেপার দেখে
আবার হতাশায় ভোগা সেটা আবার কি???
.
.
উত্তরে যা শুনলাম তাতে আরো বোকা হয়ে
যাই তা হলো "পত্রিকায় রাশি মালায় যা লিখে সেটাই
সে বিশ্বাস করে, এই যেমন (রোমান্স অসুভ)।
.
.
- উফ তুই রাশি বিশ্বাস করিস?
- হ্যা।
- জেরিন তোর সাথে এখনই ব্রেকআপ আমার
যা।
- এই না প্লিজ প্লিজ না???
- তাহলে বল আর জীবনেও রাশি মালা পড়বি না???
- আচ্ছা।
.
.
৮।
~
অতঃপর বছর খানিক পরে আমাদের বিয়ে হয়। কিন্তু
অভ্যাস খুব ভয়ানক জিনিস। এরপরও আবার রাশি মালা
খুলে দেখে তাও আবার বাসর রাতের দিন।
.
আর খুব কান্না শুরু করে দেয় সে। তাকে থামাতে
আমারই জান অর্ধেক হয়ে যায়।
.
.
- কি এমন লিখলো রাশিমালায় যে কাদলে??
- রোমান্স অশুভ।
- বললাম না রাশি মালা বাজে। সব মিথ্যে লেখে।
- কেন?? (কাদতে কাদতে বলল)
- কারন ওনারা কিভাবে বুঝবে আমাদের রোমান্স
শুভ কিনা।
.
.
এই বলে জেরিন কে বুকের মাঝে টেনে
নিয়ে কপালে একটা চুমু দিয়ে বলি। "আমি ওসব মানি না
আমি শুধু তোমায় ভালবাসতে চাই"।
.
কথা টা শুনে জেরিন একটু সিরিয়াস হয়ে যায় এবং
বলে "আমি আর কখনো রাশিমালা পড়বো না কারন
যার এমন লাভিং হাজবেন্ড থাকে তার রোমান্স
কখনো অশুভ হয়না"
~
~
~
Writter : Alvi Ahmed shawon (স্টুপিড লাভার)

No comments:

Post a Comment