Thursday, July 21, 2016

*-*-*-*-অমূল্য রতন-*-*-*-*

*-*-*-*-অমূল্য রতন-*-*-*-*

লিখা:ফায়সাল আহম্মেদ শাওন

যেই ঘরের দরজাটা নক করতে যাবো ঠিক
তখনি
দরজাটা খুলে গেলো। বুঝতে আর বাকি
রইলোনা
যে দরজাটা খোলা ছিলো।রুমে ঢুকেই
দেখলাম,
সাফা সোফায় বসে রিমোট হাতে নিয়ে
টিভির দিকে
তাকিয়ে আছে। আমার দিকে একবার
তাকিয়ে আবার
টিভি দেখায় মন দিলো আমি রুমে যেয়ে
ফ্রেশ
হয়ে বাহিরে আসলাম তখন দেখলাম খাবার
টেবিলে
দাড়িয়ে আমার জন্য খাবার বাড়ছে।
-
আমি ওর দিকে একবার তাকিয়ে খাবার
টেবিলে
বসলাম। আর বলতে লাগলাম,
"কি ব্যাপার তুমি খাবা না?
"না!আমি আগেই খেয়ে নিয়েছি।
কথাটা বলেই গ্লাসে পানি ঢেলে আবার
সোফায়
যেয়ে টিভি দেখতে লাগলো। আমি ওর
দিকে
আবার তাকালাম,তারপর ভাত মেখে খেতে
লাগলাম।
-
খাওয়া শেষ করে ওর কাছে যেয়ে বসলাম।
আমাকে দেখে বল্লো,আমি ওইগুলো সাফ
করে আসছি। এই বলেই আমার সামনে থেকে
চলে গেলো। আমি ও আর কিছু না বলে রুমে
যেয়ে লাইটটা বন্ধ করে শুয়ে পড়লাম।
কিছুক্ষন পর
হঠাৎ লাইট টা জ্বলে উঠলো,তাকিয়ে
দেখলাম সাফা
আমার রুমে ঢুকেছে। এসেই ও আমাকে বলতে
লাগলো, ঘুমেয়ে পড়েছিলেন না কি?
"না এই মাত্র তো এসেই শুইলাম,কিছু বলবা?
" হুম একটা কথা বলার ছিলো।
"বলে ফেলো,সমস্যা নাই।
"না,মানে আমি মাস্টার্স টা কমপ্লিট
করতে চাচ্ছিলাম।
আমি ওর দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে একটা
মুচকি হাসি
দিয়ে বল্লাম,হুম করবে সমস্যা কি?
তাছাড়া এখনো
আমাদের সন্তান-টন্তান হয়নি। এখনিতো
সময়।
"কথাটা বলে কি আমি ভুল করলাম?
"নাতো আমি কি খারাপ কিছু বলছি?
" তো এখানে সন্তান এর কথা কেন আসলো?
"কেন আমাদের বিয়ে হয়েছি এক সময় তো
সন্তান তো হবেই।
আমার কথাটি ও শুনেই রুম থেকে বের হয়ে
গেলো।
-
সাফার বাবার সাথে আমার চাচার ভালো
সম্পর্ক ছিলো
সেই সুবাদে আমরা সাফার বিয়ের দাওয়াত
পাই। আমরা
সবাই ওর বিয়েতে যাই। কিন্তু পরিশেষ যা
ঘটলো,তাতে বিয়ে বাড়ির লোকগুলো
মোটেই
প্রস্তুত ছিলো না। যেই পাত্র এর সাথে ওর
বিয়ে
হওয়ার কথা সে নাকি বাড়িতে থেকে
ভেগে
গেছে। অনেক লোক অনেক কথা বলা শুরু
করে দিলো। সাফার বাবাকে দেখলাম,
আমার চাচাকে
ধরে খুব কান্না করছে। বউ এর সাজ্বে ওকে
খুব
সুন্দর লাগছিলো,তাছাড়া কিছুদিন আগে
রিমির সাথে
আমার রিলেশনটা ব্রেকাপ হয়ে গেছে।
আমি
নিজেও খুব যন্ত্রনায় ভুগতেছিলাম। তাই
মাথায় কেন
যেনো ওকে বিয়ে করার বুদ্ধি এসে পড়লো।
আমি আমার চাচাকে ওকে বিয়ে করার কথা
বল্লাম। তিনি
আমার কথায় আর কনো দ্বিমত হোলো না।
তাছাড়া
এখন বিয়ে না দিলেও বছর দুই এক পর
আমাকে
ঠিকই বিয়ে দিবে,তাই আর না করলোনা।
বাবা মারা
যাওয়ার পর এই চাচা আর মা আমার সব।
তারপর চাচা সাফার
বাবাকে বলে আমাদের বিয়ে দিয়ে
দিলো,সেই
দিনই। এতে সাফার বাবা,মা আর আমার
মায়ের ও কনো
অমত ছিলো না বরং তারা অনেক খুশিই
হয়েছিলো।
.
বিয়ের কাজ শেষ করে ওকে সি.এন.জি করে
আমাদের বাসায় নিয়ে গেলাম।
ভেবেছিলাম রিমির
থেকে পাওয়া কষ্টটা ও আমাকে ভুলিয়ে
দিবে। ওর
এইরকম অসময় অবস্থায় আমি ওর পাশে
দাড়িয়েছি
বলে ও আমাকে অনেক বেশিই ভালবাসবে।
আমার
মুখ দিয়ে আবার আদুরি কথাগুলো ওর
ভালবাসা দিয়ে
বের করবে। কিন্তু সেই রাতে ও যা বল্ল।
আমি তা
শুনে খুব আতংক হয়ে গেলাম।
"কেন যে আল্লাহ আমার খুশি দেখতে
পারেনা!
সাফা
"মানে কি বলতেছেন এইসব?
"আচ্ছা আপনি কেন আমাকে বিয়ে করতে
গেলেন?
ওর কথা শুনে আমি বার বার হচট খাচ্ছি।কি
বলে এই
মেয়েটা,কোথায় সে আমাকে জড়িয়ে ধরে
কেধে তার প্রতি আমার মায়াটা বাড়াবে
তা না করে ঝারি
দিচ্ছে।
"কি হলো বলতেছেন না কেন?
আমি ওর দিকে তাকিয়ে বল্লাম,ওই মুহুর্ত্যে
আপনার
বাবার চেহারাটা দেখে খুব মায়া
লাগছিলো তাই আমি এই
কাজটা করছি।
"যখন আমি জান তে পারলাম আমার
বিয়েটা ভেঙ্গে
গেছে খুব খুশি হয়েছিলাম।কারন আমি
আমার
লাইফটাকে ইনজয় করতে চাই। কিন্তু আপনি
তা হতে
দিলেন না।
আমি কি বলবো ওই মুহুর্ত্যে কি করবো কিছুই
বুঝতে পারলাম না। ভাবছিলাম কিইছুদিন
যেলে ঠিক
হয়ে যাবে কিন্তু না তা আর হলো না।
কষ্টটা কমাতে
যেয়ে কষ্টটা আরো বৃদ্ধি পেতে লাগলো।
আমার সাথে অনেক রাগ নিয়ে কথা বলতো।
কিছু
জিজ্ঞাস করলে ঠিক মতো উত্তর দিতো
না। খুব
রাগ হতো কিন্তু কিছু বলতাম না। ওর এই
রকম কান্ড
কেউ বুঝে উঠার আগেই আমি ওকে নিয়ে
আলাদা
হয়ে গেলাম। যাতে ও ওর মতো চলতে পারে।
.
আমি ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম। মেয়েটা
এক
মুহুর্ত্যর জন্য আমার দিকে তাকালো না।
বিছানা
থেকে নেমে লাইট টা বন্ধ করে আবার শুয়ে
পড়লাম। কেন যে ফাইজলামি করে এইসব
বলতে
গেলাম। তাও আবার এতোদিন পর মেয়েটা
নিজ
ইচ্ছায় কথা বলছে আমার সাথে। নিজের
কাছেই খুব
খারাপ লাগছে।
.
ওর আর আমার বিয়ের সাত মাস এর মতো
হয়ে
গেছে। খুব চেষ্টা করেও নিজের করে নিতে
পারি নি? অনেকবার জিজ্ঞাস করছি
তোমার
পচ্ছন্দের কেউ আছে কি না? তাও নেই।
তাহলে
কেন এমনটা করে? কিন্তু আমার কেন যেনো
বিশ্বাস হতো না। একবার ওকে রিকুয়েস্ট
করে
ওকে নিয়ে একটা রোমান্টিক মুভি
দেখছিলাম।
মুভিটাতে রোমেন্স এর পরিমান একটু বেশি
ছিলো। পাশে সুন্দরি বউ রেখে রোমেন্স
দেখছি কিন্তু কিছু করছি না। হঠাৎ কেন
যেনো
ওকে খুব জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে হলো। আমি
কিছু
না ভেবেই ওকে জড়িয়ে ধরলাম। ও আমার
কাছ
থেকে ওকে সরিয়ে নিয়ে আমাকে বল্লো এই
রকম নোংরামি জানি দ্বিতীয় বার না
করি।
.
সকালে ঘুম থেকে উঠেই ওর রুমে ফুচি মেরে
দেখলাম ও ঘুমিয়ে আছে। তারপর আমি
ফ্রেশ
হয়ে টিভিটা চালু করে টিভি দেখতে
লাগলাম। কিছুক্ষন
পর ও আমার কাছে এসে বলতে
লাগলো,টেবিলে নাস্তা রাখা আছে খেয়ে
নিন।
এই বলেই ও আমার সামনে থেকে চলে যেতে
লাগলো।
"সাফা শোনো!
"কিছু বলবেন?
"তুমি না মাস্টার্স টা কমপ্লিট করতে
চাচ্ছো।
"হুম
"কই পড়তে চাও?
" আমি যেই কলেজ থেকে অনার্স করছি
সেইখানেই।
"ওকে আমি সবকিছুর ব্যবস্থা করেছি।
"ব্যবস্থা করা লাগবেনা,আমি সব কিছু করে
ফেলছি।
কথাটা বলেই নিচের দিকে তাকিয়ে
উন্নাটার একটা
অংশ পেঁচাতে লাগলো।
"তাহলে এখন আমার কি করতে হবে?
"আমি চাচ্ছি বাবা মায়ের কাছে থেকে
মাস্টার্স টা
কমপ্লিট করবো।
"কেন এখানে কি হইছে?
"....................
"আচ্ছা ঠিক আছে তোমার যেইটা ভালো
লাগে
সেইটাই করো।
এই বলে আমি টিভিটা বন্ধ করে,আমার রুমে
চলে
গেলাম।
.
রুমে এসেই অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হতে
লাগলাম। কেন যে মেয়েটাকে বিয়ে করতে
গেলাম,কি বলবো এখন বাড়িতে আমি!
বাড়ির সবাই
একই কথা বলবে ওদের বাসায় যেয়ে কেন ও
লেখা পড়া করবে? আমাদের এইখানে কি
করা যায় না!
রেডি হয়ে বের হয়ে টেবিলে বসলাম
নাস্তা
খাওয়ার জন্য।
"সাফা শোনো!
আমার সামনে এসে বলে উঠলো,জ্বি বলেন।
"বাড়িওয়ালা আসলে বলে দিও সামনের
মাসে আমরা
এই রুমটা ছেড়ে দিচ্ছি।
ও আমার দিকে একটু তাকিয়ে মাথাটা নিচু
করে
ফেল্লো। আমি আবার বলে
উঠলাম,বিকেলবেলা
আমি ফার্নিচার ওয়ালা কে আসতে
বলবো,ওনি
আসলে ফার্নিচার গুলো দেখিয়ে দিও। যদি
তোমার
এই জায়গা থেকে কনো কিছু ভালো লাগে
ওইটা
বাদে সব কিছুর লিষ্ট করতে বইলো।তাছাড়া
আসবাবপত্র গুলো অন্য কনো জায়গায়
রাখার
ব্যবস্থা নাই।
.
কথাগুলো শেষ করে আমি রুমটা একটু
আরেকবার
ঘুরে দেখলাম। খুব খারাপ লাগছিলো । নিজ
হাতে এই
রুমটা সাজিয়েছি।আর আজ সবকিছু শেষ হয়ে
যাবে।
তারপর আস্তে করে রুম থেকে বের হয়ে
গেলাম। যাওয়ার পথে ফার্নিচার
ওয়ালাকে সব কিছু
বলে গেলাম।
.
রাতে অফিস থেকে ফিরে,বাসায় যেয়ে
ফ্রেশ
হয়ে সাফার রুমে গেলাম। যেয়ে দেখি
মোবাইল
টিপাচ্ছে।
"ফার্নিচার ওয়ালা আসছিলো?
ও আমার দিকে তাকিয়ে উত্তর দিলো,হুম
আসছিলো।
"কবে নিয়ে যাবে বলে গেছে এগুলো?
"ওনি বলছে যেইদিন আমরা চলে যাবো
রুমের
চাবিটা ওনাকে যেনো দিয়ে যাই। ওনি
নিজে
আস্তে আস্তে করে সব কিছু নিয়ে যাবে।
"বাড়িওয়ালা কে কিছু বলছিলা?
"হুম। ওনাদের রুমে যেয়ে আমি বলে
এসেছিলাম।
কথাটা শেষ হতেই আমি বের হয়ে গেলাম
ওর রুম
থেকে।
.
আমার রুমে এসে বসে বসে ভাবতে লাগলাম
কেন
এই মেয়েটা এমন করে। আরে বাপ তোমার
সাথে নংরামি না হয় না করলাম। একটুতো
পারো
আমাকে বুঝতে,হুট করে বলে দিলা আর হয়ে
গেলো। কেন যে ওই দিন তোমাকে বিয়ে
করতে গেলাম।
.
মাস শেষ হতে আর মাত্র দুই তিন দিন
বাকি। ওকে
দেখলাম ঘরের সব জিনিসপত্র ব্যাগে
ভরছে।
আমার গুলো আমি ঘুছিয়ে নিয়েছি। আচ্ছা
আমার
যতোটা খারাপ লাগছে সাফার কি একটু ও
খারাপ লাগছে
না! আজ না ওর হাতের আলুপারোটা খেতে
ইচ্ছা
করছে। মেয়েটা খুব ভালো করে এই
জিনিসটা
বানাতে পারে। তাই আমি ওকে বল্লাম,
সাফা একটা কথা
শুনবা?
"জ্বি বলেন
"আজ কি একটু আলুপারোটা বানিয়ে
খাওয়াবা খুব
খেতে ইচ্ছে করছে।
ও আমার দিকে একটু তাকিয়ে বল্লো আচ্ছা
ঠিক
আছে আমি বানাচ্ছি। এই বলেই মেয়েটা
ব্যাগ
ঘুছানো বাদ দিয়ে রান্না ঘরে চলে গেলো।
.
ওর হাতে বানানো আলু পারোটা খাচ্ছি।
আজকে
একটু জ্বালের পরিমান টা বেশি হয়েছে।
তবে ওর
থেকে পাওয়া জ্বালের থেকে অতি
সামান্য। আমি
খুব স্বাদ করে খাচ্ছি। ও দাড়িয়ে দাড়িয়ে
দেখছে।
আমার খাওয়া শেষে ওর দিকে তাকিয়ে
মুচকি একটা
হাসি দিয়ে বল্লাম,খুব ইয়ামি ছিলো। এই
বলেই আমি
আমার রুমে এসে পড়লাম।
.
আজ সকাল থেকে খুব বৃষ্টি। আর আজকে
মাসের
৩১ তারিখ। আজি এই বাড়ি ছেড়ে চলে
যাবো। বৃষ্টি
টা কমার অপেক্ষায় আছি। পুরো রুমে
ফার্নিচার ছাড়া
আর কিছু নাই। সব ঘুছিয়ে নিয়েছি। একদিন
এই বৃষ্টির
মধ্যে রিমিকে নিয়ে ভিজে ছিলাম। পুরো
ক্রেডিট্টা ওর ছিলো। আমাকে অনেক জড়
করে
ভিজিয়েছিলো। তারপর একটা চায়ের
দোকানে
দাড়িয়ে এক সাথে এক কাপে দুইজন মিলে
চা
খেয়েছিলাম। কেন যে ও আমাকে এতো কষ্ট
দিলো! আজ খুব ইচ্ছা করছে সাফার সাথে
একটু
ভিজতে। কিন্তু সেটা আর হলো না। ও
সকালেই
গোসল করে ফেলছে। আর তা ছাড়া ও কখনো
রাজিও হবে না।
.
বৃষ্টিটা কমার সাথে সাথে আমি মেইন
রোড
থেকে দুইটা সি.এন.জি ভাড়া করে নিয়ে
আসলাম।
একটাতে ওকে উঠিয়ে ওর জিনিস পত্র দিয়ে
বিদায়
জানালাম।
"ভাল থাকবেন।
"তুমিও। তোমার হাতে বানানো আলু
পারোটাকে
খুব মিছ করবো।
কথাটা বলেই আমি দুরুত্ব ওর কাছ থেকে
চেপে
গেলাম কেন যেনো,চোখের কোনে পানি
এসে গেলো। তারপর আমি সি.এন.জি তে
আমার
জিনিসপত্র নিয়ে উঠে। সি.এন.জি ওয়ালা
কে বল্লাম,
ভাই সি.এন.জি টা একটু আগে বাড়িয়ে
রাখেন।
সি.এন.জি টা আগে বাড়ানোর পর ওই
সি.এন.জি
ওয়ালাকে বল্লাম,ভাই সাবধানে নিয়ে
যায়েন। আর
জিনিসপত্র গুলা একটু নামিয়ে দিয়েন। এই
বলে দুই
জন নিজ গন্তব্যে রওনা দিলাম।
.
বাড়িতে পৌছিয়ে মা আর চাচার বিভিন্ন
ধরনের প্রশ্নের জবাব দিতে হলো আমার।
তারা ভাবছে সাফা আর আমার মাঝে
ঝগড়া
হয়েছে,সে জন্য তারা সাফার বাড়িতে
ফোন
দিয়েও অনেক কিছু জিজ্ঞাস করেছে।
তারপর তারা বুঝতে পারলো যে আমাদের
ইচ্ছায় আমরা এই কাজটা করেছি। চাচা
আমাকে অনেক বার বলেছে যে,সাফাকে
আমাদের বাড়িতে এনে ওর পড়াশোনা
চালাতে। আমি চাচাকে অনেক কিছু বলে
সাফার ওর বাড়িতে থেকে পড়ার বিষয় টি
মেনেজ করে নিলাম।
.
বাড়িতে এসে দুই দিন যাবৎ অফিসে যাওয়া
হচ্ছেনা। সাফাটার কথা খুব মনে পরে। কেন
এমনটা করলো মেয়েটা। সাতটা মাস ধরে
ওকে দেখতে দেখতে ওকে এতোটাই
ভালবেসে ফেলেছি যে,এখন ও আমার কাছে
একটা অমূল্য রতন। আজ ওর কথা খুব মনে
পরছে।তাই মোবাইলটা নিয়েই ওকে ফোন
করলাম,
" সাফা!
"হুম বলেন।
"কেমন আছো?
"ভালো।
"আমাকে জিজ্ঞাস করবা না আমি কেমন
আছি!
"বাসার সবাই কেমন আছে?
ওর এই রকম ইগনোর টা দেখে খুব খারাপ
লাগলো। কেন এমন করছে মেয়েটা। আমি
ছোট একটা নিশ্বাস নিয়ে বল্লাম, হুম সবাই
ভালো আছে। তোমার বাসার সবাই ভালো
আছে?
"জ্বি
ওকে আর বিরক্ত না করে ওর থেকে বিদায়
নিয়ে ফোনটা কেটে দিলাম।
.
আবার আগের মতো চলতে লাগলো আমার
দিনগুলো। নিয়মিত অফিস যাওয়া শুরু
করলাম।
কাজের প্রতিও খুব মনযোগী হলাম। সব ঠিক
থাকলেও আগের থেকে মনের এনার্জি টা
অনেকটাই কমে গেছে! হাহ! এই রোগটা খুব
সাঙ্গাতিক একটা রোগ।
.
আজ শবেবো রাত সকাল থেকে হাফ বেলা
ডিউটি করে,বিকেলবেলা বাড়ি ফিরলাম।
বন্ধুরা ফোন দিয়ে বল্লো,রাতে দেখা
করবে।
আমিও ভাবলাম অনেক দিন যাবৎ দেখা হয়
না
নামাজ পড়ার সাথে সাথে এক সাথে দেখা
হয়ে যাবে। খারাপ না বুদ্ধিটা। আমিও
রাজি
হয়ে গেলাম।
.
রাতে গোসল দিয়ে গ্রিন এন্ড ব্লাক
কালারের পাঞ্জাবি আর সাদা রং এর
পায়জামা পড়ে এশার নামাজটা শেষ
করলাম। তারপর বাড়িতে এসে খাওয়া
দাওয়া
করে,বন্ধুদের সাথে দেখা করে সবাইকে
নিয়ে আবার মসজিদে গেলাম। ঘন্টা
খানিক
নামাজ পড়ে, সবাই একটু রাস্তায় বের হয়ে
চা
খেতে গেলাম। এরি মাঝে আমার দুই বন্ধু
ইয়ামিন আর পিয়ায়া ওদের গার্ল ফ্রেন্ড
এর
সাথে আজকের রাতের কথা বলতে লাগলো।
ওদের দুইজনের কথা শুনে খুব হাসি আসলো।
সালারা ফরজ নামাজ পড়ে না ঠিক মতো,
আজকের রাতের নামাজ পড়া সম্পর্কে
গার্লফ্রেন্ড কে বয়ান দিচ্ছে। মনে হচ্ছে
উনারা একজন আলেম।
.
ওদের কথাগুলো শুনে আমারো সাফার কথা
মনে পড়ে গেলো। আমার বউটাও তো আজকে
নামাজ পড়তেছে। কেন জেনো আমারো
ইচ্ছে করছে আমিও আলেম হয়ে যাই। আমিও
ওকে একটু বয়ান শুনাই। কেন যেনো ওকে খুব
দেখতে ইচ্ছে করতেছে। এরি মধ্যে চায়ের
দোকানে ঢুকে গেলাম,চা হাতে নিয়ে
কল্পনা করতে লাগলাম,সাফার নিষ্পাপ
চেহারাটা। ভাবতে লাগলাম,ও আমাকে
নিজ
হাতে পাঞ্জাবি পড়িয়ে পাঞ্জাবির
বোতামগুলো লাগাতে লাগাতে বলতে
লাগলো,এই শোনো আজকে নামাজ পড়ে
আল্লাহ এর কাছে বলবা,তিনি যেনো তাকে
চেনার ক্ষমতাটা আমাদের দেয়,আর
আমাদের
যেনো আসিকি রাসূল বানিয়ে দেই। আর
কিছু
ভাবতে পড়লাম না। ওকে কাছে থেকে
দেখার নেশাটা খুব বেড়ে গেলো। তাই চা
টা
না খেয়েই বন্ধুদের ছোট একটা বুঝ দিয়ে
বের
হয়ে গেলাম দোকান থেকে। মেইন রোডে
যেয়ে রওনা দিলাম সাফাদের বাসার
উদ্দেশ্যে।
.
ওদের বাসার সামনে এসে মোবাইলটা বের
করে ওকে ফোন দিলাম। কিছুক্ষন রিং
হওয়ার পর ও ফোনটা ধরলো।
"একটু নিচে আসতে আসতে পারবা।
"মানে?
"আমি তোমাদের বাসার নিচে আছি।
"এতো রাতে!
"আসো একটু আমি দাড়িয়ে আছি।
এই বলেই ফোনটা কেটে দিলাম। কিছুক্ষন
পর
আওয়াজ পেলাম কারো সিড়ি দিয়ে
নামার।
আর
কিছুক্ষন যেতেই দেখলাম ওমেইন গেইট
থেকে বের হলো। আমাকে দেখে ও আশ্চর্য
জনক একটা লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে। সাদা
থ্রি পিছ আর উন্নাটা দিয়ে সুন্দর করে
মাথাটা বাধা। ওর ছোট মুখটা মায়া দিয়ে
পরিপূর্ণ ছিলো যা আমার ক্ষেত্রে কাজ
করে না। ওরর দিকে তাকিয়ে রইলাম।
"এতো রাতে?
"তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছিলো।
কথাটা বলার পর দুইজনি চুপ হয়ে গেলাম।
তারপর ও আবার বলে উঠলো,
"কিছু বলবেন?
"তোমার কলেজ বন্ধ হয় নি?
" না। পরশু দিন হতে পারে।
"তোমাকে খুব মিছ করি।
কথাটা বলেই দুইজন চুপ করে রইলাম। ও
নিচের
দিকে তাকিয়ে রইলো। ওকে স্পর্শ করার
মনোভাব জাগলো খুব। কিন্তু সেইটা মাটি
চাপা পড়ে গেছে ওইদিনি,যেদিন নংরামি
বলে আক্ষিত করেছিলো ও।
"নামাজ পরবো আমি এখন যাই।
" বন্ধ দিলে ফোন দিও আমি নিয়ে যাবো।
সমস্যা নাই তোমার থেকে দূরেই থাকবো।
ও আমার দিকে তাকালো।আমি আবার
বল্লাম, খুব সুন্দর লাগছে,যাও তুমি।
ও কিছুক্ষন দাড়িয়ে থেকে চলে যেতে
লাগলো আমি কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে
জড়তে একটা বড় করে নিশ্বাস নিয়ে হাটা
শুরু
করলাম।
.
এইভাবে চলতে চলতে বেশ কয়েকটা দিন
কেটে গেলো। এর মধ্যে দুই একবারের মতো
সাফার সাথে কথা হয়েছিলো তাও আবার
দিই তিন মিনিট এর বেশি না। মেয়েটার
জন্য
অনেকটা পাগল হয়ে গেতে লাগলাম। আসলে
কি যে ভালবাসতে জানে সে সব সময়
ভালবাসতে পারে। আমার ক্ষেত্রেও তাই
হলো। আমি ওকে কাছে পাওয়ার জন্য
অনেকটা উদাসিনী হয়ে গেলাম।
.
আজ প্রথম রোজা সবাই সেহরি খাওয়ার
জন্য
উঠলাম। আমার সেই ছোট বেলা থেকে
অভ্যাস রোজার মাসে ফজরের নামাজ পড়ে
ঘুমানো। আর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত টিভি
দেখে,বই পড়ে কাটিয়ে দিতাম। সাফার মন
থেকে ভালবাসাটা পেলে আজ হয়তো ও
আমার সাথে টিভি,আর গল্পের বই পড়ে রাত
পাড় করতো। আর ফজরের নামাজ শেষে
ঘুমানোর সময় দুষ্ট একটা হাসি দিয়ে বলতো
কন্টোল থাকবেন স্যার না হলে কিন্তু
রোজাটা.............. হাহ! ভাবনাময়
স্বপ্নগুলো
স্বপ্ন রয়েই যাবে।
.
আচ্ছা ওর তো কলেজ বন্ধ হয়ে গেছে কেন ও
আসলো না? এই সাতটা মাস আমার সাথে
থেকে কি একটুও বুঝলোনা যে আমি ওকে
কতটা ভালবেসে ফেলেছিলাম। খুব ইচ্ছা
করছিলো ওর সাথে ফোনে কথা বলার কিন্তু
সেইটা আর বলা হলো না,আযান পড়াতে
মসজিদে চলে গেলাম।
.
সকালে ঘুম ভাঙ্গলো বেলা ১০.৩৫ এর দিকে।
প্রথম রোজা বিদায় অফিস ও বন্ধ। তাই
ফ্রেশ
হয়ে কিছুক্ষন হাটা হাটি করে, রুমে ঢুকে
আবার কিছুক্ষন শুয়ে রইলাম। হঠাৎ শুনতে
পেলাম, আরে মা তুমি আইছো, এতো দিন পর
আমাগো কথা মনে পড়লো?
"না মা সব সময় মনে পড়ে ভর্তি হইছি অনেক
জামেলা তাই আর আসা হয়নি।
"আচ্ছা যাও ঘরে যাও তরকারি চুলায় দিয়া
আসছি আমি দেইখা আইতাছি।
আমি উঠে বসে পড়লাম। ও রুমে ঢুকেই
ব্যাগটা
রাখার সাথে সাথে আমার দিকে একবার
তাকিয়ে নিলো।
.
ব্যাগটা হাত থেকে রেখেই বোরকাটা খুলে
টেবিল এর এক পাশে রাখলো।
"কেমন আছো?
"ভাল আপনি?
"খুব ভালো!
ও আমার মুখে খুব ভালো কথাটা শুনে
আমার
চোখে চোখ রাখলো।
"আমাকে একটা ফোন দিতে আমি যেয়ে
নিয়ে আসতাম তোমাকে?
এরি মধ্যে মা রুমে ঢুকে আমাদের দিকে
অন্য
রকম একটা দৃষ্টিতে তাকালো। তাকানোরি
কথা এতোদিন পর আমরা একসাথে এতো
দুরুত্ব
রেখে কথা বলছি। আমরা কিছুক্ষন এর জন্য
চুপ করে রইলাম। বিষয়টা সাফা বুঝতে পেরে
হয়তো,বলে উঠলো,
"মা আপনার ছেলের উপর আজ খুব রাগ উঠছে
আমার,ওকে বলছি আমি আমাকে বাসা
থেকে
যেনো আজ নিয়ে আসে, কিন্তু ও না যেয়ে
ফোন বন্ধ করে রাখছে।
কিছুক্ষন আগে মায়ের চেহারাটা তে যেই
রকম ভাবটা ছিলো তা পুরোটাই কেটে
গেলো। তারপর মা আমাকে কিছুক্ষন ঝাড়ি
দিয়ে সাফাকে নিয়ে তার রুমে চলে
গেলো।
.
আমি শুধু মুচকি একটা হাসি দিয়ে ভাবতে
লাগলাম,ইশ আসলেই মেয়েটা যদি এমন
রাগটা
করতো তাহলে এই রাগ ভাঙ্গানোর ওষুধটা
দিনের বেলা কাজ না করলেও রাতে ঠিকি
করতো। কিন্তু ও তো রাগ দূরে থাক আমার
সাথে ঠিক মতো কথাই বলে না।
.
দুপুরে গোসলল দিয়ে বের হয়ে আজ সাদা
পাঞ্জাবিটা আর পায়জামা টা পড়লাম।
চোখে একটু সুরমাও লাগালাম। রোজার
মাসটাই এমনটাই করি। আল্লাহতালা খাছ
বান্দা লাগে আর কি।
ঘর থেকে বের হয়ে দেখলাম সাফা পাক
ঘরে
মার সাথে রান্নার কাজে ব্যস্ত। মা
মাছের
ভিতর মসলা মিক্স করছে ও তেলের ভিতরর
ছাড়তেছি। আমি আর সেইখানে না
দাড়িয়ে
বাহিরে চলে গেলাম।
.
চায়ের দোকান গুলোতে পর্দা লাগানো।
ছোটবেলায় আগে বন্ধুরা মিলে চায়ের
দোকানে যেয়ে পর্দা উচা করে দাড়িয়ে
থাকতাম। আর বলতাম দেখ দেখ কি করে
রোজা রমজানের মাসে ছাড় দেই না।
অনেক
ঝাড়িও খাইতাম সাথে।
.
নামাজ পড়ে বাসায় এসে দেখি সাফা
খাটের উপর বসে আছে। আমাকে দেখে উঠে
যেতে লাগলো।
"উঠতেছো কেন বসো।
ও আমার দিকে একটু তাকিয়ে বসে পড়লো।
আমি রুমের দরজাটা একটু বিড়িয়ে
দিয়ে,পাশে থাকা চেয়ারে বসলাম।
দুইজনে চুপচাপ বসে আছি কনো কথা
বলতেছি
না। নিরবতা ভাঙ্গিয়ে সাফা বলে
উঠলো,কিছু কথা ছিলো।
"হুম বলো,অনুমিত নেওয়ার কি আছে এখানে?
তারপর ও বসা থেকে দাড়িয়ে ওর হ্যান্ড
ব্যাগ থেকে একটা খাম বেড় করে আমার
হাতে দিয়ে এক পাশে দাড়িয়ে রইলো।
আমি
ওর দিকে তাকিয়ে বল্লাম দাড়িয়ে আছো
কেন বসো তুমি।ও কিছু না বলে খাটে যেয়ে
বসলো। আমি খামটা ছিরতে ছিরতে ওকে
উদ্দেশ্য করে বল্লাম,কি এইটা? ও কিছু
বল্লো
না। খামের ভিতর একটা কাগজ দেখতে
পেলাম।
.
কাগজটা খুলার সাথে সাথে খুব একটা শক
খেয়ে গেলাম। ডিভোর্স পেপার! আমি ওর
দিকে তাকিয়ে রইলাম। আমি ওর পাশে
যেয়ে
বসে ওর দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলাম,
এইটা কি ধরনের পাগলামি?
ও আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।
"কি হলো বলো,এইটা কি হুম? একবার দেখছো
মা তোমাকে দেখে কতটা খুশি হয়েছে।
এখন
সে এইটা জানতে পারলে কতটা শক খাবে
বুঝ
তুমি?
"আমার কিছু করার ছিলো না!
"মানে কি!
ও আবার চুপ করে রইলো। আমি আর টিকে না
থাকতে পেরে ওকে বলা শুরু করলাম,
"তোমার কি কারো সাথে রিলেশন আছে?
"নাতো।
"তাহলে এগুলা কেন করছো? প্লিজ আমাকে
আর পেইন দিও না। আমিতো আর নিতে
পারতেছি না। তোমার বাবা মা জানলে
তারাও কষ্ট পাবে।
"বাবা মা জানে।
"মানে!! ওই এগুলা কি বলতেছো তুমি! কেন
এমন করতেছো!আমি কি তোমার যগ্য না?
" এগুলা কি বলতেছেন। আমি চাই না আপনি
আর কষ্ট পান আমার থেকে। আর আমার
জীবনের সাথে না মিশেন।
" কেন মিশবো না? আচ্ছা কেন এমনটা
করতেছো প্লিজ একটু বলবা। প্লিজ!
ও চুপ করে রইলো ওর মুখে ক্লান্তনার ছাপ
টা
দেখা যাচ্ছিলো।
"কি হলো বলো । কেন এমনটা করতে চাচ্ছো?
" আমার এক কাজিন এর সাথে আমার
রিলেশন
ছিলো। ওকে এতোটাই ভালবেসেছিলাম
যে,আমার সমস্ত কিছু ওকে দিয়ে
দিয়েছিলাম। ওর সাথে আমার ফিজিক্যাল
রিলেশনটাও হয়ে গেছিলো। ওকে বিয়ের
কথা বলেছিলাম,ও বলছে চাকরিটা হয়ে
গেলেই করে ফেলবো। ওকে খুব বিশ্বাস
করতাম কারন এক হিসাবে ও আমার কাজিন
ছিলো।কিন্তু চাকরিটা পেয়ে ও খুব
পরিবর্তন
হয়ে যাবে সেইটা অবিশ্বাস্য । ওর সাথে
আমার যে রিলেশন ছিলো তা ও খুব সহযে
অস্বিকার করে নিলো।বাবা মা জানার পর
আমার একাত্মটা দূর করার জন্য আমার
বিয়ে
ঠিক করলো। তাদের জানিয়েই আমাকে
বিয়ে দিতে চেয়েছিলো। তার জন্য মোটা
অংকের টাকাও আমার বাবা তাদের দেই।
ছেলে জানার পর পালিয়ে যায়। আর তখনি
আপনি না জেনে আমাকে বিয়ে করেন।
আমি
চাইনা কাউকে ঠকাতে,তাছাড়া আমি
আগেই
এসব কথা বলে দিতে পারতাম কিন্তু বাবা
মার জোড়াজোড়িতে আমি বলে উঠতে
পারি
নাই। শবেবো রাতে আপনি যখন আমার
বাসার
সামনে আসছিলেন, আমি বুঝতে পারছিলাম
আপনার ফিলিংসটা। আমার খুব খারাপ
লাগছিলো।তাই আমি ঠিক করে নিলাম আর
না! আমার এই নষ্ট জীবনটা থেকে আপনাকে
মুক্তি দিয়ে দিলাম।
.
কথাগুলো ও শেষ করে চুপকরে রইলো,
চোখগুলো পানিতে ছল ছল করতে লাগলো।
ওর
প্রতি আমার মায়াটা খুব বেড়ে গেলো।
আমি
খাট থেকে উঠে ফ্লোরে ওর সোজাসুজি
বসে
ডিভোর্স পেপারটা ছিড়ে ফেল্লাম।ওর
হাতটা ধরে বল্লাম,আমি তোমাকে
ছারছিনা। তুমি কি বুঝনা এই সাতটা মাস
একসাথে তোমার সাথে থেকে তোমার
প্রতি
কতটা দুর্বল হয়ে পরছি আমি। প্লিজ তুমি
আর
না করো না। আমি কখনো অতিতটাকে
আমাদের মাঝে নিয়ে আসবোনা।
"প্লিজ করুনা করবেন না। আমি কারো
করুনার
পাত্রী হয়ে থাকতে চাই না।
"করুনা! এইখানে করুনা কথাটা কেন আসলো?
"তাহলে কেন যেনে শুনে আপনি সম্পর্কটা
আগে বাড়াতে চাচ্ছেন?
"মায়ার ঘোরে। কতটা কষ্ট হয়েছিলো ওই
দিন
যানো! বাড়ি ছেড়ে দিয়ে দুইজন আলাদা
হয়ে
গিয়েছিলাম। তুমিতো আমার ফিলিংসটা
তখন বুঝলানা!
কথাটা বলার সাথে সাথে ও বলে উঠলো,
"চলেন আমার সাথে।
"কোথায়?
"আসলেই দেখতে পারবেন।
এই বলে দুইজন রুম থেকে বের হয়ে গেলাম।
মা
জিজ্ঞাস করাতে আমি বল্লাম একটু সামনে
যাবো আসতেছি আমরা।
.
"এইখানে আনলা কেন? (আমরা যেই বাসা
ছেড়ে দিয়েছিলাম)
তারপর ও বাসার ভিতর ঢুকতে লাগলো।
আমিও
ওর সাথে সাথে যেতে লাগলাম। আমরা
যেই
রুমটাতে থাকতাম ও সেই রুমের সামনে
যেয়ে
ব্যাগ থেকে চাবি বেড় করে রুমের দরজা
খুলতে লাগলো। আমি চুপচাপ মেয়েটার
কাজগুলো দেখতে লাগলাম। এই কি! রুমের
জিনিস পত্র দেখি জায়গারটা জায়গায়
রয়েছে। ও আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।
"এইগুলো এইখানে কেন?এগুলো নিয়ে যাই
নি।
"আমি না করে দিয়েছিলাম। আর এই রুমটা
ভাড়া হইতে দেই নি।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম। ও মাথা
নিচু
করে দাড়িয়ে আছে। মাথাটা উচু করে
আবার
বলতে লাগলো,আপনার যতোটা খারাপ
লেগেছিলো এই ঘর ছেড়ে চলে যেতে,
আমারো ততোটাই খারাপ লেগেছিলো
তাই
আমি এইটা করেছি।
কথাটা শেষ করে মেয়েটা আবার চুপ করে
রইলো।
এইবার আমি ওর হাতটা ধরে কাছে গেলাম।

আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।
" আমি চাই তোমার সব আবেগ,অতিত,
কষ্টগুলো মুছে দিতে। চলোনা সব কিছু ভুলে
আবার নতুন করে বাঁচতে শুরু করি। বেশি
কিছু
না,তোমার সমস্ত কিছু আমার করে দাও
আমি
তাতেই সন্তুষ্ট।কি পারবে না?
কথাটা বলার শেষে ও আমার হাত থেকে ওর
হাতটা ছাড়িয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে
কাপা
কাপা শুরে বলতে লাগলো,হ্যা পারবো।
আমি
ওর মাথাটা একটু উচু করে বল্লাম, এখন
নংরামি হচ্ছেনা?
আমার হাতটা সরিয়ে আবার আমাকে
জড়িয়ে
ধরে অভিমানী সুরে বলে উঠলো,আমার কথা
আমাকেই ফিরত দিচ্ছেন তাই না!
"তা না তবে!
"তবে কি বলেন?
"রোজাটা হালকা হয়ে যাচ্ছে তো তাই আর
কি! ইফতারিটার শেষে করলে হয় না।
আমার কথাটা শুনে আমাকে আরেকটু চেপে
ধরে বল্লো,কত দুষ্টরে দেখছো!

লিখা: ফায়সাল আহম্মেদ শাওন

No comments:

Post a Comment